Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 45




 


Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৪৫ তম সংখ্যা ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

 

এই সংখ্যায় থাকছে:

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এখন পর্যন্ত হয়নি বন্দুকযুদ্ধ

বিছানার চাদর বালিশের কাভার কিনতে জার্মানি যাচ্ছেন আইজিপি

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- উৎক্ষেপণে রুশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

কর্ণাটকে হিজাব ইস্যুতে উত্তেজনা, অমিত সাহসী মুসলিম তরুণীর প্রতিবাদ

কওমী মাদ্রাসা: সরকারের কাছে মাদ্রাসার নিবন্ধনে রাজি নয় কওমী নেতৃত্ব, কিন্তু কেন?”

নিবন্ধন ছাড়া ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করা যাবে না

দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট খাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশিরা

দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়ে দেয়ালে দেয়ালে বিজ্ঞাপন

“গণপরিবহনে মাস্তানি”

ঢাকায় লিভ টুগেদার গ্রুপ, সদস্য হাজার ছাড়িয়েছে

 

  

 

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এখন পর্যন্ত হয়নি বন্দুকযুদ্ধ

খবরঃ

গত ১০ ডিসেম্বর RAB এর বর্তমান এবং সাবেক ৭ শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর মানবাধিকার সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অপরাধীদের মধ্যে কোনোবন্দুকযুদ্ধহয়নি মানবাধিকার সংস্থার তথ্য ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০ ডিসেম্বরের আগেবন্দুকযুদ্ধেমানুষ হত্যা একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের মতে, ২০০১ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধেঅন্ততঃ ৩ হাজার ১৩৫ জন নিহত হয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড এখন না হওয়া এটাই প্রমাণ করে যেবন্দুকযুদ্ধেরনামে হত্যা করা কিংবা তা বন্ধ করা সম্পূর্ণভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে (https://www.thedailystar.net/bangla/সংবাদ/বাংলাদেশ/মার্কিন-নিষেধাজ্ঞার-পর-এখন-পর্যন্ত-হয়নি-বন্দুকযুদ্ধ-303336)


মন্তব্যঃ

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের মানুষ হত্যা আপাতত বন্ধ দেখে এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, মানুষের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কারণ মানুষেরসার্বভৌমত্ব”, “স্বাধীনতাইত্যাদি ধারনাগুলো হল পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রসমূহের ছুঁড়ে দেয়া কিছু বিভ্রম (illusion) যেগুলোকে কেন্দ্র করে মুসলিম ভূমিগুলোতে তাদের, বিশেষ করে আমেরিকার, আধিপত্য (hegemony) গড়ে উঠেছে। বর্তমান পশ্চিমা ব্যবস্থায় তাই আমরা দেখি তাদের ভূ-রাজনৈতিক প্রয়োজনে তারা ইরাক, আফগানিস্তানের মুসলিমদের ‘sovereignty’ (সার্বভৌমত্ব) লঙ্ঘন করে সেসব দেশ সরাসরি দখলে রেখেছিল। একদিকে বিভিন্ন দেশে তাদের আশীর্বাদপুষ্ট দালাল সরকারগুলোর দ্বারা সংগঠিত গুম-খুন ও বন্দুকযুদ্ধের মত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রশ্নে নীরব ভূমিকা পালন করে এবং অন্যদিকে এই ঘটনাগুলোকে পুঁজি করে তাদের ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলের উদ্দেশ্য এসব দালালদের উপর চাপ প্রয়োগ করে যুগে যুগে তারা এই করে আসছে liberty, freedom and human sovereignty এর নামে। পশ্চিমা লিবারেল দর্শনের অন্যতম জনক জন লক (John Locke) মানুষের সার্বিক স্বাধীনতার কথা বলে মূলত মারকেন্টাইলিস্ট’দের উপনিবেশবাদি আগ্রাসন ও মানবতার লঙ্ঘনকে সমর্থন দিয়েছিল। রেনেসার যুগ থেকে ১৮শ শতক পর্যন্ত ইউরোপে মার্কেন্টাইলিজম (Mercantilism) প্রভাবশালী অর্থনৈতিক চিন্তায় পরিণত হয় ব্রিটিশ মার্কেন্টাইলিজম আমেরিকাসহ ব্রিটেনের অন্যান্য উপনিবেশগুলোতে দাস ব্যবসার বিকাশকে উত্সাহিত করেছিল এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থার (world order) অধীনেও পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীরা Human Sovereignty, Independence, Liberty, freedom ইত্যাদির পূর্ণ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে তারা মুসলিম ভূখন্ডগুলোর উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ভূ-রাজনৈতিক এজেন্ডা অর্জনের হাতিয়ার ব্যতীত ভিন্ন উদ্দেশ্যে এই শ্লোগাণগুলোকে ফেরি করে না ইতিপূর্বে এই শ্রুতিমধুর শ্লোগানগুলোকেই ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা উসমানী খিলাফত ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করেছিল তাই আমাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে গুম-খুনের পরিমাণ কমে যাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলে চলবে না বরং সাম্রাজ্যবাদীদের এই প্রতারণার কৌশল নিয়ে সচেতন হতে হবে তারা এক জালিম থেকে আরেক জালিম শাসকগোষ্ঠীকে ক্ষমতায় বসাবে গণতন্ত্র ও মানবতা রক্ষার নামে, কিন্তু তাদের আধিপত্য ঠিকই বলবত থাকবে


এই যুলুম-নির্যাতন থেকে মানবতার মুক্তি বা ফ্রিডম খুজতে হলে আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা প্রদত্ত ইসলামী জীবনব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া ভিন্ন কোন পথ খোলা নেই ইসলাম মানুষকে সার্বভৌমস্বাধীনঘোষণা দিয়ে তাদের হাতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেয় না তাই ইসলামী শাসনব্যবস্থায় কোন মুষ্টিমেয় ক্ষমতাবান শ্রেণীর উদ্ভব হবে না যারা নিজেদের হীনস্বার্থে জনগণের জান-মাল বিনাশে সর্বদা তৎপর থাকবে। অন্যদিকে, ইসলামী খিলাফতের প্রত্যাবর্তনে পশ্চিমা বিশ্ব ব্যবস্থার পতন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র; নিজেদের অস্তিত্ব ও আধিপত্যের সংকট নিয়েই তারা থাকবে তটস্থ, মুসলিম ভূমিগুলোতে হস্তক্ষেপ করাতো দূরে থাক। তাই আমাদের এদেশের মিডিয়ার বা তথাকথিত বুদ্ধিজীবি/বিশ্লেষকদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ন্যারেটিভ’কে চ্যালেঞ্জ করতে হবে যাতে জনগণ সঠিক চিন্তা করার খোরাক পায়। জনগণকে বুঝাতে হবে যে, সমস্যার গোঁড়া হাসিনা সরকারের গুম-খুন না বরং পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ যাদের মদদে বাংলাদেশে একের পর এক দালাল শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় আসে এবং যুলুমের রাজত্ব তৈরি করে। খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই দালাল শাসকগোষ্ঠীর জন্মদাতা সাম্রাজ্যবাদীদের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে মূলোৎপাটন করতে হবে যেটার সাথে সাথে পশ্চিমাদের আধিপত্যও বিলুপ্ত হবে এবং জনগণ প্রকৃত মুক্তি লাভ করবে।

-       মোহাম্মদ সিফাত


 

বিছানার চাদর বালিশের কাভার কিনতে জার্মানি যাচ্ছেন আইজিপি

খবরঃ

পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য বালিশের ডাবল কাভারসহ এক লাখ বিছানার চাদর আনা হচ্ছে জার্মানি থেকে৷ স্থানীয় ঠিকাদারের সরবরাহ করতে যাওয়া এসব পণ্যের মান পরীক্ষা করতে জার্মানি যাওয়ার অনুমতি নিয়েছেন পুলিশ প্রধান . বেনজীর আহমেদ৷ অবশ্য এই ধরনের পণ্য বাংলাদেশেই তৈরি হয় এবং এখন অ্যামেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া ইউরোপসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে৷ জার্মানিতেও এসব পণ্যের বড় বাজার আছে৷ (www.dw.com/bn/বিছানার-চাদর--বালিশের-কাভার-কিনতে-জার্মানি-যাচ্ছেন-আইজিপি/a-60715686)

মন্তব্যঃ

জনাব বেনজীর আহমেদেরবালিশ চাদরের রঙ পরীক্ষারএই ভ্রমনকে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তীব্রতা পরীক্ষার সফর বলে অভিহিত করছে তবে বাস্তবতা যাইহোক না কেন সরকারের এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন হাস্যকর কারণে বিদেশ ভ্রমণ নতুন কিছু নয় এর আগেও আমরা দেখেছি নিরাপদ পানি সরবরাহের প্রশিক্ষণের জন্য উগান্ডায়, খিচুড়ি রান্না শিখতে ভারতে, পুকুর দিঘী পুনঃখনন শিখতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড নেদারল্যান্ডসে, লিফট কিনতে সুইজারল্যান্ড স্পেনে, গবাদি পশুর জন্য উন্নত পুষ্টিসমৃদ্ধ ঘাস চাষ শিখতে জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডে, বোয়িংয়ের কাছ থেকে কেনা বিমান আনতে ৪৫ জনের যুক্তরাষ্ট্র গমনএই তালিকা অসীম


মূলত এই ধরণের প্রমোদভ্রমণসমূহের অর্থের যোগান হয় দুইভাবে এক, জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে (বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে); দুই, দেশী কিংবা বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে যারা এই ধরনের প্রমোদভ্রমনের আয়োজনের মাধ্যমে কাজ বাগিয়ে নেয় যেমন, বেনজির আহমেদের এই রঙ পরীক্ষার সফরের আয়োজক হচ্ছে স্বয়ং আমদানিকারক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাছাড়া ২০১৯ সালে চট্রগ্রাম ওয়াসার এক প্রকল্পের ২৭ জন কর্মকর্তার উগান্ডা ভ্রমনের অর্থায়ন করে উগান্ডারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যান্ড স্যুয়ারেজ করপোরেশনকারণ তারা নিজেরাই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এসকল ঘটনা থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে যে, জনগণের সেবা করার মহান দায়িত্ব কাধে নিয়ে এসকল শাসক আমলাগোষ্ঠী কিভাবে জনগণের কষ্টার্জিত টাকা নিজেদের আনন্দ-ফূর্তির জন্য ব্যয় করে? কিংবা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে বৃহৎ স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়? মূলত এরা রাজনীতি কিংবা সরকারী দায়িত্বকে জনগণের সেবা করার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ না করে বরং একে গ্রহণ করেছে নিজেদের ক্যারিয়ার হিসেবে ফলে তাদের সকল কার্যক্রমের একটিই উদ্দেশ্য থাকে আর তা হচ্ছে নিজেদের লাভ বা মুনাফাকে সুনিশ্চিত করা এর ফলে জনগণের স্বার্থ যদি ভূলুণ্ঠিত হয় তাতে তাদের কিছু যায় আসে না সুতরাং যতদিন এই দুর্নীতিগ্রস্ত মানবরচিত ব্যবস্থা দ্বারা আমরা শাসিত হতে থাকব ততদিন ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে


পক্ষান্তরে আমরা যদি ইসলামের দিকে তাকাই তাহলে দেখব, ইসলাম রাজনীতিকে অর্থাৎ জনগণের বিষয়াদি দেখাশুনা করাকে একটি মহান ইবাদত হিসেবে গণ্য করেছে যেমন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত করা হবে অতএব, ইমাম যে তার অধীনস্তদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন(বুখারী) পাশাপাশি ইসলাম ন্যায়পরায়ন শাসকের কাজকে সর্বোচ্চ সম্মানের কাজ হিসেবে গণ্য করেছে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্সাতশ্রেণীর মানুষকে হাশরের দিন তার আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না তারা হলেন: . ন্যায়পরায়ণ শাসক………………. (বুখারী মুসলিম) ইসলামী রাষ্ট্র তথা খিলাফতে শাসক তার দায়িত্বকে আমানত মনে করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তা পালনের জন্য কারণেই আমরা দেখেছি খিলাফত ব্যবস্থায় খলিফা উমরের (রা.) মত শাসক তৈরী হয়েছেন যিনি সর্বদা জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় খরচের ব্যাপারে ছিলেন সদা সতর্ক খলিফা উমর যখন ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে জেরুজালেমের আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তখন তার সফরসঙ্গী ছিল মাত্র একটি গাধা আর একজন ভৃত্য ইসলাম শাসক সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণকে ইসলামী আদর্শের প্রচারের (দাওয়াহ্‌) সাথে সংযোগ করেছে নিছক বিনোদনের জন্য রাষ্ট্রীয় টাকায় প্রমোদভ্রমণের আয়োজন এখানে অকল্পনীয়, আর ঘুষ বা শত্রুদের অর্থায়নে বিদেশভ্রমনতো কল্পনাতীত

-       মো. হাফিজুর রহমান

 

 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- উৎক্ষেপণে রুশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

খবরঃ

দেশের দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে রুশ প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমসের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি... বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ২০১৮ সালের ১২ মে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ফরাসি কোম্পানির তৈরি সেই কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার সাড়ে তিন বছরের মাথায় দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকেনতুন মাইলফলকহিসেবে অভিহিত করেছেন মোস্তাফা জব্বার (https://www.deshrupantor.com/last-page/2022/02/03/342974)

মন্তব্যঃ

বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার অব্যাহত ব্যর্থতা যেন জনগণকে এ ব্যবস্থার প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে না তোলে তাই এদেশের শাসকগোষ্ঠী লোক দেখানো ডিজিটাল উন্নয়নের গল্প এটেছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প সেই গল্পেরই ধারা দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ এই শাসকগোষ্ঠী এসব উচ্চাভিলাষী প্রকল্প আসলে কি উদ্দেশ্যে কাদের স্বার্থে হাতে নেয় তা খতিয়ে দেখতে হবে তারা যদি আসলেই আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন তাহলে তারা এমুহূর্তে মহাশূন্যে স্যাটালাইট না পাঠিয়ে দরিদ্র মানুষের ঘরে খাবার পাঠানোর উদ্দ্যোগ নিতেন তাহলে এদেশে বেকার যুবকদের ভাতের জন্য টিউশনির বিজ্ঞাপন দেয়ালে আঁটতে হত না, ক্ষুধার যন্ত্রণায় কোন মাকে তার কোলের সন্তানকে বিক্রি করতে হত না, হিম শীতল ভূমধ্যসাগরের লোনা জলে ঠাণ্ডায় জমে কোন বাবার সন্তানকে মরতে হত না প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা দরিদ্র জনগণের উপর চাপিয়ে উৎক্ষেপণ করা প্রথম স্যাটেলাইট থেকে আমরা কি পেলাম? শাসকগোষ্ঠী যতই দম্ভ করে দাবী করুক যে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে আসলে অপরিকল্পিত ও ব্যয়বহুল প্রকল্পের সমালোচনা তারা এড়াতে পারছে না (দেখুনঃবঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটঃ প্রথমটি অলাভজনক রেখে দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের প্রয়োজন কী?”, বিবিসি বাংলা, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২) শাসকগোষ্ঠীর আসল উদ্দেশ্য ছিল তাদের পশ্চিমা প্রভুদের তুষ্ট করা এবং সেই সাথে কমিশন বাবদ নিজেদের পকেট ভর্তি করা; আর জনগণকে ডিজিটাল উন্নয়নের মোয়া ধরিয়ে দেয়া তাদের স্বার্থসিদ্ধ হয়েছে ঠিকই, জনগণের কাঁধে ঋণের বাড়তি বোঝা ছাড়া পাওনার ঘর শূন্য বলা হয়েছিল, টেকনোলজি ট্রান্সফার হবে; পরের বার স্যাটেলাইট আমাদের দেশীয় বিজ্ঞানীরা আমাদের মহাকাশ সংস্থায় নির্মাণ করতে সক্ষম হবে কিন্তু আবারও প্রমাণিত হল গণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে জনগণকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করতে কুণ্ঠিত হয় না


বিশ্বের বুকে মাথা উচ্চ করে দাঁড়াতে হলে একটি জাতির আদর্শিক ও রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা থাকা জরুরি এদেশের দুর্নীতিবাজ গণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠীর সেই ভিশন নেই পুরো বিশ্বের সামনে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হলে আমাদের দরকার হবে এই মানবরচিত গণতান্ত্রিক জুলুমের ব্যবস্থা থেকে মুক্তি আমরা মুসলিমরা সে সম্মান পেতে পারি যদি আমরা ইসলামের কাছে ফিরে যাই ইসলামের আদর্শে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খিলাফাতে রাশেদাহ্পুনঃপ্রতিষ্ঠা করি অতীতে খিলাফত রাষ্ট্র জ্ঞান-বিজ্ঞানে সামনে থেকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে পশ্চিমারা এটা দেখাতে সচেষ্ট যে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সাথে ইসলামী বিশ্বাসের কোন সম্পর্ক নাই যাতে তারা আমাদের ভুমিগুলোতে তাদের জীবনাদর্শ ঢুকিয়ে দিতে পারে তাদের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের ছদ্মাবরনে কিন্তু বাস্তবতা হল অতীতে ইসলামী আক্বীদা দুনিয়াতে বাস্তবায়নের স্বার্থেই খলিফারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা অর্জন করেছিলেন নৌ প্রযুক্তির (naval technology) উন্নয়নের কাজ হাতে নেয়া হয়েছিল খলিফা ওমরের (রা.) সময় আব্বাসীয় খলিফা আল-মনসুর বাগদাদকে নির্মাণ করেছিলেনমদিনাতুস সালাম” (the city of peace) যা জ্ঞানবিজ্ঞানের কেন্দ্রে পরিণত হয় তার পৃষ্ঠপোষকতার কারণে অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাগণ (বিশেষ করে হারুনুর রশিদ, আল-মামুন) বাগদাদে বায়তুল হিকমাহ্স্থাপন করেছিলেন, যা অনুবাদকেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরবর্তীতে বিশ্বের একনম্বর গবেষণাকেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় তাছাড়া, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না শুধুমাত্র বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা কখনই উন্নয়নের মাপকাঠি হতে পারে না যদি না সে উন্নয়ন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজে আসে তাই আমরা দেখেছি বিজ্ঞানে এত অগ্রগতির পরও পশ্চিমা সভ্যতায় করোনা মহামারিতে মানুষজন রাস্তায় ধুকে ধুকে মরেছে অথচ অতীতে ইসলামী খিলাফতের আওতায় জ্ঞান-বিজ্ঞান অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ছিল শারিয়াহর বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যের (মাকাসিদ আশ-শারিয়াহ) সাথে তথা মানবজীবন রক্ষা ও তার ক্রমাগত মানবৃদ্ধির সাথে  তাই আমরা দেখেছি খিলাফতের প্রদেশগুলোতে হাসপাতাল থাকা বাধ্যতামূলক ছিল যেখানে ধনী-গরীব ভেদাভেদ ছিল না, বর্তমানউন্নত” (developed) ইউরোপ-আমেরিকার মতো ইনস্যুরেন্স এর অভাবে গরীবদের ধুকে ধুকে মরতে হয়নি

-       আবু যায়েদ



কর্ণাটকে হিজাব ইস্যুতে উত্তেজনা, অমিত সাহসী মুসলিম তরুণীর প্রতিবাদ

খবরঃ

ভারতের কর্নাটকে অমিত সাহস দেখালেন এক মুসলিম তরুণী ওই রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিপুল সংখ্যক সমর্থকের সামনে একাই জানিয়ে দিলেন তিনি মুসলিম মাথা নত করার নয়জয় শ্রীরামস্লোগান দিয়ে যখন বিজিপি সমর্থকরা তাকে ঘিরে ধরে, তখন তিনি মোটেও কম্পিত হননি বিপুল সংখ্যক ছাত্রের এমন বিক্ষোভ দেখে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি ওই তরুণী শিক্ষার্থী উল্টো তিনি তাদের সামনে দাঁড়িয়ে হাত উঁচু করে স্লোগান দেন- ‘আল্লাহু আকবর একবার দুবার নয় বেশ কয়েকবার এ স্লোগান দেন তিনি এনডিটিভি বলছে, উদুপির গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে গত মাসে শুরু হয় হিজাব বিষয়ক প্রতিবাদ বিক্ষোভ ওই সময় ৬ জন ছাত্রী অভিযোগ করেন, মাথায় স্কার্ফ পরে ক্লাস করায় তাদেরকে বাধা দেয়া হয়েছে (https://mzamin.com/article.php?mzamin=315014&cat=8)
মন্তব্যঃ

ভারতের কর্ণাটকে আমাদের মুসলিম বোন মুসকান গোটা বিশ্ববাসীকে শিখিয়ে দিল কিভাবে আল্লাহ্‌'র শত্রুদের সামনে বীরত্বের সাথে মাথা তুলে দাঁড়াতে হয় এবং আল্লাহ্‌'র হুকুম পালনের জন্য সকল ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করতে হয়আল্লাহু আকবারস্লোগানের মাধ্যমে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের মিছিলকে একাই মোকাবেলা করা এই মুসলিম বোনের অমিত সাহসী পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং পরক্ষণেইআল্লাহু আকবারএবং হিন্দি শব্দ "শেরনি" (বাঘিনী) টুইটারে ট্রেন্ডিং হয় অথচ কতই না পরিতাপের বিষয় মুসলিম ভূখন্ডের শাসকরা বিশাল সামরিক শক্তির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কখনও ইসলাম কিংবা মুসলিমদের স্বার্থে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, ফিলিস্তিন, কাশ্মীরে ও ফ্রান্সে দুর্বৃত্ত ক্রুসেডাররা যখন আমাদের নারী ও কন্যাদের মাথার আচ্ছাদন ছিড়ে ফেলছে, হিজাব পরিধানের উপর জরিমানা এবং নিষিধাজ্ঞা আরোপ করছে তখন আমাদের নারী ও কন্যাদের জান-মাল, ইজ্জত ও পবিত্রতা রক্ষার্থে মুসলিম শাসকগণ পাথরসম নীরবতা পালন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মার্কিন-বৃটেন এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্র ভারতের ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য রক্ষায় সর্বোচ্চ সহযোগীতা করে যাচ্ছে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পাকিস্তানের ইমরান-বাজওয়া সরকার কিভাবে কাশ্মীরের মুসলিমদের ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পিঠে ছুরিকাঘাত করেছে ভারত বারংবার রেড লাইন অতিক্রম করা সত্ত্বেও বিশ্বাসঘাতক ইমরান-বাজওয়া সরকার মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতের সাথে দ্বন্দ্ব পরিত্যাগ করেছে এবং পাকিস্তানের সমীহ জাগানো সেনাবাহিনীকে ভারত অভিযানে প্রেরণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন ও হত্যাকান্ড মোকাবেলায় সেনাবাহিনী প্রেরণ না করলেও বাংলাদেশের হাসিনা সরকার সম্প্রতি অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি বৃহৎ নৌ-মহড়ায় যোগ দিতে আমাদের মুসলিম সেনাবাহিনীকে প্রেরণ করেছে কাশ্মির ও আসামসহ সমগ্র ভারতে যখন মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার হয় তখন হাসিনা সরকারও ইমরান খানের মত একই সুরে এটাকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করে তাই যখন একজন নিরস্ত্র মুসলিম তরুণী ইসলামকে রক্ষায় এমন সাহস দেখাতে পারে কিন্তু এসব শাসকরা সুসজ্জিত সেনাবাহিনী ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়েও পারে না, তখন আর এটা বুঝার বাকি থাকে না যারা আমাদেরকে নেতৃত্ব দেয় তারা আসলে পুরুষ নয়, এমনকি তারা গাধাও (Donkey) নয়!


মুসলিম ভূখন্ডে নিয়োজিত মেরুদন্ডহীন ও দালাল শাসকদের হাতে আমাদের দ্বীন ইসলাম, উম্মাহ্‌’র সার্বভৌমত্ব এবং আমাদের নারী ও কন্যাদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয় এই উম্মাহ্‌’র এখন একান্ত প্রয়োজন মুহাম্মদ বিন আল কাসিম আল-সাকাফির মত সাহসী সেনাবাহিনীর জেনারেল যিনি অত্যাচারী রাজা দাহির কর্তৃক মুসলিম নারী ও শিশুদেররকে নির্যাতনের প্রতিক্রিয়াস্বরুপ ভারতবর্ষে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে সমগ্র সিন্ধু অঞ্চলসহ পাঞ্জাবের নিমাঞ্চলকে খিলাফতের অধীনে নিয়ে এসেছিলেন তাই আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী মুশরিক শাসকদের উৎপীড়ন থেকে আমাদের নারী ও কন্যাদেরকে মুক্ত করার জন্য মুসলিম সেনাবাহিনীকে জিহাদে প্রেরণ করবেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই ইমাম(খলীফা) হচ্ছেন ঢালস্বরুপ যার পেছনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদের  আত্মরক্ষা করে(মুসলিম) আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্রের খলীফা এ উপমহাদেশে শান্তি ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য খিলাফতের শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে ভারত অভিযানে প্রেরণের মাধ্যমে এ কালের রাজা দাহির নরেন্দ্র মোদীকে অপমান অপদস্ত অবস্থায় বন্দী করবে এবং সমগ্র ভারতবর্ষকে পুনরায় ইসলামী শাসনের অধীনে ফিরিয়ে আনবে ইনশাল্লাহ 

-       মোহাম্মদ সিফাত

 


কওমী মাদ্রাসা: সরকারের কাছে মাদ্রাসার নিবন্ধনে রাজি নয় কওমী নেতৃত্ব, কিন্তু কেন?”

খবরঃ

কওমী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের কাছে নিবন্ধনের প্রস্তাবে রাজি নয় বেসরকারি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নেতৃত্ব। তারা বলেছেন, নিবন্ধনের আওতায় এনে সরকারের তদারকি বাড়ানো হলে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকীয়তা থাকবে না। অন্যদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “শুধু ধর্মতত্ত্বের ওপর শিক্ষা নিয়ে তাদেকিন্তু কর্মযোগ্যতা হয় না। তার ফলে একটা বিশাল জনগোষ্ঠী সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। তাদের কর্মদক্ষতা না থাকায় তারা কোথাও চাকরি পাচ্ছে না সেজন্যই আমরা তাদের শিক্ষা নিয়ে একসাথে কাজ করছি এখানে নিয়ন্ত্রণ বা তদারকির কিছু নেই (https://www.bbc.com/bengali/news-60223311)

 

মন্তব্যঃ

আল্লাহ্‌বিবর্জিত বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার ধারক বাহকদের কথা হঠাৎ শুনে মনে হতে পারে, তারা জনগণের কর্মদক্ষতা নিয়ে কতটা চিন্তিত(!), অথচ বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পাশকৃত সরকারী হিসাবে কর্মদক্ষ (!) ৪০%ই শিক্ষিত বেকার এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করা দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই কর্মহীন (BIDS জরিপ, ২০২১) সেখানে সরকারের কওমি মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে এত চিন্তা যেন কুমিরের অশ্রু বিসর্জন!


তারা কর্মদক্ষতা ও যথাযথ কর্মসংস্থান এর আশা দিয়ে একদিকে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করে ব্যয়বহুলভাবে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে, অপরদিকে পাশ করার পর তরুণদের চাকরির আশা বাদ দিয়ে দ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়ে নির্লজ্জভাবে দায় সারে বিভিন্ন আয়োজনে কখনো মুখস্থবিদ্যা কখনো সৃজনশীল,  জিপিএ ফাইভ, গোল্ডেন  অথবা বিভিন্ন  মিডিয়াম, ভার্শন, পাবলিক, প্রাইভেট, জাতীয়, সাত কলেজ, উন্মুক্ত, কত রকম নামে আমরা শিক্ষাব্যবস্থার প্রহসন দেখি, অথচ এতকিছুর পর পাশ করা সেই শিক্ষার্থীরা দেখে এত বছরের পড়াশুনার সাথে কর্মসংস্থানের কোন সম্পর্কই নেই। ইউনিভার্সিটির মেধাবী শিক্ষার্থীরা তখন বিজ্ঞান গবেষণা আবিষ্কার বাদ দিয়ে বিসিএস-এর জন্য ইতিহাস মুখস্থ করে, অথবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে কেরানীর চাকরি বা  ইঞ্জিনিয়ার হয়ে মাছের চাষ আর মুরগীর খামারী হবার চেস্টা করে। শিক্ষাব্যবস্থা আর কর্মসংস্থানের যখন এই হাল তখন কার্যকরী পদক্ষেপ বাদ দিয়ে কওমি মাদ্রাসার সিলেবাসকে আধুনিকীকরণের ভন্ডামী আসলে মাদ্রাসাগুলোয় ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীর আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ মাত্র


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা, যিনি আমাদের মহান রব ও আমাদের বিধানদাতা তার কাছ থেকে আসা ইসলাম একটি পূর্ণাংগ জীবনব্যবস্থা যেখানে দ্বীনি ও দুনিয়াবী শিক্ষা বলে আলাদা কিছু নেই। ইসলামের শাসক তথা খলিফা এখানে বাধ্য একটি একমূখী  শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে, যা একদিকে মানুষকে আল্লাহভীরুতা শিক্ষা দিবে, অন্যদিকে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে পারদর্শীও করবে। খিলাফতের সাড়ে তেরশ বছরের ইতিহাসে তাই আমরা শারীয়াহ্‌ জ্ঞানের অসংখ্য মুজতাহিদকে যেমন দেখি তেমনি পাশাপাশি রসায়নের জনক জাবির ইবন হাইওয়ান, বিমান আবিস্কারের জনক খ্যাত-আব্বাস ইবনে ফিরনাস, উদ্ভিদ তত্ত্ববিদ আব্দুল ইবনে আহমেদ, আলোক বিজ্ঞানের জনক-হাসান ইবনে হাইসাম, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক আল জাজারি, আধুনিক সার্জারির জনক আল-জাহরাভি সহ অসংখ্য মুসলিম জ্ঞানী বিজ্ঞানীকেও দেখি। আসন্ন খিলাফত ব্যবস্থাতেও ইনশাআল্লাহ্‌ সেক্যুলার মাদ্রাসা-ইংলিশ-বাংলা মিডিয়াম এই সমস্ত বিভাজন বাদ দিয়ে একটি পূর্ণাংগ একমূখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন হবে। কর্মচাহিদার সাথে সংগতিপূর্ণ রেখে উম্মাহ্‌কে প্রশিক্ষিত করবে জ্ঞান, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, সমরাস্ত্র, শিল্প, কৃষি, বাণিজ্যসহ সবদিক থেকে যাতে এই উম্মাহ্‌ শুধু মুসলিম জাহান নয়, বিশ্বকেই সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারে।  যেমনটি আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে হতে বলেন সূরা আলি ইমরানের ১১০ নাম্বার আয়াতেতোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহ্‌’র প্রতি ঈমান আনবে”

 

-       আফিয়া আনসারী

 

নিবন্ধন ছাড়া ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করা যাবে না

খবরঃ

কমার্স খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার এরই অংশ হিসেবে চালু হতে যাচ্ছে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (ইউবিআইডি) নম্বর কমার্স খাতের ব্যবসা করতে এখন ইউবিআইডি নম্বর বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে ফলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যারা ব্যবসা করবেন তাদেরও নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে (https://www.banglainsider.com/news_details/103950)

মন্তব্যঃ

প্রতিবছর দেশে ৬ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগের বিপরীতে কর্মবাজারে প্রবেশ করেছে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ যার ফলে বাংলাদেশে বেকারত্ব ক্রমর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে সৃষ্টিশীল অংশটি প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের অভাবে অনলাইনকেন্দ্রিক ব্যাবসায় নিয়জিত হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের চেষ্টা করে আসছে করোনার অজুহাতে সরকার যখনলকডাউনঘোষণা করে তখন থেকে এই খাতের প্রবৃদ্ধি নতুন মাত্রা যোগ করে এই প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রভাবশালী মহলের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় চটকদার বিজ্ঞাপন এবং অফার নিয়ে হাজির হয় নতুন নতুন কিছু ই-কামার্স প্রতিষ্ঠান এই প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের বিক্রয়মূল্যের উপর ২০%-১৫০% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের আকর্ষণ করে এই সকল প্রতারণামূলক অফারের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়গুলোকে এই সকল প্রতিষ্ঠানের হাতে পুঞ্জিভূত করা সরকার এই প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে শুধুমাত্র চুপ ছিল না বরং জাতীয় ক্রিকেট দলের স্পন্সর, পদক এবং প্রশংসামূলক নানা বক্তব্য দিয়ে এই সকল প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মানুষ ঠকানোর কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি প্রদান করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এক পুরুষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “-ভ্যালির মত প্রতিষ্ঠানগুলো এক সময় বাংলাদেশের আলিবাবা এবং আমাজান হবে কিন্তু যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়ে পরে তখন সরকার এই সকল প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সাধারণ মানুষের অর্থ আদয়ের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে এই খাতের উপর পাইকারী বিধিনিষেধ আরোপ করে শাসকগোষ্ঠী তাদের ব্যর্থতার দায়ভার সাধারণ উদ্যোক্তাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে


সরকার প্রতারকদের কবল থেকে জনগণের অর্থরক্ষার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয় নাই বরং, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এই সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ট্রেড লাইসেন্স, টিন (TIN) নম্বর, বিন (BIN) নম্বরের পর ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (ইউবিআইডি) নম্বরের নামে নতুন আরএকটি ঝামেলাচাপিয়ে দিয়েছে যার ফলে এই সকল ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোর ব্যবসার পরিচালনা ব্যয় যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নও হবে বাধাগ্রস্ত এই নতুন পদক্ষেপের ফলে তরুণ উদ্যোক্তাদের আত্মকর্মসংস্থান যে আরও কঠিন হয়ে পড়বে সে বিষয়ে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বেখবর কারণ তাদের কাছে জনগণের জীবিকা অর্জনের সমস্যা কোন সমস্যা নয় উল্লেখ্য, এই শাসকগোষ্ঠীর অনুসৃত পুঁজিবাদী অর্থনীতি বিশ্বাস করে সকলের জন্য অর্থ কামানোর দরজা উন্মুক্ত রাখা যাবে না কিছুটা হলেও বেকারত্ব সমাজে রাখতে হবে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে হবে যাতে পুজি (capital) মুষ্টিমেয় পুঁজিপতিদেরই নিয়ন্ত্রণে থাকে সেটার অংশ হিসেবেই এই অযাচিত কড়াকড়ি আরোপ অনলাইন ব্যবসায়ীদের ওপর, যেটা মূলত বড় পুঁজির মালিকদের জন্য স্বস্তিদায়ক একটি খবর


অন্যদিকে, খিলাফত রাষ্ট্রের কাছে প্রতিটি নাগরিকের সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য খলিফা (রাষ্ট্র প্রধান) ব্যবসা-বাণিজ্যের ট্রেড লাইসেন্স, টিন নম্বর, বিন নম্বর, ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (ইউবিআইডি) নম্বরসহ সকল প্রকার প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতা শুধু দূরই করবেন না বরং এই ধরণের ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করার জন্য তাদেরকে বায়তুল মাল থেকে সুদমুক্ত ঋণ, অনুদান এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করবেন যাতে তারা তাদের উদ্যোগগুলো থেকে উত্তম জীবিকা উপার্জনের সুযোগ পায় খলিফা ধর্ম-বর্ণ-আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য অভিভাবক হিসেবে কাজ করছেন, ইমাম (খলীফা) হলেন অভিভাবক এবং তিনি তার নাগরিকদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী) খিলাফতের অধীনে ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা শুধুমাত্র একটি বিকল্প ব্যবস্থাই নয়, বরং মানবতার সার্বিক মুক্তি ও কল্যানের জন্য এটাই একমাত্র সত্য ব্যবস্থা যা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্রাব্বুল আলামিন থেকে এসেছে অসীম সত্তা সৃষ্টিকর্তা হিসেবে জানেন তার সৃষ্টির কল্যাণে কি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হয় তিনি বলেন, যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না?” (সুরা মূলক, আয়াত ১৪)

-       মো: সিরাজুল ইসলাম 

 

দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট খাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশিরা

খবরঃ

কোভিড মহামারির ১৮ মাসে দুবাইতে রিয়েল-এস্টেট এবং আবাসনে বিনিয়োগের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিনিয়োগের পরিমাণ ১২৩ মিলিয়ন দিরহাম বা প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা কিন্তু পারস্য উপসাগরীয় ধনাঢ্যদের শহরে এই অর্থ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে যায়নি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর সিংহভাগই পাচার করা- কালোটাকা দুবাইয়ের বাংলাদেশি কমিউনিটি সূত্র জানিয়েছে এসব ক্রেতারা হলেন- বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আমলা (https://www.tbsnews.net/bangla/অর্থনীতি/news-details-82618)

মন্তব্যঃ

দুবাই বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ‘Offshore financial centre’ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এধরণের অনেকগুলো স্থান, দেশ বা শহর গড়ে উঠেছে যেখানে বিদেশী অতিধনীদের টাকা রাখার বা বিনিয়োগের সহজ সুযোগ রয়েছে, যার নাম পানামা পেপারস বা প্যান্ডোরা পেপারস কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে বলাবাহুল্য বিশ্বব্যাপী এধরণের কেন্দ্রের ব্যাপক চাহিদা বিরাজ করছে এসব কেন্দ্রে অতিধনীরা নামমাত্র ট্যাক্সে টাকা লগ্নি করতে পারে লগ্নিকৃত টাকার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে উৎস জানতে চাওয়া হয়না, এমনকি কারা এখানে টাকা লগ্নি করছে সেটিও গোপন রাখা হয় International Consortium of Investigative Journalists, ICIJ এর ধারণা মতে এধরণের কেন্দ্রগুলোতে রাখা মোট গোপন লগ্নির পরিমাণ ৩২ ট্রিলিয়ন ডলারের মত হতে পারে, যা বিশ্বের মোট জিডিপির প্রায় ৩৮% অর্থাৎ বর্তমান বিশ্বে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে অপ্রদর্শিত টাকা বা কালোটাকা তৈরি হচ্ছে যেগুলো নিরাপদে রাখার জন্য বা খাটানোর জন্য দুবাই এর মত কেন্দ্রের প্রয়োজন বলাবাহুল্য এধরণের কালোটাকা উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন শীর্ষদেশগুলোর কাতারে উন্নীত হয়েছে দুবাই এর আবাসনখাতের এই ধরণের গোপন বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রথম হওয়া সেটিই নিশ্চিত করেছে সুইস ব্যাংকে এবং কানাডার বেগম পাড়ায় বিনিয়োগে এর আগেই বাংলাদেশীরা অন্যতম শীর্ষস্থান দখল করেছিল


মূলত পুঁজিবাদী এই ব্যবস্থাই (মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী যাদের হাতে রয়েছে সম্পদ ও পুঁজির একচ্ছত্র আধিপত্য) এধরণের কালোটাকা তৈরির মেশিন এই ব্যবস্থাই বিশেষত ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা রাজনীতিবিদ, ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণকারী বড় ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগী আমলাদেরকে ব্যাপক পরিমাণে দুর্নীতি ও লুটতরাজের সুযোগ করে দেয় এই ব্যবস্থায় সরকারগুলোর ইচ্ছামত টাকা ছাপানোর বৈধতা আছে, ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যাংক থেকে নামমাত্র দায়বদ্ধতায় ব্যাপক টাকা সরিয়ে ফেলতে পারে এই ব্যবস্থাই দূর্নীতিবাজ রজানীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী তৈরি করে যারা সাইফুনের মত সিস্টেম থেকে টাকা বের করে নিয়ে যায় এই ধরণের ঘটনা শুধু বাংলাদেশে হয় তা নয়, ICIJ তার অনুসন্ধানে ৯০ টি দেশের এই ধরণের ৩৩০ জন রাজনীতিবিদের নাম প্রকাশ করেছিল এটি একটি বৈশ্বিক দূর্নীতি-লুটতরাজ গ্যাং আর আমেরিকা, ব্রিটেনের মত যেসব দেশ মূলত এই Offshore financial centre গুলোর নিয়ন্ত্রণ করছে এবং প্রকাশ্যে পৃষ্ঠপোষকতা ও নিরাপত্তা দিচ্ছে তারা যে বৈশ্বিক এই লুটতরাজের নেতা এতে কোন সন্দেহ নেই বাংলাদেশে এই ধরণের অতিধনি বেড়ে যাওয়া কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং এটি পুঁজিবাদী এই গ্যাং এর বৈশ্বিক আগ্রাসনের একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র ব্যবস্থাগত পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি-লুটতরাজ এবং তার উপর এই ধরণের দেশ-দূরবর্তি বিনিয়োগের অবাধ সুযোগ বাংলাদেশের মত গরীব দেশগুলোর গরীব মানুষের বাস্তবতাকে আরও কঠিন করে তোলে সম্পদ এখান থেকে সাইফুন হয়ে ঐসব দূরবর্তি কেন্দ্রের বিলাশবহুল পণ্যের বাজারে জমা হয় অথচ দেশের অসংখ্য মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হয় না


পুঁজিবাদ যেখানে ব্যবস্থাগতভাবে দুর্নীতি-লুটতরাজ ও অর্থ জমা করা উৎসাহিত করার মাধ্যমে সম্পদকে একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী বা গ্যাং এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলে, ইসলাম সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে ন্যায়পরায়নতা-দায়িত্ববোধ ও ব্যয় করাকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে সম্পদকে পুরো মানবজাতির উপকারার্থে ছড়িয়ে দেয়া নিশ্চিত করে পুঁজিবাদের স্পিরিট হচ্ছে যেকোন মূল্যে কে কত বেশি সম্পদশালী হতে পারে আর ইসলামের স্পিরিট হচ্ছে কিভাবে সম্পদের বন্টন নিশ্চিত করা যায় যখন বিশ্বজুড়ে ৮০ কোটির বেশি মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে তখন সেখানে পুঁজিবাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা লোকেরা গ্যাং এর মত একসাথে দুবাই এর মত বিলাশবহুল অর্থলগ্নিকরণ কেন্দ্রগুলো তৈরি করে আর ইসলামের বাস্তবতা এমন যে বিভিন্ন সময়ে খিলাফতের মধ্যে সাদাকার টাকা নেয়ার মত কোন মানুষ পাওয়া যেত না, তাই খলিফারা সেই টাকা দিয়ে শস্য কিনে বনে ছিটিয়ে দিতেন যাতে পশুপাখিরা অবাধে খেতে পারে

-       মোহাম্মদ তালহা হোসেন

 

দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়ে দেয়ালে দেয়ালে বিজ্ঞাপন

খবরঃ

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির খোঁজে ২০১৮ সালে ঢাকার সাভার এসেছিল বগুড়ার আলমগীর কবির থাকতেন বন্ধুর মেসে, বিনা পয়সায় বন্ধুর খাবারই ভাগাভাগি করে খেতেন একসময় বন্ধুর গার্মেন্টসে চাকরি হয়ে গেলে বিপদে পড়ে যান আলমগীর তখন সকালের নাশতার বিনিময়ে রাস্তার পাশের এক ফুচকার দোকানে কাজ নেন ঢাকার জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে এক পর্যায়ে বগুড়ায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি বগুড়ায় এসে টিউশনি করে ভালোই চলছিল কিন্তু করোনা মহামারি তার টিউশনির আয়ে বড়সড় আঘাত হানে একটি বাদে সবকটি টিউশনি হারাতে হয় আলমগীরকে কারণে বাধ্য হয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেন তিনি বগুড়া শহরের জহুরুল নগর এলাকায় দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো সেই ফটোকপির বিজ্ঞাপনে লেখা, 'শুধুমাত্র দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই' (www.tbsnews.net/bangla/বাংলাদেশ/news-details-81529)

মন্তব্যঃ

বগুড়ার আলমগীর কবিরের দুবেলা ভাতের আকুতি যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে তখন একই সময়ে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জাতিকে আশা দিয়েছেন যে, আগামী ২০২২২৩ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু আয় হাজার ৮৯ মার্কিন ডলারে (২৫ হাজার টাকা) উন্নীত হবে ফি বছর মাথাপিছু আয়ের প্রতারণামূলক গ্রাফের উন্নতি হলেও বাস্তবতা হচ্ছে যে, মাস্টার্স পাশ করা ছাত্রদেরও মাথাপিছু দুবেলা ভাতের সংস্থান করতে রাস্তায় রাস্তায় বিজ্ঞাপণ দিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সংশয় নিয়ে জীবনযাপন করতে হয় তাই এখন আর আমরা খুব বেশি অবাক হইনা যখন দেখি হবিগঞ্জের আকলিমা বেগম তার ১৫ দিনের সন্তানকে মাত্র হাজার টাকার জন্য বিক্রি করে দেয়, রাজশাহীর ফ্রিল্যান্সার আনারুল ইসলাম কিংবা বগুড়ার ধুনটের বৃদ্ধ মন্তাজ আলী (৬৫) খাবারের অভাবে আত্নহত্যা করে, কুড়িগ্রামের জমিলা যখন অভাবের তাড়নায় তার ১৫ মাস বয়সী শিশুসন্তানকে পানিতে ফেলে দেয়


এমতাবস্থায় আমরা যদি এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থা আর এর দুর্নীতিপরায়ন শাসকবৃন্দের দিকে তাকিয়ে থাকি আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য তাহলে তা কস্মিনকালেও সম্ভবপর হয়ে উঠবে না কারণ এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সম্পদের অসম বন্টন, গণমালিকানাধীন সম্পত্তির প্রাইভেটাইজেশন, মুক্তবাজারের নামে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেওয়া, আইএমএফ আর ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের লোন নিয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীল করে ফেলা ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের এই সম্ভাবনাময় দেশকে চিরস্থায়ীভাবে দারিদ্রকরণের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এর বিকল্প হিসেবে আমাদের প্রয়োজন ইসলামী শাসনব্যবস্থা অর্থাৎ খিলাফত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা যার রয়েছে আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) কর্তৃক প্রেরিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করবে, গনসম্পত্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে, সাম্রাজ্যবাদী দেশ প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের স্বাধীন অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শক্তিশালী শিল্প কৃষি খাত তৈরি করবে ফলে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে


খিলাফত রাষ্ট্রের শাসকরা মাথাপিছু আয় আর জিডিপি বৃদ্ধির মত হাস্যকর চাতুর্যপূর্ন সূচক দিয়ে জনগনের সাথে প্রতারণা করবে না বরং তারা সত্যিকার অর্থেই ক্ষুধা দারিদ্রতা দূরীকরনের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবেন যেমন, হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, দারিদ্রতা যদি কোন মানুষ হত তাহলে আমি তাকে হত্যা করতাম উপরন্তু পুঁজিবাদী শাসকদের মত বিলাসী জীবনযাপন করেএখন রিকশাওয়ালাও মোটা চাল খায় না, মোটা চাল এখন গরুকে খাওয়ানো হয়বলে জনগনের দুরবস্থা নিয়ে মশকরা করবে না, বরং জনগনের দুরবস্থার সাথে নিজেকে শামিল করে নিবে যেমন, ১৭ হিজরিতে হিজাজ ইয়েমেনেরআমুর-রামাদাহদুর্ভিক্ষের সময় খলিফা উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তার কোনো সন্তানের ঘরে কিংবা তার স্ত্রীর ঘরে ওই মানের খাবারই খেতেন, যা জনগণ খেতো একবার যখন তার এক স্ত্রী তার জন্য ঘি নিয়ে আসলেন তখন তিনি বললেন, “সব মানুষের অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি এমন দামি খাবার খাবো না কোটি মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে শাসকের পক্ষে পেটপুরে খেয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করা শুধুমাত্র এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থাতেই সম্ভব, খিলাফত ব্যবস্থার ১৪০০ বছরের ইতিহাসে কখনো কোন খলিফার ক্ষেত্রে এরকমটি ঘটেনি এবং আসন্ন খিলাফতে রাশিদার ক্ষেত্রেও ঘটবে না ইনশাআল্লাহ্

-       মো. হাফিজুর রহমান

 

 

“গণপরিবহনে মাস্তানি”

খবরঃ

রাজধানীর বাংলামোটর মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাস হঠাৎই পেছন থেকে আসা একই পরিবহনের আরেকটি বাস সজোরে ধাক্কা দেয় এতে বাসে থাকা যাত্রীদের কয়েকজন সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন সামনের বাসে থাকা হেলপার ছিটকে পড়েন রাস্তায় দৃষ্টি পড়ে ট্রাফিক পুলিশেরও পুলিশ এগিয়ে আসলেই বাস দুটি দ্রুতগতিতে স্থান ত্যাগ করে বাসে তের বছরের মেয়ে উঠলেও উঠতে পারেননি রহিমা নামের এক নারী যাত্রী পরবর্তীতে এক পাঠাও চালক রহিমাকে নিয়ে বাসের পিছু ছুটতে থাকে... (https://mzamin.com/article.php?mzamin=315402)

মন্তব্যঃ

যানবাহন চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় সড়কপথ যেকোন জনগোষ্ঠীর জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ন সম্পদ সকল জনগণ এটির সুবিধাভোগের ক্ষেত্রে সমানভাবে অংশীদার যেকোন রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের দায়িত্ব হলো এই ধরনের সম্পদগুলোকে দেখাশোনা করা এবং জনগণের সবার জন্য এগুলোর ব্যবহারে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা কারণ মানুষের মধ্যে সম্পদ অর্জন ও ব্যবহার করার জন্য পরস্পর পরস্পরের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা করার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান একারণে সমাজে দ্বন্দ্ব ও বিবাদের সৃষ্টি হয় যেমন সড়কের ব্যবহার নিয়ে গনপরিবহন মালিক-শ্রমিক-পথচারী-অন্যান্য যানবাহন চালক-যাত্রী প্রত্যেকে চরম দ্বন্দ্বে লিপ্ত রাজধানীর বাহিরে জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ন্যূনতম নাগরিক সুযোগ সুবিধার অভাবে মানুষ রাজধানীতে ভিড় করে এ কারণে রাস্তাগুলোর উপর তীব্র চাপ প্রতিদিন প্রায় ২৩০ টি করে নতুন গাড়ি ঢাকার রাস্তায় নামছে অন্যদিকে যেকোনো শহরের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ রাস্তা থাকার দরকার থাকলেও ঢাকায় এই পরিমাণ মাত্র ৮ ভাগ তাই একদিকে সড়কপথের অপ্রতুলতা অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বৃদ্ধি এই সঙ্কটকে আরো তীব্র করেছে তার উপর রয়েছে গণপরিবহন মালিক সিন্ডিকেট মাত্র ২ হাজার লোক ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২২,০০০ গণপরিবহনের মালিক সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট এসকল পুঁজিপতি পরিবহন মালিকদের হাতে গণপরিবহন খাত পুরোপুরি জিম্মি এমনকি তারাই সরকারের অংশ যেমন বর্তমানে বাস মালিক সমিতির সভাপতি হলেন মশিউর রহমান রাঙ্গা যিনি একজন সাংসদ, আর মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তাই তাদের স্বার্থরক্ষায় বদ্ধপরিকর আমাদের দেশের পুঁজিবাদী সরকারসমূহ দশকের পর দশক পার হলেও জনগণের পরিবহনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুষ্ঠু একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলেনি তাই জনগণের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ন সম্পদ সড়কপথ ব্যবহারের এই তীব্র প্রতিযোগিতায় দিনশেষে ক্ষমতাবান পরিবহন মালিকরাই বিজয়ী হয়। কোটি কোটি জনগণকে চরম ভোগান্তির সাগরে নিক্ষেপ করে তারা এর সিংহভাগ সুবিধা লুটে নেয়


তাই ইসলাম তেল-গ্যাস-বন্দর-পোর্ট-রেলপথ-রাস্তাঘাট ইত্যাদি যে সকল সম্পদ কোন জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন (Community Need) সেগুলো গণমালিকানাধীন সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন, তিনটি বিষয়ে সকল মানুষ শরিক আগুন, পানি চারণভূমি এবং এগুলোর বিনিময় মূল্য গ্রহণ করা হারাম(ইবনে মাজাহ্‌) কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তির সমষ্টির জন্য এগুলোতে সুবিধা সংরক্ষণ করা নিষিদ্ধ রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো এগুলোতে সকল জনগণের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাতিরমি্যি থেকে বর্ণিত, আবিয়াদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি লবনের খনির মালিকানার জন্য আবেদন করলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) উদারতাবশত অনুরোধটি গ্রহন করলেন কিন্তু শীঘ্রই তাকে আরেক সাহাবী মনে করিয়ে দিলেনহে আল্লাহর রাসূল (সঃ), আপনি কি জানেন যে আপনি তাকে কি দিয়েছেন? আপনি তাকে অফুরন্ত পানির উৎস দান করে দিয়েছেনতারপর বর্ণনাকারী বললেন,তিনি তার কাছ থেকে লবণ খনির অনুমতি প্রত্যাহার করেছেন খলিফা ওমর (রা.) রাস্তা মসৃন না হওয়ার কারণে একটি পশুর হোঁচট খাওয়ার বিষয়ে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’র নিকট জবাবদিহিতাকে ভয় করতেন তাই যে রাষ্ট্রব্যবস্থা আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা’র কাছে জবাবদিহিতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত সে রাষ্ট্রব্যবস্থাই গণমালিকানাধীন সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে এক্ষেত্রে খিলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থার বিকল্প নেই

 

-       মো: জহিরুল ইসলাম

 

 

ঢাকায় লিভ টুগেদার গ্রুপ, সদস্য হাজার ছাড়িয়েছে

খবরঃ

          লিভ টুগেদার দুটি মন এক হলেই যার শুরু তবে গোপনে চলে কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে লিভ টুগেদার চলে এলেও বর্তমান সময়ে তাদের একটি গ্রুপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় এক হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে ওই গ্রুপে সবাই একই মন-মানসিকতা ও চিন্তাধারার এই গ্রুপে সদস্য যোগ করার ক্ষেত্রে যাচাই করে নেয়া হয় গ্রুপের সদস্যদের বেশিরভাগই ঢাকার ধানমণ্ডি, গুলশান, নিকেতন, বনানী, বারিধারায় থাকেন এসব এলাকায় বাসাভাড়া সহজেই পাওয়া যায় বাড়ির মালিক বা কেয়ার টেকার বেশি ঝক্কি-ঝামেলা করেন না এর বাইরে মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায়ও অনেকে আছেন (https://mzamin.com/article.php?mzamin=314474)

মন্তব্যঃ

লিভ টুগেদারের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষ হিসাবে সুখী থাকা এবং মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব তাই দুজন মানুষের বন্ধনটাকে সবচেয়ে সুখী রাখা তাই লিভ টুগেদারের আইডিয়া যারা বিশ্বাস, পালন ও প্রচার করে তাদের কিছু ন্যারেটিভ আছে, যেমনবিয়ে মানেই দায়দায়িত্ব, লিভ টুগেদারে সেই ঝামেলা নেই”, “দুজন ব্যক্তির সম্মতির ফলে অন্য কারো এতে ক্ষতি হচ্ছে না” “ নারীর ক্ষমতায়নের জন্য লিভ টুগেদার জরুরী পশ্চিমা সভ্যতায় জীবনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে সুখী হওয়া, তাই তারা যা খুশি তাই করতে চায়, এবং একই মানসিকতার পারফেক্ট সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়, যার ফলে তারা খাবারের মতো করে মানুষ টেস্ট করে দেখে কে তার জীবনের জন্য উপযুক্ত, কার সাথে বাকি জীবন একসাথে কাটানো যায় বাংলাদেশেও পশ্চিমাদের জীবন সম্পর্কে দেখানো ধারনার লাইট ভার্শনটি বিদ্যমান আছে, যেমন প্রেমের মাধ্যমে জীবনসঙ্গী বাছাই করা এখন এই ধারনাকে আপডেট করতে পুরোপুরি পশ্চিমা হতে গিয়ে লিভ টুগেদার কালচার প্রচলিত হচ্ছে কিন্তু আসলেই কি লিভ টুগেদার করে মানুষ সুখী হতে পারছে? উত্তর না US census bureau, unmarried couple households by presence of children 1960 to present এর রিপোর্ট মতে লিভ টুগেদার করা পরিবারগুলোর মধ্যে, ৭২% মা আর ৮৭% বাবা প্রথম সন্তান জন্মের পর চিন্তা করে তারা একসাথে থাকবে কিনা? আর ৯১% মা চিন্তা করে বাচ্চার বাবাকে বিয়ে করবে কিনা? লিভ টুগেদারে বিশ্বাসী মানসিকতার মানূষেরাই দিন শেষে সুখী হতে পারছেনা, আর বাংলাদেশে তো দুরের কথা, তাই এদেশীয় সমাজবিজ্ঞানীরা লিভ টুগেদারের বাংলা নাম দিয়েছেনদায়িত্বহীন সঙ্গম”; যেখানে শারীরিক সম্পর্কের ফলে সন্তান আসবে কিন্তু সে বাচ্চাটির দায়িত্ব নেয়ার কেউ থাকবে না, তখন পঠিত এই খবরের চাদঁপুরের তরুণীর মত গর্ভবতী অবস্থায় ডিভোর্স নিতে হবে এবং স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চাটির অবস্থান হবে ডাস্টবিনে


মানুষ যে সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, অনুভুতি, চিন্তার মাধ্যমে সুখ অর্জন করতে চায়, তার সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার ফলে সুখী হতে পারে না কারণ সৃষ্টিকর্তা বিবর্জিত জীবনব্যবস্থায় মানুষের কাছে সুখ হচ্ছে ইন্দ্রিয়গত পরিতুষ্টি মাত্র ফলে যাকে আজীবনের জন্য জীবনসঙ্গী হিসাবে নেয়ার জন্য কাছে টেনে নেয়া হয়, কিছুদিন পরেই তাকে অসহ্য লাগা শুরু করে, তাই অন্যসঙ্গী খুঁজতে হয় তাই মানুষের বৈশিষ্ট্যগত বিষয়গুলো যেমন সন্তান পালন, পরিবার গঠন করার প্রবণতা ইত্যাদি অপূর্ণ থেকেই যায়, আর এই বিষয়গুলোর সঠিক নির্দেশনার অভাবে মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়, ডিপ্রেশনে ভোগে শুধুমাত্র আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলার নির্দেশিত পথের মাধ্যমেই এবং ইবাদতের মাধ্যমেই জীবনের সুখ নিশ্চিত করা সম্ভব  আল্লাহ্বলেনজেনে রেখো আল্লাহ্‌’ স্মরণেই শুধু চিত্ত প্রশান্ত হয়” (সুরা রাদ আয়াত ২৮) আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা মানুষকে ইন্দ্রিয় সুখ তালাশ করতেই দুনিয়াতে পাঠাননি দুনিয়ায়তে জীবনযাপনের জন্য ইসলাম দিয়েছে আলাদা মিশন এবং সেটাকে সফলভাবে পসিচালনা করার জন্য দিয়েছে শারিয়াহ্ তাই আল্লাহ্মানুষকে সৃষ্টি করেই তার খায়েশ এর ওপর তাকে ছেড়ে দেননি, পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মহাগ্রন্থ আল কুরআন, যাতে মানুষ তাদের সম্পর্কের বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারে পশ্চিমা সভ্যতার এই কুৎসিত, ধ্বংসাত্মক, হিডনিস্টিক (hedonistic) সংস্কৃতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশে ইসলামকে সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবেখিলাফত রাষ্ট্রের আওতায়

 

-       ইরফান আবিদ

 

 

 

 

Previous Post Next Post