হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল পুলিশের টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

 


খবরঃ 

বাংলাদেশের রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় হিযবুত তাহরীরের একটি মিছিল টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। সাতই মার্চ বায়তুল মোকাররম থেকে 'মার্চ ফর খিলাফত' কর্মসূচির ঘোষণা দেয় হিযবুত তাহ্‌রীর। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এ সংক্রান্ত পোস্টার দেখা গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের উত্তর গেট এলাকা থেকে মিছিল বের করে সংগঠনটি। খিলাফত ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। ওই এলাকায় আগে থেকেই পুলিশ সদস্যের সতর্ক উপস্থিতি ছিলো। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে পল্টন মোড় হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে এগোতে থাকে মিছিলটি। এক পর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। ছোড়া হয় সাউন্ডগ্রেনেড। মিছিলে লাঠিচার্জও করা হয়। (https://www.bbc.com/bengali/articles/c3rn4gep3vyo)

মন্তব্যঃ

৫ আগস্টের আগে আমরা এক যালিম শাসকের হাতে জিম্মি ছিলাম দীর্ঘ ১৫ বছর। পরবর্তীতে, তার পতনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল যাতে হাসিনার প্রত্যেকটা যুলুমের ভিত্তিকে সমূলে উৎপাটন করা যায় এবং দেশ ও জাতিকে একটা নেতৃত্বশীল অবস্থানে পৌঁছে দেয়া যায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার পদাংক অনুসরণ করে চলছে। মার্কিনীদের আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী জনগণের উপর করারোপ, ভারতের সাথে মুখে বৈরিতার বুলি আওড়ালেও কাজে সকল ধরনের সম্পর্ক রক্ষা করা (যেমন, ভারতের সাথে হাসিনার দেশবিরোধী চুক্তি বহাল, ভারত-বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যৌথ মহড়া, আদানির সাথে চুক্তি বহাল, ইলিশ রপ্তানি, সীমান্তে নতজানুতা), হাসিনার সময়ের কালো আইন বলবত রাখা, ওয়ার অন টেররের নামে ওয়ার অন ইসলামের পশ্চিমা প্রজেক্টকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সবকিছু বহাল থাকা আমাদেরকে এটাই বোঝায় যে, আসলে শুধু চেহারা পরিবর্তন ছাড়া আর কোনকিছুই পরিবর্তন ঘটেনি। মার্কিন-ভারতের দালালগোষ্ঠী, পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থা, ইসলামবিদ্বেষী পশ্চিমা নীতির অনুসরণ ইত্যাদি এখনও চলমান। বিষয়টি আরো নগ্নভাবে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন ৯০ শতাংশ মুসলিমের প্রাণের দাবি খিলাফতের জন্য রোজাদার হাজার হাজার মুসল্লি শান্তিপূর্ণ “মার্চ ফর খিলাফত”-র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করে আর ইসলামবিদ্বেষী হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে মার্কিন-ভারতের নব্য দালালগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে তাদের উপর টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এমনকি দখলদার ইসরায়েলী সৈন্যদের অনুকরণে আহত মুসল্লীদের চিকিতসারত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে। এই চরম ইসলামবিদ্বেষ মূলত মার্কিন-ভারতের দালালগোষ্ঠী কর্তৃক তাদের কাফির-মুশরিক প্রভূদের প্রতি আনুগত্যেরই চরম বহিঃপ্রকাশ। 

মূলতঃ ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হলো সেটা হচ্ছে শুধুমাত্র চেহারার পরিবর্তন কোনদিনই রাষ্ট্রের প্রকৃত পরিবর্তন আনে না। জনগণকে শুধুমাত্র যালিম শাসকই নয়, পশ্চিমা দালালগোষ্ঠী ও পশ্চিমা ব্যবস্থা- যা যালিম জন্ম দেয়, তা পরিবর্তন এবং আল্লাহ্‌ প্রদত্ত ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থার বাস্তবায়নকে তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। তবেই প্রকৃত মুক্তির স্বাদ আমরা উপভোগ করতে পারবো।

    -    জাবির জোহান


Previous Post Next Post