ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে তা প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন: আইন উপদেষ্টা

 


ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে তা প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন: আইন উপদেষ্টা




খবরঃ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে সেটি প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে বলেও তিনি জানান।… (https://www.prothomalo.com/bangladesh/0lme5rx1hz)

মন্তব্যঃ

জনরোষে নিষ্ঠুর জালিম শাসকের পতনের পর তার বিচার হওয়া বর্তমান বিশ্বে একটি বিরল ঘটনা তো বটেই, বরং অনেক ক্ষেত্রে জালিম শাসকদের পরবর্তী প্রজন্মের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের ঘটনাও বিদ্যমান। যেমনটি ঘটেছে লিবিয়ার গাদ্দাফি পুত্র সাইফ কিংবা ফিলিপাইনের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক ফার্ডিনান্ড মার্কোস পুত্রের ক্ষেত্রে। মূলত পতিত জালিম শাসক কিংবা সংস্কারের আশা জাগানো নতুন শাসক- এরা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ হিসেবে আচরণ করে। যেমনটি আমরা বাংলাদেশে দেখতে পাচ্ছি ভারতের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে বিগত পতিত সরকারের মত এই অন্তর্বতী সরকারও একই আচরণ করছে। আগের মতই ভারত কর্তৃক সীমান্ত হত্যা চলমান রয়েছে। চারগুণ মূল্যে ভারতের আদানী থেকে বিদ্যুত আমদানীর চুক্তিও বহাল রয়েছে। ট্রানজিটসহ ভারতীয় স্বার্থের অনুকূলের সকল কর্মকাণ্ড এখনো বিদ্যমান রয়েছে। ভারতের সাথে ইলিশ কাণ্ডের ঘটনা তো জনগণের মনে এখনো তাজা রয়েছে। ভারতের স্বার্থের কথা চিন্তা করে পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার নিয়েও টালবাহানা করা হচ্ছে। অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকার ভারতবিরোধী ফাঁকা বুলি আওড়ালেও এখন পর্যন্ত ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন একটি পদক্ষেপও নেয়নি। সুতরাং তারা ভারতের আশ্রয়ে থাকা হাসিনার নৃশংস অপরাধের বিচারের জন্য ফেরত চাইবে তা আশা করা যায় না, যার নমূনা হচ্ছে দায়সারা এই ‘নোট ভার্বাল’।

মূলত, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে মানবরচিত আইনের শাসকরা একের পর এক ক্ষমতায় আসে তাদের উপনিবেশবাদী প্রভুদের তুষ্ট করার লক্ষ্যে। আর হাসিনা পতিত হলেও দালালগোষ্ঠীর গোলামীর মিশন কিন্তু এখনো শেষ হয়নি। উপনিবেশবাদী মার্কিনীরা এত্র অঞ্চলে ভারতকে তার স্বার্থরক্ষার চৌকিদার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মার্কিনীদের খুশি করতে ভারতের স্বার্থে কাশ্মির ইস্যুকে ত্যাগ করেছে, যাতে মার্কিন স্বার্থে ভারত চীনের দিকে মনোযোগী হতে পারে। পতিত হাসিনার মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও মার্কিনীদের সন্তুষ্টির কথা চিন্তা করে ভারতের বিরুদ্ধে কোন শক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এবং এদেশের জাতীয়তাবাদী ও তথাকথিত ইসলামী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোও শত্রুরাষ্ট্র ভারতের সাথে নতজানু নীতি অবলম্বন কেউবা পতিত স্বৈরাচারের দলকে পুনর্বাসনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, যদিও তাদের উপরও হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে গুম, খুন ও নিপীড়ন চালিয়েছিল।

তাই এই অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহ- যারাই বিদেশী শক্তির গোলামীর মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চায় বা যেতে চায় তাদের দ্বারা গণহত্যাকারী হাসিনার মতো অপরাধী শাসকদের বিচার কখনোই সম্ভব নয়। তাদের বিচার করতে হলে উপনিবেশিক শক্তির কবল মুক্ত একটি শাসন ব্যবস্থা দরকার, যা আমাদেরকে একমাত্র ইসলাম দিতে পারে। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানার বাইরে ‘আবু রাফি’ নামক এক প্রভাবশালী দুর্বৃত্ত কর্তৃক আল্লাহ্‌’র রাসূল (সাঃ)-এর শত্রুদের অর্থায়ন ও ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কারণে আল্লাহ্‌’র রাসূল (সাঃ) কর্তৃক তার মৃত্যুদন্ডাদেশ জারি করা হয়। এই আদেশ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে একটি গোপন মিশন প্রেরণ করা হয় এবং তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। খিলাফত ব্যবস্থায় ভারতের মতো রাষ্ট্র মুসলিম হত্যাকারী কোন অপরাধীকে  হাসিনাকে লুকিয়ে রাখবে, আর আমরা ইনিয়ে বিনিয়ে তাদেরকে তথাকথিত প্রত্যর্পণ চুক্তির কথা স্মরণ করাবো, সেটাতো কখনোই হবে না। কারণ আমরা ইতিপূর্বেও ৭০০ বছর ভারতকে শাসন করেছি, ভবিষ্যতেও ভারতকে পদানত করবো। এ ব্যাপারে আল্লাহ্‌’র রাসূল (সঃ)-এর সুসংবাদ রয়েছে। তিনি বলেছেন, “অবশ্যই তোমাদের একটি দল হিন্দুস্তানে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ্‌ তাদের বিজয় দান করবেন। তারা হিন্দুস্তানের রাজাদের শিকল দিয়ে বেঁধে টেনে আনবে…।”

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post