খবরঃ
ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজের জন্য যে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা চলছে, সেটির নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’। শিক্ষার্থীরা চাইলে এই নামটি গ্রহণ করা হতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজসহ এ-সংক্রান্ত কমিটির তিন সদস্য। বৈঠকটিতে এই নাম প্রস্তাব করা হয়। এই সাত সরকারি কলেজ হলো— ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার এই সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করা হচ্ছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার সাতটি কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এ জন্য ইউজিসির মাধ্যমে একটি কমিটি কাজ করছে। (https://jamuna.tv/news/591560)
মন্তব্যঃ
নিয়মিত ক্লাস নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া, সময়মতো ফল প্রকাশ, সেশনজট কমানোসহ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কিন্তু, দীর্ঘ আট বছরেও সমস্যাগুলোর উল্লেখযোগ্য কোন সমাধান হয়নি। বরং, শিক্ষার্থীরা দাবি করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে শিক্ষাবিষয়ক সমস্যাগুলোর পুঞ্জীভূত হয়ে বড় আকার ধারন করেছে। (বিস্তারিত জানতে পড়ুন আট বছরেও সাত কলেজের সমস্যা কাটেনি, কী ভাবছে সরকার, প্রথম আলো, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫)।
প্রশ্ন হচ্ছে সাত কলেজ নিয়ে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় (‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’) বা সাতটি কলেজকে আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করলে কি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যগুলোর সমাধান হবে? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্বে থাকাকালীন সমস্যা সমাধানের জন্য সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও দীর্ঘ ৮ বছরেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যগুলোর সমাধান কেন হয় নাই? কারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ক্ষমতাশীল সরকারগুলোর পূর্বেও কোন স্বদিচ্ছা ছিল না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পরেও ছিল না। বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন শাসকরাও পূর্ববর্তী শাসকদের মত সেকুলার, তাই তাদের মাঝেও জনগণের সমস্যা সমাধানের কোন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না। সেকুলার শাসন ব্যবস্থায় শাসকশ্রেণী কোন একটি বিষয় নিয়ে শুধুমাত্র তখনই মনোযোগ দেয় যখন ইস্যুটি তাদের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বা ইস্যুটি ব্যবহার করে তাদের ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করার সুযোগ থাকে। তাই, সেকুলার শাসন ব্যবস্থার ছায়াতলে সাত কলেজ শিক্ষর্থীদের শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। শিক্ষার্থীদের আবারও কিছুদিন পরেই রাস্তায় নেমে সমস্যাগুলোর সমাধানের দাবি করতে হবে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের উচিত দায়িত্বহীন এই শাসক এবং ভ্রান্ত সেকুলার রাজনৈতিক ব্যবস্থার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার রাস্তা অনুসন্ধান করা।
খিলাফত ব্যবস্থা হচ্ছে সেই ব্যবস্থা যেখানে খলিফা (শাসক) জনগণের বিষয় দেখাশুনা করার জন্য দায়িত্বশীল। এই দায়িত্ব অবহেলার জন্য খলিফা পৃথিবীতে এবং পরকালে জবাবদাহিতার সম্মুখিন হবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ”সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব, ইমাম (খলিফা) যে বিষয়ের দায়িত্বশীল তিনি তার অধীনদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবেন।..” (সহীহ্ বুখারী)
- মো: সিরাজুল ইসলাম