Weekly
ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা
১২৪ তম সংখ্যা । ১৫ জুলাই, ২০২৪
এই সংখ্যায় থাকছে :
“তারুণ্য কেন কোটা বাতিলের আন্দোলনে?”
“ঋণখেলাপিদের সুদ মওকুফ করা খুবই আপত্তিকর: মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন”
“বিদ্যমান আইনে ফয়সাল-মতিউরদের ঠেকানো কঠিন: দুদক”
“থমকে গেছে পদ্মা পাড়ের জনজীবন”
“আবারও সীমান্তে বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশি নিহত”
“আমার সন্তান যাতে নিশ্বাস নিতে পারে, সে চেষ্টা করছিলাম”
“তারুণ্য কেন কোটা বাতিলের আন্দোলনে?”
খবরঃ
বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলন ‘বাংলা ব্লকেড' ঢাকাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে৷ এর মধ্যেই ১০ জুলাই বাংলাদেশের উচ্চ আদালত কোটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন৷ আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে আপাতত কোটা থাকছে না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল৷ আদালতের এমন আদেশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের দিকে যাবে এমনটা ভাবা হলেও আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে৷ আর আদালত নয় সরকারকেই এই সমাধান দিতে হবে৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন–এর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমরা মূলত সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছেই কোটা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান চাইছি৷ এক দফা দাবি৷ এটি আদালতের এখতিয়ার নয়, এটি একমাত্র নির্বাহী বিভাগই পূরণ করতে পারবে৷ সরকারের কাছ থেকেই আমরা সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছি৷'' (www.dw.com/bn/তারুণ্য-কেন-কোটা-বাতিলের-আন্দোলনে/a-69644767)
মন্তব্যঃ
কোটাব্যবস্থা বাতিল এবং পুনঃরায় বহালের মাধ্যমে সরকার মূলত কোটাধারী এবং সাধারণ চাকুরীপ্রার্থী উভয়ের সাথেই প্রতারণা করেছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারী চাকুরীতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল, এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। অথচ আমরা দেখছি, মুক্তিযুদ্ধের ফেরিওয়ালা দুর্নীতিগ্রস্থ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী প্রায় ৫০,০০০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বিক্রি করেছে (Source)। একইভাবে, সরকারঘনিষ্ট দুর্নীতিগ্রস্ত পিএসসি কর্মকর্তারা বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অসংখ্য ভূয়া ক্যাডার তৈরি করেছে বলে নিজেরাই স্বীকার করেছে (Source)। সরকার যেখানে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের দায়িত্ব নেয়ার কথা সেখানে হাতেগোনা যে কয়টি সরকারি চাকুরী রয়েছে সেগুলোতেও সীমাহীন প্রতারণা ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। মূল বিষয়টি হচ্ছে, যেহেতু ধর্মনিরপেক্ষ শাসকরা জনগণের দেখাশোনার দায়িত্ব নেয় না, তাই তাদেরকে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েই টিকে থাকতে হয়। আর এই জন্যই লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সার্বিক সমস্যা সমাধানের দায় এড়াতে সরকার প্রতিবন্ধী, নারী, জেলা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি নামক বিভিন্ন কোটার আশ্রয় নিয়েছে। তাছাড়া, সচেতন রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে সরকার তার সাম্প্রতিক ভারত এবং চীন সফরে যে সকল রাষ্ট্রবিরোধী চুক্তি সম্পাদন করেছে সেগুলো আড়াল করতেই কোটা বাতিল করে চাকুরী প্রত্যাশীদের ক্ষেপিয়ে তুলেছে। তাই, প্রতারণাই যেহেতু ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের চরিত্র, তাদের কাছে দাবি-দাওয়া উত্থাপন করা মানেই হচ্ছে নিজেদেরকে জেনে বুঝে প্রতারণার খপ্পরে নিমজ্জিত করা। অথচ, রাসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, “মুমিনরা (জেনেবুঝে) একই গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না” (বুখারী)। আর আমরা বার বার দংশিত হচ্ছি!
আমাদেরকে বুঝতে হবে বেকারত্বের সমাধান কোটা সংস্কার করে হতে পারে না, বরং যে ব্যবস্থা বেকারত্ব সৃষ্টি করছে, সে ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করাই বেকারত্বের সমাধান হতে পারে। যে ব্যবস্থা বৈষম্য সৃষ্টি করে সে ব্যবস্থার নিকট বৈষম্য নিরসনের দাবি তোলা কোন যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বরং এ ব্যবস্থা উপড়ে ফেলে এর স্থলে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এবং জনগণের দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করে এমন ব্যবস্থা বাস্তবায়নই একমাত্র যৌক্তিক সমাধান হতে পারে। ইসলামের দায়িত্বশীল ও ন্যায়নিষ্ঠ রাষ্ট্রব্যবস্থা খিলাফতই বর্তমান বৈষম্যমূলক ধর্মনিরপক্ষ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার একমাত্র বিকল্প। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই ইমাম বা খলিফা হচ্ছে অভিভাবক, সে জনগণের দেখাশোনার ব্যাপারে দায়িত্বশীল” (বুখারী)। খিলাফত ব্যবস্থা সমাজে ব্যাপক বৈষম্য ও বেকারত্ব থেকে দায় এড়াতে কোটাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে না, বরং খিলাফত রাষ্ট্র সমাজের মূল থেকে সকল প্রকার বৈষম্য ও বেকারত্ব নিরসন করবে। খিলাফত রাষ্ট্রে বসবাসরত সকল ব্যক্তি রাষ্ট্রের সমান নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে এবং তারা প্রত্যেকেই সমান অধিকার ও দায় ভোগ করবে, ফলে খিলাফত রাষ্ট্রে কোন প্রকার ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠি কিংবা পিছিয়ে পড়া জাতি তৈরি হবে না। কুর‘আন-সুন্নাহ্’র আলোকে হিযবুত তাহ্রীর প্রণীত খসড়া সংবিধানের ৬ নং ধারায় বলা হয়েছে, “জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের প্রতি সমান আচরণ করা হবে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের মাঝে শাসন, বিচার-ফয়সালা কিংবা জনকল্যাণমূলক কাজে কোন প্রকার বৈষম্য করবে না”।
- আবি আব্দুল্লাহ্
“ঋণখেলাপিদের সুদ মওকুফ করা খুবই আপত্তিকর: মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন”
খবরঃ
ঋণখেলাপিদের সুদ মওকুফ করা আপত্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, বড় বড় ঋণখেলাপিদের ঋণের সুদ মাফ করা হচ্ছে। ঋণখেলাপিদের ঋণের সুদ মওকুফ করা খুবই আপত্তিকর। সরকারি ব্যাংকগুলো যে ৫০ হাজার কোটি টাকা সুদ মওকুফ করেছে, তা খেলাপি ঋণ হিসেবে গণ্য করা উচিত। (https://www.prothomalo.com/business/bank/nsti30vahm)
মন্তব্যঃ
বড় বড় পুঁজিবাদী সংস্থার ঋণ মওকুফ করতে সরকার নানা অজুহাত দেখায়, তার মধ্যে একটি হল, এসব সংস্থা না থাকলে দেশের অর্থনীতির “গ্রুমিং” সম্ভব নয়। অথচ যেকোন বোধসম্পন্ন ব্যক্তির বুঝতে দেরি হবেনা যে, এর দ্বারা আমাদের শোষণ ছাড়া আর কোন উপকার হয়না। অর্থনীতিবিদদের মতে, খেলাপি ঋণ থাকা মানে, ব্যাংক ওই বিনিয়োগ থেকে কোন লভ্যাংশ পায় না, ব্যাংকের মুনাফা কমে যায়। যার ফলে সুদভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মূল্যস্ফীতি থেকে শুরু করে বাড়তি করের চাপে পড়ে সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি বাজেট পরিকল্পনায় আমরা দেখেছি বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুই ধরনের করই বাড়তে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় ঋণখেলাপি রাঘব বোয়ালদের প্রতি আইন প্রণয়নকারীদের সহনীয়তা আর খেটে খাওয়া জনগণের ঋণ পরিশোধ না করতে পারার বেলায় অসহনীয়তা। বাস্তবতা এটাই যে, মুষ্টিমেয় ধনীদের অল্প সুদে ঋণ দিয়েও কোটি কোটি টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়, অথচ ২৫ জন চাষীকে মাত্র ২ থেকে ৫ হাজার টাকার ঋণ বাকি থাকায় ঋণের মামলায় ফাঁসানো হয়!
সমাজের এই বাস্তব চিত্র আমাদের সামনে বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগত ত্রুটি তুলে ধরে। এখানে আইন এমনভাবে সাজানো যাতে এসব লুটেরাগোষ্ঠী নিরাপত্তা পায়। তাইতো আমরা দেখি ঋণখেলাপি নিয়ে বছরের পর বছর আলোচনা হয়, বিতর্ক হয়, কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। এর কারণ স্পষ্ট, বর্তমান শাসনব্যবস্থায় এসব গোষ্ঠীই সরকারের অস্তিত্ব নিশ্চিত করে। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর দিকে তাকালে আমরা এর আরো ভাল প্রতিফলন দেখতে পাই। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক খবরে আমেরিকান বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের সাথে জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনে কথোপকথন সম্পর্কে জানিয়েছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে ইলন মাস্ককে সীমান্ত নিরাপত্তা ও অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টার পদে বসানো নিয়ে পরিকল্পনা চলছে বলে জানায় তারা। তাছাড়া এ পর্যন্ত মার্কিন সরকারের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি পেয়েছে ইলনের কোম্পানীগুলো। আবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে হারার কারণে তাকে নির্বাচন থেকে সরানোর পথ খুঁজছে ডেমোক্রেটিক পার্টির অর্থদাতারা। অর্থাৎ এসব শাসক বরাবরই ব্যবসায়ীদের ফান্ডিং এর উপর নির্ভরশীল। গণতন্ত্রের সার্বভৌমত্ব মানুষের বলা হলেও এখানে সার্বভৌমত্ব কেবল অল্প কিছু কোটিপতিগোষ্ঠীর হাতে। তারাই ঠিক করে পরবর্তী ক্ষমতায় কে যাবে, এবং তারা কি কি সুবিধা পাবে এর ভিত্তিতে। বাংলাদেশের চিত্রও ভিন্ন নয়।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর সেবায় নিয়োজিত থাকে বলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের প্রয়োজন এ অত্যাচারী সমাজব্যবস্থাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করা, যে ব্যবস্থার একমাত্র মুল্যবোধ বস্তুবাদী সাফল্য অর্জন। সত্যের পক্ষে একনিষ্ঠভাবে অবস্থান করতে হবে যাতে আমরা একমাত্র বিকল্প ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি, যে ব্যবস্থায় লুটেরা গোষ্ঠী ও অসৎ রাজনীতিবিদদের অস্তিত্ব রাখবে না। এটিই হল ইসলামের খিলাফত ব্যবস্থা, যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য রহমত হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এখানে কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবর্গ সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে লুটপাট চালিয়ে যেতে পারবেনা, কোন ব্যবসায়ীর সাথে চুক্তি বা আলাদা সুবিধা প্রদান করা হবেনা, কারণ খিলাফত ব্যবস্থার মূলে থাকবেন একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক, যিনি শুধুমাত্রই আল্লাহ্ প্রদত্ত বিধান প্রয়োগ করে সর্বস্তরের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। যার প্রতিচ্ছবি আমরা পাই খলিফা আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতকালে। খলিফা নিযুক্ত হয়ার পর তাঁর ভাষণে একজন খলিফার জনগণের প্রতি দায়িত্ব স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠেঃ “আজ থেকে তোমাদের মধ্যে দুর্বল ব্যক্তি আমার কাছে সবল-যতক্ষণ না তার হক আদায় করে দেবো, আর তোমাদের মধ্যে সবল ব্যক্তি আমার কাছে দুর্বল-যতক্ষণ না তার কাছ থেকে পাওনা আদায় করে নেবো।”
- নাসিবা আমিন
“বিদ্যমান আইনে ফয়সাল-মতিউরদের ঠেকানো কঠিন: দুদক”
খবরঃ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিতে আবেদন করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন। শিগগির এই আবেদন করা হবে আদালতে। তার বিরুদ্ধে ১ হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক। দুদকের বিদ্যমান বিধি বা আইন সংশোধন না করে ফয়সাল-মতিউরদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা কিংবা তাদের পালিয়ে বিদেশ চলে যাওয়া আটকানো, কোনটিই সম্ভব নয়। (https://www.youtube.com/watch?v=MVRalKbbwmQ)
মন্তব্যঃ
“দেশের আইন দুর্নীতি দমন কমিশনকে সব ধরনের ক্ষমতা দিয়েছে, এমনকি তাদের নিয়োগের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে কেউ চাইলেই হুট করে তাদেরকে অপসারণ করতে পারবে না”, বিবিসি বাংলাকে বলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। আইন অনুযায়ী, দুদকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির সমমানের পদমর্যাদা এবং বাকি দুই কমিশনার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির পদমর্যাদা ভোগ করেন। তাদের হাতে এত ক্ষমতা থাকার পরও দুদক কেন সরকারী প্রশাসনের দুর্নীতি দমন করতে পারছে না?? এর কারণ হল দুদক-ই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। “দুদক কর্মকর্তারাই দুর্নীতিতে? দুদকের ৩০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অপরাধের দায়ে বিভাগীয় মামলা। সর্ষের মধ্যেই ভূত! : এটিএন নিউজ”, “দুর্নীতিবাজ ধরবে দুদক, দুদক ধরবে কে?: ডিডব্লিউ বাংলা”, “দুদকের দালানেই দুর্নীতির দুষ্টচক্র: সমকাল”। পুলিশের সাবেক ডিআইজি মিজানের অর্থপাচারের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তার কাছ থেকে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার ঘটনা সবারই জানা।
সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্র মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই চিহ্নিত অপরাধীদের পক্ষ নেয়া হচ্ছে এবং তাদেরকে পালিয়ে যাওয়া ও আড়ালে থাকতে সাহায্য করা হচ্ছে। “শীর্ষ-কর্তাদের দুর্নীতির খবর প্রকাশে নাখোশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন”, “বেনজির ও আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের সোর্স আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল”, “সাবেক ডিএমপি কমিশনারের সম্পদের তথ্য ফাঁস করে বরখাস্ত এডিসি জিসানুল”। তাছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দাদের নাকের ডগায় তাদের যোগসাঁজোস ছাড়া একজন ব্যক্তি কিভাবে ৭০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারল!? মূলত: দেশের ব্যর্থ স্যেকুলার শাসনব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা হল সেই পয়ো:বর্জ্য ও আবর্জনার মত যা পঁচেগলে এমন অবস্থা হয়েছে যার ‘salvage value’ শূণ্যতো বটেই, এর বিষাক্ত গন্ধও মানুষের জন্য প্রাণঘাতি। এই শাসনব্যবস্থাকে বায়ুশূন্য বক্সে ‘সীল’ করে এর জন্মস্থান ইউরোপে ও এর রফতানিকারক আমেরিকায় ফেরত পাঠানো ছাড়া এর ক্ষতি থেকে পরিত্রাণ সম্ভব নয়! এই পরিস্থিতির মধ্যে যেসকল তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা দুদক-কে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য এখন সাংবিধানিক “ন্যায়পাল!” নিয়োগের কথা বলছেন তারা মূলত: চায় না যে, এই দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত শাসনব্যবস্থার হাত থেকে জনগণ কোনদিনও মুক্তি পাক।
বাস্তবতা হল: ব্যক্তির দুর্নীতির কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্থ হয় না; বরং রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষ থেকে যখন সমাজের মানুষের চিন্তা ও আবেগকে কলুষিত করে ফেলা হয় তখন এই কলুষিত সামষ্টিক চিন্তা-আবেগের প্রভাবে সেই সমাজে বসবাসরত ব্যক্তিরা দুর্নীতি ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ফলে, বাংলাদেশের এই দুর্নীতিগ্রস্থ ও অপরাধপ্রবণ সমাজকে পুনরায় সভ্য ও মানুষের বসবাসের উপযোগী করতে হলে সেক্যুলার শাসনব্যবস্থা কর্তৃক ছড়িয়ে দেওয়া ইসলাম-বহির্ভূত সকল কুফর চিন্তা ও আবেগ থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর পথ অনুসরণ করে সঠিক ইসলামী দাওয়াহকে আরো জোরদার করতে হবে। একাজে ন্যায়নিষ্ঠ রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর-এর হাতকে শক্তিশালী করা ও ইসলামের ঐশী বিধানকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নবুয়্যতের আদলে খিলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নুসরাহ্ (ক্ষমতা) অনুসন্ধানে এই দলটিকে সহায়তা করা ছাড়া দেশের মানুষের সামনে অন্যকোন বিকল্প পথের অস্তিত্ব নেই।
- রিসাত আহমেদ
“থমকে গেছে পদ্মা পাড়ের জনজীবন”
খবরঃ
পদ্মায় নতুন পানি। চারদিকে ঢেউ খেলছে। স্রোতটাও বেশ। হরিরামপুরের আন্ধারমানিক এলাকার নদী পাড়ে গড়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র। স্থায়ী রেস্তরাঁর পাশাপাশি অস্থায়ী দোকানের ছড়াছড়ি। স্থানীয়রা নাম দিয়েছেন মিনি কক্সবাজার। এখানে ঢুকতেই চোখে পড়ে ব্যানারে রাসেলস ভাইপার নিয়ে সচেতনতামূলক নানা কথা লেখা। এই ব্যানার এলাকার অনেক স্থানেই দেখা মেলে। বিস্তৃত চর। চারিদিকে শুধু ফসলি জমি। মূল ভূখণ্ড থেকে নদীপথে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় নিয়ে যেতে হয় পদ্মার চরে। কৃষকদের ব্যস্ততা ফসল তোলাতে। মাঠে বর্গা চাষ করেন অধিকাংশই। চরজুড়ে দেখা মেলে ভুট্টা, বাদাম, তিলসহ ধানের চাষ। সাধারণ সময়েই কৃষি শ্রমিক মেলা দায়। তার ওপর হানা দিয়েছে সাপ আতঙ্ক। ফসল তুলতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের। এলাকায় নীরবে আতঙ্ক তৈরি করেছে সাপ। এই চরের অন্তত ছয়জন সাপের দংশনে মৃত্যুবরণ করেছেন। যেকোনো সাপ দেখলেই রাসেলস ভাইপার ভেবে মারছে মানুষ। (https://mzamin.com/news.php?news=116865)
মন্তব্যঃ
সংবাদ মাধ্যমে রাসেল ভাইপার নিয়ে গাল-গল্পপূর্ণ সংবাদ এবং অপ্রয়োজনীয় অতিআগ্রহ গণমাধ্যম এবং সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার একটি উদাহরণ মাত্র। স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া নামে পরিচিত সাপটিকে রাসেল ভাইপার নাম দিয়ে এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে যেন এটা একটি নতুন সাপ এবং এর আচরণের সাথে জনগণ অপরিচিত। অতিরঞ্জিত এই সকল সংবাদ জনগণের মধ্যে সাপটির বিষয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে গত কয়েক শতাব্দী ধরে চন্দ্রবোড়া সাপটি এই অঞ্চলে বসবাস করছে এবং বাস্তুসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চন্দ্রবোড়া সাপটি মূলত বাস করত বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে (রাজশাহী বিভাগ ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, রাজশাহী, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলা)। ভূ-প্রাকৃতিকভাবে শুষ্ক এই অঞ্চলের অনুর্বর পতিত ঘাসের জমি এবং ঝোপঝাড়ের মাটির নিচের খাঁচ কাটা অংশের গর্তে বসবাস করতো চন্দ্রবোড়া সাপ। জমির ফসলের ক্ষতির জন্য মূল দায়ী ইঁদুর চন্দ্রবোড়া সাপের প্রিয় খাদ্য। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ বছরে ইঁদুর খেয়ে ফেলে ২৯০০ কোটির ফসল, ১০ জুন ২০২৪, দেশ রূপান্তর। সাপটি বিনামূল্যে ইদুর খেয়ে কৃষকের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করে কৃষকের বন্ধুর ভূমিকা পালন করতো। কিন্তু, ১৯৮৫ সালে সরকার এই অঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়, যা পরবর্তীতে আইনের মাধ্যমে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিএমডিএ) রূপান্তরিত হয়। এই প্রকল্পের আওতায় সরকার এই অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থা বিবেচনা না করে নির্বিচারে গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সেচের সম্প্রসারণ করে পতিত ঝোপঝাড়কে যেমন কৃষি জমি এবং ১/২ ফসলা জমিকে ২/৩ ফসলা জমিতে রূপান্তর করে, যার ফলে সারা বছর জমিতে ফসল থাকা শুরু করে। এই কৃষি প্রকল্পের উৎপাদন বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ছিল নির্বিচারে রাসায়নিক সারের এবং উপর্যোপুরি ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার যার ফলে চন্দ্রবোড়া সাপটি তীব্র খাদ্য এবং বাসস্থানের সংকটে পরে বিকল্প বাসস্থানের খোঁজে পদ্মা নদীর অববাহিকার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২৭ টি জেলায় ছড়িয়েছে। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ যে ২৭ জেলায় ছড়িয়েছে রাসেলস ভাইপার, ২১ জুন ২০২৪, আরটিভি নিউজ। ভ্যাকসিনের সংকটের কারণে চন্দ্রবোড়ার (রাসেল ভাইপার) কামড়ে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ রাসেলস ভাইপারের ছোবল, ভ্যাকসিন না পেয়ে কৃষকের মৃত্যু, ২২ জুন ২০২৪, যুগান্তর। এই খবরগুলো কৃষি শ্রমিকদের আতঙ্ককে চরমে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার ভ্যাকসিন সরবরাহ বৃদ্ধি, সচেতনা বৃদ্ধি এবং প্রকৃতি ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপ না নিয়ে জনগণের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করছে না। অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যমে সরকারের হঠকারি তথাকথিত উন্নয়ন প্রকল্প কিভাবে জনগণের সমস্যার সমাধান না করে নতুন সমস্যার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করে গুটিকয়েক সাপের কামড়ের ঘটনা নিয়ে চমকপ্রদ সংবাদ প্রকাশ করে নিউজের ভিউ বাড়াতে গিয়ে জনগণকে আরও বেশী বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন পর্যাপ্ত এবং মানুষের কল্যাণের জন্য। “আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি এবং এতে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছি। আমি পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তু সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছি। এতে তোমাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করেছি। আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও, তাদের জন্যেও” (সুরা হিজরঃ ১৯-২২)। ইসলাম, তার উন্নয়ন দর্শনে বাস্তুসংস্থান (প্রকৃতির) সকল উপাদান সমানভাবে গুরুত্ব দেয়। প্রকৃতি রক্ষার গুরুত্ব আরোপ করে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “যে অকারণে একটি কুলগাছও কেটেছে, তাকে আল্লাহ্ মাথা নিচু করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন” (আবু দাউদ)। ইসলামী রাষ্ট্র তথা খিলাফতের বস্তুসংস্থান ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আরও ভাল বোঝা যায় খলিফা উমর (রাঃ) বক্তব্যে থেকে, যা আবু দাউদ থেকে বর্ণিত, “ফোরাত নদীর তীরে যদি একটি ভেড়াও যদি সঠিক যত্নের অভাবে মারা যায়, আমি ভয় করি আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাকে কেয়ামতের দিন এই বিষয়ে প্রশ্ন করবেন।” ঠিক তেমনিভাবে আসন্ন নবুয়্যতের আদলে প্রতিষ্ঠিত খিলাফত রাষ্ট্রের খলিফা একটি চন্দ্রভোড়াও (রাসেল ভাইপার) যদি খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে এসে আতঙ্কিত মানুষের আঘাতে মারা যাওয়ার ভয় করবেন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদের সেই সুমহান খিলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বাক্ষী করুন। আমীন।
- মো: সিরাজুল ইসলাম
“আবারও সীমান্তে বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশি নিহত”
খবরঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে রাজু মিয়া (২০) নামের বাংলাদেশি এক যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আজমুল হোসেন নামে এক বাংলাদেশি আহত হন। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় সীমান্তের ওপারে ভারতের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। (www.dainikamadershomoy.com/details/0190815c2e46)
মন্তব্যঃ
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ এই ১৫ বছরে সীমান্তে বাংলাদেশের ৪৯১ জনের বেশী মানুষকে হত্যা করেছে ভারত। অথচ বাংলাদেশ সরকার এসব হত্যার কোন কার্যকর জবাবতো দেয়ই না, এমনকি দেশের জনগণকে চোরাকারবারী বলে ক্রিমিনালাইজ করে ভারতীয় অন্যায় হত্যার ন্যায্যতা দেয়! শুধু সাধারণ মানুষই যে তাদের আক্রমনের শিকার হচ্ছে তা নয়, গত ২২ জানুয়ারী যশোর সীমান্তে বিএসএফ গুলি করে বিজিবির সিপাহী মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে হত্যা করে। একটি দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোন সদস্যকে হত্যা করা অনেকটাই সে দেশের সাথে যুদ্ধ ঘোষনার শামিল। অথচ দেশের সরকার বেমালুম তার জনগণের রক্তের কথা ভুলে গিয়ে ভারতের সৈন্যরা ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়েছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা বলে ভারতকে রেল ট্রানজিটসহ নানা স্বার্বভৌমত্ব ধ্বংসকারী সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে! প্রকৃতপক্ষে এই শাসকগোষ্ঠীর কাছে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তা নয়, বরং তাদের ক্ষমতা ও কাফির-মুশরিক রাষ্ট্রসমূহের সন্তুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র। ফলে নিরন্তর সীমান্তে বিদেশী আগ্রাসন চলতে থাকলেও তারা এসব বন্ধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিবে না। একারণেই তারা ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’ এরকম একটি নির্লজ্জ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে। শাসকগোষ্ঠীর এই নির্লজ্জ নীতি ও ব্যর্থতার কারণে আমাদের সামরিক বাহিনী কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারছে না।
বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ও তাদের দালাল বুদ্ধিজীবীগোষ্ঠী ‘সামরিক শক্তির ভারসাম্য’র কথা উল্লেখ করে আমাদের সামরিক বাহিনী ও জনগণকে বুঝানোর চেষ্টা করে যে ছোট দেশগুলোকে বড় দেশগুলোর আগ্রাসন মেনে নিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, যুদ্ধে জয় শুধুমাত্র সৈন্য সংখ্যা কিংবা অস্ত্র-শস্ত্রের পরিমানের উপর নির্ভর করে না। বদর, মুতাহ, ইয়ারমুক, কাদিসিয়া, আইন-জালুতের যুদ্ধ এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে যেখানে ছোট ও দুর্বল বাহিনী বড় ও সবল বাহিনীর উপর জয়ী হয়েছিল। মুতাহ যুদ্ধের আগে, ৩০০০ মুসলিম সৈন্যের কাছে খবর পৌঁছেছিল যে হিরাক্লিয়াস এক লক্ষ সৈন্যকে একত্রিত করেছে। লাখাম, জুদাম এবং বলকাইনের আরও লক্ষাধিক লোকের সাথে বাইজেন্টাইনদের মৈত্রী হয়েছে। তখন মুসলিম সেনাপতি আব্দুল্লাহ্ বিন রাওয়াহা মুসলিমদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “আমাদের যুদ্ধে আমরা সৈন্য বা সরঞ্জামের সংখ্যার উপর নির্ভর করি না, বরং আল্লাহ্ আমাদেরকে যে দ্বীন দিয়ে সম্মানিত করেছেন তার উপর নির্ভর করি। বিজয় কিংবা শাহাদত, দুটোর যে কোনো একটিকে আলিঙ্গন করুন”।
মুসলিম ভূ-খণ্ডসমূহের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করা ও উম্মাহ্’র নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা শাসকের উপর ইসলাম প্রদত্ত একটি পবিত্র দায়িত্ব। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “আল্লাহ্ দুনিয়া ধ্বংস হওয়া সয়ে যাবেন, তবে একজন নিরপরাধ মুসলিম হত্যা সহ্য করবেন না” (তিরমিযী)। আল্লাহ্’র অসন্তোষ থেকে বাঁচার জন্য অতিসত্বর এই অসমর্থ, ব্যর্থ ও রুয়াইবিদাহ্ শাসকদের থেকে শাসন কর্তৃত্ব সরিয়ে নিয়ে একজন খলিফার হাতে ন্যস্ত করতে হবে। খলিফা আল্লাহ্’র নাযিলকৃত ওহীর ভিত্তিতে জনগণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুসলিম ভূখন্ডসমূহের প্রতিটি ইঞ্চি এবং মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার উপর দায়িত্ব, সেটা ফিলিস্তিন কিংবা বাংলাদেশ যেখানেই হোক না কেন এবং এই লক্ষ্য অর্জনে তিনি সামরিক অভিযান পরিচালনা করবেন। খলিফা তার উপর শারিয়া দায়িত্ব পালনের জন্য একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন করার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিবেন এবং ভারতীয় আগ্রাসনের চির অবসান ঘটাবেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের একটি সেনাবাহিনী হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সেই বাহিনীকে বিজয় দান করবেন” (কিতাবুল ফিতান)।
- মো: তালহা হোসেন
“আন্দোলন শিক্ষাব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান জগন্নাথের শিক্ষকেরা”
খবরঃ
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন শিক্ষাব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মনে করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তাই সমস্যা সমাধানে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বর্তমানে একদিকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নতুন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ প্রত্যাহার করে স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে, যা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে পরিচিত। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকেরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে সেশনজটসহ অন্যান্য সমস্যায় পড়তে হবে। এই ধরনের সমস্যায় যেন পড়তে না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। ‘প্রত্যয়’ প্রত্যাহার করে স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে ও দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন না করে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। (www.prothomalo.com/bangladesh/wm0qxjk1mh)
মন্তব্যঃ
জনগণ যখনই কোন সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের নিকট দাবী জানায় বা আন্দোলন করে, তখন একটা ন্যারেটিভ প্রায়শই শোনা যায় যে, প্রধানমন্ত্রী বা তার অধঃস্তনেরা খুব ভালো কিন্তু আমলারা তাদের ভুল বুঝায়। বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থায় দাবী করা হয় যে সরকারের তিনটি অঙ্গ- আইন প্রণয়ন বিভাগ, শাসন বিভাগ বা নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগ, যারা একে অপরের হস্তক্ষেপমুক্ত ও স্বাধীন। কিন্তু, বাস্তবতা হচ্ছে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থাকা প্রধানমন্ত্রীকে সম্বোধন করে সমাধান চাওয়ার রীতি আমরা সবসময় দেখতে পাই। যেমন হজ্ব ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হয় [হজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা (dailyinqilab.com)]। সিন্ডিকেটের হাত থেকে তাঁতশিল্প রক্ষায়ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। (সিন্ডিকেটের হাত থেকে তাঁতশিল্প রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা (jugantor.com))। আনসার সদস্য, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতনভাতা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশা করা হয়। মুখে Separation of Power তত্ত্বের কথা বলা হলেও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থাই কেন্দ্রীভূতভাবে কাজ করে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই আইন প্রণয়ন করা হয়, এবং সেই আইনের উপর ভিত্তি করেই শাসন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ কাজ করে। তাই আদালতের আদেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশ আপাতদৃষ্টিতে কিছুক্ষেত্রে পরস্পর বিরোধী হলেও মূলতঃ এটি জনগণের সাথে প্রতারণার একটি কূটকৌশল। যেখানে একটা রাষ্ট্রের সড়কে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলবে কিনা, সে সিদ্ধান্তও প্রধানমন্ত্রীর নিতে হয়, সেখানে পেনশন স্কিম বা কোটা সংস্কার সংক্রান্ত রায় বা নির্বাহী আদেশ প্রধানমন্ত্রীর অগোচরে হয়, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং প্রধানমন্ত্রী বা দলীয় সম্পাদকের সাথে সমস্যা নিয়ে কথা বলার পুরো বিষয়টা শিয়ালের কাছে মুরগীর নিরাপত্তা নিয়ে আলাপের মতই একটা প্রহসন। অর্থাৎ ব্যক্তি শাসককে একটা কাঠামোগত দায়মুক্তির সুযোগ দিয়ে, তাকে মহান হিসেবে প্রমাণের একটা কুৎসিত দ্বিচারিতা আমরা এই ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থায় দেখতে পাই।
অন্যদিকে, ইসলামী ব্যবস্থা খিলাফত-এ Separation of Power তত্ত্বের বা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের কোন নাটক নেই। এখানে খলিফাই একমাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। ধনী-গরীব, শিক্ষক-আমলা, মালিক-কর্মী ইত্যাদি প্রত্যেকটা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব খলিফার। আমলা বা আদালতের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দায়মুক্তি নেয়ার কোন সুযোগ খিলাফত ব্যবস্থায় নেই। হালাল-হারামের সীমানাকে প্রাধান্য দিয়ে এখানে খলিফাই একমাত্র রাষ্ট্রের আইন গ্রহণের এবং তা প্রয়োগের ক্ষমতা রাখে। খলিফা সুলেমান তার মৃত্যুর আগে তার কবরে একটা চিরকুট নিয়ে যান। যেই চিরকুটে লিখা ছিল, “হে আল্লাহ, তুমি সাক্ষী থেকো যে আমি আমার শাসনামলে তোমার দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছি। আমি ন্যায়বিচার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এবং তোমার বিধান মেনে চলেছি"। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন: “তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ইমাম (শাসক) একজন রক্ষক এবং তাকে তার অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত করা হবে” [সহীহ বুখারি ও মুসলিম]
- জোহান জাবির
“আমার সন্তান যাতে নিশ্বাস নিতে পারে, সে চেষ্টা করছিলাম”
খবরঃ
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান শিশু হাসপাতালে থাকা রোগীদের মধ্যে ছিল ৩৩ বছর বয়সী ভিতলানা ক্রাভচেঙ্কোর শিশুসন্তান। গতকাল সোমবার দিনের বেলায় এই হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই ঘটনাকে ভীতিকর হিসেবে বর্ণনা করেন ক্রাভচেঙ্কো। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি আমার শিশুসন্তানকে রক্ষার চেষ্টা করছিলাম। আমি তাকে (শিশু) কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলাম, যাতে সে নিশ্বাস নিতে পারে।’…মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রাণঘাতী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মস্কোর ভয়ংকর বর্বরতাকে মনে করিয়ে দেয়। বাইডেন বলেছেন, ওয়াশিংটন ও তার ন্যাটো মিত্ররা ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য নতুন সহায়তার ঘোষণা দেবে। কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইকুয়েডর ও স্লোভেনিয়ার অনুরোধে আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হবে। (www.prothomalo.com/world/europe/dktdmozbcm)
মন্তব্যঃ
ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের দুশ্চিন্তা এবং সেখানকার নাগরিকদের বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে তাদের তথাকথিত গালভরা বক্তব্য বিশ্ববাসী দেখেছে। পরবর্তীতে, ৭ই অক্টোবরের পর গাজায় প্রায় ৯ মাসের মধ্যে ৪০,০০০ লোককে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৫,০০০ নারী শিশু এবং যে হত্যাকাণ্ডে পশ্চিমাদের সরাসরি ভূমিকা রয়েছে। একদিকে তারা ফিলিস্তিনিদের অর্থ সহায়তার কথা বলেছে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে বোমা সরবরাহ করেছে [ফিলিস্তিনিদের অর্থ সহায়তা, ইসরায়েলকে বোমা দেবে যুক্তরাষ্ট্র (ittefaq.com.bd)]। যখন ধড়হীন শিশু সন্তানের দেহ নিয়ে বাবা শোকে পাথর, তখন ভেদান্ত পাটেলদের মত মার্কিন মুখপাত্র নির্লিপ্তভাবে সংবাদ সম্মেলনে বলে “এ বিষয়ে আমাদের ইসরায়েলের কাছ থেকে সঠিক তথ্য জানতে হবে”। তখন এই নব্য উদারতাবাদের (Neo-Liberalism) মুখোশের আড়ালের নৃশংস দ্বিমুখিতা এবং নির্লজ্জ দ্বিচারিতা দিবালোকের মত আমাদের চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বর্তমান সময়ে সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে- ফিলিস্তিন, সিরিয়া, কাশ্মীর, মায়ানমার, চীন প্রভৃতি রাষ্ট্রে ইসলামী বিশ্বাসের কারণে মুসলিমদের অবস্থান আমাদের চোখে করুণ এবং অসহায় মনে হতে পারে। অন্যদিকে, পশ্চিমাদের উদারতাবাদের নামে এই নির্বিচার স্বেচ্ছাচারিতা আমাদের অনেকের কাছে শক্তির পরিচয় বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আমাদের জানা উচিত, কোন জাতি তার জীবনাদর্শ এবং তার মূল নীতিতে অটল কিনা তা দিয়ে সেই জাতির শক্তি এবং দুর্বলতা বিবেচনা করা উচিৎ। যেমন পশ্চিমা বিশ্ব নব্য উদারতাবাদের নামে সকলের ‘স্বাধীনতা’ বা ‘ফ্রিডম’ নিশ্চিত করতে চায়। কিন্তু তাদের এই ফ্রিডমের চোখ ইউক্রেনের জন্য একরকম, ফিলিস্তিনের জন্য আরেকরকম। একটা জীবনাদর্শের ধারকরা যখন তার মূলনীতি থেকে বের হয়ে এসে স্বার্থের কারণে দ্বিচারিতায় আকটে পড়ে, তখন তাদের অবস্থা অনেকটা মুশরিক থাকা অবস্থার উমর (রাঃ) এর খেজুরের মূর্তির মত, যেই মূর্তি তিনি নিজেই বানিয়েছিলেন এবং ক্ষুধার্ত অবস্থায় নিজেই তা খেয়ে ফেলেন। আজকের পশ্চিমা উদারতা অনেকটা সেই খেজুরের মূর্তির মত যা পশ্চিমারা মহান বলে সারাবিশ্বে প্রচার করে বেড়ায়, কিন্তু আজকে সেই উদারতার মূর্তিকেই স্বার্থের কারনে কামড়ে কামড়ে খেয়ে ফেলে। অর্থাৎ পশ্চিমা উদারতাবাদের পতন অত্যন্ত দৃশ্যমান।
অন্যদিকে, মুসলিমরা উদারতা না, ফ্রিডম না, স্বাধীনতা না, শুধু আল্লাহর হুকুমকেই নিজের জীবনে প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়ার যে কোন ফলাফলকে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়ার এক বিরল নজির সৃষ্টি করছে। এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই সন্তানদের লাশের দিকে তাকিয়ে মুসলিম মা বাবা নানা দাদা এরা সবাই বলতে পারছে ‘আলহামদুলিল্লাহ!!! এরা তো জান্নাতি!!!’ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর দাওয়াহ্ জীবনের শুরুর দিকে সাহাবী সুমাইয়া (রাঃ) এবং ইয়াসির (রাঃ) এর উপর যে অকথ্য নির্যাতন হয়েছিল এবং যার পরিণাম ছিল মৃত্যু। সেই মৃত্যু ছিল তাদের সফলতা। অর্থাৎ একজন মুসলিমের জীবনে কঠিন সময় কোন বিপদ নয়, বরং তাকে পরীক্ষা হিসেবে মেনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে আল্লাহ্’র হুকুম বাস্তবায়নের কাজ করে যাওয়াই হচ্ছে সফলতা। তাই আজকে ইসলামি জীবনাদর্শের ধারক মুসলিমরা সেরকমই এক অদম্য এক শক্তিশালী অবস্থানে আছে। কারণ তারা জানে সফলতার সংজ্ঞা- “যে আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর ভয়কে মনে রাখে, তারাই সফলকাম”। [সূরা- আন নূরঃ ৫২]
- জোহান জাবির