Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 40

 


Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৪০ তম সংখ্যা ৭ জানুয়ারী, ২০২২

 

 

নববর্ষ উদযাপনে ঢাকার অন্তত ৭ জায়গায় আগুন

খবরঃ

খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্‌যাপনে আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর সময় রাজধানীর অন্তত সাতটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে এসব ঘটনা ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন রাত একটার দিকে বলেন, এখন পর্যন্ত অন্তত সাতটি স্থানে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, ধানমন্ডি, রায়েরবাগ, মিরপুর ও খিলগাঁওয়ে ঘটনাগুলো ঘটেছে। (https://odhikarbd.net/নববর্ষ-উদযাপনে-ঢাকার-অন্/ )

মন্তব্যঃ

বর্তমান পৃথিবীতে যেকোন উৎসব পরবর্তী সংবাদগুলো হয় পরিবেশ বিপর্যয়ের না হয় সামাজিক অবক্ষয়ের। তেমনই কিছু সংবাদের শিরোনাম যেমন, “ভারতে দীপাবলি উৎসব ঘিরে আতশবাজি পোড়ানোয় সৃষ্ট বায়ু দূষণের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে”; সময় নিউজ, ৫ নভেম্বর ২০২১রোমে নববর্ষের আতশবাজিতে পুড়ে মরল শত শত পাখি”; ২ জানুয়ারি ২০২১, যুগান্তর। পয়লা বৈশাখের দিন ধর্ষণের শিকার ৯ শিশু-কিশোরী”; ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ইনকিলাব। সৃষ্টিকর্তা বিবর্জিত জীবনব্যবস্থায় ব্যক্তি সত্ত্বারকাছে জীবনকে পরিচালনা করার একমাত্র উপজীব্য বিষয় হলো সর্বোচ্চ পরিমাণে সুখকে নিশ্চিত করা; আর এই সুখ নিশ্চিত করতে জীবনকে উপভোগ করতে হয়; যেকোন সময় যেকোন ভাবে যেকোন উপকরণের মাধ্যমে। পশ্চিমা চিন্তাহীনগোষ্ঠী মনে করে তাদের এই জীবনের সাথে, মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কোন সম্পর্ক নেই, তাই তারা পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনকে চুড়ান্ত মাত্রায় উপভোগ করতে চায়। এই চিন্তাহীনদের  গর্ভে জন্ম নেয়া “you only live once (YOLO)” এই ধারনাটিই মানুষকে জীবন উপভোগ করতে বলার মাধ্যমে এমন এক পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসে যেখানে হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, “আপনি কি তাকে দেখেন না যে, তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে……বস্তুত তারা চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও অধম” (সুরা ফুরকান ৪৪-৪৫)কারণ একজন ব্যক্তি যখন শুধুমাত্র নিজের জীবনের সুখ আনয়নের চিন্তা করে তখন তা আরেকজনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ঠিক যেমনটা থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করার সময় মজা করতে গিয়ে ফানুস উড়ানো হলেও তা ঢাকাবাসীর জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে, মুর্তিমান আতঙ্কে রুপ নিয়েছে।

ইসলাম মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশ্নটির (মানুষ কোথা থেকে এসেছে, কোথায় যাবে, পৃথিবীতে মানুষের কাজ কি?) সমাধান করে মানুষকে চিন্তাহীন পশু পর্যায় থেকে উত্তোলন করে একই সাথে মানুষকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হবার সুযোগ করে দিয়েছে আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, তোমরাই সর্বোত্তম জাতি, মানবজাতির কল্যানের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দিবে,অন্যায় কাজে বাধা দিবে (সুরা আল ইমরান ১১০) তাই ইতিহাসের পাতা ঘেটে দেখা গেছে মুসলিমরা তাদের ক্ষণস্থায়ী জীবনের মুল্যবান সময়টুকু মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছে, তাই আমরা পেয়েছি মুসা আল খাওয়ারেজমী, আল বাত্তানী, আল বেরুনীদের মত বিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের একই সাথে সালাউদ্দিন আইয়ুবীদের মত বীর আর উমার ফারুক (রা.)-এর মত ন্যায়পরায়ণ শাসকদের অতি শীঘ্রই দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্‌’ অধীনে জনগণ আল্লাহ্প্রদত্ত সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনব্যবস্থাকে উদযাপন করবে, ইনশাআল্লাহ্

-       ইরফান আবিদ

 

 

“মাধ্যমিকের বইয়ে যুক্ত হচ্ছে যৌন শিক্ষার পাঠ”

খবরঃ

মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের পাঠ। এজন্য শ্রেণীকক্ষে ‘শাহানা কার্টুন’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। শাহানা কার্টুনে বয়ঃসন্ধিকালীন যৌন, প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার এবং সবার জন্য লিঙ্গসমতার বিষয়গুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মাউশি এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে এখনো যৌন রোগ বিষয়ে চিকিৎসককে বলতে গ্রামগঞ্জের নারীরা লজ্জা পায় তাদের এ লজ্জা বা অচলায়তন ভাঙ্গতে হবে, আরো সচেতন হতে হবে সংযুক্ত পাঠপরিকল্পনা ও গাইডলাইন অনুযায়ী শাহানা কার্টুন ষষ্ঠ থেকে নবম–দশম শ্রেণির জাতীয় কারিকুলামের সহায়ক শিক্ষা উপকরণ হিসেবে দেশের সব মাধ্যমিক স্কুলে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যে শাহানা কার্টুনের সিডি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণের জন্য সব জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। (thedailycampus.com/secondary/83230/মাধ্যমিকের-বইয়ে-যুক্ত-হচ্ছে-যৌন-শিক্ষার-পাঠ)
মন্তব্যঃ

দেশের ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী একশ্রেণীর উদারবাদীগোষ্ঠী দেশে নজিরবিহীন যৌন সহিংসতার জন্য বরাবরই যৌন শিক্ষার অভাবকে দায়ী করছে বাংলাদেশের স্কুল মাদ্রাসায় এধরনের শিক্ষা প্রচারণা চালানোর বৈধতা দিচ্ছে এবং যৌনশিক্ষাকে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে চালুর অপচেষ্টা চালাচ্ছে, এবং যুক্তি দিচ্ছে এই ধরনের প্রকল্প প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতন প্রজন্ম গড়ে তুলবে, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ যৌন নির্যাতন হতে রক্ষা করবে অথচ পশ্চিমা লিবারেল সমাজ থেকে আমদানি করা এই যৌন শিক্ষা আদৌ কি পশ্চিমা সমাজে ক্রমবর্ধমান যৌন অপরাধ কমাতে পেরেছে? বরং যৌন শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও পশ্চিমারা এই সমস্যায় জর্জরিত এবং তাদের অবস্থা দিনকে দিন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৪৩ সেকেন্ডে একজন এবং প্রতি বছর গড়ে ,৬৩,৬৩৪ জন (১২ বছর বা তার বেশি বয়সী) ধর্ষণ যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ব্রিটেনে প্রতি জনে জন এবং . মিলিয়ন (৩৪ লক্ষ) তরুণী ১৬ বছর বয়স থেকেই কোনো না কোনো ধরনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয় কার্যত, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীগোষ্ঠী মুসলিমদেশসমূহে তাদের দালাল সরকারগুলোর সহায়তায় যৌনশিক্ষার নামে মুসলিম তরুণদের মধ্যে যৌনতা সম্পর্কে উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার প্রকল্প হাতে নিয়েছে দূষিত যৌন শিক্ষার কর্মসুচীর নামে আমাদের কিশোর-কিশোরীদেরকে সম্মতিসূচক যৌনতারপাঠ দেয়া হচ্ছে, পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরীক সম্পর্ককে (জিনা) স্বাভাবিক হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে! এসবকিছুর উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের সমাজ হতে মহিমান্বিত ইসলামী মূল্যবোধগুলো নির্মূল করা, আমাদের ইসলামী সংস্কৃতির সকল চিহ্নকে মুছে ফেলা এবং সর্বোপরী আমাদেরকে আমাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত করা আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে সতর্ক করে বলেন, তারা চায়, তারা যেমন কাফের তোমরাও কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা ও তারা সব সমান হয়ে যাও [সূরা আন নিসাঃ ৮৯]

বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী যে ভয়াবহ যৌন সহিংসতা চলছে তা হতে মুক্তি পশ্চিমা উদারনৈতিক মূল্যবোধ আকড়ে ধরার মাধ্যমে অর্জন সম্ভব নয়, বরং ইসলামের সামগ্রিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবল তা অর্জন সম্ভব ইসলামী রাষ্ট্র নারী-পুরুষের মেলামেশা সহযোগিতার বিষয়টি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে যাতে সহিংসতা নৈতিক অবক্ষয় উৎস থেকেই নির্মূল হয়ে যায় ইসলাম যৌন স্বাধীনতা নারীকে যৌন বস্তুতে পরিণত করাকে নিষিদ্ধ করেছে খিলাফত রাষ্ট্র সমাজে ইসলামী চিন্তা আবেগকে সুরক্ষা দিবে এবং যেসব দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক চিন্তাসমূহ দ্বারা তরুণদের বিপথগামী করছে তাদেরকে প্রতিহত করবে নারীদের বিরুদ্ধে যেকোন ধরনের সহিংসতার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান (চাবুক মারা থেকে মৃত্যুদন্ড) রাখা ছাড়াও নারীর মর্যাদা রক্ষায় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজনে সেনাবাহিনী প্রেরণেও দ্বিধা করে না

-       মোহাম্মদ সিফাত

 

 

 

গণতন্ত্রের ডুবন্ত জাহাজ উদ্ধার করবে কে

খবরঃ

ডুবন্ত জাহাজে থাকলে মানুষ খড়কুটো ধরেও বাঁচতে চায়। আমাদের নাগরিক সমাজের অবস্থা তার চেয়ে ভালো বলা যাবে না।... বিবৃতিতে নাগরিকেরা আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের বেশ কিছু মাপকাঠিতে দেশের প্রশংসনীয় সাফল্য এসেছে। তবে মুদ্রার অপর পিঠ, অর্থাৎ নির্বাচন, জবাবদিহি, আইনের সমপ্রয়োগ, বাক্‌স্বাধীনতা, সভা-সমিতির অধিকার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতন এবং আনুষঙ্গিক অনেক মাপকাঠিতে আমরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছি।... (https://www.prothomalo.com/opinion/column/গণতন্ত্রের-ডুবন্ত-জাহাজ-উদ্ধার-করবে-কে)

মন্তব্যঃ

গণতন্ত্রের জাহাজ ডুবে গেলে ডুবে যাক! এটা উদ্ধারের কোনো প্রয়োজন নেই এটা আর কখনো না ভাসুক যে নৌযানের তলা অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত, যেটা হাজারবার জোড়াতালি দিয়েও মেরামত করা যাচ্ছে না, সেটা ভেসে থাকলেই কি, আর ডুবে গেলেইবা কি! আর গণতন্ত্রও কোন পরিত্যক্ত নিরীহ নৌযান নয়, বরং এটা পারমাণবিক বোমার মতই ভয়াবহ, যেটা প্রয়োগ করলে জনপদসমূহ ছারখার হয়ে যায় গণতন্ত্রের সংজ্ঞা অনুযায়ী, এটি এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে নীতি নির্ধারণ ও শাসনের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিকের সমান ভোটাধিকার থাকে তাই এই শাসনব্যবস্থায় সার্বভৌমত্ব জনগণের বলে বিবেচনা করা হয় কিন্তু বাস্তবিকভাবে, আমরা দেখি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সেই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নেতার হাতেই প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে পড়ে তখন সে যা খুশি তাই করে জনগণের উপর জুলুমের রাজ্য কায়েম করে জনগণের তখন আর কিছুই করার ক্ষমতা থাকেনা তাদেরকে তখন অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী নির্বাচনের জন্য যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের একবছর পার না হলেও তার জনসমর্থন ৪০% এর কোঠায় নেমে এসেছে এখন মার্কিনীরা তার প্রতি হতাশ হলেও তাদের আরও তিন বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে নতুন কারো হাতে সার্বভৌম ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য আবার, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শাসকেরা এই সার্বভৌম ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে আজীবন ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করে ফেলে তখন জনগণের আর দুর্দশার সীমা থাকে না যেমন, বাংলাদেশ অবস্থাদৃষ্টে, এমন হচ্ছে যে পশ্চিমারাও গণতন্ত্রের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে কারণ, তাদের রপ্তানি করা গণতন্ত্রের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রগুলোতে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন ঘৃণিত শাসকেরা বারবার ক্ষমতায় বহাল থাকলেও, তারা এর প্রতিকারে কোন ব্যবস্থাতো নিচ্ছেই না, বরং তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখছে

 

কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রের ধ্বজ্জাধারীরা গণতন্ত্র সমেত তলিয়ে গেলেও এই কলামিস্টের মত বুদ্ধিজীবীদের এর প্রতি আস্থা কোনোভাবেই কাটছে না খড়কুটা দিয়ে হলেও এটাকে ভাসিয়ে রেখে এর উপর চড়তে চাচ্ছেন। কিন্তু, নাগরিকসমাজ কিংবা বুদ্ধিজীবীদের বুঝা উচিত, প্রত্যেকটি মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই তার প্রবৃত্তি ও চাহিদাগুলোর নিকট দুর্বল তাই তার মস্তিষ্কপ্রসূত নীতিসমূহ তার প্রবৃত্তির অনুসরণ বাধ্য সে যতই সৎ হোক না কেন, তার পক্ষে সকল মানুষের কল্যাণের জন্য, এমনকি তার নিজের জন্যও নীতিসমূহ প্রণয়ন করা সম্ভব নয় তাকে নির্বাচন করে প্রতিনিধি বানিয়ে নীতি-নির্ধারণ কিংবা শাসনের দায়িত্ব দিয়ে সার্বভৌম ক্ষমতা তুলে দিলে সেটা মানবজাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বিশ্বে দরিদ্রতা, সম্পদের অসম বন্টন, নিরীহ মানুষের হত্যাযজ্ঞ, জাতিসমূহের সম্পদ লুন্ঠন, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ইত্যাদি চরম আকার ধারন করছে তাই মানবজাতির পরিচালনার জন্য নীতিসমূহ অবশ্যই এমন এক সত্ত্বা থেকে আসতে হবে যিনি সকল দুর্বলতা থেকে পবিত্র, সর্বশক্তিমান, সমস্ত মাখলুকের রব, আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তিনি বলেন, হে মানুষ! কিসে তোমাকে মহান পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল!” (আল-ইনফিতারঃ ৬) তাঁর নির্দেশিত খিলাফত শাসন ব্যবস্থায় নীতিসমূহ প্রণয়নের জন্য কোন ক্ষমতা খলিফাদের থাকেনা, তারা শুধুমাত্র জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা প্রদত্ত বিধানে জনগণকে শাসনের জন্য আর এই কাজে ন্যূনতম ব্যর্থতায় তাদেরকে মাযালিম আদালতের ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হতে হয়

 

-       মোঃ জহিরুল ইসলাম


 

 

ভারতে ছাপানো প্রাথমিকের পাঁচ লাখ বই দেশে পৌঁছেছে

খবরঃ

ভারতে ছাপানো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ লাখ ২৯ হাজার ৮৩৩টি বই যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর দেশে পৌঁছেছে বইয়ের আমদানি মূল্য এক লাখ ৩০ হাজার ৬৬৬ ডলার (www.banglatribune.com/country/720868//ভারতে-ছাপানো-প্রাথমিকের-পাঁচ-লাখ-বই-দেশে-পৌঁছেছে%C2%A0)

মন্তব্যঃ

যদিও দেশীয় মূদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেটের বেশী দামে বিড করাকে কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে, এই আমদানি স্পস্টতই অপ্রয়োজনীয় কারণ সরকার একদিকে অভিযোগ করছে যে, প্রিন্টাররা সিন্ডিকেট করে বিড করে অথচ সরকার নিজেই অনেক ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে একটি কোম্পানীকে ৩০% বই ছাপার কাজ দেয়! তাই সিন্ডিকেট মূলত তৈরী হয় সরকারের নীতির কারণেই এইদিকে করোনা পরবর্তি সময়ে আমদানিকৃত কাঁচামালের দামবৃদ্ধি সরকারের ট্যাক্স বেড়ে যাওয়ার পরও দিনরাত কাজ করে ছোট বড় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকই সঠিকভাবে বই প্রিন্টও সাপ্লাই করেছে সরকারের নীতি দেশীয় অসংখ্য ক্ষুদ্র মাঝারী প্রিন্টারের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও এটি সম্ভব হয়েছে এরপরও এই আমদানি কেন? যদি ৩৪ কোটি বই দেশে ঠিকঠাক প্রিন্ট করা যায় তাহলে ৭৫ লাখ কেন ভারতে ছাপতে হবে?

সরকারের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের এই প্রজেক্টের ২০% অর্থায়ন করে বিশ্বব্যাংক বাজার উদারনীতির নামে বিশ্বব্যাংকের মত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময়ই দেশগুলোকে আমদানি নির্ভর করে রাখতে চায় মুক্তবাজার অর্থনীতির মূল চাহিদা অনুযায়ী প্রতিযোগিতা করেই দেশী প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করতে সক্ষম হলেও এসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নীতির কারণেই অনেক অপ্রয়োজনীয় বিদেশ নির্ভরতা তৈরী করা হয় আমাদের সরকার যেহেতু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সব বিদেশী প্রতিষ্ঠান এবং এদের নিয়ন্ত্রণকারী দেশগুলোর উপর নির্ভরশীল তাই তারা এসব বিদেশীদের নীতি বাস্তবায়ণ করতে বাধ্য তাই প্রতিযোগিতার কথা বলে এই ধরণের অপ্রয়োজনীয় আমদানীর মাধ্যমে সরকার তাদের বিদেশী পার্টনারদের খুশী করে এবং পাশাপাশি সরকারের আয় বাড়ায় সরকার এই পাঠ্যপুস্তক আমদানিতে প্রায় ২০% আমদানি শুল্ক আয় করে আবার দেশে মূদ্রিত বই এর জন্য কাঁচামাল আমদানি থেকেও সরকার ৬০% এর বেশী শুল্ক আদায় করে ফলে এটি পরিস্কার যে বিদেশ নির্ভর সরকারগুলো মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে মূলতআমদানি রপ্তানী নির্ভর অর্থনীতিবাস্তবায়নে ব্যস্ত এই নীতিবিদেশ নির্ভরসরকারের জন্য সুখকর হলেও এটি দেশের উৎপাদন শিল্প খাতকে চাপে ফেলে, নিরুৎসাহিত করে, কর্মসংস্থান কমায় এবং সর্বোপরি দেশের কৌশলগত বিষয়ে বিদেশ নির্ভরতা তৈরী করে যা দেশ দেশের মানুষের নিরাপত্তা মৌলিক স্বার্থের জন্য হুমকি

ইসলামের অর্থনীতির মডেল এই ধরণের কৃত্রিমআমদানি রপ্তানী নির্ভর অর্থনীতিনয় কারণ ইসলামের সরকার খিলাফত সরকার বিদেশনির্ভর সরকার নয় এবং খিলাফত সরকারের আয় এই ধরণের আমদানি শুল্ক নির্ভরও নয় খলিফাকে নিয়োগ করে দেশের জনগণ এবং ক্ষমতায় রাখে দেশের জনগণ এবং তাকে শক্তিশালীও করে দেশের জনগণ তাই তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে আমদানি করারতো প্রশ্নই আসেনা, বরং তিনি প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহেও আমদানি নির্ভরতা দূর করে দেশকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তুলবেন শিক্ষা পাঠ্যপুস্তকের মত বিষয়েতো তিনি যেকোন মূল্যে বিদেশ নির্ভরতা বিদেশের সাথে সংশ্লিস্টতা দূর করবেন কারণ আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, আর আল্লাহ্কখনো মুমিনদের বিপক্ষে কাফিরদের জন্য পথ রাখবেন না [সূরা নিসা-১৪১] এধরণের বিদেশ নির্ভরতা মুসলিমদের কৌশলগত বিষয়ে কাফিরদের উপর নির্ভরশীল করে তুলবে তাই খলিফা শুধু বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেই তার কাজ শেষ করবেন না তিনি বিনামূল্যে নাগরিকদের সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করবেন বিদেশে বইতো ছাপবেনই না, বিদেশী কোন চিন্তা এবং বিদেশী কোন সংস্কৃতিও তিনি এই বইতে ঢুকতে দিবেন না সকল কৌশলগত কাঁচামালের উপর বিদেশ নির্ভরশীলতা দূর করবেন আর সকল সুযোগ প্রদান করে তিনি দেশীয় শিল্পকে বিকশিত করবেন এসব নীতি একটি সত্যিকারের আত্মনির্ভরশীল শক্তিশালী অর্থনীতি তৈরি করবে এবং সকল কর্মক্ষম মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে

-       মোহাম্মদ তালহা হোসেন

এসএসসি-সমমানে জিপিএ- পেল লাখ ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী

খবরঃ

এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) সমমান পরীক্ষায় লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ- পেয়েছে এবারের এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ গতবার তা ছিল ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ (www.prothomalo.com/education/এসএসসি-সমমানে-জিপিএ--পেল--লাখ-৮৩-হাজার-শিক্ষার্থী)

মন্তব্যঃ

          জিপিএ- পাওয়া এসকল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের ভাল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই যেমন, দেশে বিদ্যমান হাজার ৮৬৪টি কলেজের মধ্যে মানসম্মত কলেজের সংখ্যা মাত্র ২০০ কাছাকাছি যাতে মোট আসন সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজারের মত অর্থাৎ এবছর এসএসসিতে জিপিএ- পাওয়া লক্ষ ৩৩ হাজার ছাত্র-ছাত্রী মানসম্মত কলেজে ভর্তি হতে পারবে না অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও আমরা দেখেছি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে যথার্থ অপ্রতুলতা যেমন, বছর সাড়ে ১৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রীর বিপরীতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ডেন্টাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৮০ হাজারের মত অর্থাৎ বাকি প্রায় ১২ লাখ ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার জন্যে ভর্তি হতে হবে পাহাড়সম টাকা খরচ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা সরকারের সবচেয়ে অবহেলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুতরাং বিষয়টি পরিষ্কার যে, জিপিএ- পাওয়া কিংবা না পাওয়া সবরকম ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্মত শিক্ষার ব্যাপারে রাষ্ট্রের কোন পরিকল্পনা- নেই উপরন্তু সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানহীন করে বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে শিক্ষাকে একটি পণ্যে পরিণত করা হয়েছে

 

ছাত্র-ছাত্রীদের দুর্ভাগ্যের এখানেই শেষ নয় ধুকে ধুকে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করার পর তাদের পড়তে হয়বেকারত্বনামক অগ্নিকুণ্ডে কেউ কেউ হয়তো সরকারী চাকরির পড়া পড়তে পড়তে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, কেউ বা খোঁজ করছে একটি লিংকের যেখানে ঘুষ দিলেই পাওয়া যাবে অধরা সরকারী চাকরি অন্যদিকে প্রাইভেট চাকরির বাজারেও মন্দা বিডি জবসে সিভি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে একসময় হয়তোবা এই গ্লানি সইতে না পেরে কেউ কেউ সিলিং ফ্যানে ঝুলে যাচ্ছে এমন অনেকে রয়েছেন যারা বৈধ পথে এদেশ থেকে পালাতে পারে না তারা হয়তোবা মাঝে মাঝেই লাশ হয়ে ফিরে আসে ভূমধ্যসাগর কিংবা মেক্সিকোর জঙ্গল থেকে এই শিক্ষাব্যবস্থা তৈরী করছে এক হতাশাজনক ভবিষ্যৎ যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কোন নিশ্চয়তা নেই

 

          আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার মূল কারণ হচ্ছে আমরা এখনও বৃটিশদের দেয়া উপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার লিগেসিকে ধরে রেখেছি বৃটিশরা এই অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবে সাজিয়েছিল যাতে করে এই অঞ্চলের কোন উন্নয়ন না হয় কিন্তু তাদের শাসনকাজে সাহায্য করতে পারে এমন এক ধরনের কেরানী শ্রেণির উৎপত্তি হয় তাছাড়া এই রাষ্ট্রের নেই কোন বৈশ্বিক ভিশন কারণ এই রাষ্ট্রের নেই কোন আদর্শ যা দ্বারা সে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাই তার নাগরিকদের শিক্ষার ব্যাপারেও তার কোন সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে এই আদর্শহীন রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তে একটি সঠিক আদর্শের ভিত্তিতে অর্থাৎ ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গড়ে তোলা যার থাকবে বৈশ্বিক সুপারপাওয়ার হওয়ার ভিশন ফলে সে তার নাগরিকদের সর্বোচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করবে দাওয়া জিহাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের আদর্শকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য প্রয়োজন হবে বিজ্ঞানী, শিক্ষক, সমরনায়ক ইত্যাদি এবং এসকল গুনসম্পন্ন মানুষ শুধুমাত্র একটি মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমেই গড়ে তোলা সম্ভব মুহাম্মদ বিন কাশিম, ইবনে সিনা, মুসা আল খাওয়ারেজমি, ইমাম শাফি ইত্যাদি বিখ্যাত মুসলিম ব্যক্তিগণ সবাই ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার ফসল

 

-       মো. হাফিজুর রহমান

 

 

 

 

 

কক্সবাজারে পর্যটককে গণধর্ষণ, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

খবরঃ

স্বামী-সন্তানসহ এক নারী ঘুরতে গিয়েছিলেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সেখান থেকে তার স্বামীকে জিম্মি করে তুলে নিয়ে দুই দফায় গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে অথচ সৈকতেই পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্পও রয়েছে তারপরও সৈকত থেকে কীভাবে স্বামীর কাছ থেকে একজন নারী পর্যটককে তুলে নিয়ে দুই দফায় গণধর্ষণের ঘটনা ঘটল- প্রশ্ন থেকেই যায় তাহলে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাজটা কী? তারা কী করে? (https://www.jugantor.com/national/others/501140/কক্সবাজারে-পর্যটককে-গণধর্ষণ-নিরাপত্তা-নিয়ে-প্রশ্ন)

 

মন্তব্যঃ

পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন ধর্ষণ একটি মহামারীতে পরিণত হয়েছে শুধু বাংলাদেশে ২০২০-২১ সালে ২১ হাজার ৮৭৯ ধর্ষণ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে (বিডি নিউজ ২৪) জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ইউরোপীয় দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় প্রতি ছয় জন নারীর একজন আমেরিকায় ধর্ষণের শিকার হয় (জনকন্ঠ: ১৬--২০২০) যুক্তরাজ্য পৃথিবীর পঞ্চম মারাত্মক ধর্ষণপ্রবণ দেশ ইউরোপের মধ্যে সবাধিক ধর্ষণ হয় সুইডেনে এবং পৃথিবীর মধ্যে তৃতীয় হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অধীনে নারীর নিরাপত্তাহীনতার সামান্য খণ্ডচিত্র

 

ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যক্তি স্বাধীনতা (পার্সোনাল ফ্রিডম) চর্চার নামে নারীকে ভোগ্যপণ্য/বস্তু এবং যৌনতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এছাড়াও পশ্চিমা বিশ্বে গড়ে উঠেছে পর্ণ ইন্ড্রাষ্ট্রি ১৯২৪ সালে ইসলামী রাষ্ট্র খিলাফত ব্যবস্থা ধ্বংস হবার পর মুসলিম বিশ্ব পশ্চিমাদের ভয়ঙ্কর সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হয়েছে আগ্রাসনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে পুঁজিবাদী আদর্শ থেকে উত্থিত অবাধ ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির মতো নিরেট ভোগবাদী চিন্তা-চেতনা আজ দখল করে আছে আপামর মুসলিম জাতির মনমগজ আর সমস্ত চিন্তা-চেতনার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ফলাফল হিসাবে পাশ্চাত্য বিশ্বের মতোই মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র ক্রমবর্ধমান হারে নির্যাতিত হচ্ছে নারী সমাজ পুঁজিবাদী বিশ্বের মতো মুসলিম বিশ্বে নারীরা আজ পরিণত হয়েছে কেনা-বেচার পণ্যে অপরদিকে, ইসলামী সমাজ রাষ্ট্রের অনুপস্থিতিতে নারী তার ইসলাম প্রদত্ত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে নারী হারিয়েছে কন্যা, স্ত্রী এবং মা হিসাবে তার প্রাপ্য সম্মান আর মর্যাদা

 

অপরদিকে, ইসলাম নারীকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে ভোগ্য পণ্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে নয় রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “এই পৃথিবী আর তার মধ্যস্থিত সবকিছুই মূল্যবান কিন্তু সব চাইতে মূল্যবান হচ্ছে একজন তাকওয়াবান নারী(সহীহ্ মুসলিম); আরো বলেছেন, শুধুমাত্র সম্মানিত ব্যক্তিরাই নারীকে সম্মান করে, আর যারা অসম্মানী তারা অসম্মানজনক আচরণ করে (তিরমিযী) ইসলামী সমাজে নারী-পুরুষের অপ্রয়োজনীয় অবাধ মেলামেশার কোন সুযোগ নেই এবং গণপরিবহণ, কর্মক্ষেত্র, মসজিদ সর্বত্র নারী-পুরুষের পৃথকীকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে আল্লাহ্সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, “মুমিনদেরকে বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে (সূরা আন নূর-৩০) আল্লাহ বলেন, “আর ব্যাভিচারের কাছেও যেওনা নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল এবং নিকৃষ্ট আচরণ (সূরা বনী ইসরাইল-৩২) এই দৃষ্টিভঙ্গি বিধিবিধানের কারণে খিলাফত রাষ্ট্রের অধীনে শুধু তাকওয়াবান ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজ নারীকে সম্মান করত তার সম্মান রক্ষা করত এবং রাষ্ট্রের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হতো খলিফা মুনতাসিম বিল্লাহ্ আমুরিয়া দখল করে নিয়েছিলেন কেবলমাত্র একজন মুসলিম নারীর সম্মান রক্ষার্থে প্রকৃত সত্য হলো, এখন থেকে ১৪০০ বছর আগে ইসলামের যে আলো নারীকে মুক্ত করেছিলো জাহেলিয়াতের নির্মম নির্যাতনের শৃঙ্খল থেকে, সেই একই আলো আবারও নারীসহ সমগ্র মানবজাতিকে মুক্ত করতে পারে পুঁজিবাদীদের নব্য জাহেলিয়াতের জুলুম আর নিপীড়ন থেকে শুধু কক্সবাজার নয়, আবারও এই পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে ধর্ষণ-নির্যাতন মুক্ত একটি সভ্য, সুন্দর নিরাপদ এক সমাজ নারীকে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে পারে আবার পূর্ণ মর্যাদা সম্মানের আসনে

-       মো: হেলাল

 

Previous Post Next Post