Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 38

 


Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৩৮ তম সংখ্যা ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১

 

 

 মদ কেন মাদক দ্রব্যের তালিকায়, জানতে চান হাইকোর্ট

খবরঃ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংজ্ঞায়মদকে অন্তভুর্ক্ত করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে নাতা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, অর্থসচিব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মহাপরিচালককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন মদকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অন্তভুর্ক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জের আরজে টাওয়ার হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবস্হাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী আহসানুল করিম রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত শুনানি করেন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে  আহসানুল করিম বলেন, মদ এবং অন্যান্য মাদক দ্রব্যকে মাদক আইনের একই সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে কিন্তু অনেক মাদকদ্রব্য আছে, যেগুলো আমদানিযোগ্য নয় এবং বহন করা অপরাধ অ্যালকোহল আমদানি-রপ্তানিযোগ্য পণ্য পানযোগ্য অ্যালকোহল এবং নিষিদ্ধ মাদককে একই সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ফলে যারা ব্যবসা করেন তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে (www.ittefaq.com.bd/305826/ মদ-কেন-মাদক-দ্রব্যের-তালিকায়-জানতে-চান-হাইকোর্ট)

 

মন্তব্যঃ

বাংলাদেশের মত যেকোন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন, ভালো-মন্দ ন্যায়-অন্যায় সংক্রান্ত বিধানগুলোর উৎস হচ্ছে মানবমস্তিষ্ক, কারণ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আল্লাহ্ তাঁর প্রদত্ত বিধানকে সমাজ রাষ্ট্র থেকে আলাদা রেখেছে সীমাবদ্ধ মানবমস্তিষ্ক কর্তৃক ভাল-মন্দ নির্ধারণ করার মানদন্ড খুব স্বভাবতই ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তনশীল, বস্তুগত লাভ-লোকসান দ্বারা প্রভাবিত এবং বৈপরিত্যে পরিপূর্ণ সরকার একদিকে অ্যালকোহলকে মাদক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, আবার অর্থনৈতিক লাভ ট্যাক্সের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বিবেচনায় এর উৎপাদন, আমদানী-রপ্তানী বিক্রির বৈধতা দিয়েছে একদিকে মদ তৈরির কারখানা চালু রাখে, অন্যদিকে ভেজাল মদ তৈরির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে কিছুদিন পূর্বে মদ সেবনে দেশব্যাপী যখন মানুষ মারা যাচ্ছিল তখন সরকারের পক্ষ থেকে একেভেজাল মদ খেয়ে মৃত্যুআখ্যা দিয়ে জনগণকে বিশুদ্ধ মদ পানের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ তথা স্রষ্টাহীন ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাও এখানে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনা করেছে, অ্যালকোহল ইসলামে হারাম এবং সমাজে এর ভয়াবহ প্রভাবকে তারা বিবেচনায় আনেনি এভাবে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা মাদকের ব্যাপারে সমাজকে স্থায়ী কোন মানদন্ড প্রদান করতে পারেনি, বরং বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে; কার্যত, মানব মস্তিষ্ক যখন আইনপ্রণেতার ভূমিকায় অবতীর্ন তখন তা বারবার বিভ্রান্তির জন্ম দিবে এটাইতো স্বাভাবিক

 

অন্যদিকে, ইসলামে সমাজ রাষ্ট্রের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় হালাল-হারামের উৎস হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা, যিনি সর্বজ্ঞানী-সর্বজ্ঞ ইসলাম সবকিছুর মাপকাঠি হিসেবে হুকুম শারীয়াহ্কে নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা কখনও পরিবর্তনশীল নয় এবং কোন গোষ্ঠীর স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিতও নয় পবিত্র কুরআন সকল প্রকার অ্যালকোহলকে হারাম ঘোষণা করেছে: হে ঈমানদারগণ! তোমরা জেনে রেখো মদ, জুয়া, পূজার বেদী এবং ভাগ্য নির্ণায়ক শর হচ্ছে ঘৃণিত শয়তানের কাজ অতএব তোমরা তা (সম্পূর্ণরুপে) বর্জন করো (সূরা আল-মায়িদাহ ৯০) তাই খিলাফত রাষ্ট্রে কোন বস্তুগত সুবিধা বা একটি গোষ্ঠীর মুনাফার দোহাই দিয়ে মদ-জুয়াকে হালাল করার কোন সুযোগ নেই মদ-জুয়ার মত নিষিদ্ধ বিষয়কে ব্যক্তির পছন্দের উপর ছেড়ে দেওয়া হয় না, এর সামান্য উত্পাদন, পরিবহন, বিক্রয় ব্যবহার অনুমোদিত নয় রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক নেশাদ্রব্যই খামর (মদ) এবং প্রতিটি নেশাকারী দ্রব্যই হারাম(ইবনে মাজাহ)

 

-       মোহাম্মদ সিফাত

 

 

 

 

 বিজয়ের ৫০ বছর, দুর্বার বিস্ময় বাংলাদেশ

খবরঃ

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশতলাবিহীন ঝুড়িবলে উপহাস করা বাংলাদেশ আজকে ঋণদাতা দেশ বিশ্বে ৪১তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান করছে গত ৫০ বছরে অর্থনীতির আকার বেড়েছে ৬০০ গুণ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশে উন্নীত হয়েছে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণেও এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ নিজেদের অর্থায়নে তৈরি করছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু ...মেগা প্রকল্পের বাইরেও ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে...এই সময়ের মধ্যে শোষণ, বঞ্চনা, নানাবিধ আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা পাকিস্তানকে প্রায় সব সূচকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ...কিছু কিছু সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিবেচনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ মার্কিন ডলার, যা ভারতের চেয়ে বেশি...(barta24.com/details/feature/147104/bangladesh-in-the-50)

মন্তব্যঃ

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সরকারী উদ্যোগেডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিতমিডিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের উচ্ছসিত প্রশংসা সুচক অসংখ্য রিপোর্ট কলাম প্রকাশ করেছে অথচ এসম্বন্ধীয় বাস্তবতা সঠিকভাবে বুঝতে হলে বাংলাদেশ বিশ্বকে যেমন শুধু ৫০ বছরের ব্যাপ্তিতে দেখলে চলবে না, তেমনি উন্নয়নকে শুধুমাত্র জাতিসংঘ, আইএমএফ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত তথাকথিত কিছু সুচকের বিচারে দেখলেও চলবে না জিডিপি, মাথাপিছু আয়, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি উন্নয়নের সুচকগুলোর অর্থ কি এবং এগুলো কি আদৌ উন্নয়নকে নির্দেশ করে কিনা তা নিয়ে এই কলামিস্ট কি কখনও বিশ্লেষন করেছেন? রাষ্ট্রের কর আদায় বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে মানুষের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আয় সম্পদকে আরও বেশি বেশি করে হিসাবের মধ্যে এনে, হিসাবের ব্যপ্তি বাড়িয়ে কিংবা শুধুমাত্র কাগজের মুদ্রা ছেপেই যে জিডিপি বাড়িয়ে ফেলা যায় তা কি তিনি জানেন? চরম আয় বৈষম্য বিদ্যমান এক বিশ্বব্যবস্থায় আইএমএফের মাথাপিছু আয়ের হিসাবে যে সাংবাদিক আবেগ আপ্লুত হচ্ছেন তিনি কি তার আয় ব্যয়ের খাতা মিলিয়ে দেখেননি? ক্রমবর্ধমান ধর্ষন, বিবাহবিচ্ছেদ, নারী-শিশু পাচার, পরিবারগুলোতে আশান্তি অনাচার কিংবা ভয়ংকরহারে আত্মহত্যা প্রবণতার পরিসংখ্যানগুলোকে কেন উনারা একইসাথে হিসাবে রাখেননা? বিদেশী ঋণনির্ভর ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়নের পেছনের উদ্দেশ্য কী এবং এর প্রভাবগুলো কী তা নিয়ে কি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন?

প্রকৃত বাস্তবতায় উন্নয়নের বিস্ময় কেমন হতে পারে তা দেখতে গেলে আমাদেরকে পাকিস্তান কিংবা ভারতের সাথে তুলনা করলে চলবে না, কিংবা মালয়েশিয়া, তুরস্কের মত জাতিরাষ্ট্র গঠন করলেও চলবে না তাকাতে হবে মদিনার মত আদর্শিক রাষ্ট্র গঠন এবং তার প্রভাবের দিকে সেটি হচ্ছে সত্যিকার বিজয় যা মদিনার মত একটি ছোট জায়গায় শুরু হলেও মাত্র ৫০ বছরে প্রায় অর্ধপৃথিবী বা তার চেয়ে বেশি অঞ্চলে শুধু ছড়িয়ে যায়নি, বরং তা পুরো মানবজাতির জন্য একটি সমাধান রহমত হিসেবে এসেছিল মানুষকে শান্তি, সমৃদ্ধি সফলতার জন্য একতাবদ্ধ করেছিল, বিভক্তি দূর করেছিল আদর্শিক রাষ্ট্র ব্যতিরেকে কোন জাতিরাষ্ট্রের পক্ষে কখনও যেমন বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের প্রভাবমুক্ত থাকা এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব না, তেমনি সত্যিকার উন্নয়ন দেয়াও সম্ভব নয় অর্থাৎ ৫০ বছর নয়, জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে কখনই সত্যিকার বিস্ময়কর উন্নয়ন সম্ভব নয়, এজন্য দরকার ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে মদিনার মত রাষ্ট্র গঠন সেটিই হবে প্রকৃত বিজয়, প্রকৃত উন্নয়নের দ্বারোন্মচন আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন,নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সুস্পষ্ট বিজয় দিয়েছি(সূরা আল-ফাতাহ: )

          

-       মোহাম্মদ তালহা হোসেন

 

 

 

 

 

 

“সার্জেন্টের মামলা নিচ্ছে না পুলিশ”

খবরঃ

ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় ২ ডিসেম্বর গুরুতর আহত হন পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজং। ঘটনার পর মামলা করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে কর্মরত এই নারী কর্মকর্তা। কিন্তু বনানী থানা মামলা নেয়নি। কেন মামলা নেওয়া হচ্ছে না, এ ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না পুলিশের কর্মকর্তারা। (www.prothomalo.com/bangladesh/capital/সার্জেন্টের-মামলা-নিচ্ছে-না-পুলিশ )

মন্তব্যঃ

পুলিশের পক্ষ হতে মামলা না নেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়৷ বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের বহু ঘটনাই প্রত্যক্ষ করেছে৷  যখনই বিবাদীপক্ষ বাদীপক্ষ হতে শক্তিশালী হয়, তখনই মামলা না নেয়ার মত ঘটনা দেখা যায়। এই মামলায়ও বিবাদীপক্ষ প্রভাবশালী  বিচারকের ছেলে। ঠিক এমনিভাবে কিছুদিন আগে আলোচিত ঘটনা আনভীর-মুনিয়া মামলায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমনকি মামলার আসামীর নামটাও অনুপস্থিত ছিল। এর আগে ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ আলম শেখ আজাদ হত্যার ১৩ দিন পরও মামলা নেয়নি পুলিশ, কারণ মামলার আসামী ছিল একজন মন্ত্রীর ছেলে। এ নিয়ে সমকাল পত্রিকায় অভিযুক্ত ধর্মমন্ত্রীর ছেলে, তাই মামলা নিচ্ছে না পুলিশ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল, ১২ আগষ্ট ২০১৮ সালে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী প্রভাবশালী মহল কর্তৃক সাধারণ মানুষের উপর একপ্রকার ছায়া নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলছে। কারণ বর্তমান বিশ্বের বহুল প্রচলিত একটি মতবাদ হচ্ছে "survival of the fittest" অর্থাৎ যোগ্যতমরাই টিকিয়া থাকিবে। যার ফলে দেখা যাচ্ছে অপরাধীরা তাদের ক্ষমতা বা টাকার জোরে যেকোন অপরাধ থেকেই পার পেয়ে যাচ্ছে। পুঁজিবাদী জীবনব্যবস্থায় তাদের বুদ্ধিজীবিরা এটা বিশ্বাস করে যে, মানুষ ভ্রুন অবস্থা থেকেই যোগ্যতার সংগ্রাম শুরু করে এবং যোগ্য ভ্রুনটাই টিকে থাকে, তেমনিভাবে সমাজের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে হোক বা সামাজিকভাবে হোক এখানেও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাই টিকে থাকবে, তারা এই ধারনাকে সোসাল ডারউইনিজম নামে প্রচার করে বেড়ায়। যার ফলে আমরা দেখছি সমাজের বিত্তবানেরা কোন অপরাধ করলে টাকার ঝনঝনানি দিয়ে আপোস করে বা ক্ষমতা দেখিয়ে তাদের যোগ্যতাকে প্রকাশ করে। যার ফলে ন্যায়বিচার বলে একটা বিষয় যে আছে সেটা পুঁজিবাদে অনুপস্থিত হয়ে গিয়েছে এবং সমাজ চরম বিচারহীনতায় নিমজ্জিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইসলাম ন্যায়বিচার ও ইনসাফ নিশ্চিতকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়েছে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: “আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে” (সূরা আল হাদীদ: ২৫)অন্যদিকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) তাঁর বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেছিলেন, হে লোক সকল! আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:হে মানবজাতি! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র কাছে সেই সর্বাধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেজগার (সুরা হুজুরাত: ১৩)কোন অনারবের ওপর কোন আরবের; কোন আরবের ওপর কোন অনারবের, এমনিভাবে শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের এবং কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই’’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)এই কারণে পরবর্তীতে খলিফাদের সময়ে এর কোন বাত্যয় দেখিনি; খলিফা হযরত উমার ফারুক (রা.) এর সময়ে, মিশরের গভর্নর হযরত আমর ইবনুল আস (রা.)-এর ছেলে ঘোর দৌড় প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে বিজয়ীর মাথায় আঘাত করেছিলেন। পরবর্তীতে এই বিচার খলিফার কাছে আসলে, খলিফা সেই বিজয়ী যুবককে দিয়ে সমপরিমাণ আঘাত গভর্নরের ছেলেকে প্রদান করেন এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বিদায় হজ্জের ঘটনা গভর্নরকে শুনাতে থাকেন। ইনশাআল্লাহ্‌, খিলাফত ব্যবস্থায় মানুষের মধ্যে আল্লাহ্‌ ভীতি থাকার কারণে বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অধীনে আমরা যেসব অন্যায়-বেইনসাফী দেখছি তা আর দেখতে হবে না।

-       ইরফান আবিদ

 

 

 

 

পণ্যমূল্যের মধ্যেই ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত থাকবে

খবরঃ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান  বলেন, গ্রাহকের জন্য প্রদর্শিত পণ্যমূল্যের মধ্যেই মূল্যসংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে অর্থাৎ মূল্যের সঙ্গে  ভ্যাটকে মিশিয়ে দিতে হবে, আলাদা করে ভ্যাট উল্লেখ করা যাবে না এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সবাই ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিতে চায়, এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সরকার ১০ ডিসেম্বরকে ভ্যাট দিবস হিসেবে এবং ১০-১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভ্যাট সপ্তাহ পালন করেছে এই উপলক্ষে ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, “সেবা খাতে বিপুল ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হচ্ছে তা বন্ধ করতে পারলে আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে (bonikbarta.net/home/news_description/282903/পণ্যমূল্যের-সঙ্গে-ভ্যাট-অন্তর্ভুক্ত-থাকতে-হবে:-এনবিআর-চেয়ারম্যান)

মন্তব্যঃ

২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের মোট ট্যাক্স থেকে আয়ের ৮৭% আসবে মানুষের আয় থেকে সংগৃহীত ট্যাক্স (আয়কর) এবং ব্যয় থেকে সংগৃহীত ট্যাক্স (ভ্যাট, আমদানী শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক) হতে আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রে সর্বনিন্ম আয়ের সীমা থাকলেও ব্যয় হতে ট্যাক্স এর ক্ষেত্রে কোন সীমা নেই গরীব-ধনী নির্বিশেষে সবার যেকোন পরিমানের ব্যয় হতে এই ট্যাক্স সংগ্রহ করা হয় সরকারের ট্যাক্স হতে আসা মোট আয়ের ৬১% আসে ভ্যাট, আমদানী শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক হতে এই ট্যাক্সগুলো সরাসরি পণ্যের মূল্যের উপর আরোপিত হয়; নিত্যপন্য যেমন চাল, ডাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ ইত্যাদিও এই ট্যাক্স হতে মুক্ত নয় বলাবাহুল্য যে সম্প্রতিক সময়ে দেশের ৭০% মানুষের আয় কমেছে (ব্রাকের তথ্য) এবং দেশের সামগ্রিক দারীদ্রতা ৪৫.% গিয়ে পৌঁছেছে (সানেমের তথ্য) এমন পরিস্থিতিতে এনবিআর তার ক্রমবর্ধমান আয়ের লক্ষ্য অর্জনে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে এটাই স্বাভাবিক তাই সরকার ভ্যাটসহ বিভিন্ন ধরণের ট্যাক্স আদায় বাড়ানোর জন্য নানা ব্যবস্থা নিচ্ছে পণ্যের দাম এর সাথে ভ্যাট বা মুসক আলাদাভাবে উল্লেখ না করে পণ্যের মূল্যের মধ্যেই এটিকে ঢুকিয়ে দেয়া সেরকমই একটি উদ্যোগ আর যেহেতু সরকারের ব্যয় দিন দিন বেপরোয়াভাবে বেড়ে চলছে সরকার ভ্যাট ট্যাক্স আদায় বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে আর এজন্য তারা প্রতিনিয়ত নানা কৌশল বের করছে যার বেশীরভাগই প্রতারণামূলক

অর্থমন্ত্রী ভ্যাট দিবসে সেরা ভ্যাটদাতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনাদের যে অর্জন, যে সম্পদ সেখানে কিন্তু আপনার প্রতিবেশির অধিকার আছে আপনাদের আয়ের ওপর তাদের হক আছে আপনাদের ভ্যাট, ট্যাক্সের টাকা দিয়েই পিছিয়ে পড়া মানুষের অর্থনীতির মূল স্রোত ধারায় আনার চেষ্টা করছি যে রেভিনিউ আপনারা দিচ্ছেন তা দিয়ে আমরা অবকাঠামো করি, পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামনে আনার কাজ করি তার এই বক্তব্য এবং এই পুরস্কার আয়োজন সবই প্রতারণামূলক এখানে লক্ষ্যনীয় যে সরকার পুঁজিপতিদের ভ্যাটের পুরস্কার দিচ্ছে অথচ এই ভ্যাট কিন্তু তারা দেয়নি, বরং তারা তাদের কাস্টমার থেকে সংগ্রহ করেছে যারা মূলত সাধারণ মানুষ ভ্যাট, ট্যাক্সের টাকা দিয়ে যে অবকাঠামো উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে তা যে মূলত দুর্নীতি, লুটতরাজ এবং সরকারের বিদেশী প্রভুদের দেশীয় ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর সন্তুস্টির জন্য করা হয় এটা এখন ওপেন সিক্রেট শুধু তাই নয়, সরকার বেশীরভাগ অবকাঠামো ব্যবহারের জন্য সাধারণ মানুষের থেকে টোল আদায় করে থাকে আর যে সামাজিক সুরক্ষা নেটওয়ার্কের কথা বলা হচ্ছে তা পাচ্ছে খুবই স্বল্প সংখ্যক মানুষ এবং  টিআইবির গবেষণা অনুযায়ী প্রায় ৫৬ শতাংশ মানুষ এই ধরণের সহায়তা পেতে অনিয়ম দুর্নীতির শিকার হয়েছিল এই হতদরিদ্র মানুষগুলোকেও কিন্তু ভ্যাটের মত ট্যাক্সগুলো দিতে হচ্ছে!

সর্বোপরি বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় একদিকে সরকার পুরোপুরি ভ্যাটের মত কর আয়করের উপর নির্ভরশীল এবং অন্যদিকে বেশীরভাগ মানুষের তা দেয়ার সামর্থ নেই, ফলে স্বাভাবিকভাবে সরকার এগুলো জোর করে আদায় করতে গিয়ে ডাকাতে পরিণত হয় আর ইসলাম হচ্ছে এই ডাকাতি পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত যেখানে এই ধরণের সকল ট্যাক্স নিষিদ্ধ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন: যে অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত কর আদায় করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না(আবু দাউদ) ইসলামে রাষ্ট্রের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে নানা প্রকৃত আয়ের সুযোগ আছে ইসলামিক ব্যবস্থায় যাকাত, খারাজ, উসুরের মত সকল করই মূলত সম্পদের উপর জিযিয়া অন্যন্য বিশেষ ট্যাক্স গ্রহণ করা হয় শুধুমাত্র সক্ষমদের কাছ থেকে অক্ষমদের কাছ থেকে কোন কিছু নেয়ারতো প্রশ্নই আসেন বরং খলিফা তাদেরকে প্রয়োজনে ভাতা প্রদান করবেন ইসলামে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি যেহেতু গণমালিকানাধীন সম্পদ তাই এসব খাত থেকে প্রাপ্ত আয় দিয়ে খলিফা চাইলে জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে পারবেন

-       মোহাম্মদ তালহা হোসেন

 

 দেশবাসীকে শপথ করালেন প্রধানমন্ত্রী

খবরঃ

বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে সারা দেশের মানুষকে শপথ পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মুজিববর্ষ উপলক্ষে আজ (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী এই শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দেশের বিভাগীয় জেলা, জেলা উপজেলা স্টেডিয়াম বিজয় দিবসের নির্ধারিত ভেন্যু থেকে সাধারণ মানুষ জাতীয় পতাকা হাতে শপথ বাক্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী যে শপথ পাঠ করেন তা হল, আজ বিজয় দিবসে দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহিদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না - দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব (www.jugantor.com/national/government/498700)

মন্তব্যঃ

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে যে আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ করার শপথ পাঠ করিয়েছেন, আদৌ কি শেখ মুজিবের আদর্শের নামে কোন আদর্শ রয়েছে? উত্তর হচ্ছে, না এদের এমন কোন নিজস্ব আদর্শ নেই যার মাধ্যমে একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব কিংবা সে দেশকে বিশ্বের বুকে সুপারপাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে মূলত শেখ মুজিবের আদর্শের নামে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমাদের ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বাস্তবায়নের শপথই দেশবাসীকে করিয়েছেন অথচ এই ব্যবস্থার মাধ্যমেই বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহকে পশ্চিমাদের কাছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সামরিকভাবে নিয়ন্ত্রণাধীন করে রাখা হয়েছে

 

সুতরাং, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের উন্নয়ন চাই তাহলে মুজিব বা জিয়ার আদর্শের নাম করে পশ্চিমাদের যে পঁচা দুর্নীতিগ্রস্ত ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী জীবনাদর্শকে আমাদের সমাজে প্রবেশ করানো হচ্ছে তা রুখতে হবে এবং স্রষ্টা প্রদত্ত জীবনাদর্শ যা একমাত্র সঠিক বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত সেই ইসলামী জীবনাদর্শকে বাস্তবায়ন করতে হবে যা আমাদেরকে জাতি হিসেবে পুনর্জাগরিত করবে এবং বিশ্বের বুকে সুপারপাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে একমাত্র ইসলামী আদর্শই পারে বাংলাদেশসহ সমগ্র মানবজাতিকে বর্তমান দুরবস্থা থেকে উদ্ধার করতে খিলাফত রাষ্ট্রের মাধ্যমে ইসলাম বাস্তবায়নের ১৪০০ বছরের ইতিহাসে আমরা দেখেছি কিভাবে মুসলিমরা সারা বিশ্বে, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সামরিক শক্তি, ন্যায়বিচার, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সহাবস্থান, অর্থনৈতিক সমতা ইত্যাদিকে নিশ্চিত করেছে সুতরাং, আবারও যদি ইসলামী ব্যবস্থা ফিরে আসে তাহলেই কেবলমাত্র খিলাফতব্যবস্থা বাস্তবায়ন থাকাকালীন সময়কার সেই সোনালী দিন ফিরে আসতে পারে

 

তাই আমাদের শপথ হওয়া উচিত মুজিব-জিয়ার আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলাম বাস্তবায়ন করা যেমনটি শপথ করেছিলেন মদীনার আউস খাজরাজ গোত্রের মুসলিমগণ আকাবার দ্বিতীয় শপথে সেখানে মদীনার আনসাররা শুধুমাত্র জান্নাতের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে নিজেদের জীবন সম্পদ বাজী রেখে ইসলাম বাস্তবায়ন ইসলামের নিরাপত্তা বিধানের শপথ করেছিলেন তাই, আমাদেরও উচিত মুজিব-জিয়া কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকদের আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করে আকাবার শপথের মত ইসলাম প্রতিষ্ঠার শপথ গ্রহণ করা এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করা

 

-       মো. হাফিজুর রহমান

 

 

 

 

 

 

 যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র সম্মেলন শুরু

খবরঃ

বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক চর্চা তুলে ধরার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে দ্য সামিট ফর ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্র সম্মেলন। এতে বিশ্বের ১১০টি দেশ কে আমন্ত্রণ জানালেও গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনটির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে চীন ও রাশিয়াকে। সম্মেলনের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ কোর্ট অডিটরিয়াম থেকে উদ্বোধনী ভাষণ দেন বাইডেন। এসময় তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সব দেশের এক হয়ে কাজ করা উচিত। বাইডেন বলেন,  আমরা এমন একটি গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সেখান থেকে বের হতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে পারস্পরিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন যাতে না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে (www.somoynews.tv/news/2021-12-10/যুক্তরাষ্ট্রে-গণতন্ত্র-সম্মেলন-শুরু)

মন্তব্যঃ

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের এ সম্মেলন আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বে তার একক কর্তৃত্বকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং তার মিত্র রাষ্ট্রগুলো ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোকে কাছে টানা, এক্ষেত্রে আমন্ত্রিত রাষ্ট্রগুলোর গণতান্ত্রিক চরিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিবেচ্য নয়; যেমনঃ ভারত বা পোল্যান্ডকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা জানি এ দুটি রাষ্ট্রেরই গণতান্ত্রিক চরিত্র নিয়ে পুরো বিশ্বেই প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া গণতন্ত্র চর্চায় খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাও পুরো বিশ্বের কাছে সমালোচিত বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের শেষ নির্বাচনের ক্যাপিটাল হিলসের ঘটনা যার একটি উজ্বল দৃষ্টান্ত। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিজের দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার চর্চা নিয়ে রয়েছে প্রচুর সমালোচনা। ২০২০ সালে বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে কম দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ২৫তম এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। আর মানবাধিকার প্রশ্নে জর্জ ফ্লয়েডইস্যু বা ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার আন্দোলনযুক্তরাষ্ট্রের আসল চেহারা তুলে ধরে। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে, যে নিজে রোগী, সে কী করে ডাক্তারের ভূমিকা নেবে? যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ মানবমস্তিষ্কের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং বস্তুগত লাভ-ক্ষতিযার সমস্ত কাজের মাপকাঠি, তার পতন ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

পক্ষান্তরে আমরা যদি ইসলামী ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখবো ইসলামী আক্বীদা অনুযায়ী আইন বা বিধান দেবার একমাত্র মালিক আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। ‘‘কর্তৃত্বতো শুধুমাত্র আল্লাহ্ (সূরা আনআম: ৫৭); ‘‘সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) জন্য সংরক্ষিত’’ (সূরা আরাফ: ৫৪)ফলে ইসলামের এই আক্বীদা রাষ্ট্র, সংবিধান, সমস্ত আইন কানুন এবং সমস্ত ব্যবস্থার মূলভিত্তি হওয়ায় মানুষ ইচ্ছামতো আইন তৈরী করতে পারে না অথবা নিজের সুবিধা অনুযায়ী নিজ রাষ্ট্র বা অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক তৈরী করতে পারে না যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুরোপুরি বিপরীত। যার ফলে ইসলামী রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকে যার অসংখ্যা উদাহরণ পূর্ববর্তী ইসলামী রাষ্ট্রে বিদ্যামান। উপরন্তু দুনীর্তি এবং মানবাধিকার প্রশ্নে ইসলামী জীবনাদর্শ তৎকালীন অজ্ঞানতার আঁধারে নিমজ্জিত, দীর্ঘস্থায়ী পারিবারিক সামন্তবাদী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত, নিম্নস্তরের বুদ্ধিসম্পন্ন আরব জাতিকে ইসলামের আলোকচ্ছটায় পরিবর্তিত করে এমন একটি উন্নত অগ্রসরমান ন্যায়নিষ্ঠ জাতিতে পরিণত করেছিল যারা পারস্য, ইরাক, শাম, মিশর, উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়ার মতো বিশাল অঞ্চলকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে এনে এক ইসলামী উম্মাহ্‌তে পরিণত করেছিল। আবার যখন দ্বিতীয় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে তখন সেই রাষ্ট্র মানবরচিত বিভিন্ন ব্যবস্থাকে চিরতরে বিদায় করে বিশ্বের নিপীড়িত মানুষদেরকে ইসলামের ছায়াতলে এনে নতুন বিশ্বব্যবস্থার সূচনা করবে।

-     আজমান চৌধুরী

 

 

Previous Post Next Post