Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

১০৪ তম সংখ্যা । ২৫ অক্টোবর, ২০২৩



এই সংখ্যায় থাকছে : 


“ফিলিস্তিনে নিহতদের স্মরণে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক”

“ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির নীরবতার রহস্য কী?”

“জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে গেলেন নৌবাহিনীর ৭৫ সদস্য”

“গাজায় হাসপাতালে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ৫০০ জন”

“সংলাপসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের ৫ দফা সুপারিশ”







“ফিলিস্তিনে নিহতদের স্মরণে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক”

খবরঃ

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের স্মরণে আগামী শনিবার দেশে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। ওই দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে বলেছেন তিনি। এছাড়া, তিনি জুমার দিন সব মসজিদ ও উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করতে বলেন। (https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-524846

মন্তব্যঃ 

ফিলিস্তিনে দখলদার ইহুদী বাহিনীর হামলায় নিহত মুসলিমদের স্মরণে শেখ হাসিনার এই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা কেবল প্রতারণামাত্র। হাসিনা সরকার প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলার তথাকথিত নিন্দা জানালেও এই অবৈধ ইহুদী সত্ত্বার সাথে গোপন সম্পর্ক বজায় রেখে ইতিমধ্যে উম্মাহ্’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। হাসিনা সরকার ২০২১ সালে গাজায় নিরস্ত্র মুসলিম জনগণের উপর ইসরাইলের নৃশংস হামলার পরপরই বাংলাদেশের নতুন ই-পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ অংশটি বাদ দিয়ে বলা হয়েছে বিশ্বের ‘সব দেশের’ ক্ষেত্রে এটি বৈধ। অর্থাৎ পরোক্ষভাবে ‘ইসরাইল’ নামক জায়নবাদী রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। “Two State Solution” নামক অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার মার্কিন প্রকল্পকে হাসিনা সরকার এবারও সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। বিপুল জনগোষ্ঠীকে Mass Surveillance এর আওতায় আনার জন্য গোপনে গোপনে ইসরাইলী কোম্পানি থেকে Cellphone monitoring and interception systems, Spyware সহ অন্যান্য উন্নত নজরদারি সরঞ্জাম ক্রয় করেছে (“Bangladesh bought mass spying equipment from Israeli company”, Aljazeera, 2 Feb 2021)। আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান, মরক্কোর দালাল শাসকেরা ইহুদী সত্তার সাথে যেভাবে ইতিমধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে, মুসলিম ভূখন্ডের অন্যান্য ভন্ড শাসকদের মত হাসিনা সরকারও কোনভাবেই পিছিয়ে নেই। হাসিনা সরকার উপসাগরীয় অঞ্চলে গত ৩১/০১/২০২২ তারিখ হতে ১৮ দিনব্যাপী মার্কিনীদের আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম এক্সারসাইজ (আই.এম.এক্স)-এ বাংলাদেশের নৌবাহিনীকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে প্রেরণ করে, এই বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসমূহে কোন সংবাদও পরিবেশন করা হয়নি। অন্যদিকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপি ও অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী দলের নেতাদেরও ভন্ডামীও পরিস্কার। ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হওয়ায় বিএনপি এবার ইসরাইলের পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে পুরোপুরি নীরবতা পালন করছে। বিএনপি ও বিএনপি পন্থী নেতাদের দখলকারী ইসরায়েলী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দেখা গেছে।

তাই অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকারী ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ও রাজনীতিবিদদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা ঈমানদারদের উপর একটি বাধ্যবাধকতা। তাদের চকটদার বক্তব্য শুনে আমাদের প্রতারিত হলে চলবে না। আল্লাহ্’র শত্রুদের পক্ষ নেয়া এসব বিশ্বাসঘাতক শাসকদের আনুগত্য থেকে আমাদের মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। এসব মুনাফিক শাসকরাই ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে প্রধান বাধা, যারা অভিশপ্ত ইহুদীদের সাথে আঁতাত করে এবং মুসলিম সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে বন্দী করে রাখে আর আমাদেরকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে তথাকথিত শোক জ্ঞাপন কিংবা নিন্দা জানানোর সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত করে। অথচ আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে অভিশপ্ত ইহুদীদের কবল থেকে ফিলিস্তিনের প্রতি ইঞ্চি ভূমিকে মুক্ত করা মুসলিমদের জন্য আমানতস্বরুপ। তাই ফিলিস্তিনের মুক্তি এবং সমস্ত মুসলিম ভূখণ্ডের সংকটের একমাত্র সমাধানের পথে দাঁড়িয়ে থাকা এই পুতুল শাসকদের অপসারণ করতে নবুওয়্যাতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফতে রাশিদাহ্ প্রতিষ্ঠার জন্য মুসলিম সেনাবাহিনীর কাছে আমাদের সম্মিলিতভাবে জোর দাবী তুলতে হবে। খিলাফত রাষ্ট্র মুসলিম ভূমিগুলো ও এর সামরিক বাহিনীকে একত্রিত করে আল-কুদস্‘কে মুক্ত করতে শক্তিশালী সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে,  যেভাবে আমাদের পূর্বসূরি সালাহ্উদ্দিন আইয়্যুবী আল-কুদসকে ঘিরে থাকা বিশ্বাসঘাতক শাসকদের অপসারণ করে তার নেতৃত্বে সিরিয়া, মিশর এবং অতঃপর ইরাককে একত্রিত করেছিলেন এবং অবশেষে এটিকে মুক্ত করেছিলেন।

    -    সিফাত নেওয়াজ




“ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির নীরবতার রহস্য কী?”

খবরঃ

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশের বাম ও ধর্মভিত্তিক ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সরব থাকলেও এই ইস্যুতে নীরব বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (৯ অক্টোবর) সোশ্যাল হ্যান্ডেল এক্স-এ টুইট করলেও দেশের অভ্যন্তরে দলের নেতৃত্বে থাকা নেতারা চুপ রয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা ও দায়িত্বশীল বলছেন, প্রথমত ফিলিস্তিন ইস্যুটি আন্তর্জাতিক। এই ইস্যুতে দলের চেয়ারম্যানের টুইটটিই দলের অবস্থানকে তুলে ধরেছে। দ্বিতীয়ত, বিএনপি দেশের উদার গণতান্ত্রিক দল, কোনও ধর্মভিত্তিক দল নয়। এক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে ইস্যুটিকে ফেস করতে হচ্ছে। দলের প্রভাবশালী একজন দায়িত্বশীল শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিএনপি তো সরকারে নেই। বিষয়টিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখার দায়িত্ব সরকারের। উদার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সুনির্দিষ্ট কোনও ধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেবে না। পাশাপাশি ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সুসম্পর্কের কারণে কোনোভাবেই বিতর্কিত কোনও অবস্থান নেবে না বিএনপি।’ (www.banglatribune.com/politics/820143)

মন্তব্যঃ

বিএনপি নেতৃত্ব তাদের পশ্চিমা প্রভুদের বিশেষ করে আমেরিকাকে খুশি রাখার জন্য ফিলিস্তিনের ইস্যুতে নীরবতা দেখে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই। তারা বিশ্বাস করে তাদেরকে জনগণ নয় বরং আমেরিকা ক্ষমতায় বসাতে পারে, যদিও তারা মুখে গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের বুলি আওড়ায়। তাই বিএনপি নেতৃত্ব ফিলিস্তিনের মত মুসলিম উম্মাহ্’র গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পশ্চিমাদের নীতির আলোকেই কথা বলছে। গত ৯ অক্টোবর এক টুইট বার্তায় তারেক রহমান বলেন, “ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যকার দ্বন্দের নজিরবিহীন বিস্তারের প্রেক্ষিতে সব ধরনের সহিংসতার আমি নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে রক্তপাত বন্ধ ও বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানে এগিয়ে আসতে জাতিসংঘ, ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি দ্রুত কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানাই”। যেখানে ইসরাইল একতরফাভাবে মুসলিম গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, তিনিও সেটাকে পশ্চিমাদের ভাষাতেই দুইপক্ষের সংঘাত হিসেবে উপস্থাপনের মাধ্যমে আমেরিকাকে নাখোশ না করার কৌশলী অবস্থান নিলেন। অপরদিকে গত জুলাইয়ে বিএনপিগোষ্ঠীর একজন নুরুল হক নুর ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। ২০১৬ সালের মে মাসে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতে মেন্দি এন সাফাদির সাথে দেখা করেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, আমরা সাধারণ মুসলিমরা বিএনপি-কে ইসলামপ্রেমী দল ভেবে প্রতারিত হই। বিএনপি নেতারা পরিষ্কার ভাষায় বলেছে, তারা উদার গণতান্ত্রিক দল, কোনও ধর্মভিত্তিক দল নয়; অর্থাৎ ধর্মকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখাতে বিশ্বাসী। তাই তারা ইসলাম ও মুসলিমদের ইস্যুতে কখনো অবস্থান নিবে। অপরদিকে, হাসিনা সরকারও মার্কিন প্রকল্প “Two-State Solution”-কে সমর্থন করে, অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ইতিপূর্বে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে “ইসরাইল ব্যতীত” শব্দ দু’টি বাতিল করেছে, এবং মোবাইলে নজরদারির জন্যে ইসরাইলের কাছ থেকে পেগাসাস নামক স্পাইওয়্যার ক্রয় করেছে।

এই হচ্ছে আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি, যার কারণে তারা মুসলিম ভূখন্ডে ও মুসলিমদের মাঝে রাজনীতি করেও তাদের আউলিয়া বা বন্ধু হিসেবে পশ্চিমা কাফিরদের গ্রহণ করে আর আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে: “হে তোমরা যা ঈমান এনেছ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে তোমাদের আউলিয়া (বন্ধু, রক্ষাকর্তা, সাহায্যকারী) হিসেবে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত” (সূরা আল-মায়িদাহ্ : ৫১)। 

ইসলামে রাজনীতি হচ্ছে জনগণের বিষয়াদী দেখভাল করা এবং তা হতে হবে ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী। এখানে কোন অজুহাত দিয়ে শারীআহ্’র সুনির্দিষ্ট হুকুম থেকে শাসকের সরে আসার সুযোগ নেই। ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট, আর তা হচ্ছে আল-কুদসকে মুক্ত করতে মুসলিম সেনাবাহিনী প্রেরণ করা, যা বর্তমান দালাল শাসকগোষ্ঠী কখনোই করবে না। ইসলামে শাসনের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্’র সন্তুষ্টি অর্জন। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সাঃ) বলেন, “শেষ বিচারের দিন সাত শ্রেণীর লোক আল্লাহ্’র আরশের নীচে ছায়া পাবে যেদিন তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। তারা হলেন: একজন ন্যায়বিচারক শাসক, .....। এই দর্শন শাসককে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা থেকে মুক্ত রেখে মুসলিম উম্মাহ্’র স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত হতে অনুপ্রাণিত করে। 

    -    মো. হাফিজুর রহমান  




“জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে গেলেন নৌবাহিনীর ৭৫ সদস্য”

খবরঃ

জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবাননে (ইউনিফিল)’ অংশ নিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৭৫ সদস্যের একটি দল গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী কন্টিনজেন্ট ‘ব্যানকন-১৪’-এর আওতায় লেবাননে মোতায়েন নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রামে’ এই নৌসদস্যরা যোগ দেবেন।... তিনি নৌসদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তথা দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে একযোগে কাজ করার দিকনির্দেশনা দেন।... আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়,... বর্তমানে নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’ লেবাননের ভূখণ্ডে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। (https://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2023/10/14/1326687)

মন্তব্যঃ

ফিলিস্তিন দূরে বলে ‘সেখানকার মুসলিমদের উদ্ধার করতে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়’ এই অজুহাত যে কেবল একটা মিথ্যা অজুহাত, তা ৭৫ নৌসদস্যের এই মিশনে গমনের মাধ্যমে প্রমাণিত। কারণ, বাংলাদেশ-ফিলিস্তিনের মধ্যেকার দুরত্বতো তাদেরকে মিশনে যেতে বাধা দিতে পারেনি! উপরন্তু এই মিশনে গিয়ে তাদের কাজ হল পশ্চিমা দালাল লেবানন সরকারকে সহায়তা করা, যেন তারা আর অন্য সকল আরব শাসকদের মতো ইহুদীবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখতে পারে, যেমনটি আমরা দেখেছি আলোচ্য নিউজে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা সেখানে লেবাননের ভূখণ্ডে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছে (যেগুলো ইসরাইলের বিপক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে)। ইহুদিবাদী রাষ্ট্র কর্তৃক মসজিদুল আকসা ও এর আশেপাশের মুসলিমগণের উপর অবৈধ দখলদারিত্ব ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রেক্ষিতে মুসলিমদের প্রতি আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র আদেশ হলো, “যদি তারা দ্বীনের জন্য তোমাদের নিকট সাহায্য চায়, তবে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য” (সূরা আনফালঃ ৭২)। এই নির্দেশ অনুযায়ী সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কাজ হলো, মসজিদুল আকসা ও তার আশেপাশের অর্থাৎ ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমির মুসলিমগণকে উদ্ধার করা। এই কাজ না করে শাসকদের আদেশে ও সামান্য কিছু ডলার আয়ের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র অবাধ্য হয়ে পশ্চিমাদের স্বার্থে কাজ করা মুসলিম সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য কখনোই সমীচীন নয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে সৃষ্টির আনুগত্য নয়” (আহমেদ, তাবারানী)। এবং তথাকথিত পেশাদারিত্বের দায়িত্বের দোহাই দিয়ে এই জালেম শাসকদের আনুগত্য প্রদর্শনের মত গর্হিত কাজের পরিণতি হলো অবশ্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা নির্ধারিত মর্মন্তুদ শাস্তি, যেটি তিনি ফেরাউন ও তার বাহিনীকে আস্বাদন করিয়েছেন। ফেরাউনের আনুগত্য করার কারণে তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) ফেরাউনের সাথে ফেরাউনের বাহিনীকেও নীল নদে ডুবিয়ে দেন।

তাই যে নেতৃত্ব আল্লাহ্’র আদেশ পালনে বাধা দেয়, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব হল সে নেতৃত্বকে অপসারণ করে এমন নেতৃত্ব বা শাসক নিয়ে আসা, যারা তাদেরকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র হুকুম পালনে আদেশ দান করবেন। এবং একমাত্র খিলাফত শাসনব্যবস্থাই এই এধরনের নেতৃত্ব বা শাসক তৈরি করে। অন্যথায়, অন্যায় আদেশ দানকারী ও তাদের অনুসারীগণের মধ্যে এই সম্পর্ক হাশরের দিনের কঠিন বিপদের মুহূর্তে ভেঙ্গে যাবে এবং চরম আফসোসের কারণ হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “যখন, যাদেরকে অনুসরণ করা হয়েছে, তারা অনুসারীদের থেকে আলাদা হয়ে যাবে এবং তারা আযাব দেখতে পাবে। আর তাদের সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। অনুসরণকারীরা বলবে, যদি কোনও প্রকারে আমাদের ফিরে যাবার সুযোগ ঘটত, তাহলে আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমনভাবে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করল। এভাবে আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের কাজগুলো দেখাবেন তাদের জন্য আক্ষেপরূপে এবং জাহান্নাম হতে তারা বের হতে পারবে না” (সূরা বাকারাঃ ১৬৬-১৬৭)। তাই আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র হুকুমের বিরোধিতা করে ইহুদীবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র রক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যের মুনাফিক শাসকদের সহায়তা করার তথাকথিত শান্তিমিশনে যোগ না দিয়ে, বরং ইহুদীবাদী দখলদারিত্ব নিশ্চিহ্ন করে মসজিদুল আকসা ও তার আশেপাশের পবিত্র ভূমি সমূহ উদ্ধার করাই হলো সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য মূল দায়িত্ব। এবং এই দায়িত্ব পালনের জন্য বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে অপসারণ করে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা জরুরী।

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম 




“গাজায় হাসপাতালে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ৫০০ জন”

খবরঃ 

গাজার এক হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো অনেকে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আল-আহলি হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার হামাস সরকার এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ...হাসপাতালটিতে শত শত অসুস্থ এবং আহত রোগী ছিল। সেই সঙ্গে ইসরায়েলি হামলার কারণে ঘরছাড়া লোকেরাও সেখানে আশ্রয় নেয়। https://www.youtube.com/watch?v=y3OOmgN6fkM 

মন্তব্যঃ

অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠী আল-আক্বসা ও ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিকে আঁকড়ে থাকা সাহসী মুসলিমদের উপর বছরের পর বছর ধরে যে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে তারই সামান্য নমুনা হচ্ছে গাজার আল-আহলি হাসপাতালের এই হামলা। ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর বালফোর ডিক্লেরেশন-এর পর থেকে গত শত বছর ধরে ইহুদীরা পশ্চিমা কাফিরগোষ্ঠী ব্রিটেন-আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে এবং মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকগোষ্ঠীর নীরবতায় আমাদের প্রথম কিবলা আল-আক্বসার পবিত্রতা লজ্ঞন করাসহ নবজাতক হত্যা ও শিশুদেরকে জেলবন্দি করা, হত্যা, ধর্ষণ, গুম, উচ্ছেদ, নির্বাসিত করা, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, সম্পদ জবরদখল এহেন কোন ঘৃণ্য ও নৃশংস কাজ নেই যা তারা করেনি। এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সাহসী ফিলিস্তিনের মুজাহিদরা যখন দখলদার ইহুদীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ দেখিয়েছে, তখন প্রতারক পশ্চিমা কাফিরগোষ্ঠী ও তাদের মিডিয়াগুলো শিশু হত্যা ও নারী-শিশুদের নির্যাতনের মিথ্যা খবর ছড়িয়ে বলছে প্রতিরোধকারী মুজাহিদরা নাকি ইহুদী দখলদারদের উপর জুলুম করেছে, যুদ্ধাপরাধ করেছে। পশ্চিমা মিডিয়া বিবিসি প্রচার করেছিল আল-আহলি হাসপাতালের নীচে হামাসের সুরঙ্গ রয়েছে, যা পরবর্তীতে ইহুদীরা তাদের আক্রমণের যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছে। পশ্চিমা নেতারা একযোগে দখলদার ইহুদীদের সমর্থন দিয়ে বলেছে, ইসরাইলের নিজেকে রক্ষার অধিকার রয়েছে। কি প্রতারণামূলক তাদের যুক্তি(!)। দখলদারের নিজেকে রক্ষার অধিকার রয়েছে! প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমা কাফিরগোষ্ঠী সকল প্রকার ন্যায়-নীতি বিবর্জিত। তারা তাদের অন্যায়কে আরো বেশি প্রকট করতে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলতে কুন্ঠিতবোধ করেনা।

ইহুদী ও পশ্চিমা কাফির গোষ্ঠী কর্তৃক প্রচারিত প্রপাগাণ্ডা -ফিলিস্তিনের সাহসী প্রতিরোধকারীরা শিশুদের জবাই করেছে, নারী ধর্ষণ, বৃদ্ধদেরকে নির্যাতন করেছে, ইতিমধ্যে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, যা তাদের মিডিয়া ও জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপ্রাপ্তরা ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে। মুসলিমরা কখনো আবেগ ও নিজের খেয়ালখুশী অনুযায়ী কাজ করে না, বরং তাদের সমস্ত কাজের মূল ভিত্তি হলো শারী‘আহ্। তাই ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিরোধকে শারী‘আহ্’র হুকুম হিসেবে দেখতে হবে, এটাকে প্রতিরোধের ফলাফল বা পরিণতি কি হবে সে দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখলে চলবে না। কারণ আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী কাফিরদের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে আলাদা। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকারী মুসলিমরা তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী একাজটিই করে যাচ্ছেন, আমরা দেখতে পেয়েছি যে প্রতিরোধকারীর পা নেই সে হুইল চেয়ারে বসে পাথর নিক্ষেপ করে তার দায়িত্ব পালন করছেন। 

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকারী মুসলিমরা যা করছে সেটা প্রতিরোধ যুদ্ধ, একমাত্র খিলাফত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে মুসলিম সামরিক বাহিনীকে জিহাদে প্রেরণ করবে। ইসলামের রয়েছে সুনির্দিষ্ট সমরনীতি, মুসলিমরা সর্বাবস্থায় সেটাকে মান্য করে চলে। কাফিরদের মত একটি জাতিগোষ্ঠীকে “Human animals” আখ্যা দিয়ে নৃশংসতা চালায় না, বরং শারীয়াহ্অনুযায়ী আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শত্রু পক্ষের সাথে যা যা করার অনুমতি দিয়েছেন তারা তাই করে। ইসলামে যুদ্ধের অন্যতম নীতি হচ্ছে, “শত্রু পক্ষ মুসলিমদের সাথে যা যা করেছে কিংবা মুসলিমরা শত্রু পক্ষ থেকে যা যা করার আশংকা করছে তার সবই করতে পারবে”। আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “আর যদি তোমরা শাস্তি দাও, তবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দাও যতটুকু তোমাদের দেয়া হয়েছে…” (সূরা-আন-নাহলঃ১২৬)। “আর যদি তুমি কোন কওম থেকে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা কর, তাহলে তাদের দিকে সোজা নিক্ষেপ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ্বিশ্বাসঘাতকদের পছন্দ করেন না” (সূরাঃ আল-আনফালঃ৫৮)। নারী, শিশু, দুর্বল এবং বয়োবৃদ্ধদের প্রতি ইসলামের নিয়ম হচ্ছে, “তাদেরকে হত্যা করা যাবেনা যদিনা এই বিষয়গুলো থাকে, (১)তারা যদি শত্রুদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করে কিংবা সহযোগিতা করে, (২) তাদেরকে যদি শত্রুদের থেকে আলাদা করা সম্ভব না হয়”। এবং গাছপালা কিংবা সাধারণ ঘরবাড়ি ধ্বংস করা যাবেনা, যদিনা তা শত্রুপক্ষকে পরাস্ত করতে তা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। 

    -    আসাদুল্লাহ্ নাঈম




“সংলাপসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের ৫ দফা সুপারিশ”

খবরঃ

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং অহিংস নির্বাচনের জন্য অগ্রগতির রোডম্যাপ হিসেবে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষক করেন। পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশগুলো হলো- ১. নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে পরিমিত কথাবার্তা, উন্মুক্ত এবং গঠনমূলক সংলাপ। ২. মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সমাজের কথা বলার স্থান নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি সম্মান দেখানো হবে। ৩. অহিংস থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতাকারীদের জবাবদিহিতায় আনতে হবে। ৪. সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এর মধ্যে থাকবে স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা। ৫. নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সক্রিয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করতে হবে। (https://dailyinqilab.com/national/article/610126

মন্তব্যঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তথাকথিত অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণ নির্বাচনের মধ্যস্থতাকারী কিংবা গণতন্ত্র উদ্ধারকারী হিসেবে ভাবার সুযোগ নেই কারণ Free & Fair Elections, Freedom, Pluralism, Rule of law & majority rule, human rights ইত্যাদি হল পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের ছুঁড়ে দেয়া কিছু বিভ্রম (Illusion) যেগুলোর মাধ্যমে তারা মুসলিম ভূখন্ডে হস্তক্ষেপ করে। পশ্চিমারা মুসলিম ভূখন্ডে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে কোন দেশে একনায়ক বা স্বৈরশাসকদের মদদ দেয়, কোন দেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করে কিংবা কোথাও কোথাও সরাসরি সামরিক আগ্রাসন চালায়। অতঃপর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার শাসকদের অব্যাহত যুলুম, নির্যাতন ও দুঃশাসনের ফলে জনগণের মধ্যে যখন এই ব্যবস্থার প্রতি ব্যাপক অনাস্থা তৈরি হয় এবং শাসকরা যখন বৈধতার সংকটে পড়ে তখন উপনিবেশবাদীরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা জনগণের মধ্যে থাকা পরিবর্তনের আকাঙ্খাকে বিভ্রান্ত করার জন্য তথাকথিত “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা” প্রতিষ্ঠার চটকদার যুক্তি দেখিয়ে জনগণের মধ্যে মিথ্যা আশার সঞ্চার করে। তাই আমরা লক্ষ্য করছি যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এদেশে স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন দেয়ার পর মার্কিনীরা এখন হঠাৎ করে ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু করেছে! তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ করা সহ আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক সমঝোতার একটি নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে তথাকথিত রাজনৈতিক সংলাপের প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাজির হয়েছে। আর দেশের মার্কিনপন্থী তথাকথিত থিঙ্ক ট্যাংক ও বুদ্ধিজীবীরা এই প্রেস্ক্রিপশন আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠী উভয় পক্ষের মুখ রক্ষার সুযোগ তৈরি করবে ঘোষণা দিয়ে উভয়পক্ষকে এই সংলাপে ও সমঝোতার দিকে আহবান করছে। অথচ এটা সর্বজনবিদিত যে উপনিবেশবাদীদের তত্ত্বাবধানে এবং আওয়ামী-বিএনপিগোষ্ঠীর রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে কোন নির্বাচন আদৌ  জনগণের ইচ্ছা ও প্রতিনিধিত্বকে প্রতিফলিত করবে না কিংবা জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন করবে না। এছাড়া মার্কিনীরা যে গণতন্ত্রের কথা বলছে তা খোদ পশ্চিমা বিশ্বেই ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস ২০২২ সালে জরিপ প্রকাশ করেছে যে আমেরিকার সমস্ত ভোটারের ৭১% বলেছেন যে গণতন্ত্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মার্কিনীরা এক যালিম থেকে আরেক যালিম শাসকগোষ্ঠীকে ক্ষমতায় বসায় গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে, আর এভাবে জনগণের প্রকৃত মুক্তির পথ বারবার ছিনতাই হয় এবং যুলুম দীর্ঘায়িত হয়। 

 সুতরাং, আমাদেরকে কাফির উপনিবেশবাদীদের প্রদত্ত রাজনৈতিক প্রেস্ক্রিপশন, এগুলোর বাস্তবায়নকারী ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী এবং এসব সমাধানের দিকে আহবানকারী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী/বিশ্লেষকদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর তথাকথিত রাজনৈতিক সমঝোতা এবং গণতন্ত্রের অধীনে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ নামক এই উপনিবেশবাদী প্রকল্প থেকে দূরে থাকতে হবে। পশ্চিমা কাফিরদের চাপিয়ে দেয়া রাজনৈতিক সমাধান প্রত্যাখ্যান করে একমাত্র আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র মজবুত রশিকে আঁকড়ে ধরা এবং ইসলামকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি সহ জীবনের সকল সমস্যা সমাধানের একমাত্র ও সঠিক উৎস হিসেবে গ্রহণ করা ছাড়া আমাদের প্রকৃত মুক্তির পথ নেই। তাই দেশের রাজনীতিতে পশ্চিমা আধিপত্য ও হস্তক্ষেপ থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে আমাদের করণীয় হল এই ভূখন্ড থেকে বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা এবং নবুওয়্যাতের আদলে খিলাফত ব্যবস্থার আওতাধীন নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করার প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা। আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “হেদায়েত বিভ্রান্তি থেকে পৃথক হয়ে গেছে, তাই যে বাতিল মতাদর্শকে প্রত্যাখ্যান করে এবং আল্লাহ্’র দেয়া জীবনাদর্শকে আকড়ে ধরে সে এমন এক শক্তিশালী রশি ধরল যা কোনদিনই ছিড়ে যাবার নয়; এবং আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ” (আল-বাকারা: ২৫৬)। 

    -    সিফাত নেওয়াজ