Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

১১৪ তম সংখ্যা । ১৪ মার্চ, ২০২৪




এই সংখ্যায় থাকছে :

“৩ দিনে ১১শ হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান, আটক ৮৪৫”

‘‘এই পৃথিবী টিকবে না, কয়েক বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে: অধ্যাপক ইউনূস’’

“যত্রতত্র মাদরাসার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থী কমছে: শিক্ষামন্ত্রী”

“ইফতারে আঙুর-খেজুরের বদলে বরই-পেয়ারা খেতে বললেন শিল্পমন্ত্রী”

“যেভাবে নীতা আম্বানির গলায় ঝুলছে একটা দেশের জিডিপি”





“৩ দিনে ১১শ হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান, আটক ৮৪৫”

খবরঃ 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ অভিযানে ৩ দিনে রেস্তোরাঁ মালিক ও কর্মচারীসহ ৮৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়ের করা হয়েছে ২০টি মামলা। গত ৩ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ঢাকার হোটেল-রেস্তোরাঁ, গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান ও কেমিক্যাল গোডাউনে এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ৩ দিনে ১১শর বেশি হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযানে যায় পুলিশ। বুধবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি। (https://www.dhakapost.com/national/264240)

 

মন্তব্যঃ 

রাজধানীর নিম্নবিত্ত শ্রমিক অধ্যুষিত কামরাঙ্গীরচর এলাকার প্রায় ২৪টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিশেষ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ কামরাঙ্গীরচরে হোটেল-রেস্তোরাঁয় পুলিশের অভিযান, আটক ২৪, সমকাল, মার্চ ৫, ২০২৪)। এই খাবারের দোকনগুলো মূলত সেমিপাকা/ভবনের নিচতলায় রাস্তার পাশে অবস্থিত। খোলামেলা পরিবেশে রান্না এবং খাবার পরিবেশন করা হয় তাই স্বাভাবিকভাবে এই দোকনগুলোতে কাঁচেঘেরা বহুতাল ভবন থেকে অগ্নি ঝুঁকি থাকে কম। কিন্তু, বেইলি রোডের বহুতলভবনে অগ্নি দুর্ঘটনার পর সরকার এসকল সাধারণ মানের খাবার দোকানগুলোতে অভিযানের নামে কর্মচারী ও মালিকদের গ্রেফতার, এবং দোকান সীলগালা করার মত জুলুম করছে। কিন্তু, একই সময় পুঁজিপতি কর্পোরেটের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট যেগুলো মূলত বহুতল ভবনে পরিচালনা করা হচ্ছে সেগুলোকে নামমাত্র জরিমানার মাধ্যমে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ ডোমিনোস, কেএফসি ও সিক্রেট রেসিপিকে জরিমানা, দেশ টিভি, মার্চ ৬, ২০২৪)। সরকারের এই দ্বৈত নীতি সরকারের পুঁজিপতিদের তোষণ নীতি এবং জনগণকে হয়রানির নীতিকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। সরকারের এই পুঁজিপতি তোষণ নীতি শুধুমাত্র বৈষম্যমূলক অভিযান এবং শাস্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং, প্রধানমন্ত্রী বেইলি রোডের আগুনের পরের দিন বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে আগুনে হতাহত মানুষদের কটাক্ষ করে বলেছে, “দেখা যাবে এখানে কোনো বীমাও করা ছিল না। কাজেই বিনিময়ে কিছু পাবেও না”। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড, বীমা সচেতনতা নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী, insurancenewsbd.com/article/news/5492, মার্চ ১, ২০২৪)। কি নির্মম পরিহাস! জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ শাসক জনগণকে বীমা না করার জন্য কটাক্ষ করে পুঁজিপতি বীমা ব্যবসায়ীদের বীমা ব্যবসা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে। যেন শাসকের দায়িত্ব জনগণকে নিরাপত্তা প্রদানের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা নয়!  অগ্নি ঝুঁকির সকল প্রকার দ্বার উন্মুক্ত রেখে জনগণকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে আবার জনগণকেই দোষারপ এবং অভিযুক্ত করাই হচ্ছে শাসকের দায়িত্ব! অথচ, সরকারের দায়িত্ব ছিল ভবন নির্মান এবং দোকান স্থাপনের পূর্বে অগ্নি ঝুঁকি যাতে তৈরি না হয় এমন ব্যবস্থা করা, জনগণকে সচেতন করা, এবং অগ্নি নির্বাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরাঞ্জামের ব্যবস্থা করা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের কারিগরি সক্ষমতা আঁতকে উঠার মত! ৪৯৫ টি উপজেলার এই দেশের অগ্নি ঝুঁকি মোকবেলার জন্য সরঞ্জামের সংখ্যা মাত্র ৪৭১২ টি যার মধ্যে অধিকাংশই আবার পুরানো, অকেজো এবং খুব সাধারণ মানের যা দিয়ে দুই-একটি বড় দুর্ঘটনা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ fireservice.gov.bd/site/page/39100613-9678-480d-8b82-32482c57b163/- )। বিভিন্ন সময় অগ্নিকান্ডের আগুন নিয়ন্ত্রণের ফায়ার সার্ভিসের অস্বাভাবিক ধীর গতি তাই প্রমাণ করে।   সরকার দুর্বৃত্ত র‌্যাব  বাহিনীকে একাধিক নিজস্ব হেলিকপ্টার প্রদান করলেও জনগণকে অগ্নি দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য ফায়ার সাভিসকে নিজস্ব হেলিকপ্টার এবং অনান্য আধুনিক সরঞ্জাম প্রদান করে নাই। সুতরাং, এটা পরিষ্কার জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া নয় জনগণকে জুলুমের মাধ্যমে আতঙ্কগ্রস্ত রাখা এই সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যে সরকার জনগণের দায়িত্ব না নিয়ে জনগণকে অভিযুক্ত করে তার কি জনগণকে শাসন করার কোন বৈধ অধিকার থাকে? নিঃসন্দেহে জালেম এই সরকারের জনগণেকে শাসন করার কোন অধিকার নাই। 

অন্যদিকে, ইসলামে শাসকের ব্যর্থতার জন্য জনগণকে কোনভাবে শাস্তি দেয়ার সুযোগ নাই। বরং শাসকের অবহেলা বা অসচেতনতার জন্য জনগণ কোন ভুল করলেও তার শাস্তি শাসককে বহন করতে হয়। ইতিহাসে এই রকম অনেক অসংখ্য উদাহরণ থাকলেও স্থান স্বল্পতার জন্য শুধুমাত্র একটি ঘটনা উল্লেখ করা হলো। খলিফা হারুন-অর-রশিদের শাসনামলের সিরিয়ার ‘আর রাকাহ’ নামক একটি চুরির ঘটনা। ঐ শহরের একজন বৃদ্ধ মহিলা কিছু রুটি আর এক বোতল মধু চুরি করতে গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়। বিচারক চুরির কারণ জিঞ্জাসা করলে অভিযুক্ত জবাব দেয়, “আমি গত সাত দিন ধরে কিছুই খাইনি। পুরোপুরি অভুক্ত। শুধু আমি নই, আমার সাথে আমার এতিম দুই নাতিও না খেয়ে আছে। তাদের পেটে কোনো দানাপানি নেই। তাই বাধ্য হয়ে খাবার চুরি করেছি”। বিচারক বৃদ্ধাকে অভিযোগ থেকে মুক্তি প্রদান করে খলিফা, নগর প্রধান, খাদ্যগুদাম প্রধান, শরিয়াহ প্রধান, পুলিশ বাহিনীর প্রধানসহ সব সমাজহিতৈষী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেন। “যে নগরে একজন ক্ষুধাতুর বৃদ্ধ মহিলা সাত দিন অনশনে থেকে হোটেল থেকে খাবার চুরি করতে বাধ্য হন, সেখানে সবচেয়ে বড় অপরাধী সে দেশের খলিফা, শহরে নগরপ্রধান, খাদ্যগুদাম প্রধানসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা”। উল্লেখ্য, সেই সময় বিচারকের আসনে বসা ব্যক্তিটি ছিলেন খলিফা হারুন-আর-রশিদ। সুতরাং, খলিফা জনগণকে অভিযুক্ত করার পূর্বে জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার সকল দায়িত্ব রাষ্ট্র থেকে পালন করার ব্যবস্থা করবেন। 

    -    মোঃ সিরাজুল ইসলাম




‘‘এই পৃথিবী টিকবে না, কয়েক বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে: অধ্যাপক ইউনূস’’

খবরঃ

নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, এই পৃথিবী (বিদ্যমান বিশ্বব্যবস্থা) টিকবে না। সমস্ত সম্পদ কয়েকজনের হাতে, নিচের মানুষের হাতে কিছু নেই। তার মতে, তিন শুণ্যের পৃথিবী গড়তে হবে। ‘শূণ্য’ সম্পদ পুঞ্জিভূতকরণ (wealth concentration), ‘শূণ্য’ নেট কার্বন নি:সরণ ও ‘শূণ্য’ বেকারত্বের পৃথিবী। সম্পদ পুঞ্জিভূতকরণ শূণ্যের ঘরে নামিয়ে আনতে মানুষ ও সম্পদকে আবার একত্র করতে হবে। এর মেকানিজসম জানতে হবে। সম্পদ পুঞ্জিভূত হয়ে পরার জন্য মুনাফা অর্জনের প্রতিযোগীতার পাশাপাশি উত্তরাধীকার ব্যবস্থাও দায়ী। উত্তরাধীকারের সর্বোচ্চ সীমা বেধে দিতে হবে। (https://www.youtube.com/watch?v=29dw-AffI3E)

মন্তব্যঃ

শান্তিতে (!) নোবেল পুরষ্কার পাওয়া অধ্যাপক ইউনুসের ‘তিন শূণ্যের’ পৃথিবী বিদ্যমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার এক ইউটোপিয়া বা কাল্পনিক জগত ছাড়া আর কিছুই নয়। পুঁজিবাদের ট্রিকল-ডাউন অর্থনীতি, মুনাফার জন্য লাগামহীন ও বেপরোয়া মনোভাব যা বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয়, কর্মক্ষম বিশাল বেকার জনগোষ্ঠী এবং গুটিকয়েকের হাতে সম্পদ পুঞ্জিভূতকরণের (wealth concentration) জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ইউনুসের ‘তিন শূণ্যের’ নাটকীয় উপস্থাপনা আপাত দৃষ্টিতে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মনে হলেও তা মূলত জনগণের সাথে পুঁজিবাদের একটি নতুন প্রতারণা ও মিথ্যা আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, প্রথমত: অধ্যাপক ইউনুস নিজে একজন পুঁজিপতি, দেশে ও দেশের বাইরে অন্তত ৫২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সাথে তার কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং ২০১৬ হিলারী ক্লিনটনের সংস্থাকে সে প্রায় ৩ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে (অনেক দাতাদের মধ্যে কেবলমাত্র ৪০ জন এক লাখ ডলার বা তার বেশি ডলার অনুদান দিয়েছে) (এনটিভি, আগষ্ট ২৫, ২০১৬); দ্বিতীয়ত: বিশ্ব পুঁজিবাদের মোড়লরা হল তার পৃষ্ঠপোষক ও রক্ষক, যা তার নোবেল প্রাপ্তি ও বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সবাই অবগত আছেন; এবং তৃতীয়ত: পুঁজিবাদের ব্যর্থতা ও মানবজাতির জন্য এর অনুপযুক্ততার বিষয়টি প্রমাণিত ও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি বাস্তবতা, ফলে এই বাস্তবতাকে স্বীকার না করলে ইউনুসের কোন বিশ্বাসযোগ্যতাই থাকে না। যার কারণে সে বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে পুঁজিবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য নতুন ফর্মুলা নিয়ে হাজির হয়েছে, যেভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে পুঁজিবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু সমাজতান্ত্রীক সমাধানকে যুক্ত করে ‘রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্র’ নামে নতুন ধরনের পুঁজিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এবং চতুর্থত: তার এই নতুন ফর্মুলায় একজন ‘আদর্শ সেক্যুলার ও পুঁজিবাদীর’ মত সে তার ইসলাম বিদ্বেষকে আড়াল না করেই বলেছে ‘উত্তরাধিকারের সর্বোচ্চ সীমা বেধে দিতে হবে’, যা কিনা আল্লাহ্‌’র আইনের পরিপন্থী।

‘তিন শূণ্যের’ পৃথিবী তৈরীর প্রতারণার আড়ালে পুঁজিবাদকে নতুন রূপে বাঁচিয়ে রাখা এবং ইসলামের সমাধানের ব্যাপারে সন্দেহ তৈরীর মাধ্যমে খিলাফতের উত্থানের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির এই প্রকল্প হল ইসলামের শত্রুদের জন্য মরুভূমির মরিচিকার মত; যার ব্যাপারে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আর অবিশ্বাসীদের (স্যেকুলার-পুঁজিবাদীদের) কর্মকান্ড হল মরুভূমির মরিচিকা সদৃশ যাকে পানি ভেবে তারা এর দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু কাছে গিয়ে তারা দেখতে পায় সেখানে (পানির) কোন অস্তিত্বই নেই। বরং সেখানে তারা আল্লাহ্‌-কে অপেক্ষমান অবস্থায় পাবে, যিনি তাদের (অবিশ্বাসীদের) সাথে সকল হিসাব চুকানোর আয়োজন করে রেখেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ হিসাব গ্রহণে অতিসয় তত্পর। (সূরা আন-নূর: ৩৯) 

    -    রিসাত আহমেদ                           




“যত্রতত্র মাদরাসার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থী কমছে: শিক্ষামন্ত্রী”

খবরঃ

সারাদেশে যত্রতত্র কওমি-নূরানি মাদরাসা বাড়ছে। এতে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। এটি সবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, যে কারণে এটি নিরসন করতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ... জেলা প্রশাসকদের আশ্বস্ত করেছি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের নিবন্ধিত হওয়ার প্রক্রিয়ার বাইরে যারা মাদরাসা খুলছেন, সেগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়। সেক্ষেত্রে কীভাবে বেফাক তাদের ছয়টি বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন দিচ্ছে, তাদের সাথে কাজ করতে হবে। একটি বয়স-সীমা পর্যন্ত সেখানে যাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হয়। নয়তো শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না। তিনি বলেন, কখন শিক্ষার্থীরা স্কুলগুলোতে ভর্তি হয়, সেই সময়টাতে এসব (অ-নিবন্ধিত মাদরাসা) প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যায় কি-না, সেগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করব। তবে অ-নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর হার বাড়বে, আর নিবন্ধিত ও সরকারের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমবে, এটা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। [dailyinqilab.com/national/news/642766

মন্তব্যঃ

মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি জনগণের এই ঝোক হচ্ছে দেশের মানুষের বিদ্যমান সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। বাস্তবতা হচ্ছে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষিত তরুনদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার থাকছেন, [২০২১ এর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জরিপ]। অপর আরেকটি জরিপ বলছে ‘দেশে ৪৭ শতাংশ শিক্ষিতই বেকার’। বৃটিশদের হাতে গড়ে ওঠা এই সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা শুধুমাত্র কেরানি প্রস্তুত করার কারখানায় পরিণত হয়েছে। ছাত্রদের বিসিএস প্রীতি এরই উদাহরণ। গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান নিম্নমুখী। শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় আটশর মধ্যে একটিও বাংলাদেশের নেই। আর সম্প্রতি যে পরিবর্তন শিক্ষা কারিকুলামে আনা হয়েছে তা শিক্ষাব্যবস্থাকে পুরোটাই অকেজো করে দিবে। তথাকথিত আধুনিক সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থারই যখন এই বেহাল দশা তখন মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থাকে তথাকথিত আধুনিকায়ন করে কতটুকু কর্মসংস্থান সম্ভব? মুলতঃ শিক্ষামন্ত্রী তার মূল এজেন্ডাকে গোপন করতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন প্রয়োজন বলেছে। আর সেই মূল এজেন্ডা হচ্ছে জনগণের উপর সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ঘৃণ্য সেক্যুলার মূল্যবোধগুলো চাপিয়ে দেয়া, যাতে ইসলাম দমনে তাদের প্রকল্প অগ্রগামী হয়। 

এর পাশাপাশি এই শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের দিচ্ছে ভিকারুননিসার মুরাদের মত শিশুকামী আর মেডিক্যাল কলেজের রায়হান শরীফের মত পিস্তলধারী মাস্তান শিক্ষক। তাছাড়া পাওয়া যাচ্ছে উচ্চশিক্ষিত দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, ডাক্তার ইত্যাদি। ফলে, স্বাভাবিকভাবে এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ বিকল্প হিসেবে ইসলামের দিকে ছুটছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই সেক্যুলার ব্যবস্থায় সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে অন্য কোন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব, কারণ তা স্বাভাবিকভাবে রাষ্ট্রীয় বাধার সম্মুখীন হবে। মূলত শুধুমাত্র খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বর্তমান দুর্নীতগ্রস্ত সেক্যুলার শিক্ষার ব্যবস্থা অপসারণ করে ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন সম্ভব।

কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী রচিত হিযবুত তাহ্‌রীর কর্তৃক প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রের খসড়া সংবিধানের ১৭২ নং অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, “শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ তৈরী করা এবং জীবন সম্পর্কিত বিষয়ের জ্ঞান বৃদ্ধি করা।” এই দুটি উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই শিক্ষা কারিকুলামকে সাজানো হবে। ইসলামি ব্যক্তিত্ব তৈরি করতে ইসলামি সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত বিষয় যেমন, জীবনের উদ্দেশ্য, কাজের মাপকাঠি হারাম-হালাল, তাফসীর, ফিকহ, আরবি ভাষা ইত্যাদি শেখানো হবে। ফলে ছোটবেলা থেকেই প্রতিটি নাগরিক তাক্কওয়াবান হিসেবে গড়ে উঠবে। এর পাশাপাশি সমরবিদ্যা, ভূবিদ্যা, পদার্থ-রসায়ন ইত্যাদি, একাউন্টিং, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি বিষয়সমূহ ও পাঠদান করা হবে যাতে প্রচুর পরিমানে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরী হয়, এবং দেশের মধ্যে যোগ্য ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি অব্যাহত থাকে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ” [ইবনে মাজাহ]। এখানে জ্ঞান বলতে মূলত সেসকল জ্ঞানকেই বুঝাচ্ছে যা মানুষকে তার আকীদাহ্‌’র দিকে নিয়ে আসে এবং যা উম্মাহ্‌’র উপকারে আসে যেমন বৈজ্ঞানিক গবেষণা, ফিকহ কিংবা সমরবিদ্যা ইত্যাদি। 

    -    মো. হাফিজুর রহমান




“ইফতারে আঙুর-খেজুরের বদলে বরই-পেয়ারা খেতে বললেন শিল্পমন্ত্রী”

খবরঃ

আঙুর, খেজুরের পরিবর্তে বরই, পেয়ারা দিয়ে ইফতার করার পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই পরামর্শ দেন।… (https://www.ittefaq.com.bd/679739/ ইফতারে-আঙুর-খেজুরের-বদলে-বরই-পেয়ারা-খেতে-বললেন)

মন্তব্যঃ

আমাদের বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণের কোন অভিভাবক নেই। যাদের অভিভাবক হওয়ার কথা তারা একদিকে নিজেদেরকে মুখে জনগণের সেবক বলে দাবি করলেও বাস্তবে তারা জনগণের প্রভু সেজে বসে আছে। এই প্রভুদের কাজ হল জনগণের নূন্যতম প্রয়োজনগুলো পূরণ না করে বরং প্রয়োজনকে পুঁজি করে সুবিধা লুট করা। যেমন সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড এনবিআর বিলাসী পণ্য হিসেবে খেজুরের শুল্ক নির্ধারণ করেছে এবং ১২০ টাকা কেজির খেজুরে ২১০ টাকা শুল্ক নিয়ে খেজুরের আমদানি মূল্য করেছে ৩৩০ টাকা। যেহেতু সারাদিন রোজার পর ইফতারের জন্য খেজুর হচ্ছে কম খরচে গরীব মানুষসহ সাধারণ জনগণের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর   একটি অপরিহার্য উপাদান (যেটা পুষ্টিবিদগণ স্বীকার করেন) এবং খেজুর দিয়ে ইফতার করার মধ্যে আল্লাহ্‌’র রাসূল (সঃ) থেকে আসা প্র্যাকটিসের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে আবেগ রয়েছে, সেহেতু রমজানে দাম বাড়লেও মানুষ এটি ছাড়তে পারবে না। এজন্য সুযোগ বুঝে সরকার এর উপর ট্যাক্স বসানোটা লাভজনক মনে করছে। কারণ এই এক খেজুর দিয়ে এই সরকার এই রমযানেই প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা ট্যাক্স তুলতে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই এতে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই পরিস্থিতে তারা দিশেহারা অনুভব করছে। তখন এই শিল্পমন্ত্রী জনগণের খেজুর কেনার অক্ষমতাকে উপহাস করেছে এবং খেজুরের বদলে বড়ই, পেয়ারা ইত্যাদি খেতে বলছে, যদিও ইফতারের দ্রুত শক্তি জোগাতে ক্যালোরি ও পুষ্টিগুণে বরই খেজুরের ধারে কাছেও নেই। 

বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় শাসকরা কখনো জনগণের অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত হয় না, বরং তারা পুঁজিপতিদের সেবক হিসেবে পরিগণিত হয়। কারণ পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অর্থনীতির ক্ষেত্রে ‘ট্রিকল ডাউন ইফেক্ট’-এ বিশ্বাস করে, যেখানে বলা হয়, ‘সম্পদশালীদের সম্পদের যেটুকু চুইয়ে পড়বে, তা সম্পদহীনেরা পাবে’। এই বিশ্বাসের কারণেই এ ব্যবস্থায় শাসকরা জনগণের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব অনুভব করে না। বরং তারা চুইয়ে পড়লে যতটুকু থাকবে ততটুকু জনগণ পাবে, এই মতে বিশ্বাসী। এখানে পুঁজিপতিরাই মূলত শাসন ব্যবস্থায় ও আইন প্রণয়নে মূল ভূমিকা পালন করে। এই শিল্পমন্ত্রী নিজেও একজন পুঁজিপতি ও তার জাহাজের ব্যবসা রয়েছে এবং শিল্পমন্ত্রী হিসেবে তিনি এই ব্যবসায় এই সুবিধাভোগী, কারণ জাহাজশিল্প বাংলাদেশে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। 

তাই পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে আমাদের এমন শাসন ব্যবস্থা দরকার যেখানে জনগণ শাসকদেরকে পুঁজিপতিদের সেবক হিসেবে পাবে না বরং অভিভাবক হিসেবে পাবে। ইসলামী খিলাফত শাসন ব্যবস্থাই এমন একমাত্র শাসনব্যবস্থা, যে ব্যবস্থা শাসককে জনগণের অভিভাবক মনে করে। আল্লাহ্‌’র রাসূল (সঃ) বলেছেন, “খলিফা হচ্ছেন অভিভাবক এবং তিনি জনগণের জন্য দায়িত্বশীল” (বুখারী/মুসলিম)। ইসলামী শাসনব্যবস্থায় অভিভাবক হিসেবে শাসক কেমন ভূমিকা পালন করতেন তা আমরা দেখতে পাই ওমরের (রাঃ) খিলাফতকালীন সময়ে, তার শাসনামলে যখন মদিনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল তখন তিনি নিজেও চর্বি ও আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং এই কারনে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল। সেসময় ক্ষুধায় যখন তার পেট গুড়গুড় করতো, তখন তিনি বলতেন, “তুমি তোমার মতো করে গুড়গুড় করতে থাকো। এই যাত্রায় মানুষ বেঁচে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তোমার জন্য এছাড়া আর কিছুই নেই”। 

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম




“যেভাবে নীতা আম্বানির গলায় ঝুলছে একটা দেশের জিডিপি”

খবরঃ 

নীতা আম্বানির জীবনসঙ্গী মুকেশ আম্বানি ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার মালিক। এই পরিমাণ অর্থ নিয়ে তিনি শুধু ভারতেরই নন, এশিয়ার সেরা ধনী ও বিশ্বের নবম ধনী! ...সম্প্রতি ১ হাজার কোটি রুপি খরচ করে হয়ে গেল নীতা আম্বানি আর মুকেশ আম্বানি দম্পতির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক্‌–বিয়ের তিন দিনের আয়োজন। সেখানেই তৃতীয় দিনে ...একটা গয়না পরেন। ...গলার হারটির দাম ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি রুপির মাঝামাঝি। এর সঙ্গে আছে একজোড়া কানের দুল আর হাতের কঙ্কণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নীতা আম্বানির এই ছবি ভাইরাল মিম হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে লেখা ‘যেভাবে নীতা আম্বানির গলায় ঝুলছে একটা দেশের জিডিপি’। (https://www.prothomalo.com/lifestyle/fashion/upoiwz03fu)

মন্তব্যঃ

একদিকে ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ আম্বানি পরিবারের বিয়ে ও বিলাসিতার খবর নিয়ে ব্যস্ত, আর অন্যদিকে একইসময়ে ভারতের ৬৫%-৮০% মানুষের প্রতিনিধি কৃষকরা তাদের পণ্যের নূন্যতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার জন্য ভারত-সরকারের বিরুদ্ধে “দিল্লি চলো” কর্মসূচি পালন করছে। পূঁজিবাদী অর্থনীতির প্রকৃতচিত্র বিশ্ববাসীর সামনে ফুলে উঠেছে। পূঁজিবাদী অর্থনীতির অভিশাপ “ধনীরা আরও ধনী হবে আর গরীবরা গরীব” এই চিত্র যেন আরও স্পষ্ট খোদ আম্বানি পরিবার যে শহরে বসবাস করে তার। যে মুম্বাই শহরে আম্বানি পরিবারের সদস্যের গলায় ঝুলছে কোন দেশের জিডিপির সমমূল্যের হার, সে শহরের গলায় ঝুলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বস্তি “ধারাভি”। যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮৮৪ সালে এই উপমহাদেশে পূঁজিবাদী অর্থনীতির প্রবর্তক ব্রিটিশ উপনিবেশের হাত ধরে। এরপর ১৪০ বছর পার হলেও “ধারাভি” বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নত হয়নি; কিন্তু, নিতা আম্বানির গলায় পুরো ভারতবাসীর জিডিপির সিংহবাগ ঝুলিয়েছে। ২০২৩-এ বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম অর্থনীতির তকমা পাওয়া ভারত ২০২৩ সালেও হাঙ্গার ইন্ডেক্স-এ ১২৫ টি দেশের মধ্যে ১১১তম পজিশনে ছিল। বর্তমান পূঁজিবাদী বিশ্বের ৫ম অর্থনীতির এই অবস্থা প্রমাণ করে পূঁজিবাদী অর্থনীতি সাধারণভাবে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেনা। অক্সফামের রিপোর্টও তাই বলে, ভারতের ৪০% সম্পদ মাত্র ১% লোকের হাতে। এবং, এই চিত্র শুধু ভারতের নয়। এই চিত্র বাংলাদেশের, এই চিত্র আমেরিকার, এই চিত্র ব্রিটেন তথা সমগ্র পূঁজিবাদী বিশ্বেরই। গ্লোবাল সিটিজেনের রিপোর্ট অনুযায়ী মাত্র ১% লোক বিশ্বের অর্ধেক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করে। আর এটি হচ্ছে মূলত পূঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে। কেননা, পূঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে সম্পদের প্রবাহ যাতে একমুখী থাকে। এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা “ট্রিকল ডাউন” নীতি অনুযায়ী এমনভাবে সাজানো যাতে রাষ্ট্রের শুধুমাত্র অত্যধিক পূঁজির অধিকারী লোকজন সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে আর সাধারণ জনগণকে নূন্যতম সহায়ক মূল্য আদায় করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই করতে হয়। পূঁজিবাদের “ট্রিকল ডাউন” নীতি মূলত সাধারণ মানুষকে পূঁজিপতিদের পরজীবি হয়ে বাঁচিয়ে রাখার নীতি অর্থ্যাৎ পূঁজিপতিদের উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে থাকা। তাই এই ব্যবস্থায় সম্পদ মানুষের মধ্যে সঠিকভাবে বন্টন হয়না। এটি সবসময় কিছু গুটিকয়েক লোকের হাতেই কুক্ষিগত থাকে। যা ভালোভাবেই প্রতিফলিত হচ্ছে আম্বানি পরিবারের বিয়ের আয়োজনে।

অথচ, এই ভারতবর্ষ থেকে ইসলামী শাসনের অধীনে বিশ্বের জিডিপির ২৩% থেকে ২৭% পর্যন্ত আসত। এবং ঐ সময়ে সম্পদের এমন বৈষম্যও ছিলো না। কারণ, ইসলামি শরীয়াহ্‌ অনুযায়ী “সম্পদ গুটিকয়েক লোকের হাতে কুক্ষিগত রাখা নিষেধ”। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “ধন-সম্পদ যেন শুধু ধনীদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়” (সূরা-হাশরঃ৭)। ইসলামী অর্থনীতির পরিবর্তে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ সমগ্র ভারতবর্ষ যখন থেকে পূঁজিবাদী শাসনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে তখন থেকে এখানকার অর্থনীতি দূর্বল ও বৈষম্যপূর্ণ অবস্থায় আছে। পৃথিবীতে একমাত্র ইসলামি অর্থনীতি “সম্পদের সঠিক বন্টন”কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।  তাই এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছাড়া সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন এবং মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তিও সম্ভব নয়।  

    -    আসাদুল্লাহ্‌ নাঈম