খবরঃ
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিমান হামলায় ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন শিশুও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, হুথিরা যদি ইসরায়েলের জাহাজগুলোর ওপর হামলার হুমকি তুলে না নেয়, তবে তাদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকবে। এদিকে, হুথি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, তারা দ্বিতীয়বারের মতো ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরীর ওপর হামলা চালিয়েছে। (https://www.ntvbd.com/world/news-1529045)
মন্তব্যঃ
আমেরিকা কোন অধিকারে, কোন স্পর্ধার বলে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ৫৩ জন মুসলিমকে হত্যা করেছে? মুসলিমরা তাদের জলসীমা দিয়ে কোন জাহাজ চলাচল করতে দিবে আর কোন জাহাজ চলাচল করতে দিবে না এটা একান্তই মুসলিমদের সিদ্ধান্ত। আমেরিকার দাবী যদি ন্যায্য হয়ে থাকে তাহলে আমেরিকা কেন জাতিসংঘকে আহবান করল না ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য? ইসরায়েলী জাহাজে হামলার বিচার চাইতে আমেরিকা কেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) মামলা করল না? কেন আমেরিকা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে পাশ কাটিয়ে নিজ হাতে হামলা করে ৫৩টি তরতাজা মুসলিম প্রাণকে হত্যা করল? এই প্রশ্নগুলো তাদেরকে করা উচিত— যারা বাংলাদেশে আমেরিকার হস্তক্ষেপের ও নিয়ন্ত্রনের পক্ষে নানান কুযুক্তি হাজির করে— যারা মুসলিমদের সমস্যার সমাধানের জন্য জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ আহ্বান করে— এবং যারা ফিলিস্তিনের ক্রমাগত মুসলিম নিধনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনায় উৎফুল্ল হয় ও হাসিনার বিরুদ্ধেও ICC-তে অনুরূপ মামলা দায়েরের মুলা ঝুলায়। মূলত: জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত হল আমেরিকার বিশ্বনিয়ন্ত্রণের সফ্ট পাওয়ার, যা দিয়ে সে দুর্বল-চিত্তের লোকদের চিন্তা ও দৃষ্টিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে এবং এই দুর্বল-চিত্তরা মুসলিম জনগণকে মূল সমাধান থেকে বিভ্রান্ত করে চলেছে।
গাজায় মুসলিম গণহত্যায় এতদিন আমেরিকা ইসরায়েলকে মারণাস্ত্র, অর্থ ও রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে সহায়তা করলেও এখন আমেরিকা ইয়েমেনে সরাসরি মুসলিমদের হত্যা করেছে এবং কোন রাখডাক না করেই হোয়াইট হাউস থেকে ঘোষণা করছে যে আমেরিকার আদেশেই ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় পুনরায় গণহত্যা শুরু করেছে। তাছাড়া, ইরাক-আফগানিস্তানের ২ মিলিয়ন মুসলিমের রক্তের দাগ যে আমেরিকার হাতে লেগে রয়েছে তা ভুলে গিয়ে কেউ যদি ক্ষমতায় বসতে আমেরিকার অনুগত হয়ে এই খুনির পক্ষে সাফাই গায়, তাহলে তার হাশর এই খুনিদের সাথেই হবে এবং রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর হাদীস অনুসারে মুসলিমদের সাথে গাদ্দারীর প্রতীকস্বরূপ তার পশ্চাতদেশে গেড়ে দেওয়া ‘বিশ্বাসঘাতক’ লেখা পতাকা বয়ে বেড়াবে। কারণ: আমেরিকা হল মুসলিম উম্মাহর আজন্ম শত্রু; এখানে কোন যদি বা কিন্তু নেই, ফুলষ্টপ!
হেকমতের নাম করে এই শত্রু আমেরিকার আনুগত্য করার কোন সুযোগ মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ মুসলিমদের জন্য রাখেন নি। প্রকৃত হিকমাহ্ হল এই শত্রুর সকল অপকর্ম ও অপরাধকে ক্রমাগতভাবে মুসলিমদের সামনে বিশদভাবে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে আমেরিকাকে এমন ঘৃণ্যভাবে চিত্রায়িত করা যাতে এদেশে খোদ ইবলিস শয়তানও নিজেকে আমেরিকাপন্থী বলে উপস্থাপন করতে লজ্জাবোধ করে ও জনগণের রোষানলে পরার ভয়ে ভীত হয়। প্রকৃত হিকমাহ্ হলো জনগণের আক্বীদাহ ও আকাঙ্ক্ষার শাসনব্যবস্থা হিসেবে খিলাফত পুন:প্রতিষ্ঠার পথের বাঁধাসমূহ অপসারণে সর্বশক্তি নিয়োগ করা, যা অবধারিতভাবে জনগণকে সীসাঢালা প্রচীরের মত ঐক্যবদ্ধ করবে ও আমেরিকার রাতের ঘুম কেড়ে নিবে।
- রিসাত আহমেদ