বাংলাদেশ–ভারতের সম্পর্কের সংকট কোথায়, সমাধান কী?



খবরঃ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যেন একটা ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলছে; দুই দেশেরই রাজনীতিবিদদের কথাবার্তায় কেমন যেন লাগামহীন অসতর্কতা। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমানা নিয়ে এখন বড় কোনো বিরোধ নেই, তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তিস্তা ও ফারাক্কা নিয়ে অবশ্যই বিবাদ আছে। বাণিজ্যিক বিষয়েও কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ যদি ভারত থেকে বিদ্যুৎ কিনতে না চায়, তাহলে অন্য দেশ থেকে কিনবে। ভারতীয় শাড়ি আমদানিও যদিও বন্ধ করতে হয়, সেটাও খারাপ কিছু নয়। বাংলাদেশ যদি নিজ ভূমির মধ্য দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন চলতে না দেয়, তা-ও বাংলাদেশের অধিকার। আবার ভারত যদি কোনো কারণে বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সীমিত করতে চায়, সেটাও তাদের অধিকার। পবিত্র রোজার সময় ভারত যদি পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ রপ্তানি না করে, তাহলে আমরা জোর করতে পারি না। দিল্লিতে হাসিনার কার্যকলাপে বাংলাদেশ যেমন ভারতের ওপর দারুণভাবে ক্রুদ্ধ, তেমনি বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ায় ভারতও খুব বিরক্ত। দুই দেশেই আরেকটা অস্বস্তির ব্যাপার হলো সাম্প্রদায়িকতা। যেকোনো দুটি দেশের উত্তেজনা কমানো বা সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রধান ভিত্তি হলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা। ভারত ও বাংলাদেশের জন্য সময় এসেছে ধারাবাহিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ফিরে যাওয়ার। (https://www.prothomalo.com/opinion/column/e5nnzsyxn3)

মন্তব্যঃ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে অর্থনৈতিক স্বার্থ ও সুবিধাকে বিবেচনায় নেওয়া আমাদের দেশের সেকুলার বুদ্ধিজীবিদের একটি অন্যমত বৈশিষ্ট্য। এই অর্থনৈতিক সুবিধার কথা বলেই ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে, ফেনীসহ অন্যান্য স্থানে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে জমি দেওয়া হয়েছে, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের স্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয়েছে, ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা হয়েছে, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানীর সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি হয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ভারতকে যুক্ত করা হয়েছে। বিনিময়ে ভারত পিলখানায় আমাদের সেনা অফিসারদেরকে হত্যার মাধ্যমে দেশের সামরিক বাহিনীর অফিসারদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস তৈরী করে দেশের নিরাপত্তাকে অরক্ষিত করে দিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে ভারত দিনকে দিন আমাদের রাজনীতি, প্রশাসন, অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে হাসিনার মত জ্ঞানহীন ও অযোগ্য শাসককে দেড় যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতায় রেখে দেশের জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুন-কারা নির্যাতন করার সুযোগ করে দিয়েছিল। অর্থনৈতিক সুবিধা বা লাভ-লসের হিসাব দিয়ে এবং ‘আমরাতো আর প্রতিবেশি পরিবর্তন করেতে পারবে না’ বা ‘ভারত আমাদের বৃহৎ ও শক্তিশালী প্রতিবেশি’ ইত্যাদি বলে যারা ভারতের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার পক্ষে মত দেয় তারা মূলত দেশ ও জনগনের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং জনগনকে বিভ্রান্ত করছে। 

মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জনগন ও সরকারের কর্তব্য হল ইসলামী আক্বীদাহর ভিত্তিতে ও শরীয়াহর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভারতকে বিবেচনা করা। পবিত্র কুর‘আন-এ মুশরিক রাষ্ট্রকে আল্লাহ্‌ মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন, ঠিক যেভাবে ইহুদী রাষ্ট্রকে আল্লাহ্‌ মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন। ফলে, আল্লাহ্‌’র এই ওহীর বিরুদ্ধচারণ করার কোন এখতিয়ার কোন মুসলিমের নেই। এই ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ভারতের সাথে সামরিক, অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ও অন্যান্য দ্বি-পাক্ষীক সম্পর্ককে বিবেচনা করতে হবে। একমাত্র খিলাফত শাসনব্যবস্থা এই নীতি বাস্তবায়ন করবে। ভারত হল আমাদের শত্রুরাষ্ট্র এবং ভারত কখনোই হিন্দুত্ববাদি সেকুলার-মুশরিক সরকারের অধীনে মুসলিমদের প্রতি শত্রুতা থেকে পিছু হটবে না। ফলে, প্রায় ৪০ কোটি মুসলিমের দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশটিকে পুনরায় ইসলামী শাসনের অধীনে ফিরিয়ে আনার জন্য অতি-আসন্ন খিলাফত সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, ইনশা’আল্লাহ্। 

    -    রিসাত আহমেদ


Previous Post Next Post