Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 46

 



Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৪৬ তম সংখ্যা ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

 

এই সংখ্যায় থাকছে:

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী যৌথ মহড়া করবে

তেল চিনি ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী

২১ বছর হলে পাওয়া যাবে মদপানের লাইসেন্স: বিধিমালা

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফ চাকরিচ্যুত

হিজাব ত্যাগ করো, অন্যাথায় বাড়ি ফিরে যাও

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই, পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

 

 

 

 

 

  

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী যৌথ মহড়া করবে

খবরঃ

বিএএফ কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্ট সিলেটের  অপারেটিং লোকেশন আলফায়কোপ সাউথ-২২মহড়ায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সঙ্গে অংশ নেবে জাপানের ইয়োকোতা এয়ার বেজ, ৩৭৪ এয়ারলিফট উইংয়ের সদস্যরাতাদের সঙ্গে যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর প্রায় ৭৭ জন সদস্য দুটি এয়ারফোর্সি সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিসএই বিষয়ে ৩৬তম এয়ারলিফট স্কোয়াড্রনের ডিরেক্টর অব অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল কিরা কোফে বলেন, আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদার হলো বাংলাদেশ বিমানবাহিনী কৌশলগত এয়ারলিফট এবং বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের মাধ্যমে এই অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে আমাদের সুযোগ করে দিচ্ছে কোপ সাউথ আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য একটিফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক তার জন্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার এই উন্নতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ  (https://m.mzamin.com/article.php?mzamin=316074)

মন্তব্যঃ

          গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব কিংবা কৌশলগত বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের নামে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এসব সামরিক মহড়ার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে দেশের সচেতন নাগরিক মাত্রই অবগত হওয়া জরুরী যেখানে আমেরিকারমত স্বার্থান্বেষী আধিপত্য বিস্তারকারী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির মূলভিত্তি হচ্ছেযেকোনমূল্যে আমেরিকার স্বার্থকে সুরক্ষা করাএবং যার ভিত্তিতেই- কে তার বন্ধু আর কে তার শত্রু নির্ধারিত হয়; সেখানে বাংলাদেশের সামরিকবাহিনীর সাথে সামরিক মহড়ার পিছনে আমেরিকার কি স্বার্থ জড়িত তা ভেবে দেখা জরুরী সাধারণত, এই ধরণের সামরিক মহড়ার পিছনে আমাদের সেনাবাহিনীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মুলা ঝুলানো হলেও এর পিছনের প্রকৃত উদ্দেশ্যর কথা ইউ এস গভার্ণমেন্ট অ্যাকাউন্টাবিলিটি অফিস (U.S. GAO) খুব স্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছে, “Most joint training exercises are conducted to maintain U.S. access or presence in a region, promote regional stability, or foster relations with foreign military forces”. অর্থাৎ আমাদের সামরিকবাহিনীর সাথে আমেরিকার সামরিক মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই অঞ্চলে তার ‘access’-এর নামে কর্তৃত্ব এবং উপস্থিতি (presence) নিশ্চিত করা যাতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার নামে চীনের উত্থানকে ঠেকাতে তারইন্দো-প্যাসিফিকপ্ল্যানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সামরিকবাহিনীকে সে ব্যবহার করতে পারে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বাংলাদেশে চীনের অর্থায়নে বিভিন্ন প্রোজেক্ট নিয়ে QUAD রাষ্ট্রগুলোর আলোচনা এবং বাংলাদেশকে আমেরিকার আঞ্চলিক বন্ধু ভারতের সতর্কতা এই অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্বকে আবারো সামনে নিয়ে এসেছে কিন্তু, যখন দুই বা ততোধিক সেনাবাহিনী একসাথে কাজ করে তখন নেতৃত্ব কার কাছে থাকবে সেই প্রশ্ন উঠে আর নেতৃত্ব কখনোই নেওয়া সম্ভব হয়না যদিনা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় তাই, বাংলাদেশ সামরিকবাহিনীর উপর সেই কর্তৃত্ব স্থাপনের লক্ষ্যেই মূলত এসব সামরিক মহড়া ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গত ৩১//২০২২ তারিখে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রইসরায়েলএর সাথে সম্পর্ক জোরদারে আমেরিকার নেতৃত্বে শুরু হওয়াইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম এক্সারসাইজ (আই.এম.এক্স)”- যেমন খুবই গোপনীয়তার সাথে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীকে পাঠানো হয় এই ধরণের সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রথমে আমেরিকা আমাদের সেনাবাহিনীর যুদ্ধের সক্ষমতা, দুর্বলতা কৌশল সম্পর্কে বিস্তর ধারণা নেয় তারপর উন্নত প্রযুক্তি যুদ্ধশাস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের সেনাবাহিনীর উপর ধীরে ধীরে এই মনস্তাত্ত্বিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যে, আমেরিকা হচ্ছে সামরিক পরাশক্তি তাকে হারানো অসম্ভব, তাই নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা শুধু তারই তাছাড়া মনস্তাত্ত্বিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আমেরিকা মুসলিম সামরিকবাহিনীগুলোর মধ্যে তার লোকাল সামরিক এজেন্ট তৈরির চেষ্টা চালায় যারা ভবিষ্যতে আমেরিকার স্বার্থে একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে অনেকেই এই পরাশক্তির সাথে কাজ করার লোভে কিংবা আর্থিকভাবে লালসায় পরে বিক্রিও হয়ে যায় এইটাই হচ্ছে, যৌথ সামরিক মহড়ার মূল উদ্দেশ্য

পশ্চিমা কুফর শক্তিগুলোর উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে বাংলাদেশের দালাল শাসকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার কারণে যারা আমাদেরকে পরাশক্তিগুলোর দাবার গুটিতে পরিণত করছে অথচ আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, “…এবং তিনি কোনভাবেই মুসলিমদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্ব মেনে নিবেন না” (সূরা-নিসাঃ ১৪১) তাই যতদিন পশ্চিমাদের দালাল শাসকেরা আমাদেরকে শাসন করতে থাকবে ততদিন পশ্চিমাদের আধিপত্য এবং কর্তৃত্বও আমাদের উপর বলবত থাকবে পশ্চিমাদের প্রতিনিধিত্বকারী এসব শাসকদের অপসারণ করে আল্লাহ্‌’ দ্বীনের প্রতিনিধিত্বকারী শাসক খলিফা (ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান) নিযুক্তির মাধ্যমে খিলাফত ব্যবস্থা প্রবর্তন ছাড়া আমাদের মুক্তি নাই

-       আসাদুল্লাহ্নাঈম


 তেল চিনি ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী

খবরঃ

আন্তর্জাতিক বাজারে দামবৃদ্ধির কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তিনি বলেন, তেল, চিনি ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই দাম কমাতে হলে সাবসিডি দিতে হবে (https://www.dailynayadiganta.com/economics/644777/তেল-চিনি-ডালের-দাম-বৃদ্ধির-বিষয়ে-সরকারের-কিছুই-করার-নেই-বাণিজ্যমন্ত্রী)

মন্তব্যঃ

তেল, চিনি ডালের ক্ষেত্রে সরকার কি আসলেই কিছু করছেনা? একসময় দেশে চিনি চিনি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের ৭৬টি সরকারী শিল্প-কারখানা থাকলেও দেশের বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন সময়ে ৬৫টি বন্ধ করে দেয় এভাবে চিনিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ পুরোপুরি আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ে তেলের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বিনাসরিষা- বিনাসরিষা- আবিস্কার করেছে বিশেষজ্ঞদের মতে সরকার যদি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে দেশের ২২ লাখ হেক্টর জমিতে দুই ফসলের মাঝে তৃতীয় ফসল হিসেবে এই বীজের আবাদের ব্যবস্থা করতে পারতো তাহলে বছরে ১৭ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানী সাশ্রয় করা সম্ভব হতো সরকারের নেয়াতেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পটি কার্যকর নয় এটি মূলত বিদেশ ভ্রমণ, প্রদর্শনী চাষ, লোক দেখানো মাঠ বৈঠক ইত্যাদিতে সীমাবদ্ধ এছাড়া ডালের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট জলবায়ু পরিবর্তন জমি স্বল্পতার বাস্তবতায় দেশের জন্য কার্যকর উৎপাদন পদ্ধতিবিনা চাষে রিলেআবিস্কার করলেও সরকার এর সম্প্রসারণেও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি অর্থাৎ সরকার ব্যাপক উৎসাহের সাথে জনগুরুত্বপূর্ণ এই পণ্যগুলোকে আমদানি নির্ভর করে রেখেছে

এধরণের আমদানি নির্ভরতা মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে করা হয় অবশ্য এই পরনির্ভরশীলতায় শুধু সরকারের তথাকথিত বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠানগুলোই যে খুশি হয় তা নয়, এতে খুশি হয় আমদানীকারক কতিপয় বড় পুঁজিপতিও সরকার চিনি আমদানি থেকে নেয় পাঁচ ধরণের ট্যাক্স- আমদানি শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, অগ্রিম কর অগ্রিম আয় কর এবং ভ্যাট যদি সরকার এইসব ট্যাক্স আদায় বন্ধ করতো তাহলে চিনির দাম কেজি প্রতি আন্তত ৩০ টাকা কমে যেত আর সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে আছে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, শতাংশ হারে অগ্রিম কর, উৎপাদন মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট অথবা বিক্রয় মূল্যের ওপর শতাংশ হারে ভ্যাট যদি সরকার এইসব ট্যাক্স আদায় না করতো তাহলে সয়াবিন তেলের দাম কেজি প্রতি আন্তত ৪৫ টাকা কমে যেত ট্যাক্স নেয়া বন্ধ করাতো দূরে থাক, বরং তারা এমন কর কাঠামো করে যাতে পণ্যের দাম যত বাড়ে সরকারের আয় (ট্যাক্স) তত বাড়ে অর্থাৎ মন্ত্রির উপরোক্ত উক্তি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বরং এই দামবৃদ্ধি পুঁজিবাদী সরকারের একটি সরাসরি প্রযোজনা

ইসলাম এই ধরণের মৌলিক পণ্যের উপর বিদেশ প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নির্ভরতা নিষিদ্ধ করেছে ফলে রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে খলিফার দায়িত্ব হচ্ছে, দ্রুত কৃষকদেরকে সরাসরি বীজ, প্রযুক্তি, সেচ, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করে এর উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা ইসলামী রাষ্ট্র কৃষিভিত্তিক শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করবে পণ্যের দামবৃদ্ধি করে এরকম সকল ট্যাক্সই শুধু তুলে দিবে তাই নয়, বরং ভেঙ্গে দিবে সকল সিন্ডিকেট, মনোপলি খিলাফতে একটি বিশেষ আদালত থাকে যার নাম হচ্ছে, কাজি আল-মুহতাসিব যিনি বাজারের পণ্যসমূহের মান নিয়ন্ত্রণ করবেন, পণ্যসমূহ যাতে অবাধে বাজারে আসে তা নিশ্চিত করবেন এবং ব্যবসায়ীরা যাতে কোনভাবেই ক্রেতাদের ঠকাতে না পারে তার দেখভাল করবেন খলিফা উমরের (রা.) সময় বিখ্যাত মহিলা সাহাবী সিফাহ বিনতে আব্দুল্লাহ (রা.) ছিলেন মুহতাসিব কাজি আল-মুহতাসিব হলো একটি বিশেষ আদালত যিনি বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রয়োজনীয় বিচার করতে পারবেন, উনার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসা বাধ্যতামূলক নয় ইসলাম অনুযায়ী রাষ্ট্রে এইধরণের আদালত থাকা আবশ্যক কারণ মুসলিম শরিফের হাদিস অনুযায়ী রাসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করতেন এমনই একদিন এক বিক্রেতার বার্লির বস্তার ভিতর তিনি হাত ঢুকিয়ে অনুসন্ধান করে বের করেন যে বিক্রেতা ভেজা শস্যগুলো শুকনো শস্যের নিচে লুকিয়ে রেখেছে তিনি তখন বিক্রেতাকে ভিজাগুলোকে উপরে রাখতে নির্দেশ দেন যাতে লোকেরা তা দেখতে পায় এসময় তিনি বলেন, “প্রতারণাকারী আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়

-       মোহাম্মদ তালহা হোসেন


 ২১ বছর হলে পাওয়া যাবে মদপানের লাইসেন্স: বিধিমালা

খবরঃ

অ্যালকোহল বা মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করে প্রথমবারের মতো বিধিমালা করেছে সরকার সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকেঅ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২জারি করা হয়েছেমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’-এর আওতায় বিধিমালাটি করা হয়েছে... এখন থেকে বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট পাস নিতে হবে কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে আর ২০০ জন হলে দেয়া হবে বারের লাইসেন্স ২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবেন না... (https://www.deshrupantor.com/national/2022/02/17/345833)

মন্তব্যঃ

মুসলিম দেশগুলোতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে সামরিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক আগ্রাসনের পাশাপাশি ব্যাপক সাংস্কৃতিক আগ্রাসনও পরিচালিত হচ্ছে, যা মুলতঃ পশ্চিমা কাফির রাষ্ট্রসমূহের আগ্রাসন আর মুসলিম দেশসমূহের ধর্মনিরপেক্ষ সরকারগুলো যার প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী এধরণের কার্যক্রম তাদের পশ্চিমা প্রভুদের নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম, যে বিষয়ে বর্তমান সরকার এখন আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শুধু বর্তমান সরকারই নয়, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকেও আমরা একই চেহারায় দেখেছি, যেমন তারা বিয়ার কোম্পানীগুলোকে লাইসেন্স দেয়া শুরু করেছিল ২১ বছর বয়স হলেই যেকেউ মদের লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবে, কোন এলাকায় ১০০ জন লাইসেন্সধারী হলে সেই এলাকায় মদের বার খোলা যাবে, এভাবে অলিতে গলিতে এখন চায়ের দোকানের মত করে মদের বারে সয়লাব হওয়ার প্রেক্ষাপট সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে মদপানের লাইসেন্স প্রাপ্তি সহজীকরণের কারণে বর্তমানে চরম ঘৃণিত হারাম এই কাজ একসময় একটি সাধারন বিষয়ে পরিণত হবে এবং এর প্রতি মানুষের ঘৃণার আবেগ নষ্ট হয়ে যাবে সমাজে পাপাচার বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, মদ পান করো না, কারণ এটি সবসময় শয়তানি ফলাফল বয়ে নিয়ে আসে (ইবনে মাযাহ)

বর্তমানে দেশে দেশে মুসলিম উম্মাহ্‌’ পুনঃজাগরণ প্রত্যক্ষ করে পশ্চিমা কাফির দেশগুলো তাদের দালাল শাসকদের সহায়তায় মুসলিম ভূমিগুলোতে তাদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে আরও জোরদার করেছে তারা চায় মুসলিমরা যেন পশ্চিমাদের ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী জীবনাদর্শকে ত্যাগ না করে তাই মুসলিমদের চারিত্রিক পবিত্রতা নষ্ট করার জন্য আইন করে একের পর এক হারামের স্বাভাবিকীকরণ করা হচ্ছে, সেগুলোকে রাষ্ট্রীয় মদদে উৎসাহিত করা হচ্ছে, এবং অনুপ্রেরণা দেয়া হচ্ছে যাতে আল্লাহ্যা হারাম করেছেন সেগুলোর বিষয়ে সামাজিক লোক-লজ্জা ভেঙ্গে পড়ে, পাপাচারীদের যেন হারাম কাজ আর লুকিয়ে লুকিয়ে না করতে হয় পশ্চিমা কাফিরগোষ্ঠী বিশ্বাস করে রাষ্ট্রীয় মদদে এরুপ হারামের বিস্তার ঘটানো গেলে তা মুসলিম উম্মাহ্‌’ পুনঃজাগরণের পথে বাঁধা হিসেবে কাজ করবে, কারণ যত বেশী হারাম তাদের ভেতর ঢুকে পড়বে, ইসলামের পুনঃজাগরণ (তথা খিলাফতের প্রত্যাবর্তন) তত বেশী বিলম্বিত হবে ইতিপূর্বে যেনা-ব্যভিচারে নির্বিচারে লিপ্ত হতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দিয়েছে নারীর ক্ষমতায়নের আড়ালে ১৮ বছরের বেশি হলেই স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপন বৈধ করে দেওয়া হয়েছে এমনকি ১৮ বছর পার হয়ে গেলে কোন নারী পতিতাবৃত্তিও করতে পারবে, এমন আইন রয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে ব্যভিচার একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে মুসলিমদের চরিত্র নষ্ট করার এই ক্রমধারায় বর্তমানে সর্বশেষ সংযোজন হলো মাদকের লাইসেন্স প্রাপ্তির সহজীকরণ

তাই যে ধর্মনিরপেক্ষ শাসকেরা পশ্চিমা কুফর শক্তির স্বার্থে রাষ্ট্রের নীতিসমূহ প্রণয়ন করে, তাদের অধীনে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে মুক্তি পাওয়া কখনোই সম্ভব নয় মানবরচিত এধরণের রাষ্ট্রব্যবস্থার গর্ভেই মাদকসহ সকল মুনকার বা মন্দ কাজের জন্ম এবং প্রতিপালন হয় মাদকমুক্ত একটি সুন্দর ও অপরাধবিহীন সমাজ গঠনে রাষ্ট্রে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর নির্দেশ বাস্তবায়ন জরুরী। তিনি (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা মদের সাথে জড়িত সকল ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করেছেন, এটির পরিবেশনকারী, উৎপাদনকারী, যার জন্য এটি উৎপাদন করা হয়েছে, যে তা পৌঁছে দেয়, এবং যার কাছে এটি পৌঁছে দেওয়া হয়, এর বিক্রেতা, ক্রেতা, যে তার মূল্য থেকে লাভবান হয় রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর এই নির্দেশ বাস্তবায়নে পশ্চিমা কাফির রাষ্ট্রসমূহের দালাল শাসকগোষ্ঠী তাদের দুষিত শাসনব্যবস্থাকে অপসারণ করে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই

-       মো: জহিরুল ইসলাম

 

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফ চাকরিচ্যুত

খবরঃ

রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ অনিয়মের বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত করে আলোচনায় আসা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছেহত্যা চাকরি খাওয়ার হুমকিপাওয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন শরীফ তার ১৬ দিনের মাথায় বুধবার দুদক কার্যালয় থেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়... গত বছরের জুন মাসে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, সেসব মামলার বাদী ছিলেন শরীফ পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম কক্সবাজারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেও তিনি আলোচিত হন অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করেন শরীফ পরে অভিযোগেরসত্যতা পেয়েকেজিডিসিএল এর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সাবেক বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজনকে আসামি করে গত বছরের ১০ জুন মামলা করেন তিনি... (https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article2016626.bdnews)

মন্তব্যঃ

যারা মনে করে বর্তমান দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থাকে বহাল রেখে যদি এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৎ মানুষদের বসানো যায় তাহলে তা আমাদেরকে ভাল কিছু উপহার দিবে, তাদের জন্য মো. শরীফ উদ্দিনের মত ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নেয়ার অবকাশ আছে বর্তমান শাসনব্যবস্থার বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে দুদকের মত বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে শাসকগোষ্ঠী তাদের আজ্ঞাবহ রাঘব-বোয়ালদের রক্ষক, এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের হাতিয়ার যেমন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ অনেককেই দুদক দায়মুক্তি দিয়েছে সরকারী বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি প্রকল্প পরিচালকদের দুর্নীতি চিত্র গণমাধ্যমের পৃষ্ঠাজুড়ে থাকলেও দুদক এসব খুঁজে পায় না দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু সৎ কর্মকর্তাদের কার্যক্রম আমাদেরকে আশাবাদী করলেও বাস্তবতা হচ্ছে ত্বরিতগতিতে এদেরকে থামিয়ে দেয়া হয় যেমন, ২০১৯ সালের জুনে উত্তরা আড়ংয়ের আউটলেটকে ৪লাখ টাকা জরিমানা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করা হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বাস্তবতা হচ্ছে, রাঘব-বোয়ালদের সাজানো বাগানে বাধাদানকারীকে হয় আপোষ করতে হবে অথবা শরীফ কিংবা শাহরিয়ারের মত চাকরিচ্যুত করা হবে কারণ তাদের ক্ষমতা সম্পদের নিশ্চয়তা দানের জন্য রাষ্ট্র এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়োজিত রয়েছে তাই বর্তমান শাসনব্যবস্থার সামগ্রিক পরিবর্তন না করে সৎলোকের মাধ্যমে কিছু কিছু স্থানে সংস্কার সাধনের মাধ্যমে আমাদের দুরবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না, বরং এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা তার অস্তিত্বকে আরও দীর্ঘায়িত করবে

এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে আমাদেরকে এমন এক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে যেটা পক্ষপাতদুষ্ট নয় এবং কোন গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষায় আবর্তিত নয় এরকম একটি ব্যবস্থা শুধুমাত্র মহাবিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা পক্ষ থেকে আসা সম্ভব, আর এটাই হচ্ছে, ইসলাম যা খিলাফত ব্যবস্থা আকারে জনগণের উপর বাস্তবায়ন করতে হয় ইসলাম দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে শুধু সৎ ব্যক্তি কিংবা নেতৃত্বের উপর নির্ভর করেনি, বরং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সকল অন্যায় কাজের বিচারিক আদালত (মাহকামাত আল মাযালিম) যা সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিচার করবে, লোকদেখানো দায়মুক্তির সার্টিফিকেট দিবে না, এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বর্তমান বিচার ব্যবস্থার ইতি টানবে। এই মাযালিম আদালতের সকল বিচারক খিলাফত রাষ্ট্রের নির্বাহী এবং পরামর্শমূলক কমিটি বা এসেম্বলি থেকে স্বাধীন থাকবে যেখানে রাষ্ট্রের সকল পলিসিকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে। এমনকি খলিফারও ক্ষমতা থাকবে না মাযালিম আদালতের বিচারককে অপসারণ করার যখন তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগের তদন্ত চলবে।

-       মো. হাফিজুর রহমান

 

হিজাব ত্যাগ করো, অন্যাথায় বাড়ি ফিরে যাও

খবরঃ

হিজাব নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই ভারতের কর্নাটকের স্কুলগুলো (১০ম শ্রেণী পর্যন্ত) খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু, এখনো এই কর্নাটক রাজ্যের মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাস চলার সময় হিজাব পরিধানে বাধা দেয়া হচ্ছে। এ সময় এক অভিভাবক বলেন, হিন্দু শিক্ষার্থীরা সিঁদুর পরে এবং খ্রিষ্টানরা জপমালা পরে; আমাদের সন্তানরা হিজাব পরলে দোষটা কোথায়? সোমবার সকালে দেখা গেছে যে, স্কুলে প্রবেশ করার আগে ছাত্রীদের হিজাব ত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। কারণ, ভারতের হাইকোর্টের একটি অন্তর্বর্তী আদেশে বলা হয়েছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুলে দিতে। কিন্তু, ভারতীয় হাইকোর্টের ওই অন্তর্বর্তী আদেশে আরো বলা হয়েছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো ধর্মীয় পোশাক পড়া বৈধ না।  (https://www.dailynayadiganta.com/subcontinent/643923/)

মন্তব্যঃ

ধর্মীয় বৈষম্যের অজুহাতে হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কর্ণাটকের স্থানীয় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের  হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করেছে। তাদের দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক শৃঙ্খলা পরিপন্থী, বৈষম্যসৃষ্টিকারী। স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাবের পরিবর্তে তাদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম সকল ছাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে এবং আদালতকে ব্যবহার করে সেটা আইনসিদ্ধও করে নিয়েছে। ইউনিফর্ম, শৃঙ্খলা ও আইনের অজুহাত দেখিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক তথাকথিত মুক্তচিন্তার ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বুলগারিয়া, ইতালি, জার্মানি, স্পেন ইত্যাদি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের হিজাব পরিধানের উপর আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়

তারা মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে ইউনিফর্মের কথা বললেও জনগণের জন্য কোন সার্বজনীন পোশাক নির্ধারণ করতে পারেনি। ভারতসহ যারাই শৃঙ্খলার কথা বলে স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের উপর তথাকতিত ইউনিফর্ম চাপিয়ে দিয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কর্পোরেট সেক্টরে, সরকারী প্রতিষ্ঠানে, ফিল্ম, ফেশন ইন্ডাস্ট্রিতে কিংবা যে কোন জনসমাগমে কোন ইউনিফর্ম নির্ধারণ করতে পারেনি। তাহলে এটা কেমন শৃঙ্খলা যা শুধু স্কুল-কলেজে প্রযোজ্য কিন্তু অন্য সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়?

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলো ইউনিফর্মের কথা বলে মূলত ইসলামী মুল্যবোধকেই (Values) মুসলিমদের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চায় এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের (যা মূলত পশ্চিমা সভ্যতার রাজনৈতিক প্রোজেক্ট রাজনৈতিকভাবে ইসলামকে মোকাবেলা করার জন্য) কাছে ইসলাম এবং মুসলিমদেরকে আত্মসমর্পণ (Surrender) করাতে চায়। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সেই পোশাককেই ইউনিফর্ম হিসেবে অনুমোদন দেয় যা এর মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অথচ তারা ব্যক্তিগত ফ্রিডমের কথা বলে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মিনি স্কার্ট, পাগড়ি, ধূতি, শাড়ী, থ্রি পিস, টু পিস ইত্যাদি পরিধান করার অনুমোদন দেয় তাই, যারাই এগুলো পরিধান করে তারা তাদের ফ্রিডম অনুযায়ী পরিধান করে না বরং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অনুমোদন দেয় বলেই পরিধান করতে পারে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মধ্যে ফ্রিডম বলতে কিছু নেই, বরং ফ্রিডম ধর্মনিরপেক্ষ মুল্যবোধকে প্রতিনিধিত্ব করে। যেকেউ ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো (Framework) এর মধ্যেই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ দ্বারা নির্ধারণ করে দেওয়া মূল্যবোধগুলো চর্চা করতে স্বাধীন; অন্যকোন মূল্যবোধ চর্চা করার ক্ষেত্রে স্বাধীন নয়। যেমন, ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছিলো, A failure to promote "British values in a muscular way is allowing extremism to grow in the UK. We need to be far more muscular in promoting British values and the institutions that uphold them" (The Guardian, 2014: https://www.theguardian.com/politics/2014/jun/15/david-cameron-british-values-schools).

ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন পশ্চিমা দেশে হিজাব নিয়ে মুসলিম নারীদের ওপর চলমান এই অবিচার হল মানবরচিত ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ। এই ব্যবস্থায় তথাকথিত ‘ব্যক্তি স্বাধীনতা’ ব্যবহৃত হয় মূলত মুসলিমদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারসাজির জন্য। আমরা মুসলিমরা যে অপমান, অবমাননা এবং দুর্বলতার মধ্যে রয়েছি তার একমাত্র আমূল সমাধান খিলাফতের সুশীতল ছায়া ফিরিয়ে আনা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “ইমাম (খলিফা) হচ্ছে ঢাল। তার পিছনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদেরকে (অত্যাচার ও আগ্রাসন থেকে) রক্ষা করে” (মুসলিম)

-       আবি আব্দুল্লাহ্

 

 পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই, পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

খবরঃ

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে যশোরের চৌগাছা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তফা বিশ্বাসসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার বাইগুনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-৬ এর মুখপাত্র লে. কর্নেল মোশতাক আহমদ জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ডিবি পরিচয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। পুলিশ পরিচয়, পোশাক ও অস্ত্র দেখে ভয়ে লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পেতেন না। তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে এরকম পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ অনেক আগের। সঠিক তথ্য পেয়ে শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটার বাইগুনি গ্রামের হারুন আর রশিদ ডিগ্রি কলেজের দক্ষিণ পাশে অবস্থান নেয় র‌্যাব সদস্যরা। (https://www.jugantor.com/country-news/522114/পুলিশ)

মন্তব্যঃ

বিগত কিছুদিন যাবত র‍্যাব আর পুলিশ যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কঠিন শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছে। র‍্যাব অপরাধী কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করে ফেলছে, ঢাকার অলি-গলির ছিচকে চোর থেকে শুরু করে ফ্লাইওভারের ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে টিভি-ফেসবুকে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এগুলো মূলত এই সংস্থাগুলোর ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া ইমেজকে ক্রেন দিয়ে উপরে টেনে তোলার ব্যর্থ প্রচেষ্টা মাত্র! কারণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নামে পরিচিত এসকল সংস্থাগুলোর অগণিত অপরাধ সম্পর্কে দেশের জনগণ ভালোভাবে অবগত। গুম, খুন, হত্যা, চাদাঁবাজি, ধর্ষণ, দখল, গায়েবী মামলা এহেন হীন কিছু নাই যা তারা করে নাই। এমনকি মানুষের মনে ভয়ের সঞ্চার করিয়ে তাদেরকে দমন করতে বর্তমান পুলিশবাহিনীর প্রধান নির্দেশ দিয়েছিলেন: “প্রয়োজনে বেশি ক্ষমতার অস্ত্র চালানোর নির্দেশ আইজিপির” (প্রথম আলো ৮ এপ্রিল ২০২১)অত্যাচার এবং নিপীড়নই হল এই শাসকগোষ্ঠীর একমাত্র সম্বল। তাই মাঝে মাঝে চুনোপুঁটি মানের লোকদেরকে গ্রেফতার করে জনগণের সামনে সৎ শাসকের পরিচয় ধারণ করে, জনগণের সাথে পরবর্তী প্রতারণার ছক আঁকার জন্য

মুলত একটি সরকার/শাসনব্যবস্থা তখনি ক্ষমতায় থাকতে পারে যখন জনগণ তাদের সাপোর্ট করে অথবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনগণকে কোনঠাসা করে রাখা হয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশে মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে জনগণকে কোনঠাসা করে রাখা হয় কারণ ১৯২৪ সালে খিলাফত ধ্বংসের পর এসব দেশে পশ্চিমারা তাদের দালাল শাসকদের জোরপূর্বক চাপিয়ে দিয়েছে যারা মুসলিম উম্মাহ্‌কে প্রতিনিধিত্ব করে না এবং উম্মাহ্‌ও তাদেরকে গ্রহন করে না; তাই আমরা দেখি ক্ষণে ক্ষণে এদের বিরুদ্ধে সরকার পতনের আন্দোলন।

          ইসলাম আমাদেরকে এই ধরনের দানব থেকে মুক্ত হবার জন্য রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ দিবে এবং অন্যায় কাজে বাধা দিবে, এবং লোকদের কল্যাণময় কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। অন্যথায় আল্লাহ্‌ কোন আযাবের মাধ্যমে তোমাদের ধবংস করে দিবেন কিংবা তোমাদের মধ্য থেকে সর্বাধিক পাপাচারী, অন্যায়কারী ও জালিম লোকদেরকে তোমাদের উপর শাসনকর্তা নিযুক্ত করে দিবেন। এসময় তোমাদের মধ্যকার নেককার লোকেরা মুক্তির জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া, প্রার্থনা ও কান্নাকাটি করবে, কিন্তু তা কিছুতেই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না” (মুসনাদে আহমাদ)তাই দুনিয়ায় এরুপ অত্যাচারী শাসন থেকে মুক্তির জন্য সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের মাধ্যমে দানবীয় শাসকদের ভীত নাড়িয়ে দিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠার কাজ ছাড়া মুক্তির আর অন্য কোন পথ নেই

-       ইরফান আবিদ

 

 

 

 

 

 

Previous Post Next Post