খবরঃ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল আবার সামরিক আগ্রাসন শুরু করায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে এ নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়। একই সঙ্গে ইসরায়েলকে সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় পুনরায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের ফলে শিশু, নারীসহ বেসামরিক জীবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। নতুন করে এ সহিংসতা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি অবহেলার শামিল। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধ করতে এবং সর্বাধিক সংযম প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে এর বাধ্যবাধকতাগুলো সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘকে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে, বেসামরিক জীবন রক্ষা করতে এবং গাজার অবরুদ্ধ জনগণের কাছে নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য জরুরি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও আহ্বান জানাচ্ছে। (https://www.bd-pratidin.com/first-page/2025/03/20/1097613)
মন্তব্যঃ
ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমির সম্মানিত মুসলিমদের উপর অবৈধ ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের নিন্দা লোক দেখানো। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিটের বক্তব্য অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করেই ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করেই গাজায় ইসরায়েলের হামলা : হোয়াইট হাউস, কালের কন্ঠ, ১৮ মার্চ, ২০২৫)। অন্তর্বর্তী সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে হামলাকারী ইসরায়েল বা হামলার মদদদাতা আমেরিকাকে কি কোন চাপ দিয়েছে? সরকার কি লেবানন এবং ইসরায়েলের মধ্যবর্তী “বাফার জোনে” ইসরায়েলের নিরাপত্তায় মোতায়নকৃত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে এনেছে? (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিল এ অংশ নিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৭৫ জন সদস্যের চট্টগ্রাম ত্যাগ, আইএসপিআর, নভেম্বর ২৬, ২০২৪)। সরকার কি হামলার মদদদাতা আমেরিকাকে সম্পর্ক ছিন্ন বা কোন প্রকার কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপের হুমকী দিয়েছে? না, বরং সরকার অত্যন্ত নিবিড়ভাবে ক্রুসেডার আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উত্তরণের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছে এবং ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে একের পর এক মার্কিন সিনেটর কিংবা সামরিক কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর বিদ্যমান। অথচ, গাজায় আমেরিকার মদদে গণহত্যার নিষ্ঠুরতা চলমান!
মুলতঃ অন্তর্বর্তী সরকার নামকাওয়াস্তে বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশের মুসলিমদের ক্ষোভকে শান্ত করতে চেয়েছে যাতে আমেরিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কম হয়। যার প্রমাণ হচ্ছে, ২১ মার্চ ২০২৫ জুম্মার নামাজের পর হাজারে-হাজারে মানুষ রাস্তায় নামলে পুলিশকে দিয়ে তারা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিবাদগুলোকে থামানোর অপচেষ্টা করে। এমনকি, প্রতিবাদ মিছিল থেকে একাধিক মেধাবী তরুণসহ ইসলামপ্রিয় ও রোজাদার মুসলিমদের গ্রেফতার করা ও রিমান্ডে নেয়া হয়। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ ধানমন্ডিতে হিযবুত তাহরীরের মিছিলে পুলিশের বাধা, গ্রেপ্তার ৭, দ্যা টিবিএস, ২১ মার্চ, ২০২৫)।
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শক্ৰকে বন্ধুরূপে গ্ৰহণ করো না” (আল-মুমতাহিনা: ১)। অন্তর্বর্তী সরকার মুসলিমদের আবেগ, অনুভুতি ও বিশ্বাসকে ধারণ করে না, বরং তারা আমেরিকার মুসলিমবিরোধী আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশীদার এবং এদেশে উপনিবেশবাদী আমেরিকার রাজনীতির প্রক্সি। এদের সাথে ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে কি? এরা কখনোই মুসলিমদের অভিভাবক হতে পারে না। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই খলিফা হচ্ছে অভিভাবক, তিনি তার নাগরিকদের জন্য দায়িত্বশীল” (সহীহ্ বুখারী)। একমাত্র খলিফাই গাজার নির্যাতিত মুসলিমদের আমেরিকা-ইসরায়েলের হামলা থেকে মুক্তির জন্য সামরিক অভিযান পরিচালনা করবেন। নবুয়তের আদলে খিলাফত এই ভূমি থেকে আমেরিকার আধিপত্যের সকল প্রকার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক হাতিয়ারগুলো উৎখাত করবে, এবং মুসলিম ভূ-খন্ডগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে মুসলিম সেনাবাহিনীকে ফিলিস্তিন পবিত্র ভূমিসহ সকল অধিকৃত ভূমিকে মুক্ত করতে প্রেরণ করবে।
“নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হলেন ঢালস্বরূপ। তার পিছন থেকে যুদ্ধ করা হয়, তার দ্বারা (শত্রুদের কবল থেকে) নিরাপত্তা পাওয়া যায়” (বুখারী/মুসলিম/মুসনাদে আহমাদ/আল জামি)।
- মো: সিরাজুল ইসলাম