হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট: র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ

 




খবরঃ

হাসিনা সরকারের আমলে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কার কঠিন বলে মনে করে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ক'ঘণ্টা আগে রিলিজ হওয়া বাৎসরিক রিপোর্টে বলা হয়, শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহার রোধই নয়, নিরাপত্তা বাহিনী যাতে পরবর্তী সরকারের দমন–পীড়নের হাতিয়ার না হয়, তা নিশ্চিত করতে এখনই র‍্যাবের বিলুপ্তি ঘটানো জরুরি। (https://mzamin.com/news.php?news=146128#gsc.tab=0)

মন্তব্যঃ

চার দলীয়  জোট সরকারের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে তথাকথিত জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার মানোন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে র‍্যাব গঠিত হয়। উপনিবেশবাদী পশ্চিমা  রাষ্ট্রগুলোর ঔপনিবেশিক স্বার্থ  ও 'ওয়ার অন টেরর' এর নামে প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ৯/১১ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষ করে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে র‍্যাবের মতো  দু'ডজনের বেশি আধা সামরিক বাহিনী গঠনের পরামর্শ দেয়। তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে  স্বৈরাচারী হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পরে। ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত র‍্যাব কর্তৃক ১,৬৭৬ টি গুম ও সাড়ে তিন হাজার  খুন বা ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটে। 

এসব আধা সামরিক বাহিনীগুলো তখনই পশ্চিমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় যখন দালাল সরকারগুলো এদেরকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। ২০১৪ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরে আলেম ওলামা হত্যাকাণ্ড ও খিলাফত প্রতিষ্ঠার কর্মীদের উপর র‍্যাবের নির্যাতন পশ্চিমাদের কাছে মানবাধিকার লংঘন বলে মানা হয়নি। কিন্তু যখন হাসিনা র‍্যাবকে ব্যবহার করে মার্কিনপন্থী রাজনীতিক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও বিরোধী মত দমন করে তখন আমেরিকার স্বার্থে আঘাত লাগে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হাসিনার মতো শাসকদের চাপে রাখে। যুক্তরাষ্ট্র দেখে এসব নিষেধাজ্ঞায় কিছু কাজও হয়। কিছুদিন গুম, খুন বন্ধ থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে র‍্যাবের ভাবমূর্তি উদ্ধারে মার্কিনপন্থী অন্তর্বর্তী  সরকার তাদের ইউনিফর্ম পরিবর্তন করছে, যা হাস্যকর। কাপড় পরিবর্তনে কখনো দুর্বৃত্ত মানসিকতার পরিবর্তন হয় না। এগুলো হচ্ছে পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের স্বার্থ ও এখানকার দালাল শাসকদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার। সত্যিকারভাবে যদি র‍্যাব বিলুপ্ত হয়েও যায় তবুও আমরা পশ্চিমাদের রপ্তানি করা এ ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থায় অন্য বাহিনীর নিপীড়নের শিকার বা সাক্ষী হবো। 

এজন্য প্রয়োজন এই ব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটন করে একটি সঠিক জীবন ব্যবস্থা স্থাপন করা, যা আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কর্তৃক প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা খিলাফত। এ শাসন ব্যবস্থা  উপনিবেশবাদের প্রভাবমুক্ত হবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) কর্তৃক মদিনায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের পর তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী গঠন করেন। এ কাজে  তিনি বিদেশি শত্রু বা কাফেরদের কোন সহায়তা নেননি। একটি মুসলিম দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতা বিদেশী শত্রু রাষ্ট্র বা আল্লাহ্‌’র শত্রুদের হাতে দিয়ে দেয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্‌ এবং মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। উম্মাহ্‌’র কর্তব্য হচ্ছে এই ষড়যন্ত্রকে কখনই সফল হতে না দেয়া। আমরা যদি চেষ্টা করি আল্লাহ্‌ নিশ্চিতভাবেই একাজে আমাদের সহযোগিতা করবেন। “এবং কিছুতেই আল্লাহ্‌ মু‘মিনদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্বের কোন পথ রাখবেন না” (সুরা আন-নিসা: ১৪১)।

    -    সাগর আহমেদ

Previous Post Next Post