গাজায় হামলার সময়ও ইসরাইলে তেল সরবরাহ করতেন এরদোগান, নথি প্রকাশ

 “গাজায় হামলার সময়ও ইসরাইলে তেল সরবরাহ করতেন এরদোগান, নথি প্রকাশ”




খবরঃ

দখলকৃত গাজায় ইসরাইলের অমানবিক হামলার মধ্যেও ইসরাইলে তেল ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে। দেশটির পার্লামান্টে এ সংক্রান্ত কয়েকটি নথি প্রকাশ করেছেন পার্লামেন্ট সদস্য ওমর ফারুক গেরগারলিওগলু। (https://www.jugantor.com/international/906997 )

মন্তব্যঃ

বর্তমান মুসলিম শাসকদের মধ্যে এরদোগানকে মনে করা হয় সবচেয়ে বেশি মুসলিম দরদী ও ইসলামপ্রেমী। অথচ এই খবরে এটা আবারও প্রমাণ হলো, এরদোগানও অন্যান্য মুসলিম শাসকদের মতই- যারা ইসলাম ও মুসলিমদেরকে পরিত্যাগ করেছে। বরং, স্পষ্টভাবে পরিত্যাগকারী শাসকদের তুলনায় এরদোগানের মত ধোকাবাজরা উম্মাহ্‌’র জন্য আরও ক্ষতিকর, কারণ তারা উম্মাহ্‌-কে মিথ্যা আশায় রেখে কাফিরদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হতে দেয়। ১৯৯০ সাল থেকে তুরস্কের সাথে ইসরাইলের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আছে। ২০২৩ সালে তুরস্ক ৬.৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য দেয় ইসরাইলকে যার মধ্যে আছে তেল, যুদ্ধযানের যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টস যেগুলো সরাসরি মানুষ মারার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী মে ২০২৪ এ ঘোষণা দিয়ে তুরস্ক ইসরাইলে রফতানি বন্ধ করলেও বাস্তবে তারা তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। হাসিনা সরকারের নীতিও একই রকম ছিল। তারা ইসরাইলী কোম্পানী পেগাসাস থেকে জনগণের উপর নজরদারী করার প্রযুক্তি কিনেছে। গাজায় হামলা চলাকালীন সময়ে এই ইহুদীগোষ্ঠীকে উত্তরদিক থেকে সুরক্ষিত রাখায় কাজ করা শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ৭৫ সদস্যকে প্রেরণ করেছে। বলাবাহুল্য ইসরাইল বিষয়ে ইউনুস সরকারও এই মিশনের মত অন্যান্য নীতিও অব্যাহত রেখেছে। মিশর, জর্ডান, আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ইত্যাদি দেশ প্রকাশ্যে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। খবরে প্রকাশ, গাজায় গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইসরাইল চরম খাদ্য সংকটে পড়লে মিশর, জর্ডান, আরব আমিরাত ইত্যাদি দেশ ইসরাইলে খাদ্য ও পাণীয় সরবরাহ করে।

পশ্চিমা কাফিরগোষ্ঠীর দালাল বর্তমান মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শাসকদের কর্তৃক দখলদার ও গণহত্যাকারী অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করার এই অবস্থান আশ্চার্যজনক মনে হলেও স্বাভাবিক। কারণ পশ্চিমাদের দ্বারা পদ্ধতিগতভাবে এই জাতিরাষ্ট্রগুলো এবং ইসরাইল একই প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে খিলাফত রাষ্ট্র পরাজিত হলে উপনিবেশবাদী বৃটেন মুসলিমভুমিগুলো বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিরাষ্ট্রে বিভক্ত করে তাদের বিশ্বস্ত দালালদেরকে শাসক হিসেবে বসায় এবং এসব শাসকদের সহযোগীতায় ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন করা হয়। 

বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুজতাহিদে মুত্বলাক্ব ত্বাকী উদ্দীন আন-নাভাহানী (রহ.) বলেছিলেন, “ইসরাইল হচ্ছে আরব শাসকদের ছায়া, ফলে এই শাসকদের অস্তিত্ব বিলীন হলে তাদের ছায়াও বিলুপ্ত হবে”। প্রকৃতই, এসব দালাল শাসকরা বিলুপ্ত না হলে গণহত্যাকারী এই অবৈধ রাষ্ট্রটিও বিলুপ্ত হবে না এবং ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি হবে না। তাই, আমাদেরকে প্রতারণামূলক প্রকল্পসমূহ যেমন আমূল পরিবর্তন না করে সংস্কার করা, কুফরকে ইসলামীকরণ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসলাম আনা, ইসলামী ব্যক্তিত্বদের হাতে ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব দেয়া, ইত্যাদি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এবং আমাদেরকে পরিপূর্ণ ইসলামী ব্যবস্থা তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এরদোগানের মতো পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের দালাল মুসলিম শাসকদের বিদায় জানাতে হবে। তবেই কেবল ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি ও মসজিদ আল-আকসাকে মুক্ত করা সম্ভব।

    -    মোহাম্মদ তালহা হোসেন


Previous Post Next Post