রোহিঙ্গা সহায়তা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ ড. ইউনূসের




খবরঃ

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা বন্ধ না করে অব্যাহত রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।… এর আগে গত সোমবার ৯০ দিনের জন্য বিদেশে সহায়তা স্থগিত রাখতে নির্বাহী আদেশ জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর বিশ্বজুড়ে এ ধরনের প্রায় সব সহায়তা স্থগিত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এর আওতামুক্ত রয়েছে মিত্র দেশ ইসরায়েল এবং মিসর।… 

(https://www.dailynayadiganta.com/diplomacy/19687378)

মন্তব্যঃ

রোহিঙ্গা মুসলিমদের এই সহায়তা প্রদান করা, এই ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার উপনিবেশিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সামান্য এক বিনিয়োগ মাত্র। রোহিঙ্গা মুসলিমদের অসহায়ত্বকে সে এখানে একটা সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছে। যদি এখানে কোন সমস্যা নাও থাকতো, সে বরং এখানে কোন একটি সমস্যা তৈরি করে, সেটি সমাধান করার অজুহাতে এখানে অবস্থান নিতো। এ অঞ্চলে একটি বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে দমিয়ে রাখা, স্থল ও জলভাগে আবিষ্কৃত হওয়া মহামূল্যবান খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদসমূহ লুণ্ঠন, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের বাণিজ্য পথের নিয়ন্ত্রণ করে চীনের উত্থান ঠেকানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ (তার জন্য) বিষয়গুলো তাকে এখানে রোহিঙ্গা সমস্যায় বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছে। আর ডক্টর ইউনুস সরকার, এতে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে মার্কিন পরিকল্পনায় তার সমর্থন পূর্ণব্যাক্ত করেছে। আমরা ইতিপূর্বেও ইউনুস সরকারকে দেখেছি, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য মার্কিন প্ল্যান অনুযায়ী ‘সেইফ হাউজের’ বন্দোবস্ত করার আহ্বান জানাতে। যদিও ঐ তথাকথিত ‘সেফ হাউস’ এর বাস্তবতা আমরা দেখেছি সেব্রেনিকায় মুসলিম গণহত্যার সময়, যেখানে ৮ হাজার পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় এবং ৫০ হাজার মুসলিম বোনেরা অবর্ণনীয় নির্যাতন ও গণধর্ষণের শিকার হন। ইউনুস সরকারের তো মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই বিশ্বব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা উচিত ছিল যে, কেন রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে তাদের ভূখণ্ড থেকে গণহত্যা করে বিতাড়িত করা হলো? গণহত্যাকারীদের কেনই বা বিচার হচ্ছে না এবং তাদের ভূখণ্ড কেন তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না? সেটা না করে কিছু খাদ্য সহায়তা, তথাকথিত ‘সেইফ হাউস’ ইত্যাদি অদ্ভূত কিছু সমাধান দেওয়া হচ্ছে, যা এই সমস্যার কোন সমাধানই করবে না। বরং ফিলিস্তিন সমস্যার মতো এই সমস্যা জিইয়ে রেখে এটা মার্কিনীদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের একটি উপায় হবে মাত্র। এতে আমাদের রোহিঙ্গা মুসলিম ভাই-বোনেরা না পাবে তাদের ভূখণ্ড, না পাবে তাদের সম্মান, আর না পাবে ন্যায়-বিচার। এ পর্যন্ত কোন ‘সেইফ হাউজ’ বা শরনার্থী শিবিরে মুসলিমরা তাদের ন্যূনতম অধিকারগুলো পূরণ করতে পেরেছে? 

অথচ রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে তাদের নিজ ভূখন্ড রাখাইনে নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ভারত মহাসাগরে তার কর্তৃত্ব বাড়াতে পারতো এবং চীনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। কারণ রাখাইনকে চীন তার ভারত মহাসাগরে প্রবেশের ব্যাকডোর বানানোর পরিকল্পনা করেছে। আর সেটা না করে, সামান্য কিছু ডলার পাওয়ার আশায় ইউনুস সরকার মার্কিন হীন স্বার্থে তার সহায়তার (বিনিয়োগ) জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে! আসলে এসব সরকার, যারা মার্কিন উপনিবেশ দ্বারা বিমোহিত, তাদের পক্ষে কখনোই এর ধরনের শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়। তারা কেবল উপনিবেশবাদের গোলামীতেই তাদের প্রকৃত সাফল্য দেখতে পায়। তাই এই গোলামদের হাতে না আমরা নিরাপদ, আর না মুসলিম উম্মত কখনো কোনোভাবে তাদের দ্বারা উপকৃত হবে। এই গোলামেরা সামান্য কিছু ডলারের জন্য মার্কিনীদের ডেকে নিয়ে আসে, যারা ফিলিস্তিনে গনহত্যায় দশকের পর দশক ধরে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। যারা ইরাক, আফগানিস্তানসহ মুসলিম ভূমিগুলোতে গণহত্যা চালিয়েছে।

তাই আমাদের প্রকৃত নিরাপত্তা এবং উপনিবেশিক শক্তি থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই ইসলামী খিলাফত শাসন ব্যবস্থার দিকে ফিরে যেতে হবে। যেখানে শাসকরা একমাত্র আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র গোলামী করে এবং তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) নির্দেশ অনুযায়ী উপনিবেশিক কুফর শক্তিকে পদানত করতে প্রত্যেকটি সুযোগকে গ্রহণ করবে। খন্দকের যুদ্ধে মক্কার কাফেরদের পালিয়ে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) কোন কালক্ষেপণ না করেই এই যুদ্ধের প্রেক্ষিতে দুর্বল হয়ে যাওয়া মদিনা রাষ্ট্রের জন্য বিষফোঁড়ারূপী ইহুদি গোত্র ‘বনু কুরায়জা’র দুর্গ আক্রমণ করেন এবং তাদেরকে চিরতরে পদানত করেন। এই খিলাফত রাষ্ট্র পুনপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তা এভাবে প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগাবে, বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে মুসলিম উম্মতকে নিরাপত্তা প্রদান করবে, অমুসলিমরাও নির্যাতিত হলে তার প্রতিকারের জন্য পদক্ষেপ নিবে। তারপর রাখাইনসহ পৃথিবীর সমগ্র অঞ্চলগুলোকে (আরব-অনারব) ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে নিয়ে আসবে।

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post