খবরঃ
হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন, নিষিদ্ধ হওয়ারই কথা। কারণ, যে সংগঠনটা বাংলাদেশে বসে বলে যে তারা খিলাফত কায়েম করতে চায় তাদের বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে অপারেট করার কোন অধিকার নেই, ফুলস্টপ। যারা সংবিধানের চৌহদ্দির মধ্যে থেকে, নির্বাচনি ব্যবস্থা মেনে নিয়ে রাজনীতি করবে তাদের রাজনৈতিক অধিকার আছে। হিযবুত তাহরীরের মিছিলে গেরুয়া পতাকা দেখার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকা শহরে আমরা দেখেছি কালো ও গেরুয়ার মিশেলে একটা পোস্টার। হিযবুত তাহরীরের সাথে ভারত-তো জড়িত আছেই, কারণ হিযবুত তাহরীরের মাঠে নামা ভারতের ন্যরেটিভকে আরো শক্তিশালী করে; যে বাংলাদেশ জঙ্গীবাদিদের খপ্পরে পরেছে, দখলে গেছে। হিযবুত তাহরীরকে কেন্দ্র করে সামনে আরো ঘটনা ঘটবে। এবার তাদেরকে দেখানো হল ‘মার্চ ফর খিলাফত’ নামে, ভবিষ্যতে অন্যকোন ফরমেটে তাদেরকে মাঠে রাখা হবে। (https://www.youtube.com/watch?v=0UgZ6HD5otU)
মন্তব্যঃ
হিযবুত তাহরীরের জনসমর্থন ও সাহসীকতা প্রত্যক্ষ করে এবং হিযবুত তাহরীরের রাষ্ট্রচিন্তা ও বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্বশীল জাতি হওয়ার রূপরেখাকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে সেকুলার বুদ্ধিজীবীদের মাথা পুরোপুরি আউলিয়ে গিয়েছে। সত্যমিথ্যা-ভালমন্দের সঠিক জ্ঞানতো তাদের কোন কালেই ছিলনা, এখন সাদা-কালোর মধ্যে পার্থক্য করতে পারার স্বাভাবিক জ্ঞানটুকুও তাদের লোপ পেয়েছে। তা না হলে “হিযবুত তাহরীরের সাথে ভারত-তো জড়িত আছেই” এমন উদ্ভট ও ভূতুড়ে মন্তব্য কেউ কিভাবে করতে পারে!! কারণ, হিযবুত তাহরীরকে শুধুমাত্র ভারতবিরোধী বললেও ভুল হবে, হিযবুত তাহরীর হল বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণার দাবি সহ ভারতবিরোধী কঠোর রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করে আসছে। এবং ভারতকে পুনরায় ইসলামী শাসনের অধীনে নিয়ে আসার মত দু:সাহসিক বক্তব্য এবং ভারতবিজয়ের রূপরেখাও প্রদান করেছে! ফলে, হিযবুত তাহরীরের ভয়ে ভীত হয়ে ভারত তার অনুগত দাস ‘খুনি হাসিনাকে’ দিয়ে বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করেও আশ্বস্ত হতে পারেনি, কিছুদিন আগে তার নিজ দেশ ভারতেও দলটির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার জন্য হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করে এর পথরোধ করার চেষ্টা করছে। এই বাস্তবতায় হিযবুত তাহরীরের সাথে ভারতের সম্পৃক্ততার দাবিটি ‘খুনি হাসিনাকে’ আশ্রয়দানকারী মিথ্যার নানা কলাকৌশলে পারদর্শী ভারতের মুশরিক সরকারের জন্যও হজম করা কঠিন!
বাস্তবতা হল: হিযবুত তাহরীর স্পষ্টভাবে বলে আসছে এই অন্তর্বর্তী সরকার হল আমেরিকা-ভারতের দালাল এবং এই সরকারের মৃদু ভারতবিরোধী বক্তব্য হল জনগণের নিকট থেকে সরকারের ভারত-প্রেমকে লুকিয়ে রাখার অপপ্রয়াস। খুনি হাসিনাকে আশ্রয়দানকারী ভারতের কাছে কৈফিয়ত চাওয়ার পরিবর্তে এই সরকার ভারতের সাথে সামরিক সম্পর্ককে জোড়দার করার উদ্যোগ নিয়ে নৌ মহড়া আয়োজন করেছে। হাসিনার সময় ভারতের সাথে করা সকল দেশবিরোধী চুক্তি এই অন্তর্বর্তী সরকার বহাল রেখেছে। তারা ভারতীয় দূতাবাসকে বাংলাদেশে এখনো তাদের ঘৃণ্য ও শত্রুতাপূর্ণ অপতৎপরতা বজায় রাখতে দিয়েছে। হিযবুত তাহরীরের বিগত দুই যুগের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর “দিল্লী না ঢাকা?” এই প্রশ্নে জনগণ দিল্লীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার পর এখন জনগণের সেই ভারতবিরোধীতার উপর ভর করে যেসকল বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ঠোঁট-বাকিয়ে ভ্রু-নাচিয়ে হিন্দুত্ববাদী ভারতের সাথে হিযবুত তাহরীরের যোগসাজশের মিথ্যা ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে তাদের মুখোশ অচিরেই খসে পড়বে এবং জনগণের সামনে তারা ঘৃণার পাত্রে পরিণত হবে।
খিলাফতের দাবিতে মিছিল হলে, শরিয়াহর দাবিতে তাওহিদী-জনতা রাস্তায় নেমে আসলে প্রকৃতপক্ষে এই দালাল শাসক ও বুদ্ধিজীবিরা তাদের নিজেদের জনবিচ্ছিন্নতার জন্য হীনমন্মতায় ভোগে। তাদের এই হীনমন্মতা বোধ থেকে তারা জনগণকে প্রবোধ দেওয়ার জন্য বলে ইসলামী ঘরনার মানুষ রাস্তায় নামলে আমেরিকা-ভারত মনে করবে দেশে ইসলামপন্থীদের উত্থান ঘটেছে, তখন দেশের ক্ষতি হবে। বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উত্থান হয়নি ভারত-আমেরিকাকে এটা বোঝানোর জন্য কি জনগণ নামাজ-রোযা ছেড়ে দিবে? ইসলামী শাসনব্যবস্থা খিলাফতের আকাঙ্খা ও দাবি পরিত্যাগ করবে? ভারত বা আমেরিকা অপছন্দ করবে এর জন্য কী জনগণ তাদের ঈমানকে বিসর্জন দিবে? প্রকৃতপক্ষে জনগণ কখনোই তাদের ইমান-আক্বীদা পরিত্যাগ করবে না, বরং ইসলামী শাসনব্যবস্থা বাস্তবায়ন করার পর হিযবুত তাহরীরের সুযোগ্য নেতৃত্বে এই ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য জনগণ যেকোন বিদেশী শক্তিকে মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত।
- রিসাত আহমেদ