রাজনৈতিক দল গঠন করবে ছাত্ররা: এফ.টি.-কে ড. ইউনূস




খবরঃ

বাংলাদেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাবনা আছে, যেটিকে কাজে লাগাতে তারা এরমধ্যেই দেশজুড়ে প্রচার চালাচ্ছে, মানুষজনকে সংগঠিত করছে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে একথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস জানান, তিনি নির্বাচনের সম্ভাব্য যে দুটি সময়ের কথা বলেছেন, তা ভালো সময়। কারণ, তিনি জাতীয় ঐক্য ধরে রাখছেন। তিনি এটা থেকে বিচ্যুত হতে চান না। এরমধ্যে একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে যে, ছাত্ররা নিজেরাই হয়তো একটি দল গঠন করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুরুতে যখন উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হচ্ছিল, আমি তিনজন ছাত্রকে আমার কেবিনেটে নিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, যদি তারা দেশকে জীবন দিতে পারে, তাহলে কেবিনেটে বসতে পারে এবং জীবন দেওয়ার জন্য কী করছে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তারা ভালো কাজ করছে। (www.tbsnews.net/bangla/বাংলাদেশ/news-details-306606

মন্তব্যঃ

রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং রাষ্ট্রের বাইরে জনগণের বিষয়াদি দেখভালের কাজকেই রাজনীতি বলা হয়। রাজনীতি করতে গেলে যে শুধুমাত্র ক্ষমতায় গেলেই তা করা যাবে তা নয়, বরং ক্ষমতার বাইরে থেকেও শাসককে জবাবদিহিতার মাধ্যমেও তা করা যায়। একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোন আইডিয়া বা চিন্তা দ্বারা তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কিংবা শাসককে জবাবদিহি করবে সেটা। জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্যে রাষ্ট্র পরিচালনায় গৃহীত আইডিয়া যদি ভুল হয় তাহলে তা জনগণের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হবে। আর যদি সঠিক হয় তবে তা জনগণের দুর্দশা লাঘব করবে। 

আমরা যদি বৈষম্যবিরোধী ও নাগরিক কমিটির ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক দর্শনের দিকে তাকাই তাহলে দেখব, তা ‘আওয়ামী-বিএনপি’র রাজনৈতিক দর্শনের থেকে ভিন্ন কিছু নয়। গণতন্ত্র, সেকুলারিজম, পুঁজিবাদ, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ইত্যাদি যেমন ‘আওয়ামী-বিএনপি’ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক দর্শন, একইভাবে তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতৃত্বের দলেরও রাজনৈতিক দর্শন। অর্থাৎ তারা জাতিকে ভিন্ন কিছু উপহার দিচ্ছে না। বেঙ্গল বেসিনের ইসলাম, বহুত্ববাদ, পালনবাদ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা - ইত্যাদি বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন শব্দের মুলা ঝুলালেও তাদের নতুন দল ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী-গণতান্ত্রিক আইডিওলোজী ও সমাজতান্ত্রিক আইডিওলোজী হতে ধার করা কিছু মানবরচিত ভ্রান্ত মতবাদের বাইরে যেতে পারেনি। সুতরাং, তারাও ‘আওয়ামী-বিএনপি’র মতই দুষিত বিদেশী চিন্তা এবং ব্যবস্থা দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ঈমান-আক্বীদা ও ইসলামী ব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক। সুতরাং নিঃসন্দেহেই বলা যায়, ছাত্রদের নতুন দলও ‘আওয়ামী-বিএনপি’ দুর্বৃত্তদের মতই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ব্যর্থ হবে এবং দেশকে সাম্রাজ্যবাদীদের থাবার মুখে ফেলবে। 

দেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে মানবরচিত চিন্তা ও ব্যবস্থা দ্বারা গঠিত রাজনৈতিক দলকে প্রত্যখ্যান করতে হবে। এমন একটি দল গঠন করতে হবে অথবা সন্ধান করতে হবে যারা আপোষহীনভাবে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করবে এবং ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তাবনা পেশ করবে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল হোক, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করে, সৎকাজের আদেশ করে এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করে, আর তারাই সফলকাম” (আলি ইমরান: ১০৪)। সুতরাং সে দলটিকে অবশ্যই ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে হবে, এই আদর্শের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। এবং আংশিক কিংবা ধাপে ধাপে নয় বরং পরিপূর্ণ ইসলাম বাস্তবায়নের প্রজেক্ট থাকতে হবে। শাসককে জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও ইসলামই হবে সে দলের মানদন্ড। 

    -    মোঃ হাফিজুর রহমান 


Previous Post Next Post