Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 82

 


Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

৮২ তম সংখ্যা । ৪ এপ্রিল, ২০২৩



এই সংখ্যায় থাকছে:

“বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার আরেক কারণ দার্জিলিংয়ে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প”

“স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র কার জন্য কার স্বার্থে?”

“দ্রুত আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে বাংলাদেশ: ব্লিংকেন”

“দেশে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে”

“জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় শিক্ষকের বেতন স্থগিতের নির্দেশ!”

“ময়লার কাজ পেতে মরিয়া কাউন্সিলররা”

“চলে গেলেন সেই চার খলিফার আরেকজন”

“ফের যানবাহনের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক হতে পারে”






“বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার আরেক কারণ দার্জিলিংয়ে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প”

খবরঃ

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জন্য এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। তবে, ঢাকার জন্য আরেকটি আশঙ্কার খবর হলো, দার্জিলিংয়ে ৩টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। আজ সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দার্জিলিংয়ে পরিকল্পিত ৩টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে ২টির কারণে তিস্তার পানি প্রবাহ আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর-এপ্রিল মাসে, যখন বাংলাদেশে সেচের জন্য পানির চাহিদা বেশি থাকে। (https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-460021)

মন্তব্যঃ 

বাংলাদেশের আজ্ঞাবহ শাসকেরা ভারতের সাথে অভিন্ন নদীসমূহের পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তারা দাবি করে যে মুশরিক রাষ্ট্রের সাথে তাদের সম্পর্ক রক্ত দিয়ে লেখা রয়েছে, তথাপি তারা আজও তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনি। অথচ, অন্যদিকে তারা ২০১৯ সাল থেকে ভারতকে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক (প্রতি সেকেন্ড ঘনফুট) পানি প্রত্যাহার করার সুযোগ করে দিয়েছে। উপরন্তু, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্প্রতি তাদের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং নতুন সেচ প্রকল্পসমূহের জন্য তিস্তা থেকে আরও বেশি পানি প্রত্যাহারের একতরফা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে! (দেখুন: “ন্যায্য হিস্যা? বাংলাদেশে তিস্তা আরও শুষ্ক হতে চলেছে”, ১৫ই মার্চ ২০২৩ তারিখে ডেইলি স্টার-এ প্রকাশিত সংবাদ)। বাস্তুসংস্থানবিদগণ (Ecologists) মনে করেন যে, অভিন্ন নদীসমূহ থেকে এভাবে পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মরুভূমিতে পরিণত হবে, যা সেচকার্য, নৌচলাচল, বাসস্থান এবং মানুষের জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করবে। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী ভারতের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদনের মিথ্যা আশা দিয়ে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে ধোঁকা দিয়ে আসছে। বাস্তবে এতে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি, যদিও তারা ভাটি অঞ্চলের দেশ হিসেবে অভিন্ন নদীর পানির উপর বাংলাদেশের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের কথা স্বীকার করে আসছে। এই পরাধীন শাসকদের দর কষাকষি করার সাহস নেই, কারণ তারা তাদের রাজনৈতিক নিয়তির জন্য এই মুশরিক রাষ্ট্রের করুণার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীরাও দেশের জনগণকে প্রতারিত করে আসছে, কারণ তারাও কখনও এই সংকটের প্রকৃত সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করে না। ওয়াটার কনভেনশন ও প্রোটোকলসমূহের অপ্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার পরিবর্তে এই কপট বুদ্ধিজীবীগোষ্ঠী এগুলোকেই আন্তঃসীমান্ত নদী সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ হিসাবে প্রচার করে। দুর্ভাগ্যবশত, উপনিবেশবাদী পশ্চিমাদেশসমূহের নেতৃত্বে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এধরনের ইস্যুগুলোকে অমীমাংসিত রাখা যায়, যাতে ক্ষমতার ভারসাম্য এগুলো থেকে ফায়দা লুটতে পারে। অপ্রয়োগযোগ্য আন্তর্জাতিক আইন-কাঠামো একটি উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়, যা কেবল নিশ্চিতভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ে, ফলে দুর্বলদের হাতে তাদের জন্য পথ ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। অতএব, বাংলাদেশের দালাল ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগণ এবং তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি কোনো ফল বয়ে আনবে না, কারণ বাংলাদেশের জনগণকে বলি দিয়ে হলেও ভারত তার ঘৃণ্য জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

ভারতের সাথে অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত ভাগ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রথমে ধর্মনিরপেক্ষ সমাধানের মরীচিকা থেকে বের হয়ে আসতে হবে, মেরুদণ্ডহীন ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের বিতাড়িত করতে হবে, এবং নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফতে রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। আন্তঃসীমান্ত নদী এবং এগুলোর পানিসম্পদ দ্বারা উপকৃত হওয়ার জন্য খিলাফত শারী‘আহ্ আইন পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করবে। ইসলামে পানির অধিকার সংক্রান্ত দুটি মৌলিক শারী‘আহ্ নীতি রয়েছে: আশ্-শাফ্ফাহ্ - তৃষ্ণা নিবারণের অধিকার, গৃহস্থালির প্রয়োজন মেটানো ও গবাদি পশুকে খাওয়ানোর অধিকার, এবং আশ্-শিরব্ - জমিতে সেচ দেয়ার অধিকার। এই দুটি মৌলিক নীতি অনুসারে, খিলাফত রাষ্ট্র প্রথমে মানুষের প্রয়োজন মেটানো ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার, এবং এরপর কৃষি, শিল্প ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডকে অগ্রাধিকার দেবে। সুতরাং, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা অন্য কোথাও ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কোন রাষ্ট্র যদি বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করার চেষ্টা করে তবে আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র তা সহ্য করবে না, কারণ এধরনের স্থাপনা সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে (ecosystem) ধ্বংস করে দেয় কিংবা মুসলিমদের স্বার্থের অপরিমেয় ক্ষতিসাধন করে। ভারতের মতো শত্রু কিংবা প্রতিকূল রাষ্ট্রের এধরনের আগ্রাসনের জবাবে খিলাফত রাষ্ট্র যথোপযুক্ত রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং এই ধরনের ক্ষতিকর কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা প্রেরণ করবে। কূটনৈতিক পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে খিলাফত রাষ্ট্র উম্মাহ্’র অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিষয়টি সামরিকভাবে মোকাবেলা করতে দ্বিধা করবে না। প্রকৃতপক্ষে, বিভিন্ন দেশ কর্তৃক গৃহীত এই ধরনের একতরফা পদক্ষেপ মূলত পশ্চিমা ঔপনিবেশিকতা ও জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফসল, যা অন্যদের জন্য বাধা সৃষ্টি করে। ঔপনিবেশিক আমলের পূর্বে মানবজাতি কখনও এই ধরনের অভিন্ন নদী সংক্রান্ত সন্ত্রাসের মুখোমুখি হয়নি। ইসলামের মতে প্রাকৃতিক পরিবেশ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র, যিনি মানুষের কাছে এটিকে অর্পণ করেছেন, তাই বাস্তুতন্ত্র (ecosystem) সংরক্ষণের বিষয়ে মানবজাতি দায়িত্বশীল। এবং, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পরিত্যাগ করি এবং পবিত্র খিলাফত রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তরিকভাবে অগ্রসর না হই, তবে নিশ্চিতভাবে আমরা এই পৃথিবীতেই আমাদের নিজেদের জন্য আরও বড় শাস্তি ডেকে আনব। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: “মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও জলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে” [সূরা আর-রুম: ৪১]

    -    ইমাদুল আমিন



“স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র কার জন্য কার স্বার্থে?”

খবরঃ

গত বেশ কয়েকদিন ধরে দেশব্যাপী আলোচনা সমালোচনার খোরাক সৃষ্টি করেছে দৈনিক প্রথম আলো। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইনে একটি ছবি বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এই ছবিকে কেন্দ্র করে চলছে বহুমুখী রাজনীতি। (https://www.jagonews24.com/amp/845059)

মন্তব্যঃ

জনগণের থেকে আদায় করা ট্যাক্সের টাকায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবস পালনের মাধ্যমে সরকারের তথাকথিত ভাবমূর্তির উন্নয়ন আর কতিপয় সরকারী সুবিধাভোগী মানুষের অর্থযোগ হলেও সাধারণ মানুষের কাছে স্বাধীনতার এই সরকারী সংজ্ঞা খুবই অপ্রাসঙ্গিক। যেমন গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোর করা একটি রিপোর্টে দিনমজুর জাকির হোসেন তার স্বাধীনতার ব্যাপারে ভাবনার বিষয়ে বলেন, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।” মূলত এই অবস্থা শুধুমাত্র দিনমজুর জাকির হোসেনের একার না, বরং দেশের বেশিরভাগ মানুষই এই দুরবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। www.tbsnews.net এর এক রিপোর্টের মতে, “মূল্যস্ফীতির ধাক্কা: একবেলা না খেয়ে থাকছে ৩৭% নিম্ন-আয়ের পরিবার।” তাছাড়া ওএমএস এর দীর্ঘ লাইনে মধ্যরাত থেকে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের হাহাকার কিংবা টিসিবির ট্রাকে ঝুলে থাকা নারীর ছবি অথবা খাবারের অভাবে আত্নহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি আমাদের দেশের বাস্তবতা হলেও শাসকশ্রেণীর কাছে তথাকথিত উন্নয়ন আর স্বাধীনতাই আলোচনার মূল বিষয়। জনগণের কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে অপ্রাসঙ্গিক বায়বীয় বিষয়াদীর আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী শুধুমাত্র জনগণের সাথে প্রতারনাই করছে না বরং তাদের বাস্তবতা নিয়ে উপহাসও করছে। 

সেকুলার ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এটি জীবন থেকে ধর্মকে আলাদা করে ফেলে। অর্থাৎ এই ব্যবস্থায় স্রষ্টার অস্তিত্বকে মেনে নেয়া হলেও স্রষ্টার অবস্থানকে শুধুমাত্র মসজিদের চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত ইত্যাদি ব্যক্তিগত ইবাদতের মধ্যেই ধর্ম অর্থাৎ ইসলামকে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মকে গুরুত্বহীন করে ফেলার কারণে শাসকশ্রেণীর মধ্যেও পরকালের ব্যাপারে কোনরকম চিন্তাভাবনা থাকে না। অপরদিকে স্রষ্টাকে বিতাড়িত করে নিজেরা আইন প্রনয়নের ক্ষমতা প্রাপ্ত হওয়ার তারা এমনসব আইন প্রণয়ন করে যা আখেরে শুধু শাসকশ্রেণী আর তাদের সহভোগী পুঁজিপতি শ্রেণির লুটপাটকেই সহজীকরণ করে। এর ফলে শাসকশ্রেণী হয়ে ওঠে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী যা তাদেরকে স্বেচ্ছাচারী করে তোলে কারণ তখন তাদের না থাকে স্রষ্টার কাছে জবাবদিহিতার ভয় আর না থাকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার কোন দায়। জনগন তখন তাদের কাছে হয়ে পড়ে দাস শ্রেণির মত যাদের কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র শাসকশ্রেণি আর পুজিপতিদের ভোগ-বিলাসের সংস্থান করা। ফলে এই সেকুলার ব্যবস্থায় শাসকশ্রেণী আর পুঁজিপতি শ্রেণি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হলেও সাধারণ জনগন ডাল-ভাতের স্বাধীনতা খুজতে খুজতে আজীবন পরাধীন থেকে যায়। ফলে আমরা দেখি প্রতি বছরই বাড়ছে দেশে কোটিপতির সংখ্যা আর কানাডার বেগমপাড়ায় আমলা ও ব্যবসায়ীদের সেকেন্ড হোমের সংখ্যা। একই চিত্র পশ্চিমা দেশসমূহেও। যেমন, “যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য ঘাটতির মুখে ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষ” (www.banglatribune.com/foreign/usa/626068) ফ্রান্সের বহুজাতিক বাজার গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইপসোস গ্রুপ এর এক জরীপের তথ্যমতে, “যুক্তরাজ্যের ২৫ শতাংশ মানুষ কোনো কোনো বেলা না খেয়ে খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।” দ্য ফুড ফাউন্ডেশনের এক জরিপের তথ্যমতে, “যুক্তরাজ্যের প্রতি সাতজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এক বেলা উপোস থাকছেন বা খাবারের পদ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।” এমনকি সম্প্রতি ফ্রান্সে পেনশন পদ্ধতিতে আনা পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে লাগাতার সহিংস প্রতিবাদে নেমেছে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ। অপরদিকে সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে তাকালে আমরা দেখব যে, যুক্তরাষ্ট্রের ১০% মানুষের হাতে ৬৭% সম্পদ কুক্ষিগত রয়েছে এবং এর প্রায় সবাই-ই বড় বড় কর্পোরেশন কিংবা এর মালিকগন যাদের রয়েছে শাসকদের সাথে দহরম-মহরম সম্পর্ক। সুতরাং যেহেতু সারা পৃথিবী জুড়েই এই সেকুলার পুঁজিবাদী ব্যবস্থা রাজ করে বেড়াচ্ছে সেহেতু শাসকশ্রেণী কর্তৃক জনগণের প্রতি অবহেলার ধরণও সারা বিশ্বে একই হোক সেটা যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য কিংবা বাংলাদেশ। প্রশ্ন হচ্ছে এই ভূয়া স্বাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা কিভাবে অর্জন করা সম্ভব?

প্রকৃত স্বাধীনতার সন্ধান পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই মানুষের সীমাবদ্ধ ও স্বার্থপর মস্তিষ্কপ্রসূত সেকুলার-পূজিবাদী ব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটন করে আইন, বিধান ও ব্যবস্থা প্রণয়নের একমাত্র অধিকারী আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা কর্তৃক নাজিলকৃত এবং মনোনীত একমাত্র জীবনব্যবস্থা ইসলামকে বাস্তবায়ন করতে হবে। যে ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসলাম বাস্তবায়ন করা হবে অর্থাৎ খিলাফত ব্যবস্থা সেখানে খলীফা সেকুলার শাসকদের মত নিজের দলবল আর পুঁজিপতি গোষ্ঠীর স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য রাজনীতি করবেন না। বরং খিলাফত ব্যবস্থায় খলীফা রাজনীতি করবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সন্তুষ্টির জন্যে। এবং এ ব্যবস্থায় খলীফা সবসময় ভীত থাকবেন তার দায়িত্বের ব্যাপারে কারণ যদি খলীফা জনগণের প্রতি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন তাহলে তাকে অবশ্যই পরকালে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার কাছে এর জন্যে জবাবদিহিতা করতে হবে। মূলত এই ভয়ই উমারের মত খলিফাকে বাধ্য করত রাতের বেলায় টহল দিয়ে জনগণের বিষয়াদী দেখাভাল করতে। তাই আমরা খুব বেশী অবাক হই না যখন দেখি খলীফা উমার নিজের কাধে করে আটার বস্তা নিয়ে ক্ষুধার্ত নাগরিকের বাসায় পৌছে দেয়। কিংবা যখন দেখি প্রসূতি মহিলার বাচ্চা প্রসবে সাহায্য করতে ফার্স্ট লেডীকে (উমারের স্ত্রী) নিয়োজিত করা হয় তখনও আমরা খুব বেশী অবাক হই না। কারণ খিলাফত ব্যবস্থায় এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক কারণ এখানে শাসক হচ্ছে জনগণের সেবক মাত্র। প্রথম খলীফা আবু বকর (রা.) থেকে শুরু করে সর্বশেষ খলীফা দ্বিতীয় আব্দুল মাজিদ পর্যন্ত সব খলিফাই জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে ছিলেন সিরিয়াস। কারণ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই একেকজন দায়িত্বশীল; আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল তিনি তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন” (বুখারী)।

    -    মো: হাফিজুর রহমান 



“দ্রুত আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে বাংলাদেশ: ব্লিংকেন”

খবরঃ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে এক প্রেস বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বলেছেন, বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান সুশিক্ষিত জনশক্তি এবং একটি গতিশীল যুব জনসংখ্যার সঙ্গে 'দ্রুত আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে'। ব্লিংকেন বলেন, তিনি আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী। (https://www.tbsnews.net/bangla/বাংলাদেশ/news-details-140582)

মন্তব্যঃ

ব্লিঙ্কেনের এই বক্তব্যে এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা সম্পর্কে মার্কিন লক্ষ্য বা ভিশন উন্মোচিত হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটেও কৌশলটি ঘোষণা করা হয়েছিল যে, “... একটি মুক্ত এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনের লক্ষ্যে দুই দেশ একটি একক লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে”। [https://www.state.gov/u-s-relations-with-bangladesh/]। ২০২০সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারী অফ স্টেট স্টিফেন ই বিগানের সফরের সময় একটি যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেখে ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম প্রধান অংশীদার হিসেবে” (১৫ অক্টোবর, প্রথম আলো)। এসব থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে ‘বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক নেতা হিসেবে গড়ে তোলা’ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) এর একটি অংশ। এর অর্থ হচ্ছে আইপিএস-এর আওতায় আমেরিকা যখন তার স্বার্থে এই অঞ্চলের দেশগুলোর ভূমিকা নির্ধারণ করে তখন আগের ভুমিকার তুলনায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভূমিকা বাড়বে। এটা সবাই জানে যে আইপিএস হল চীনের প্রভাব সীমিত করার লক্ষ্যে গঠিত এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থের মূল পলিসি।

এটা বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন এই আমেরিকা আফগানিস্তানে সোভিয়েত সম্প্রসারণ মোকাবেলায় আরও বেশি ভূমিকা পালন করার জন্য পাকিস্তানকে তৈরি করেছিল। এবং কিভাবে পাকিস্তানের তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার এবং বিরোধী দলগুলি সেই ফাঁদে পা দিয়ে মার্কিন স্বার্থের জন্য মার্কিন পরিকল্পিত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। নিঃসন্দেহে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই জানে সেই সংঘাতের জন্য তাদেরকে কত মূল্য দিতে হয়েছে, এবং তারা এটাও দেখেছে যে কত দ্রুত সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন আঞ্চলিক স্বার্থের জন্য পাকিস্তান এবং তার তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদদের আবর্জনায় ছুঁড়ে ফেলে ভারতকেন্দ্রীক নীতি গড়ে তুলেছে। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে ইরাকের সাথেও একই ঘটনা ঘটতে দেখেছি এবং এখন ইউরোপে ইউক্রেন ইস্যুও একইদিকে এগুচ্ছে। এটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এটা তাদের বিশ্বাস এবং রাষ্ট্রের ভিত্তি 'ধর্মনিরপেক্ষতা' যা এরকম চরিত্রের দেশ তৈরি করে যার কাছে লাভ বা স্বার্থই একমাত্র গুরূত্ত্বপূর্ণ বিষয়। বন্ধুত্ত্ব বা প্রতিশ্রুতি স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে নিঃশেষ হয়ে যায়। তাদের স্বার্থে এমনকি তারা জনপদের পর জনপদ নিঃশেষ করে দিতে কিংবা দেশের পর দেশ ধ্বংস করে দিতে মোটেই দ্বিধা করে না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠিত সত্যটি জানার পরও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও ভয়ংকর এই শয়তানের হাতে দেশকে তুলে দেয়ার জন্য একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের (30 মার্চ 2023) সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে এটিই ফুটে উঠেছে যে 'ইন্দো-প্যাসিফিক ষ্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে'। অন্যদিকে দেশের সেক্যুলার মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীরাও যুক্তরাষ্ট্র দেশের জন্য কি কি উন্নয়ন নিয়ে আসতে পারে তার মিথ্যা চিত্রায়ণ করে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “একজন মুমিনের একই গর্তে দুবার দংশিত হওয়া উচিত নয়”। তাই মুসলমানদের উচিত এই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদদের দ্বারা বারবার প্রতারিত না হওয়া এবং ভিশনের নামে আমেরিকার মতো কাফের শত্রুকে আমাদের ভূমি ও জনপদ ধ্বংসের সুযোগ না দেয়া। বরং আমাদের কর্তব্য হল সেই ভিশন গ্রহণ করা যা আমাদের বিশুদ্ধ আক্বীদা আমাদেরকে প্রদান করে তা হল সম্মানিত রাষ্ট্র আল-খিলাফাহর ছায়াতলে উম্মাহর একীকরণ। খিলাফত পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের উপর আধিপত্য বিস্তার করবে এবং প্রকৃত দ্বীন ইসলামকে পৃথিবীর সকল ঘরে ঘরে নিয়ে যাবে। তামিম আল-দারি বর্ণনা করেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “অবশ্যই এই বিষয়টি রাত ও দিন যেখানে পৌঁছেছে সেখানে পৌঁছে যাবে। আল্লাহ এমন কোনো ঘর বাকি রাখবেন না যাতে তিনি এ দ্বীন প্রবেশ করাবেন না, যার দ্বারা সম্মানিত ব্যক্তিরা সম্মানিত হবে এবং লাঞ্ছিত ব্যক্তিরা লাঞ্ছিত হবে। আল্লাহ সম্মানিত ব্যক্তিকে ইসলামের মাধ্যমে সম্মানিত করবেন এবং লাঞ্ছিত ব্যক্তিকে অবিশ্বাসের মাধ্যমে অপমানিত করবেন”(মুসনাদে আহমাদ)।

    -    মোহাম্মদ তালহা হোসেন



“দেশে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে”

খবরঃ

রাজশাহীতে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। প্রথম আলো সম্পাদকের মতো একজন বিশিষ্ট নাগরিককে হয়রানি এবং রাতের অন্ধকারে পত্রিকাটির নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’…’আমরা দেখতে পেয়েছি, ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের লাগামহীন অপপ্রয়োগ চলছে। ফলে দেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। অনেক সাংবাদিক পেশা পরিবর্তন করেছেন, অনেকে দেশান্তরি হয়েছেন। দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নেই বললেই চলে। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট চললেও এসব সংবাদ প্রকাশ কঠিন হতে কঠিনতর হয়ে যাচ্ছে। ’ (https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/q8cn07s2f5

মন্তব্যঃ 

সরকার কর্তৃক গত ২৬শে মার্চ’২০২৩ স্বাধীনতার ৫২ বছর উদযাপনের দিন দিনমজুর জাকির হোসেনের “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব” উদ্ধৃতি যেন একবাক্যে এতদিনের তথাকথিত স্বাধীনতার মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। বিষয়টাকে দৈনিক প্রথমআলো তাদের অনলাইন পোর্টালে তুলে ধরলে সরকার এই খবর সংগ্রহকারী প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে রাতের অন্ধকারে উঠিয়ে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য যে, ‘সত্যের সন্ধানে নির্ভীক’ দাবী করা প্রথমআলো উদ্ধৃতিটিকে তার পোর্টাল থেকে সরিয়ে নেয়। সাধারণ জনগণের দুঃখ-কষ্টের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠা এই দিনমজুরের উদ্ধৃতিটি ঢাকা পড়ে যায় প্রকাশিত ছবিটি কার এই কুতর্কে। যাই হোক পরবর্তিতে ৩০ ঘণ্টা পর “প্রথমআলো শিশু শোষণ করেছে” বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, আর প্রথমআলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। কিন্তু, বিষয়টা যে প্রকৃতপক্ষে শিশু শোষণের ইস্যু না তা সুস্পষ্টভাবেই ফুটে উঠে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্যে। তার মতে, “মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন করা প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছে।” প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের একজন খেটে খাওয়া নাগরিক বর্তমানে চলমান অর্থনৈতিক দূরাবস্থায় তার পাওনা মৌলিক অধিকার নিয়ে কথা বলার সাথে সাথে শাসকগোষ্ঠীর ভিত্তিমূল নড়ে উঠার কারণ কি? সত্য হচ্ছে, যেই যালিম যতবেশী জুলুম করে জনগণের প্রতিবাদের ভয়ও তার ততবেশী বাড়তে থাকে। প্রতিটি প্রতিবাদের কণ্ঠস্বরের মধ্যে তারা তাদের পতনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। ঠিক যেমনটি ১৯৭৫ সালে এই সরকারের পূর্বসূরী শেখ মুজিব দেখেছিলেন তৎকালীন দূর্ভিক্ষকন্যা “বাসন্তি”র ঘটনায়। তথ্যমন্ত্রীর মতে, “২৬ মার্চের ঘটনা বাসন্তিকে জাল পরানোর মতোই”। কিংবা আওয়ামী লীগের বক্তব্যে “আরেকটা বাসন্তি গল্প বানানোর চেষ্ঠা করেছিলো প্রথমআলো”। আর যখনই কোন যালিম শাসকগোষ্ঠী তাদের পতনের দূঃস্বপ্ন দেখে তখনই ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ জালেম ফেরাঊনের মত নিজেদের কর্তৃত্বকে টিকিয়ে রাখতে অত্যাচার নির্যাতনের সর্বোচ্চমাত্রা প্রয়োগ করে একটা ভয় এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আর ঠিক এমনটিই আমরা বর্তমানে দেখছি। তাই এই ঘটনায় প্রথম আলো কোন বিষয়বস্তু নয় (ইতিমধ্যে সাংবাদিক ও সম্পাদক উভয়কে জামিন দেয়া হয়েছে), বরং এই সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সরকার জনগণকে এই ম্যাসেজ দিল যে, কোন প্রতিবাদ চলবে না। 

এখন, আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই এই জালেম শাসকগোষ্ঠী থেকে মুক্তি পেতে চাই, তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই দুনিয়ার জালেম শাসকগোষ্ঠী থেকে একমাত্র মুক্তিদানকারী মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্‌ সুবাহানাহু ওয়া তা’আলার নির্দেশিত পথ অনুসরণ করতে হবে। ঠিক যেমনটি তিনি এর আগে বিভিন্ন নির্যাতিত জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করেছেন। “আর (স্মরণ কর), যখন আমরা তোমাদেরকে ফিরাউনের দল থেকে রক্ষা করেছিলাম; তারা তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্র সন্তানদেরকে যবেহ করত এবং তোমাদের নারীদেরকে বাঁচিয়ে রাখত। আর এতে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে ছিল মহাপরীক্ষা” (সূরা-বাকারাহ্‌: ৪৯)। মূলত, জালেম শাসককে অপসারণ করার আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র দেখানো পদ্ধতি হচ্ছে, নব্য ফেরাউনি জুলুমের বিরুদ্ধে মূসা (আঃ)-এর মত দৃঢ়ভাবে আওয়াজ তোলা এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর মতো কুফর শাসনব্যবস্থাকে সমূলে অপসারণ করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর এর মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত মুক্তি এবং স্বাধীনতা। সুতরাং, আমরা যদি প্রকৃত অর্থে মাছ, মাংস, চালের স্বাধীনতাসহ সর্বোপরী মুক্তি চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে বর্তমান যুগের মূসা(আঃ) হতে হবে আর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর দেখানো পদ্ধতিতে জুলুমের শাসন অপসারণ করে খিলাফাহ্‌ রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনতে হবে। জালেমের হুঙ্কার কিংবা আইনকে ভয় না পেয়ে বরং আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র উপর ভরসা রেখে জুলুম অপসারণের চেষ্টা চালাতে হবে। কেননা, রাত (জুলুম) যত গভীর হোক, ভোর (মুক্তি) আসবেই। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আর তিনি তোমাকে পেয়েছেন পথ না জানা অবস্থায়। অতঃপর তিনি পথনির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তোমাকে পেয়েছেন নিঃস্ব। অতঃপর তিনি সমৃদ্ধ করেছেন”(সূরাঃ দুহাঃ ৭-৮)। 

    -    আসাদুল্লাহ্‌ নাঈম



“জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় শিক্ষকের বেতন স্থগিতের নির্দেশ!”

খবরঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জাতীয় সংগীত সম্পূর্ণ গাইতে না পারায় এক শিক্ষকের বেতন স্থগিত এবং শিক্ষা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে এ নির্দেশ দেন। জাতীয় সংগীত গাইতে না পারা শিক্ষক হলেন শরীরচর্চা শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন। এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনকে কারণ দর্শানোর জন্য আখাউড়ার ইউএনওকে নির্দেশ দেন। জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খোঁজখবর নেন। একপর্যায়ে শরীর চর্চা শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেনকে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেন। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ সংগীত গাইতে না পারায় জেলা প্রশাসক রাগান্বিত হয়ে শরীর চর্চা শিক্ষকের বেতন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। যতদিন পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা শুদ্ধভাবে সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত গাইতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত বেতন স্থগিত থাকবে।... (jugantor.com/country-news/659575/জাতীয়-সংগীত-গাইতে-না-পারায়-শিক্ষকের-বেতন-স্থগিতের-নির্দেশ

মন্তব্যঃ

জাতীয় সঙ্গীত কিংবা এজাতীয় দেশপ্রেম সংক্রান্ত আবেগ আস্তে আস্তে সমাজ থেকে বিলীন হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এটা শুধুমাত্রই একটি আবেগ, যা শুধুমাত্র দেশ যখন বহিঃশক্তির আগ্রাসনের শিকার হয় তখনই সাময়িক সময়ের জন্য এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কিন্তু মানুষ যখন দেখে সে আর বহিঃশক্তি না বরং আভ্যন্তরীণভাবেই দেশীয় লুটেরা শাসকগোষ্ঠী ও কতিপয় পুঁজিপতিদের দ্বারা শোষন ও নিষ্পেশনের শিকার তখন সে বলে উঠে, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব”। তাইতো আমরা দেখি স্বাধীনতার ৩বছর যেতে না যেতেই ১৯৭৪ সালে দেশের জনগণ যখন দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ল, তখন বলে উঠল: “ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাব”। তাই সাধারণ এই শরীর চর্চা শিক্ষকের জাতীয় সঙ্গীত পুরোটা মুখস্ত না থাকাটাই স্বাভাবিক। এবং এই জেলা প্রশাসক কেন এত খেপলেন এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে এই শিক্ষকের বেতন আটকে দিয়ে কাকে খুশি করতে চান তা কারো অজানা নয়। 

জাতীয় সংগীত/দেশপ্রেম মানুষের প্রত্যাহিক যাপিত জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য জীবনব্যবস্থা বা সিস্টেম দিতে অক্ষম হওয়ায়, পরিশেষে মানবরচিত ব্যবস্থাই হয় এর উৎস অর্থাৎ শাসকদল যা নির্ধারণ করব সেটাই আইন। ফলে গড়ে উঠে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একদল স্বেচ্ছাচারীগোষ্ঠী। পার্থক্য শুধু তখন ছিল পাকিস্তানী স্বেচ্ছাচারী শাসকগোষ্ঠী, আর এখন বাংলাদেশী। জনগণ যাতে শাসকগোষ্ঠীর শোষণ আর নিপিড়নের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে না পারে সেজন্য দেশপ্রেম কিংবা জাতীয়তাবাদী চেতনা একটি চাপিয়ে দেয়া হাতিয়ার। যেমন, আমরা দেখছি কেউ সরকারের জুলুম, দুর্নীতি ও দেশবিরোধী কর্মকান্ডের সমালোচনা করলে তাকে জননিরাপত্তার জন্য হুমকী, স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গী ইত্যাদি আখ্যা দেয়া হয় এবং এজন্য তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ইত্যাদি করা হয়েছে। তাছাড়া, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শাসকগোষ্ঠী ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগণকে এসব সস্তা আবেগের প্রতি কৃত্রিম শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করতে চায় কারণ বর্তমান এই জাতিরাষ্ট্র ব্যবস্থা হচ্ছে পশ্চিমা কাফিরদের প্রকল্প, যেটিকে তারা মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্ট করতে ব্যবহার করেছিল এবং এখনো ব্যবহার করছে, যাতে কোনভাবেই মুসলিমদের ঐক্য ফিরে না আসে।

একটি শক্তিশালী জাতি গঠনে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্‌” অর্থাৎ “সকলপ্রকার আইন এবং সমস্যার সমাধানের একমাত্র উৎস হচ্ছে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা” মুসলিমরা এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ। এবং এই বিশ্বাসটি কোন অন্ধ আবেগ বা চেতনার উপর প্রতিষ্ঠিত হলে হবে না বরং হতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাই জাতিগত ও ভৌগলিক বাধাসমূহ বিলীন করে দিয়ে এক ইসলামী উম্মাহ্‌’র ছাঁচে পুণঃগঠন করে মহান ইসলাম আমাদের একত্রিত করেছে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মুসলিমদের ইসলাম দ্বারা সম্মানিত করেছেন, তাই আমরা এর পরিচয় অর্জন করেছি এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর শাসনের অধীনে ঐক্যবদ্ধ থেকেছি। সুতরাং আমাদেরকে জাহিলিয়্যাতের বিভিন্ন শ্লোগাণ প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন: “সে ব্যক্তি আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে আসাবিয়্যাতের (জাতীয়তাবাদ, বর্ণবাদ, গোত্রবাদ) দিকে আহ্বান করে। সে ব্যক্তি আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে আসাবিয়্যাতের জন্য লড়াই করে। সে ব্যক্তি আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে আসাবিয়্যাতের জন্য মৃত্যুবরণ করে”। এবং তিনি (সাঃ) আমাদেরকে আসাবিয়্যাত সম্পর্কে সতর্ক করেছেন: “এটি পরিত্যাগ কর, কারণ এটি দুষিত” [বুখারী ও মুসলিম]। 

    -    মোঃ সিরাজুল ইসলাম



“ময়লার কাজ পেতে মরিয়া কাউন্সিলররা”

খবরঃ

ঢাকা উত্তরে ওয়ার্ড ৫৪টি। এর মধ্যে ৩৫টি ওয়ার্ডের বিপরীতে দেওয়া দরপত্রে কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা আছে।… এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওই ওয়ার্ডে বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করেও কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন পাননি দুটি ভ্যান সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহিদ হাসান ও তাজউদ্দিন। তাজউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলাম। বলেছেন, কাজটা আমিই নিয়ে আসব।… (https://www.prothomalo.com/bangladesh/capital/48wytojuuq)

মন্তব্যঃ

ক্ষমতাপ্রাপ্তি যেখানে দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার বদলে আত্মতৃপ্তি ও টাকা কামানোর মেশিন, সেখানে মেয়র কিংবা কাউন্সিলররা ময়লা নিয়ে চাঁদাবাজি করবে এটাই তো স্বাভাবিক। বর্তমান সময়ে যেকোন শহরের বাস্তবতায় স্থানের অপ্রতুলতার কারণে গৃহস্থলীর ময়লা ব্যবস্থাপনা নাগরিকদের নিজ থেকে করা সম্ভব নয়। তাদেরকে অবশ্যই এটা একটা কমিউনিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করতে হয়। শহুরে জনপদের জন্য এটা বর্তমান সময়ে একটি মৌলিক অধিকারের পরিণত হয়েছে। আর এখানে মেয়র-কাউন্সিলর জনগণের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সিস্টেমেটিকভাবে আইন করে ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত দায়িত্বহীন মেয়র-কাউন্সিলররা এলাকাগুলোতে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর ডাস্টবিন না রেখে বাসাবাড়ি থেকে ময়লা কালেকশনের মাধ্যমে চাঁদাবাজির ব্যবস্থা করেছে। তারা চাঁদার সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারণ করেছে, আবার নিজেরাই সেটা মানছে না। ১০০ টাকা নির্ধারণ করে তার জায়গায় ৪০০ টাকা নিচ্ছে। আবার কাউন্সিলররা নামে বেনামে নিজেরাই ঠিকাদারির দায়িত্ব নিয়ে ময়লা নিয়ে ৪৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য করছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই বিষয়টি সবাই অবগত থাকলেও মেয়র নাকি জানেনা! সে নাকি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এভাবে ময়লা ব্যবস্থাপনা নিয়ে জনগণের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে কাউন্সিলররা চাঁদাবাজি করে, মেয়ররা সব জেনেও না জানার ভান করে দায় এড়ায়। রাষ্ট্রপ্রধানরা মেয়র এর দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে পার পেয়ে যায়। অবশেষে অসহায় জনগণ অসহায়ই থেকে যায়। এই ব্যবস্থায় কোন সমস্যা যেন দেখার কেউ নেই! 

অথচ ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণের সমস্যাসমূহ সমাধান করাই শাসকদের মূল দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এখানে রাজনীতি কিংবা ‘সিয়াসাহ’ হলো জনগণের দেখাশোনা করা এবং এই লক্ষ্যেই শাসকগণ নিয়োগকৃত হন। এ ব্যবস্থায় যেকোন অসুবিধায় জনগণ মজলিস আল উম্মাহ্‌’র মাধ্যমে শাসকদেরকে কঠোর জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে পারেন। এবং একটি শক্তিশালী মাযালিম কোর্ট প্রয়োজনে শাসকদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারেন। সর্বোপরি এই ব্যবস্থায় আইনসমূহ যেহেতু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কর্তৃক প্রণীত, সেহেতু তা পরিবর্তন করে নিজেদের স্বার্থে ময়লা ব্যবস্থাপনা কিংবা অন্যকোন নাগরিক অধিকার নিয়ে চাঁদাবাজি-লুটপাটের কোন সুযোগ নেই। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্তি আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাৎ) বলেছেন, “ন্যায়পরায়ন শাসক কেয়ামতের দিন আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা)-এর পাশে বসবেন”। অন্যদিকে শাসকের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, আল্লাহ্‌’র নিকট কঠোর শাস্তি পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তিকে জনগণের দায়িত্ব দেওয়া হল, কিন্তু সে তাদের কল্যাণের ব্যবস্থা করল না, সে বেহেশতের গন্ধও পাবে না”। ওমর (রাঃ) তাঁর শাসনের সময়, একবার পরিষদবর্গকে বলেছিলেন, “যদি আমি তোমাদের মধ্য থেকে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত করি, তাহলেই কি আমার দায়িত্ব সম্পূর্ণ হবে? তারা বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, না। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি তাদের কাজের তদারকি করি। এভাবে ইসলামী ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধানেরও তার অধীনস্ত লোকের কাঁধে দায় চাপিয়ে দিয়ে নিজের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। তাই এখানে জনগণের সামান্য সুবিধায় সর্বনিম্ন পদে দায়িত্বশীল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত প্রত্যেকেই দায়ী।

    -    জহিরুল ইসলাম 



“চলে গেলেন সেই চার খলিফার আরেকজন”

খবরঃ

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরে আলম সিদ্দিকী। বঙ্গবন্ধুর চার খলিফার অন্যতম নূরে আলম সিদ্দিকী গতকাল ভোরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সত্তরের দশকের তুখোড় এই ছাত্রনেতা ১৯৭০-১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মুজিব বাহিনীর অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি। ... তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন যশোর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। (www.bd-pratidin.com/first-page/2023/03/30/871798

মন্তব্যঃ

ইসলামী ফিকহের সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘খলীফা’ হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি শাসন, কর্তৃত্ব এবং শারী’আহ্’র বিধি-বিধানসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহ্’র প্রতিনিধিত্ব করেন। ইসলামী শাসনব্যবস্থায় উম্মাহ্ শাসনকার্য পরিচালনা ও তাদের উপর শারী’আহ্’র হুকুম-আহকামসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাদের পক্ষ হতে একজনকে নিযুক্ত করে আর তিনিই হচ্ছেন ‘খলীফা’। একইভাবে যেহেতু রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর তার প্রতিনিধি হিসেবে হযরত আবু বকর (রা.)-কে নিয়োগ দেয়া হয় তাই তাকে "খলিফাতুর রাসূলুল্লাহ্‌" বা "আল্লাহর রাসুলের প্রতিনিধি" হিসেবেও ডাকা হয়। ইসলামী ব্যবস্থায় খলীফাকে একদিকে যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা হয় ঠিক অন্যদিকে তাকে উম্মাহর প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামী শারী’আহ বাস্তবায়ন করার দায়িত্বও পালন করতে হয়। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর ওফাতের পর হযরত আবু বকর (রা) থেকে শুরু করে সর্বশেষ খলীফা দ্বিতীয় আব্দুল মাজিদ পর্যন্ত অসংখ্য খলীফা মুসলিম উম্মাহকে শাসন করলেও রাশিদুন খলীফা হিসেবে পরিচিত প্রথম চার খলীফা অর্থাৎ আবু বকর, উমার, উসমান ও আলী ছিলেন একদিকে যেমন ছিলেন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর নবুয়তি জীবনের ঘনিষ্ট সহচর অপরদিকে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ছিলেন একইভাবে নিষ্ঠাবান। মূলত রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর সাথে সম্পর্ক এবং মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের স্বার্থে তাদের অবদানের জন্যই তারা কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিমদের কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকবেন। ঠিক এই একই কনসেপ্ট থেকে ধার করে শেখ মুজিবকে কেন্দ্র করে তার চার সহযোগী ছাত্রনেতাকে চার খলীফা হিসেবে ডাকা হয়। এরা মূলত ১৯৭০-৭১ সালে ছাত্রলীগের চার নেতা আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাহজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও নুরে আলম সিদ্দিকী যারা ছিলেন শেখ মুজিবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন।

শেখ মুজিব ও তার চার খলিফার বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদেরকে একটু পেছনে যেতে হবে। বৃটিশরা যখন অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক মুসলিমদের কাছ থেকে ভারতবর্ষের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় তখন থেকেই ভারতবর্ষ থেকে ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘটে এবং তদস্থলে পশ্চিমা সেকুলার ব্যবস্থার গোড়াপত্তন ঘটে। এবং ১৯২৪ সালে বৃটিশদের হাতে উসমানী খিলাফতের বিলুপ্তি ঘটলে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশসমূহকে বৃটেন এবং ফ্রান্স নিজেদের উপনিবেশ হিসেবে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহের মতই বৃটিশরা ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যায় কিন্তু রেখে যায় নেহেরু-গান্ধী-জিন্নাহ গংদের মত প্রভুভক্ত কিছু এজেন্ট যাদের চেহারা ভারতীয়দের মত দেখতে হলেও তাদের মস্তিষ্ক ছিল পশ্চিমা সেকুলার চিন্তা-চেতনায় মোহাবিষ্ট। তারা ছিলেন একেকজন Secular Prophet যাদের কিবলা ছিল লন্ডন-প্যারিস-ওয়াশিংটন। আর এদের উপর ওহী নাজিল হত হোয়াইট হাউজ, বাকিংহাম প্যালেস কিংবা এলিসি প্যালেস থেকে। পরবর্তীতে নেহেরু-গান্ধী-জিন্নাহ গংদের সিলসিলায় ৭১ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে এই দায়িত্ব অর্পিত হয় শেখ মুজিব-জিয়া-এরশাদ গংদের উপর। আর এদের একনিষ্ঠ খলীফা হিসেবে কাজ করে গিয়েছে নূরে আলম সিদ্দিকি গংদের মত লোকেরা। এরা সারা সারাজীবন পশ্চিমাদের সেকুলার চিন্তার প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত হওয়ার পর সেই সেকুলার চিন্তা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছে।

আমাদেরকে অবশ্যই এসকল সেকুলার খলীফাদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ইসলামী ব্যবস্থা অর্থাৎ খিলাফত রাষ্ট্রের খলীফাদের দ্বারস্থ হতে হবে। ১৯২৪ সালে খিলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে সেই খলীফার পদ ৯৯ বছর (হিজরী সন মোতাবেক ১০২ বছর) ধরে শূণ্য। কিন্তু আমাদের জন্য খিলাফত ব্যবস্থার শাসনের অধস্তন থাকা বাধ্যতামূলক। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে যে, তখন তার কাঁধে কোন আনুগত্যের শপথ নেই, তবে তার মৃত্যু হবে জাহেলি যুগের মৃত্যু।” (সহীহ্ মুসলিম, হাদীস নং-১৮৫১) এবং “বনী ইসরাইলকে শাসন করতেন নবীগণ। যখন এক নবী মৃত্যুবরণ করতেন তখন তাঁর স্থলে অন্য নবী আসতেন, কিন্তু আমার পর আর কোনও নবী নেই। শীঘ্রই অনেক সংখ্যক খলীফা আসবেন। তাঁরা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন তখন আপনি আমাদের কী করতে আদেশ করেন? তিনি (সাঃ) বললেন, তোমরা একজনের পর একজনের বাই’আত পূর্ণ করবে, তাদের হক আদায় করবে।” (সহীহ্ বুখারী, হাদীস নং-৩৪৫৫; সহীহ্ মুসলিম, হাদীস নং-৪৭৫০) এমনকি রাসূল (সাঃ) এর মৃত্যুর পর সাহাবাদের (রা.) উপর সর্বপ্রথম তার (সাঃ) দাফনকার্য সম্পন্ন করা ফরয ছিল কিন্তু তারা তা না করে মুসলিমদের প্রথম খলীফা নির্বাচনে ব্যস্ত ছিলেন। অন্যান্য সাহাবারা (রা.) নীরব থেকে রাসূল (সাঃ) এর দাফন কার্য ২ রাত বিলম্ব করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিলেন, যদিও তাঁদের আল্লাহ’র রাসূল (সাঃ) এর দাফন কার্য শীঘ্রই সম্পন্ন করার সুযোগ ও সামর্থ্য ছিল। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, মুসলিমদের জন্য একজন খলীফা নির্বাচিত করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ অথচ প্রায় ১০০ বছর ধরে খলিফার বাইয়াত বিহীন অবস্থায় থেকে আমরা গোনাহের ভাগীদার হচ্ছি!

    -    মো. হাফিজুর রহমান



“ফের যানবাহনের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক হতে পারে”

খবরঃ

ফের বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহনের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বীমা করা না থাকলে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে যানবাহন মালিককে। (www.ittefaq.com.bd/637794/ফের-যানবাহনের-জন্য-বীমা-বাধ্যতামূলক-হতে-পারে)

মন্তব্যঃ

বীমা পলিসি, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার একটি অর্থনৈতিক মডেল, যাকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অনুগত শাসকরা অন্ধভাবে অনুকরণ করছে, যা জনগণের ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিতের নামে জনগণের অর্থ চুরি করার বৈধ লাইসেন্স করে দেয়। এই স্কিমগুলির মাধ্যমে, বীমা কোম্পানিগুলোর মালিক ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর মূলধন ও মুনাফা বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়ে সম্পদের একমুখী প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়; উদাহরণস্বরূপ, দেশের অর্ধেক মানুষকেও যদি বীমার আওতায় নিয়ে আসা যায় এবং দিনে যদি ১ টাকা করেও প্রিমিয়াম আসে তাহলে শুধু বীমা খাতে প্রিমিয়াম হিসেবে বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা যুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। পাশাপাশি সরকার এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের থেকে ‘কর (Tax)’ ও ‘মূল্য সংযোজন কর (VAT)’ এবং ‘Stamp duty’ হিসেবে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারি কোষাগারে সরিয়ে নেয়ার রাস্তা তৈরি করে। তাই তারা জনগণকে তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে এই প্রকল্পের আওতায় আনতে চায় যাতে এতে সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও গুটিকয়েক পুঁজিপতির নিকট পুঞ্জীভূত হয়। পুঁজিবাদী উন্নয়ন ব্যবস্থায়, রাষ্ট্রীয় শাসকরা পুঁজিপতিদের সুবিধাদাতা এবং নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করে। তাই বরাবরের মতো, শাসকরা বীমার নামে জনগণের কষ্টার্জিত আয় শুধুমাত্র কয়েকটি পুঁজিবাদী কোম্পানিকে লুট করার সুযোগ করে দিয়েছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের নিকট থেকে এর মাধ্যমে আরো অতিরিক্ত ‘কর (Tax)’ আদায়ের মাধ্যমে তাদের জীবনকে আরো কষ্ট ও দুর্দশার মধ্যে পতিত করছে। অর্থাৎ, পুঁজিবাদী আদর্শে, সর্বদাই গুটিকয়েক লোকের মুনাফার জন্য জনসাধারণ শোষিত হয়। 

মানুষকে যখন আইন প্রণয়নের অধিকার দেওয়া হবে, তারা সর্বদা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করবে, যদিও তা হয় জনস্বার্থ বিরোধী। ইসলামী শাসন ব্যবস্থাই (খিলাফত) এই সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র সমাধান, কারণ এর মূলনীতি হচ্ছে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা, অর্থাৎ তিনিই একমাত্র আইন প্রণেতা। সুতরাং, ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান (খলিফা) নিজে কোন আইন তৈরী করতে পারবেন না, তাই তার স্বেচ্ছাচারী হবার কোন সুযোগ নেই। ইসলাম রাষ্ট্র শারী’আহ্‌ অনুসরণে সম্পদের সঞ্চালনকে উৎসাহিত করে এবং একটি গোষ্ঠীর হাতে তা পুঞ্জিভূত হওয়াকে রোধ করে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেনঃ “এবং সম্পদ যাতে শুধুমাত্র তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যে আবর্তিত না হয়” [সূরা আল-হাশরঃ ৭]। এছাড়াও শারী‘আহ্‌ শাসক কর্তৃক রাজস্ব আদায়ের নামে নতুন নতুন অর্থনৈতিক স্কিম চালু করা কিংবা চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ নাই। ইসলামে বিমা পলিসি সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এধরণের পলিসি এবং তা হতে রাজস্ব আদায় পশ্চিমা কুফর পুঁজিবাদী দর্শন হতে গ্রহণ করেছে। খিলাফত রাষ্ট্রের রাজস্ব আয় পুরোপরি শারী‘আহ্ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শারী‘আহ্ অনুমোদন ছাড়া কারো উপর এক টাকা করও ধার্য করা যাবে না। ইসলামের অর্থনীতিতে ‘কর (Tax)’ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, কারণ ইসলামী অর্থনীতির প্রকৃতি পুঁজিবাদী অর্থনীতি থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন। ইসলাম আয়ের উপর ‘কর (Tax)’ আরোপ করে না, সম্পদের উপর ‘কর (Tax)’ আরোপ করে; অর্থাৎ আয় থেকে নয়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সমস্ত সম্পদ থেকে ‘কর (Tax)’ নেওয়া হয়। খিলাফত রাষ্ট্রের রাজস্বের পাঁচটি প্রধান উৎস রয়েছে এবং এগুলো হলোঃ ফা’ঈ, জিয্‌ইয়া, খারাজ, উশর এবং হিমা। জনগণের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সুরক্ষার দোহাই দিয়ে বিপুল ভ্যাট-ট্যাক্স (যা জনগণের প্রতি জুলুম) আদায় অথবা কোন প্রকল্প চালু করার অনুমোদন ইসলামী শারী’আহ্‌ দেয় না। কারণ ‘কর (Tax)’ বৃদ্ধি করা নিষিদ্ধ (হারাম) এবং ‘কর (Tax)’ আদায়কারী সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেনঃ “‘কর (Tax)’ আদায়কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”

    -    সুজন হোসেন

Previous Post Next Post