Weekly
ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা
৪৮ তম সংখ্যা । ১৪ মার্চ, ২০২২
এই সংখ্যায় থাকছে:
“শুধু দেশে নয় সারা পৃথিবীতেই দ্রব্যমূল্য বেড়েছেঃ প্রধানমন্ত্রী”
“১৩ বছরে
মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ: তথ্যমন্ত্রী”
“মায়ের মমতায় দেশ চালালে জনগণ পাশে থাকে: শেখ হাসিনা”
”বাজেটে সুদ ব্যয় বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে”
“দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা”
“শুধু দেশে নয় সারা পৃথিবীতেই দ্রব্যমূল্য বেড়েছেঃ প্রধানমন্ত্রী”
খবরঃ
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক মন্দা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকার
দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজার মনিটরিং করছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক
বাজারে দাম বেড়ে গেলে এখানেও সে প্রভাবটা পড়ে, আর কিছু সুবিধাভোগী
শ্রেণি রয়েছে এই সুযোগটা নেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। যার কুফলটা আমরা ভোগ করছি।
এ সময় দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন
বাড়ানোর মাধ্যমেই যেকোনো সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন
অনাবাদি পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে সকলের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন
প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,
'দেশবাসীকে আমি বলব, খাদ্যে যেন কখনো আমাদের অভাব
না হয়। যে যা পারবেন কিছু উৎপাদন করবেন। নিজের চাহিদা নিজে পূরণের চেষ্টা করবেন। এটা
করতে পারলে আমাদের কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। (https://www.kalerkantho.com/online/national/2022/03/07/1126893)
মন্তব্যঃ
অনিয়ন্ত্রিত বাজারদরের
ফলে যখন ক্রমশঃই জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে তখন বাজার নিয়ন্ত্রণে নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে
বর্তমান সরকারের হাজারো অজুহাতের শেষ নেই।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির
দায়ভার কোভিড সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার উপর চাপিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান যেন এটা বুঝাতে চাচ্ছেন
যে, কোভিডের পূর্বে বাজার
অনেক স্বস্তির মধ্যে ছিল! আন্তর্জাতিক বাজারকে দোষারোপ করে তিনি
বুঝাতে চান আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে তার সরকার যেন কখনোই পণ্যদ্রব্যের দামবৃদ্ধি
হতে দেয়নি! বাজারে কতিপয় সুবিধাভোগী শ্রেণীর উদাহরণ টেনে তিনি
বুঝাতে চান এই সুবিধাভোগী শ্রেণী যেন তাদেরই মদদপুস্ট ক্ষুদ্রগোষ্ঠী নয়! আর তথাকথিত বাজার মনিটরিং কার্যক্রমের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রমাণ করতে চান
বাজার নিয়ন্ত্রণে তার সরকার কতই না আন্তরিক! অথচ এটা সর্বজনবিদিত
যে, দেশের বাজারের কন্ট্রোল কতিপয় গ্রুপ এবং মিল মালিক ও আমদানিকারকদের
হাতে কুক্ষিগত যারা বর্তমান ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থ দ্বারা সমর্থিত ও মদদপুস্ট। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার যদি এতটাই আন্তরিক হত তাহলে সরকারের মদদপুস্ট
এসব সিন্ডিকেট-মন্ত্রী-এমপি-আমদানিকারকসহ বাজারের পুরো চেইন অফ কমান্ডই মূহুর্তের
মধ্যে ধ্বসে পড়ত। সুতরাং, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বাজার মনিটরিং এ্রর যত মুখরোচক গল্পই
শোনাক না কেন, তারা কখনোই নিজেদের এবং এই ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর
স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। ইতিমধ্যে
সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ করে দিয়ে মাত্র ১৫ দিনে এই পুজিপতিশ্রেণীকে ১০০০
কোটি টাকা লুটে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
তাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দায়ভার
কিছু সুবিধাভোগীশ্রেণীর উপর চাপিয়ে দিয়ে তথাকথিত বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে নিজেদের
দায়মুক্তির অপচেষ্টা করা বর্তমান ধর্মনিপেক্ষ শাসকগষ্ঠীর রুটিন কৌশলের অংশবিশেষ।
একমাত্র খিলাফত সরকারই
অত্যন্ত দ্রুত ও কার্যকরভাবে দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং জনগণের
অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। খিলাফত রাষ্ট্র দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার
ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করবে।
খিলাফত রাষ্ট্র বাজারকে কোন ক্ষুদ্র
পুঁজিপতিগোষ্ঠীর মুনাফা অর্জনের হাতিয়ারে পরিণত করে না। মূল্য
নির্ধারণ কিংবা মূল্যবৃদ্ধি শরীয়াহর দৃষ্টিতে হারাম হওয়ায় খিলাফত ব্যবস্থায় সরকার কোন
জিনিসের মূল্য নিজেও নির্ধারণ করে দিবে না কিংবা কোন ব্যক্তিকেও মূল্য নির্ধারণের এই
সুযোগ প্রদান করে না। মাকাল ইবনে ইয়াসির (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি মুসলিমদের জন্য কোন পণ্যমূল্য বাড়ানোর ব্যাপারে কোনভাবে জড়িত থাকে, হাশরের দিনে তাকে ভয়ঙ্কর আগুনে নিক্ষেপ করা আল্লাহ্’র জন্য বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়ায়।“ খিলাফত সরকার প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা
প্রণয়নে বাজারে পণ্য সরবরাহ এবং যথোপযুক্ত বাজার মনিটরিং এর ব্যবস্থা চালু করবে। এর ফলে সিন্ডিকেট, মজুতদারী ও সকল প্রকার একচেটিয়া ব্যবসা বিলুপ্ত হবে। যদি পণ্য স্বল্পতার কারণে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যায় তাহলে খিলাফত
রাষ্ট্র অন্য কোন স্থান থেকে ঐ পণ্য সংগ্রহ করে বাজার সুলভ করার প্রানান্তকর প্রচেস্টা
চালাবে। এভাবে রাষ্ট্র মূল্যবৃদ্ধিকে প্রতিহত করবে। খলীফা
দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের (১৮৭৬-১৯০৯) শাসনামলে একবার রুটি
ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের কারসাজিতে বাজারে রুটির দাম বেড়ে যায়। খলীফা বাজারে রুটির মূল্য স্থিতিশীল রাখার কৌশল হিসেবে তার প্রাসাদের সকল
বাবুর্চি এবং সৈন্যদেরকে দিয়ে রাতভর রুটি বানানোর ব্যবস্থা করেন এবং পরের দিন ভোরবেলা
রাজধানীর সব ঘরের সামনে রুটিগুলো রেখে আসার ব্যবস্থা করেন। এভাবে
বাজারে রুটি সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে খলীফা রুটির মূল্য বৃদ্ধিকে প্রতিহত করেছিলেন যা
আজকের দিনের ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীর তথাকথিত বাজার মনিটর নামে জনগণকে কুমীরের কান্না
দেখানোর সম্পূর্ণ বিপরীত।
-
মোহাম্মদ সিফাত
“১৩ বছরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা
বেড়েছে প্রায় তিনগুণ: তথ্যমন্ত্রী”
খবরঃ
তথ্যমন্ত্রী ও
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
বলেছেন, “গত ১৩ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ আর নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, মধ্যম আয়ের মানুষেরও ক্রয়ক্ষমতা তার কাছাকাছি রয়েছে।
………পৃথিবীতে সবসময় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, কখনো কমেনি। যখন বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়, তখন এক
আনা অর্থাৎ ১৬ পয়সায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেতো, কিন্তু
বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছে। অর্থাৎ দেখতে হবে, দ্রব্যমূল্যের সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে
কি না। ………..বাংলাদেশে আগে দাবি-দাওয়া হতো একজন শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের মূল্যের সমান, আর এখন একজন শ্রমিক কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ কেজির চালের মূল্যের সমান মজুরি পায়, যার অর্থ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।” (https://www.ittefaq.com.bd/492387)
মন্তব্যঃ
‘দীর্ঘ হচ্ছে ওএমএস ও টিসিবির লাইন’ - সংবাদপত্রের এই
একটি শিরোনামই যথেষ্ট দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বর্তমান অবস্থা অনুধাবনের জন্য। যেখানে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করেও একটি পরিবারের মাস চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে সেখানে মন্ত্রীর এই মন্তব্য নিঃসন্দেহেই
একটি প্রতারণামূলক বক্তব্য
ছাড়া আর
কিছুই নয়। নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতেই এই পুঁজিবাদী শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নরকম চটকদার তত্ত্ব ও তথ্য উপস্থাপনের
মাধ্যমে জনগনের সাথে তাদের প্রতারণাকে চলমান রাখে। মাথাপিছু আয় কিংবা জিডিপি
বৃদ্ধির মত
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকগুলোও এই ব্যবস্থার শাসকগুলোর মতই প্রতারণামূলক। এই দুটি সূচক দেশের মোট উৎপাদনের সাথে সম্পর্কযুক্ত, ব্যক্তির
আয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। ফলে দেশের মাথাপিছু আয়
কিংবা জিডিপি বৃদ্ধি পেলেই যে
দেশের সকল মানুষের আয় সমভাবে বৃদ্ধি পাবে এর
কোন ভিত্তি নেই।
বর্তমান ব্যবস্থায় আমাদের জীবনযাত্রা কেন এত কঠিন হয়ে যাচ্ছে তা
যদি আমরা একটু গভীরভাবে বিশ্লেষন করি তাহলে দেখব-
এক, বাজারের
উপর ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া
নিয়ন্ত্রণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে
প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
রমজানে মূল্যবৃদ্ধি, এর নিয়মিত
উদাহরণ। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিদেশ নির্ভরতাও মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। চাল ও পেয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে
যা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। উপরন্তু পন্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে জ্বালানী মূল্যবৃদ্ধি ও সরকারপন্থি নেতাদের
চাঁদা আদায়ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
দুই, মানুষের
আয়ের থেকে যখন ব্যয়ের পরিমান বেশি তখন এই
দুরবস্থাকে আরো কঠিন করে তোলে নানা নামে আরোপিত করা সরকারের বিভিন্ন কর। আয়কর,
মূল্য সংযোজন কর ইত্যাদি বিভিন্ন
নামে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এরা এসে হানা দেয় আর কষ্টার্জিত অর্থকে চুরি করে নেয়।
তিন, এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সম্পদের ফ্লো সবসময় উর্ধমূখী হওয়া।
অর্থাৎ এখানে বেশিরভাগ সম্পদ মুষ্টিমেয় মানুষদের হাতে ঘুরপাক খায়। ফলে বেশিরভাগ
মানুষ অর্থহীন অবস্থায় দিনযাপন করে।
এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে
এদের ক্রয়ক্ষমতা কমে এবং ভোগের পরিমানও কমে যায়।
ফলে উৎপাদনও কমে যায় এবং এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়।
করোনার সময়ে আমরা দেখেছি উৎপাদন কমে যাওয়ায় কিভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ছাটাই করেছে।
চার, বাংলাদেশসহ
সারাবিশ্বে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে প্রচলিত আছে কাগুজে মুদ্রা যার কোন অন্তর্নিহিত মূল্য নেই। পাশাপাশি সরকারগুলো যখনই প্রয়োজন পড়েছে তখনই নিজেদের ইচ্ছেমত টাকা ছেপেছে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই মুদ্রাস্ফীতি
হয়েছে। ফলে লোকজনের বেতন কিংবা আয় বাড়লেও তাদের অর্জিত অর্থের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়নি।
আশির দশকে তিন-চারশত টাকা বেতন পেয়েও লোকজনের দিব্যি চলে যেত আর এখন নূন্যতম বিলাসীতা করতে গেলেও এক লক্ষ টাকার উপরে আয়
করার চিন্তা করতে হয়।
মানুষদেরকে এই দুরবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য ইসলামী ব্যবস্থার রয়েছে চমৎকার নির্দেশনা। যেমন, দ্রব্যমূল্য যাতে একচেটিয়াভাবে বৃদ্ধি না পায় সে জন্যে দ্রব্য মজুদের ক্ষেত্রে রয়েছে ইসলামের নিষেধাজ্ঞা। একচেটিয়া বাজারব্যবস্থাকে এখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আয়কর কিংবা অন্যান্য ট্যাক্সকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। ফলে একজন মানুষ যা আয় করবে তা দিয়ে তার খুব সহজেই চলে যাবে। পাশাপাশি সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত হওয়ার ফলে জনগনের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, এবং যার ফলাফলে উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। উপরন্তু কাগুজে মুদ্রার পরিবর্তে স্বর্ন-রৌপ্যভিত্তিক মুদ্রা ব্যবস্থা একদিকে যেমন অর্থের অন্তর্নিহিত মূল্যকে নিশ্চিত করবে তেমনি মুদ্রাস্ফীতিকেও নিয়ন্ত্রণ করবে।
- মো. হাফিজুর রহমান
“মায়ের মমতায় দেশ চালালে জনগণ পাশে থাকে: শেখ হাসিনা”
খবরঃ
মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে অবশ্যই জনগণের সমর্থন পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার
(৮ মার্চ)
দুবাই এক্সপো-২০২০ এর
দুবাই প্রদর্শনী কেন্দ্রের সাউথ হলে নারীদের ভবিষ্যৎ পুর্ননির্ধারণ শীর্ষক
উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় তিনি এ
মন্তব্য করেন। ….শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সমর্থন
ও আস্থা অর্জন করতে পেরেছি,
যা আমার মূল শক্তি। …এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আনোয়ার
বিন মোহাম্মদ গারগাশ, দেশটির আন্তর্জাতিক
সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল
হাশিমি, জাতিসংঘের
পপুলেশন ফান্ড
(ইউএনএফপিএ) নির্বাহী
পরিচালক নাতালিয়া কানেম, বিশ্ব বাণিজ্য
সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি
ওকোনজো- আইওয়েলা, কার্টটিয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট
এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাইলি ভিগনেরন প্রমুখ। (https://www.banglanews24.com/national/news/bd/916856.details)
মন্তব্যঃ
ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদদের কাছে রাজনীতি হল
মিথ্যা কথায় জনগণকে ভুলানোর কৌশল।
এই মিথ্যা বলাটাকে তারা একটা শিল্পের
পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তারা জনগণকে
অবুঝ শিশু মনে করে আর
তাই হয়তো ছেলে ভুলানো গল্প শোনায়। শেখ হাসিনার
গত ১৩
বছরের শাসনামলে বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যা হয়েছে ৩
হাজার, গুম হয়েছে ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ,
ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি নারী। এই
হল মায়ের মমতায় দেশ চালানোর সামান্য কিছু নমুনা।
আসলে গণতান্ত্রিক নেতারা
নিজেদের ব্যার্থতাকে জায়েজ করে জনগণের দোহাই দিয়ে। জনগণ আমাকে চায়, জনগণ উন্নয়ন চায়,
জনগণ চেতনা চায় ইত্যাদি। এই
জনগণ কে? তারা আসলে কি চায়? ধর্মনিরপেক্ষ
শাসকগোষ্ঠী কখনই তা পরোয়া করে না। কারণ এ দেশে তাদের ক্ষমতায় আরোহণ ও টিকে থাকতে জনগণকে প্রয়োজন পড়ে না। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই কেবলমাত্র পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের তুষ্ট করে যে বছরের পর বছর ক্ষমতায়
থাকা যায় হাসিনা সরকার তার অন্যতম উদাহরণ। তাই তার মুখে জনগণকে মায়ের মত ভালবাসার কথা ‘ভুতের মুখে রাম নাম’
প্রবাদের মত
শোনায়।
ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক
রাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তারা সিস্টেমিক দুর্বলতাকে আড়াল করতে ব্যক্তির গুণ-কীর্তন করতে থাকে। নেতা-নেত্রীকে
মহান পর্যায়ে উন্নীতকরণের রাজনৈতিক বয়ান ছড়িয়ে দিতে থাকে যেন মানুষ নেতাকে পিতা-মাতা তুল্য, পূজনীয় মনে করে রাষ্ট্রীয় ব্যার্থতাকে নিছক একটি দুর্ঘটনা বা কপালের লিখন ভেবে মেনে নেয়। তাই হাসিনা-খালেদার মত
রাজনীতিবিদদের যে
কোনভাবে মহান সাজতেই হবে এছাড়া রাজনীতিতে জনগণকে অফার করার মত তাদের আর কিছু নেই।
প্রকৃতপক্ষে, একজন রাষ্ট্রনায়কের প্রদান দায়িত্ব হল জনগণের সমস্যার সমাধান করা,
তাদের অধিকার নিশ্চিত করা, ন্যায়বিচার
প্রতিষ্ঠা করা।
এগুলো সেই শাসকের পক্ষে সম্ভব যিনি ‘মায়ের মমতা’ ‘পিতার স্নেহ’
এসব ভণ্ডামি দিয়ে নয়, বরং আল্লাহ্’র বিধান দিয়ে জনগণকে শাসন করেন এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় ও নিজের দায়িত্বের
বিষয়ে জনগণ ও আল্লাহ্কে ভয় করেন।
“যারা
আল্লাহ্’র নাযিলকৃত
বিধান দিয়ে শাসনকার্য
পরিচালনা করে না, তারাই
যালেম” (সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৪৫)।
-
কামাল আবু যায়েদ
”বাজেটে সুদ ব্যয় বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে”
খবরঃ
বাজেটে সুদ ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে। গেল অর্থবছরে সুদ ব্যয় খাতে শতভাগ অর্থ ব্যয়ের পরিবর্তে ১১১ শতাংশ অর্থ খরচ করা হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে এই হার ছিল ১০১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরেও সুদ ব্যয়ের পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হওয়ার লক্ষণ নেই বলে জানা গেছে। অর্থ বিভাগের করা সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ ব্যয় খাতে অর্থ বরাদ্দ ধরা ছিল ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা; কিন্তু অর্থবছর শেষে এই ব্যয়ের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে ৭০ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা, যা মূল বাজেটের চেয়ে ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা বেশি। মূল বাজেট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই বৃদ্ধির হার ১১ শতাংশ বেশি। একইভাবে এর আগের অর্থবছরে অর্থাৎ, ২০১৯-২০২০ সালে সুদ ব্যয় খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৫৭ হাজার ৭০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা বৃদ্ধি করে নির্ধারণ করা হয় ৫৭ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছর শেষে এই খাতে ব্যয় করা হয় ৫৮ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বাজেটের ২২ শতাংশ। (dailynayadiganta.com/first-page/648830/বাজেটে-সুদ-ব্যয়-বাড়ছে-অস্বাভাবিক-হারে)
মন্তব্যঃ
সাম্রাজ্যবাদীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ, এডিবির পরামর্শে দেশের সরকার বেসরকারীকরণের নামে রাষ্ট্রীয় আয়ের সম্ভাবনাময় সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং খাতগুলোকে দেশী-বিদেশী ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। যার ফলে রাষ্ট্র তার ব্যয় নির্বাহের জন্য পুরোপুরি বিভিন্ন করের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে। কিন্তু, উপর্যুপুরি কর আরোপের পরেও রাষ্ট্র যখন তার প্রাত্যহিক ও উন্নয়ন ব্যয়ের (ADB) অর্থের যোগান দিতে পারে না, তখন তারা সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রসমূহ, তাদের বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠান ও দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উচ্চাবিলাসী প্রকল্পগুলো সরকারের এই অর্থের প্রয়োজনকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে, সরকার উচ্চসুদে সঞ্চয় পত্রের নামে জনগণের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণের ঋণ গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় মোট দশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে ৪১.৪ শতাংশ। অর্থের অংকে এই ঋণের পরিমাণ ১৪৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার (আই এম এফ, ২০২১)। ঋণ ভিত্তিক এই রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের ফলে প্রথমত, সরকার জনসাধারণের প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে পারে না। দ্বিতীয়ত, পুঞ্জিভূত ঋণগুলো পরিশোধের জন্য সরকারকে আরও নতুন নতুন ঋণগ্রহণ করতে হয় যার ফলে দেশ ঋণের দুষ্ট চক্রের ফাঁদে আটকে যাচ্ছে। তৃতীয়ত, এই সকল ঋণের সুদ ব্যয় নির্বাহ করার জন্য বাৎসরিক বাজেটের প্রায় ১১% বরাদ্ধ রাখতে হচ্ছে। কিন্তু বছর শেষে এই বিপুল বরাদ্ধও পর্যাপ্ত হচ্ছে না। শুধুমাত্র, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সরকারের সুদ ব্যয় হয় ৭০ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। এই সুদের ব্যয় মিটানোর দায় সরকার বিভিন্ন প্রকার করের নামে জনগণের ঘাড়েই চাপিয়ে দেয়। এটাই হচ্ছে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন বা পাবলিক ফাইনান্সের নীতি।
অপরদিকে, আমাদের বিষয়াদি দেখাশোনার জন্য খিলাফত রাষ্ট্র বাধ্যতামূলক রাজস্বের উত্স থেকে তহবিল সরবরাহ করবে। এটি গবাদিপশু, শস্য ও ফলমূল, মুদ্রা এবং সকল প্রকার ব্যবসায়িক পণ্য ও পণ্যদ্রব্যের উপর আহকাম শরীয়াহ অনুযায়ী যাকাত আদায় করবে, কৃষি জমিতে খারাজ ও উশর, আর্থিকভাবে সক্ষম অমুসলিম পুরুষদের উপর জিজিয়া এবং যুদ্ধলব্ধ সম্পদ (ফাই) আদায় করবে ইসলামের নতুন ভূমি উন্মোচনের মাধ্যমে। উপরন্তু, খিলাফত তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং খনিজ জাতীয় সম্পদ থেকে উৎপন্ন রাজস্ব তত্ত্বাবধান করবে,
কারণ ইসলাম রাষ্ট্রকে এই জাতীয় সম্পদের বেসরকারীকরণের অনুমতি দেয় না। খিলাফত সরকারী সম্পত্তির সাথে যুক্ত কারখানাগুলো থেকেও রাজস্ব তৈরি করবে, এবং সেইসাথে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পুঁজি-নিবিড় শিল্প, যেমন
যানবাহন এবং উচ্চমানের ইলেকট্রনিক্স থেকেও করবে। রাজস্বের এই প্রচুর উৎস সত্ত্বেও যদি তা যথেষ্ট না হয়, তখন রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন মেটাতে খিলাফত সাময়িক কিছু কর আরোপ করবে, তবে তা হবে কেবলমাত্র বিত্তশালীদের উপর, কোনভাবেই অভাবী ও ঋণগ্রস্তদের উপর তা আরোপ করা যাবে না। সুতরাং, খিলাফত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন বা পাবলিক ফাইনান্সের নীতি জনগণের ঘাড়ে ঋণ বা করের বোঝা না চাপিয়ে রাষ্ট্রের সকল আর্থিক প্রয়োজন নির্বাহ করতে পারবে।
-মো. সিরাজুল ইসলাম
“দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা”
খবর:
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
শনিবার
সকাল ৮টা ৪৮ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই)
স্কোর ১৮৪ রেকর্ড করা হয়েছে। যার অর্থ
হলো জনবহুল এ শহরের বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
পর্যায়ে রয়েছে।
এছাড়া
এ তালিকায় যথাক্রমে ১৮০ ও ১৭৩ একিউআই সূচক নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি
আরবের রিয়াদ ও চীনের উহান।
একিউআই
স্কোর ১০১ থেকে ২০০ পর্যন্ত ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত
হয় বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য।.... ২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের
একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান
উৎস হলো ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।.... (https://unb.com.bd/bangla/category/বাংলাদেশ/দূষিত-বাতাসের-শহরের-তালিকায়-শীর্ষে-ঢাকা/53819)
মন্তব্যঃ
বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে যা চিহ্নিত করা
হয়, তা আসলে মূল সমস্যার উপসর্গ। তাই আমাদের বিশেষজ্ঞরা এখন পর্যন্ত সমস্যার
গোঁড়াতে পৌছাতে পারেননি। পরিবেশ দূষণের মূল কারণ হল মুনাফা-আবিষ্ট 'পুঁজিবাদী মতাদর্শ ও ব্যবস্থা' যা আজ রাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনে
আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে।
এই
মতবাদ পরিবেশের সুরক্ষাসহ অন্যান্য সমস্ত মানবিক চাহিদার উপর মুনাফা ও লাভকে অগ্রাধিকার
দেয়। তাই
ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থায় অর্থনৈতিক দিককে সবার উপরে স্থান
দেয়া হয়, এখানে পরিবেশ কিংবা স্বাস্থ্য সমস্যার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো
গৌণ, এই দৃষ্টিভঙ্গিটি এই আদর্শের ‘মালিকানার স্বাধীনতা’
নামক একটি মৌলিক বিশ্বাস থেকে এসেছে। তাই পুঁজিবাদী-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্র সবসময় বড় বড় পুঁজিপতিদের স্বার্থে আইন প্রণয়ন
করে, যার কারণে পুঁজিপতিরা দূষণ প্রতিরোধে কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ
না করেই বড় বড় শিল্প কারখানা স্থাপনের সুযোগ পেয়ে যায়। যেমন, সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের (যা ভূমিগ্রাসী-বনগ্রাসী কিছু সুবিধাভোগী পুঁজিপতিগোষ্ঠী ও মুসলিমদের শত্রুরাষ্ট্র ভারতের
স্বার্থের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে) বিরোধিতাকারীদের উপহাস করে
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “বাঘ নয়, মানুষের
কথা ভাবুন... রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে দেখা করে তাদের কথা
বলা উচিত...”।
শুধুমাত্র
পুঁজিপতিদের স্বার্থেই ভয়াবহ দূষণের জন্য দায়ী ইটভাটাগুলো এখনো বন্ধ হচ্ছে না, যেগুলোর কারণে একদিকে যেমন বাতাস ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে উর্বর ফসলি জমি উজাড় হয়ে যাচ্ছে, যদিও অটোব্রিকস
কিংবা কনক্রিট ব্লক টেকনোলজির মত বিকল্প ব্যবস্থা বিদ্যমান। পরিবেশবান্ধব
ইলেকট্রিক কিংবা সৌরবিদ্যুৎ চালিত যানবাহন টেকনোলজির প্রচলন থাকলেও জীবাশ্ম জ্বালানির
যানবাহনগুলো ব্যাপকভাবে আমদানি করা হচ্ছে।
সেই
সাথে কথিত উন্নয়নের নামে মুষ্টিমেয় পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে মেগা প্রকল্পগুলো,
যেগুলোতে ৩ থেকে ১০ গুণ টাকা খরচ করেও নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে সড়কগুলোতে বায়ু
দূষণ মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা হচ্ছে না।
যেহেতু
পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ‘ক্রমবর্ধমান এবং অবিরাম খরচের তুলনায় সম্পদের অভাব’
এর ধারনায় বিশ্বাসী, তাই এটি সবসময় সম্পদের সুষমবন্টন কিংবা সকল নাগরিকের মৌলিক চাহিদার
(খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান) চাইতে উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়ে থাকে। এতে পরিবেশ
ধ্বংস হয়ে গেলেও সেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলে মনে করে না। ফলে
এটি পরিবেশ ও মানুষকে পরস্পর পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানে দাড় করিয়ে দেয়।
কিন্তু ইসলাম প্রকৃতি ও মানুষের বিপরীতমুখী অবস্থানে বিশ্বাস করেনা। পরিবেশ সংরক্ষণ-এর সাথে জড়িত অনেক নির্দেশনা ইসলামী শরীয়ার মাঝে বিদ্যমান। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “তিনটি স্থানে মলত্যাগ এড়িয়ে চলবে যা মানুষের অভিশাপ বয়ে নিয়ে আসে; পানির উৎস, রাস্তা এবং ছায়ায় (মানুষের বিশ্রামস্থলে)” (আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)। হাদীসটি আমাদেরকে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। এছাড়াও মুসলিম ভূমির সম্মিলিত সম্পদ উম্মাহ্ এবং বিশ্বকে অগ্রগতি প্রদানের জন্য যথেষ্ট। খিলাফত রাষ্ট্রের তাই মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে উৎপাদন বৃদ্ধির মত জনবিধ্বোংসী কাজে খরচ করতে হবে না এবং বায়ুকেও দূষিত করতে হবে না। এই রাষ্ট্র একটি সামগ্রিক নীতি প্রণয়ন করবে যা ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমস্ত কর্মের জন্য স্পষ্ট মাপকাঠি প্রদান করে। সেই সাথে আমাদের ধারণা দেয় যে, আল্লাহ্ এই মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন এবং এর সবকিছুকে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। মানুষকে তিনি এর উপর দায়িত্বশীল করে দিয়েছেন, যেন তারা এর থেকে উপকৃত হতে পারে। তাই সকল মানুষ পরিবেশ রক্ষায় আল্লাহ্’র নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্বশীল আচরণ করবে। আর এটা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্রব্যবস্থা (খিলাফত)। এই খিলাফত ব্যবস্থা একদিকে রাষ্ট্রকে শিল্পোন্নত করবে, অন্যদিকে শিল্পগুলোকে ইসলামী বিধানের অনুগত করবে, যেন মানব ও প্রকৃতি ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পায়।
- মো: জহিরুল ইসলাম