Weekly
ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা
৩৯ তম সংখ্যা । ১ জানুয়ারী, ২০২২
“মাদক কমাতে মদে ছাড়, সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা”
খবরঃ
দেশে মাদকের ব্যবহার কমাতে অ্যালকোহলে ছাড় দেওয়ার মতামত এসেছে সংসদীয় কমিটিতে। আমেরিকা ও কানাডায় গাঁজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে কমিটির আলোচনায় বলা হয়—মাদক নির্মূল করতে হলে কিছু পলিসি পরিবর্তন করতে হবে। মাদকের বিকল্প কিছু একটা সামনে নিয়ে আসতে হবে। এজন্য অ্যালকোহল, মদ, গাঁজা এগুলো সম্পর্কে আরও চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে। অ্যালকোহলে কিছুটা ছাড় দিলে ড্রাগ সেবন কিছুটা কমতে পারে। (www.banglatribune.com/719716/মাদক-কমাতে-মদে-ছাড়-সংসদীয়-কমিটিতে-আলোচনা)
মন্তব্যঃ
বর্তমান সরকারের নীতি-নির্ধারকেরা ধরেই নিয়েছেন যে, তরুণদের
মাদক গ্রহন একটি স্বাভাবিক বিষয়।
তাদের মতে তরুনরা মাদক গ্রহণ করবেই। যেহেতু তাদেরকে
মাদক থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয় তাই তারা এখন সন্ধান করছে কিভাবে মাদকের বিকল্প হিসেবে অন্য কোন মাদককে বিকল্প হিসেবে প্রতিস্থাপিত করা যায়। যেমন, RAB-এর
মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাংলাদেশে মাদক কখনও বন্ধ করা যাবে না। তবে হয়তো কিছুদিনের জন্য কমিয়ে আনা যেতে পারে। কারণ, মাদকের
বিকল্প কিছু একটা সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাই অ্যালকোহল, মদ, গাঁজা এগুলো সম্পর্কে আরও চিন্তাভাবনা করা উচিত।’ প্রশ্ন হচ্ছে, অ্যালকোহল, মদ, গাঁজা এইগুলো কি মাদক না? এদের ব্যাপারেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “আমার উম্মতের একদল লোক মদ পান করবে। তারা মদকে অন্য পানীয়ের নামে নাম পরিবর্তন করে পান করবে।” (বুখারি, ইবনে মাজাহ)।
আবার যুক্তি প্রদান করা হচ্ছে যে, আমেরিকা ও কানাডা গাঁজা
উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এমনকি এসকল পশ্চিমাদেশসমূহে অ্যালকোহল ও মদ পানও বৈধ। কিন্তু পশ্চিমারা কি তাদের মাদকের সমাধান নিয়ে সন্তুষ্ট? যেমন, অ্যামেরিকার
৬% প্রাপ্তবয়স্ক
লোক Alcohol Use Disorder- এ ভোগে এবং প্রতি বছর প্রায় ১
লক্ষের মত
লোক অ্যালকোহল ও মদপানজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে। তাছাড়া মদপানজনিত কারণে পারিবারিক ও মানসিক সমস্যাতো
রয়েছেই। শুধু অ্যামেরিকাতেই নয়, বরং সকল পশ্চিমা দেশসমূহেই একই অবস্থা।
অর্থাৎ মাদকের সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে তারা অ্যালকোহল জনিত সমস্যা তৈরী করছে। এর কারণ হচ্ছে পশ্চিমারা প্রতিটি সমস্যাকে আলাদা আলাদা সমস্যা হিসেবে চিন্তা করে যার সাথে অন্যান্য সমস্যার কোন সম্পর্ক তারা স্থাপন করে না, ফলে তারা যখন একটি সমস্যা সমাধান করতে যায় তখন আরও দশটি সমস্যার তৈরী করে।
যেমন, মধ্যযুগীয়
যাজকতন্ত্রের নিপীড়ন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে তারা তাদের জীবন থেকে ধর্মকে আলাদা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করল। আপাতদৃষ্টিতে যাজকতন্ত্র
থেকে মুক্তি পেলেও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় শাসকশ্রেণী
নিজেকে সার্বভৌম ঘোষণা করে স্রষ্টার স্থানে প্রতিস্থাপিত করল এবং মানুষের জন্য নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী এমনসব আইন প্রণয়ন করতে লাগল যা
শাসকশ্রেণীকে প্রদান করল অফুরন্ত সম্পদ ও ক্ষমতা আর সাধারণ জনগণ পতিত হল দারিদ্রতা আর শোষণের মধ্যে।
এসকল সমাধান যা অধিকতর সমস্যা
উৎপাদন করে তা থেকে উত্তরণের
একমাত্র পথ
হচ্ছে পশ্চিমাদের চিন্তাজাত
সন্তান বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবি, আমলাদের কাছ থেকে সমাধান না
নিয়ে মহাবিশ্বের স্রষ্টা
আল্লাহ্ সুবহানাহু
ওয়া তা’আলা-এর কাছ থেকে সমাধান গ্রহন করা।
কারণ তাঁর প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা ইসলামই পারে মানবজীবনের প্রতিটি বিষয়ের সঠিক সমাধান দিতে। যেমন, আমরা যদি মাদকের কথা চিন্তা করি তাহলে আমরা দেখব যে ইসলাম সকল প্রকার মাদককেই নিষিদ্ধ করেছে। আল্লাহ্
বলেন, “হে ঈমানদারগণ নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, পূজার
বেদি, লটারি ইত্যাদি ঘৃণিত ও শয়তানের কাজ, তোমরা এ থেকে
বিরত থাকলে সফল হবে” (সূরা মায়িদা: ৯০)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই হারাম এবং যে বস্তুটির বেশি পরিমাণ নেশাকর তার সামান্যটুকুও হারাম।” (আবু দাউদ,
তিরমিযী, ইবন মাজাহ)। তাছাড়া মদ
পানের শাস্তি হিসেবে বেত্রাঘাতের কথাও বলা হয়েছে। উপরন্তু ইসলাম এমন এক
সমাজ উপহার দিবে যেখানে মানুষের মধ্যে থাকবে না
জীবন নিয়ে হতাশা, পারিবারিক অশান্তি,
বেকারত্ব ইত্যাদি।
ফলে মদ্যপানের মাধ্যমে দুঃখ ভোলার যে পশ্চিমা টনিক তা থেকে ইসলামী সমাজ মুক্ত থাকবে। বরং একজন মুসলিম সবসময় আখিরাতমুখী চিন্তা করবে এবং সকল প্রকার হারাম থেকে নিজেকে বিরত রাখবে। তরুনদেরকে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে তাকওয়াবান হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং সারা বিশ্বে ইসলামের সুমহান বাণী ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে প্রস্তুত করা হবে।
-
হাফিজুর রহমান
“সেই রাতে ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন দিয়াকুল গ্রামের মানুষ”
খবরঃ
ঝালকাঠিতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের সময় যাত্রীদের উদ্ধার
ও সাঁতরে তীরে আসা যাত্রীদের গরম পোশাক দিয়ে পাশে দাঁড়ান সদরের দিয়াকুল গ্রামের মানুষ। গত বৃহস্পতিবার
দিবাগত রাতে লঞ্চে আগুন লাগার পরপরই এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা কুয়াশা আর প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে
সুগন্ধা নদীতে ঝাঁপ দেন যাত্রীদের বাঁচাতে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, ঘটনার পরপরই দিয়াকুলের লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা
নম্বর ৯৯৯–এ কল করেন। তবে তাঁরা সহায়তা পাননি। ফায়ার
সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকালে। কিন্তু গ্রামের লোকজন রাতেই উদ্ধারকাজে হাত
লাগান। অনেকেই ট্রলার নিয়ে লঞ্চের কাছে ভেড়ার চেষ্টা করেন, যদিও আগুনের তাপের কারণে তাঁদের পক্ষে লঞ্চে
উঠে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। পরে লঞ্চ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া যাত্রীদের ট্রলারে
করে তাঁরা নদীর তীরে নিয়ে যান। নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দেন। ভেজা
কাপড় পাল্টে তাঁরা যেন গরম কাপড় পরতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করেন। (www.prothomalo.com/bangladesh/district/সেই-রাতে-ত্রাতার-ভূমিকায়-ছিলেন-দিয়াকুল-গ্রামের-মানুষ)
মন্তব্যঃ
আবারো
আমরা
মুসলিম উম্মাহ্’র উত্তম এক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং দায়িত্বশীলদের
দায়িত্বহীনতার সাক্ষী হলাম। প্রচণ্ড কুয়াশা
আর
শীত
উপেক্ষা
করে
গ্রামবাসীরা
তাদের
ভাই-বোনদের
বাঁচাতে
নদীতে
ঝাঁপ
দেন। লঞ্চ থেকে
ঝাঁপিয়ে
পড়া
যাত্রীদের
ট্রলারে
করে
নদীর
তীরে
নিয়ে
যান, নিজের
বাড়িতে
আশ্রয়
দেন, ভেজা
কাপড়
পালটে
যেন
গরম
কাপড়
পরতে
পারে
সেই
ব্যবস্থা
করেন, টাকা-পয়সা, খাবার-দাবার
দিয়ে
সাধ্যমত
সহায়তা
করেন। মিলন খান
নামক
এক
ট্রলারচালক
ভাইতো
বিনা
ভাড়ায়
প্রায়
৩০০
যাত্রীকে
পারাপার
করেন। রাত তিনটা
থেকে
সকাল
আটটা
পর্যন্ত
তিনি
এই
কাজে
ব্যয়
করেন। অন্যদিকে ৯৯৯
কল
দিয়েও
বিপদগ্রস্থরা
সাহায্য
পায়নি। যাদের দায়িত্ব
ছিল
তারা
তা
পূর্ণমাত্রায়
অবহেলা
করেছে। দুর্ঘটনা রাতে
ঘটলেও
ফায়ার
সার্ভিস
সকালে
পৌঁছেছে। লঞ্চের চালক
থেকে
শুরু
করে
বিআইডব্লিটিএ,
সর্বক্ষেত্রে
সকল
দায়িত্বশীল
ব্যক্তিরা
ব্যর্থতা, অবহেলা
ও
অব্যবস্থাপনার
প্রমাণ
দিয়েছে। ৪০০ যাত্রীর
স্থলে
আড়াই
হাজার
যাত্রী, ইঞ্জিনে
ত্রুটি, জীবনরক্ষাকারী
সরঞ্জাম
এর
অভাব, ইঞ্জিন
রুমের
পাশে
রান্নাঘর, এমনকি
সামান্য
পানি
উত্তোলনের
ব্যবস্থা, যার
সাহায্যে
নদী
থেকে
পানি
দিয়ে
আগুন
নিভানো
যাবে
সেই
ব্যবস্থাটুকুও
ছিল
না। আর এগুলো
যেই
কর্তৃপক্ষ
তদারকি
করবে, সেই
বিআইডব্লিওটিএ,
দুর্ঘটনায়
যারা
উদ্ধার
করবে, সেই
ফায়ার
সার্ভিস
এবং
যে
সরকার
ব্যবস্থা
এসকল
প্রতিষ্ঠানকে
পরিচালনা
ও
জবাবদিহিতার
মুখোমুখি
করবে, তাদের
অবহেলা
ও
ব্যর্থতা
সর্বত্রই
পরিলক্ষিত।
আসলে,
এসকল
পুঁজিবাদী
শাসকেরাতো
জনগণকে
নিজ
এলাকায়
ন্যূনতম
জীবিকা, শিক্ষা
কিংবা
চিকিৎসার
ব্যবস্থাটুকুও
করে
না, যার
কারণে
মানুষকে
মারাত্মক
বিপদ
সংকুল
ও
দুর্ঘটনা
প্রবন
পথসমূহ
পাড়ি
দিয়ে
জীবিকার
জন্য
দূর-দূরান্তে
যেতে
হয়, পরিবার-পরিজন
থেকে
বিচ্ছিন্ন
হয়ে
রাজধানীতে
মানবেতর
জীবন-যাপন
করতে
হয়। তাই সামান্য
ছুটি
পেলেই
দলে
দলে
মানুষ
তার
পরিবার
পরিজনের
সাথে
মিলিত
হতে
ছুটে
যায়। আর তখন
সরকারের
আশীর্বাদপুষ্ট
পুঁজিপতি
পরিবহন
মালিকদের
মুনাফা
লুটের
মহোৎসব
শুরু
হয়। দুর্ঘটনা তখন
একটি
সাধারন
বিষয়ে
পরিণত
হয়। অন্যদিকে এই
উম্মত
বিভিন্ন
দুর্যোগকালীন
সময়ে
তার
ভাই-বোনদের
সাহায্যার্থে
ঠিকই
এগিয়ে
গিয়েছে, যেমন নিকট
অতীতেও
করোনাকালীন
সময়ে
তারা
তাদের
ভাই-বোনদের
সহায়তায়
ছুটে
গিয়েছে, যখন
সরকার
একের
পর
এক
লকডাউন
দিয়ে
একদিকে
অনাহারে, অন্যদিকে
বিনা
চিকিৎসায়
মানুষকে
মৃত্যুর
দিকে
ঠেলে
দিয়েছিল। তারও আগে
তারা
গণহত্যার
শিকার
রোহিঙ্গা
ভাই-বোনদের
সহায়তা
করার
জন্য
একইভাবে
ছুটে
গিয়েছিল। কারণ রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ)
বলেছেন, “এক মুসলিম
অপর মুসলিমের ভাই, সে
তার উপর অত্যাচার
করে না এবং
তাকে অত্যাচারীর হাতে ছেড়ে
দেয় না...” (বুখারী)। তাই এই
পবিত্র
উম্মত, যারা
তাদের
ভাই-বোনদের
সাহায্যে
সর্বস্ব
নিয়ে
ঝাঁপিয়ে
পড়ে, তাদের
পরিচালনা
কিংবা
শাসনের
কোন
অধিকার
নেই
এসকল
অযোগ্য
শাসকগোষ্ঠীর। উম্মতকে পরিচালনার
জন্য
একমাত্র
যোগ্য
শাসনব্যবস্থা
হলো
খিলাফত
শাসনব্যবস্থা
যেখানে
হযরত
ওমর
(রা.)-এর
মত
নিষ্ঠাবান,
দায়িত্বশীল
ও
আল্লাহভীরু
খলিফাগণ
জনগণের
দেখাশোনা
করার
জন্য
প্রয়োজনে
রাতের
পর
রাত
জনপদসমুহে
ঘুরে
বেড়াবেন, এমনকি
একটি
পশুর
হাঁটার
সুবিধার
কথা
চিন্তা
করেও
রাস্তা
মসৃন
করার
ব্যাপারে
চিন্তিত
থাকবেন।
- মো: জহিরুল ইসলাম
“চলুন কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তর ফেসবুকে ঘুরে আসি”
খবরঃ
সেই আঠারো শতকে স্কটিশ লেখক ডক্টর জেকিল ও
মিস্টার হাইডের গল্পটা লিখেছিলেন। একই মানুষের দুই সত্তার কাহিনি। একই মানুষের আলো
ও অন্ধকারের কাহিনি। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা সব জেকিল ও হাইডের দুই চেহারা দেখতে পারলে
অনেক সমস্যারই সমাধান করা সম্ভব হতো। অনেকেরই ব্যক্তিগত জীবনযাপন আর ফেসবুকের
জীবনযাপনের মধ্যে ফারাক আকাশ-পাতাল। অনেকেরই ফেসবুকের ভালো মানুষের চেহারাটা
খসে পড়ে বাস্তব জীবনে। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ফেসবুকই আমাদের মনে করিয়ে দেয় মানুষের
দুই চেহারার অসংখ্য কাহিনি। কক্সবাজারে এক নারী পর্যটক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আট মাসের সন্তানকে নিয়ে
স্বামীসহ তিনি গিয়েছিলেন কক্সবাজার। তারপরও নিরাপদ থাকতে পারেননি তিনি। সৈকতে
নামতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিই হচ্ছে ঘটনার সূত্রপাত। অভিযুক্ত তিনজনকেই শনাক্ত করা
গেছে। পুলিশ বলছে, প্রধান
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আশিকুল ইসলাম, তিনি কক্সবাজার পৌরসভার বাহারছড়া এলাকার একজন
সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে ছিনতাই, নারী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগে ১৬টি মামলা
রয়েছে। এর মধ্যে ছিনতাই মামলায় তিনি জেল খেটে বের হয়েছেন ৮ ডিসেম্বর। এই হচ্ছে ‘মিস্টার হাইড’ আশিকুল ইসলামের এক চেহারা। এবার
দেখা যাক আশিকুল ইসলামের ‘ডক্টর
জেকিল’ চেহারাটা কেমন। এ জন্য যেতে
হবে তাঁর ফেসবুকের পাতায়.. (www.prothomalo.com/bangladesh/crime/চলুন-কক্সবাজারে-ধর্ষণে-অভিযুক্ত-ব্যক্তির-ফেসবুকে-ঘুরে-আসি )
মন্তব্যঃ
আমাদের বর্তমান সমাজ অনেকের মধ্যেই দুই ধরনের সত্তার জন্ম দিয়েছে। যেমনঃ- বাসায় ভদ্রভাব ধরা ছেলেটা বাহিরে প্লেবয়, বাসার লক্ষী মেয়েটি টিকটকে বিউটি কুইন, ঘরের লক্ষী বউ ফেসবুকের সাবিতা ভাবী, ঘরকুনো স্বামী বাহিরে পরকিয়া লিপ্ত আসল পুরুষ, এলাকার আলহাজ্ব অফিসের ঘুষখোর, সাদা পাঞ্জাবির শুভ্র রাজনীতিবিদটি সেরা দুর্নীতিবাজ, মানুষের মাঝে এমন দ্বৈত আচরণ এমনি এমনি তৈরি হয়নি, এর পিছনে একটি প্রক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে। যেই প্রক্রিয়ায়
মানুষ নিজের মনের কথামত চলে, একে এদেশের
বুদ্ধিজীবীরা “তুরুপের তাস’’ হিসেবে আর পশ্চিমারা “Do what you love, Love what you
do’’ নামে অবিহিত করেছে, এবং মিডিয়া, পাঠ্যপুস্তক বা সেলিব্রেটিদের লাইফস্টাইলের মাধ্যমে
মানুষের কাছে একে মহিমান্বিত করে উপস্থাপন করে মগজে ঢুকিয়ে দিচ্ছে, ফলে একজন মানুষ নিজের খেয়াল খুশিমত নিজের জীবনকে অতিবাহিত
করছে,
আর স্বভাবগতভাবেই মানুষ নিজের প্রবৃত্তিকে তুষ্ট করে চলতে
গিয়ে প্রবৃত্তির তাড়নায় অসভ্যের মত আচরণ করছে, অন্যদিকে সমাজের চোখে ভাল হবার জন্য একটা মুখোশের আশ্রয়
নিচ্ছে। যে মুখোশ ধারণকে সিস্টেমেটিক বৈধতা দেয়ার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার মূল
বিশ্বাস হচ্ছে “ সৃষ্টিকর্তাকে
শুধু ধর্মে রাখো, সমাজ জীবনে
নিজের মনমত চলো”। তাই মানুষ জুম্মা মোবারকের পোস্টে নিজেকে সবার চোখে
আল্লাহভীরু ঈমানদার পরিচয়ে পরিচিত করিয়ে, পরক্ষণেই আল্লাহ্দ্রোহীতায় লিপ্ত হচ্ছে। যার ফলে মানুষের
মধ্যে ভণ্ড, ডাবল
স্ট্যান্ডার্ড পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
ইসলাম, এক আল্লাহ্র নির্দেশমত জীবনযাপন করতে বলার মাধ্যমে মানুষকে
সম্মানিত করেছে, ভন্ড-ডাবল স্ট্যান্ডার্ড চরিত্র থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করেছে।
ইসলামের মূল বিশ্বাসই হচ্ছে “লা ইলাহা ইল্লাললাহু মুহাম্মাদূর রাসুলুল্লাহ” অর্থ্যাৎ” আল্লাহ
ছাড়া কোন হুকুমদাতা
নাই, হযরত মুহাম্মাদ্ (সাঃ) আল্লাহ্’র রাসুল’’। একজন মুসলিমের সকলকাজের একমাত্র মানদন্ড হচ্ছে হালাল-হারাম। তার ভার্চুয়াল জগতের মানদন্ড যেরূপ হালাল-হারাম, ঠিক তেমনি তার বাস্তব জগতের মানদন্ডও। সে যেমন ব্যক্তিগত ইবাদত
ও জীবনে এই মানদন্ডকে মেনে চলবে একইভাবে সে তার সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ রাষ্ট্রীয় সকল বিষয়েও হালাল-হারামকে মেনে চলবে, নতুবা আল্লাহ্’র পক্ষ থেকে রয়েছে কঠোর আযাবের ঘোষণা “যদি
তোমরা কিতাবের কিছু
অংশ মান, আর
কিছু অংশ গ্রহন
কর তাহলে দুনিয়াতে
রয়েছে লাঞ্চনা, আখিরাতে
রয়েছে কঠোর আযাব’’ (সুরা আল বাকারা ১৮৫)। তাই যারা
ইসলামকে আঁকড়ে ধরে থাকবে তারাই ভণ্ড চরিত্র থেকে মুক্ত হয়ে উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানে
পরিণত হবে। খিলাফত ব্যবস্থার মাধ্যমে সার্বিকভাবে ইসলাম বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ইতিহাসের ১৪০০ বছরের শাসনে যা নিশ্চিত হয়েছিল, যেখানে কখনও দেখা যায়নি মিঃ হাইড এন্ড জেকিলদের, বরং সাহাবী, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনদের মত
মানবজাতির উজ্জ্বল নক্ষত্রদের দেখা গেছে,
যাদেরকে ইসলাম গ্রহণ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একই আদর্শে বলিয়ান থাকতে দেখা গেছে।
-
ইরফান আবিদ
“নতুন নির্বাচন কমিশন: সার্চ কমিটি গঠনে প্রস্তুতি শুরু সরকারের”
খবরঃ
নতুন নির্বাচন কমিশন
(ইসি) গঠন করতে সার্চ কমিটির সম্ভাব্য সদস্যদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে সরকার।
ইসি গঠনে মতামত নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শেষে সার্চ কমিটির সদস্যদের নাম প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। ২০
ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে এই সংলাপ। ২০১২ ও ২০১৭ সালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন কোনো আইনি প্রক্রিয়া নয়। সার্চ কমিটির বিষয়ে সংবিধানেও কিছু বলা নেই। তবে রাষ্ট্রপতির
আদেশের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন হয়। (www.jugantor.com/todays-paper/last-page/499087/সার্চ-কমিটি-গঠনে-প্রস্তুতি-শুরু-সরকারের)
মন্তব্যঃ
সরকার পরিবর্তন এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন এক
কথা নয়- নির্বাচনের মাধ্যমে শুধুমাত্র শাসকের চেহারার পরিবর্তন হয় কিন্তু শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন হয়
না। তাই ‘নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি’, ‘নিরপেক্ষ ও
শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন’এগুলো অপ্রাসঙ্গিক
আলোচনা। আমাদের আলোচনা হতে হবে শুধু বর্তমান সরকারই বরং পুরো শাসনব্যবস্থাকে কিভাবে
পরিবর্তন করা যায়, তবেই জনগণের
ভাগ্যের পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিগত দশকগুলোতে নির্বাচনের মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্থ হাসিনা অথবা খালেদা সরকার ঘুরে ফিরে শাসক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে কিন্তু তারা উভয়ই একই শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্র দ্বারা শাসন করেছে। অথচ পৃথিবীর ইতিহাসে কোন ব্যবস্থাই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বা প্রতিস্থাপিত হয়নি। যেমন: মদীনাতে
ইসলাম, ইউরোপে
ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র,
রাশিয়া বা
চীনে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা
নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রকৃতঅর্থে নির্বাচনের
মাধ্যমে কে
ক্ষমতায় আসবে তার ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়, যা এমনকি গণতন্ত্রের আতুড়ঘর খোদ আমেরিকাতেও এখন স্পষ্ট এবং নির্বাচনের সময় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের (আমেরিকা-বৃটেন-ইউরোপীয় ইউনিয়ন)
প্রতিনিধিদের জোড় তৎপরতা এবং তাদের দালাল শাসকদের বক্তব্যসমূহ হতে যা এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট।
তাছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়
নির্বাচনে অংশগ্রহণ কেবল সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের স্বার্থই
রক্ষিত হয়। যেমন- মিশরে আরব বসন্তের সময় মুসলিম জনগণের ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে প্রশমিত করার জন্য মুরসিকে ক্ষমতায় আনা হয়; কিছুদিন পরে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে মুরসিকে সরিয়ে সিসিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে।
বিশ্বের কোন দেশে এমন নজির নেই যে নির্বাচনের মাধ্যমে
শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।
তাই বর্তমান গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সামগ্রিক পরিবর্তন করে ইসলামী শাসন্যবস্থা তথা খিলাফত ব্যবস্থা পূনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটা ব্যবস্থার মূল ধারক কারা বা
power structure কারা ধারণ করে তা বুঝতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে সহজেই অনুমেয় যে সামরিক বাহিনীই হচ্ছে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু এবং বিশ্বব্যাপী সকল শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে সেনাবাহিনীর সামরিক সমর্থনের (নুসরাহ্) মাধ্যমেই। ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দোলাকে অপসারণ
করে বৃটিশ শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা,
১৯১৭ সালে রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা
এসব কিছুই হয়েছে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। একইভাবে মদীনাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সামরিক সক্ষমতা সম্পন্ন নেতৃবৃন্দ কর্তৃক রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে নুসরাহ্
প্রদানের মাধ্যমে।
ঐ সময় গোত্রপ্রধানরা ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু বর্তমান সময়ের সামরিক বাহিনীর অফিসারদের মতো। তৎকালীন আরবের কুফর শাসন ব্যবস্থাকে অপসারণ করে ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানোর জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নবুওয়াতের ৯ম
বছর থেকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র নির্দেশে সামরিক ক্ষমতার অধিকারী বিভিন্ন জেনারেলদের কাছে যাওয়া শুরু করেন “তালাব আন
নুসরাহ”(রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক সাহায্য)
চাওয়ার জন্য।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বনু আমর বিন সাসা গোত্রের জেনারেল বায়হারা বিন ফিরাস, বনু শিবান বিন তালাবা গোত্রের জেনারেল মাফরুক ইবনে আমর কাছে সামরিক ক্ষমতা অন্বেষণ করেছিলেন। এভাবে রাসুলুল্লাহ(সাঃ)প্রায় ৪০ থেকে ৪২ টি গোত্র প্রধানের কাছে গিয়েছিলেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ(সাঃ) মদীনায়
আওস ও
খাজরাজ গোত্রের জেনারেলদের সহযোগিতায় মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নুসরাহ্ অনুসন্ধান
ফরজ এবং এটা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অনুসৃত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি,
যে পদ্ধতি অনুসরণ করে নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর খিলাফত
ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। তাই আমাদের
ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়।
-
মোহাম্মদ সিফাত
“ভারতে মুসলমানদের জুম্মার নামাজ পড়তে হিন্দুদের বাধা”
খবরঃ
ভারতের
রাজধানী দিল্লির নিকটবর্তী গুরগাঁওয়ে গত
তিন মাস ধরে প্রতি শুক্রবার জনসমুক্ষে মুসলমানদের নামাজ পড়ায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। হিন্দু ডানপন্থী
একদল লোক নিয়মিত নামাজের সময় জড়ো হয়ে সোরগোল করে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জুম্মার জামাতে ব্যঘাত ঘটাচ্ছে। শহরটিতে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস যার মধ্যে আনুমানিক পাঁচ লক্ষ মুসলমান। গুরগাঁওয়ে মুসলমানেরা
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে খোলা জায়গায় নামাজ পড়ছেন কারণ পর্যাপ্ত মসজিদ নেই। এখানে ১৩টির মতো মসজিদ রয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র একটি শহরের নতুন অংশে অবস্থিত। অথচ এই নতুন অংশেই বেশিরভাগ মুসলিম বসবাস করেন এবং কাজ করেন। শহরের নতুন ও উন্নত অংশে ৪২টিরও বেশি মন্দির এবং ১৮টি গুরুদুয়ারার জন্য জায়গা বরাদ্দ রয়েছে, কিন্তু
মসজিদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র একটি প্লট।
২০১৮ সালে উন্মুক্ত স্থানে মুসলমানদের প্রার্থনা
করার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিবাদ শুরু হয়৷ আলোচনার পরে মুসলিম নাগরিক গোষ্ঠীগুলো তখন নামাজ পড়ার স্থানের সংখ্যা ১০৮টি থেকে কমিয়ে ৩৭-এ নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছিল৷ এই বছর বিক্ষোভ
নতুন করে দানা বেঁধেছে। (https://www.bbc.com/bengali/news-59693452 )
মন্তব্যঃ
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল স্লোগাণ হচ্ছে ধর্মকে জীবন থেকে পৃথকীকরণ, কিন্তু বাস্তবতা
হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মানে হচ্ছে ইসলামকে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে পৃথকীকরণ। কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশে হিন্দুদের পুঁজামণ্ডপে হামলাকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকার যেভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল, ভারতে মুসলিমদের
ইবাদতে বাধা প্রদানকে কেন্দ্র করে তাদেরকে প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা টু-শব্দটিও করতে দেখা যায়নি। ফ্রান্সে আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর অবমাননা
এবং ইউরোপে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া প্রকাশ্যে কুরআন অবমাননার বিষয়েও ধর্মনিরপেক্ষ বর্তমান
শাসকগোষ্ঠী ও
রাজনীতিবিদ কিংবা বুদ্ধিজীবিদের একই রকম বিপরীতমূখী নীতি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। কাশ্মীরে মুসলিমদের উপর আগ্রাসনকে বর্তমান সরকার বরাবর এটাকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে আখ্যা দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের
উপর নির্যাতনের
(যা অবশ্যই ইসলামে শাস্তিযোগ্য অপরাধ)
বিষয়ে যখন ভারতের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবিরা
কথা বলেছে এমনকি বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপের দাবী তুলেছে তখন সরকারকে নীরব থাকতে দেখা গিয়েছে।
শুধুমাত্র মুসলিমদের স্বার্থের ব্যাপারে ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের
এই বৈপরিত্য আমরা দেখতে পাই।
সুতরাং, আমরা
যারা ভাবতাম যে, ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের অধীনে অন্তত আমাদের নামায কিংবা
ব্যক্তিগত ইবাদততো সুরক্ষিত আছে, কিন্তু
বাস্তবতা হচ্ছে মুসলিম ভূখণ্ডে কিংবা বাইরে কোথাও তারা আমাদের জন্য তা করবে না। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা তথা খিলাফত ব্যবস্থা থেকে সরে যাওয়ার পর আমরা মুসলিমরা ঈমান, নিরাপত্তা, মর্যাদা সহ সবদিক থেকে অরক্ষিত ও অনিরাপদ হয়ে গেছি। কারণ ইসলাম একটি পুর্নাংগ জীবন ব্যবস্থা এর আংশিকরুপের কোন অস্তিত্ব ও বাস্তবতা নেই। শাসন ব্যবস্থা বা খিলাফত ছাড়া এর কোন কিছুই রক্ষা করা সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন: “ইসলাম একটি মালার মত, যার প্রথম গুটি হচ্ছে শাসন। প্রথম গুটিটি বিচ্ছিন্ন হলে বাকিগুলোও একে একে ঝরে পড়ে। এর সর্বশেষ গুটি হচ্ছে নামাজ”। নামায হচ্ছে একটি ইবাদত যা আল্লাহ্ আমাদের উপর ফরয করেছেন, রাষ্ট্রের কাজ হচ্ছে যে নামাযকে অস্বীকার করবে, কিংবা নামাযের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে বা নামায রহিত করবে তাকে শাস্তির আওতায় আনবে, মুসলিমদের আক্বীদা ও অন্যান্য ইবাদত রক্ষার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্র একই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ভারতীয় উপমহাদেশে আমরা জানি, সিলেটে রাজা গৌড় গোবিন্দ যখন বুরহান উদ্দিন নামক এক মুসলিমের শিশু সন্তানকে হত্যা করেছিল শুধু এই অপরাধে যে তিনি ছেলের আকীকা হিসেবে গরু কোরবানী করেছেন, তখন খবর শুনে দিল্লীর সুলতান আলাউদ্দিন খিলজী ক্ষুব্দ হয়ে শক্তিশালী বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফ্রান্স যখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে অবমাননা করে নাটক প্রদর্শন করতে চেয়েছিল, তখন খলিফা আব্দুল মজিদ কর্তৃক ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুশিয়ারীই যথেষ্ট ছিল ফ্রান্সকে এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য।
- মোহাম্মদ তালহা হোসেন