খবরঃ
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়, আমরা ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না বাংলাদেশ, ওই যে বললাম, বাংলাদেশ অপূর্ব একটা দেশ। সে দেশে যারা আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলি। আমাদের দেখে লোকে হাততালি, এরা এসেছে। বাংলাদেশ নেমেছে এবার। (www.ittefaq.com.bd/723699/আমরা-দুনিয়ার-মাঠে-খেলার-খেলোয়াড়-ছোট-মাঠের-না)
মন্তব্যঃ
আমরা বড় মাঠের খেলোয়ারের নামে উনি মুলতঃ আমাদেরকে বড় মাঠের খেলোয়ারদের পানি, ওষুধ, হাত-পা মেসেজকারী হওয়ার কথা বলেছেন! তিনি বলছেন আমরা বড় মাঠের খেলোয়াড় অথচ তিনি স্বীকার করছেন আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচারে সময় লাগবে, দলটিকে নিষিদ্ধ করা যাবে না। পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারত ও হাসিনা সরকার জড়িত এই সত্য উন্মোচনের পরও তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাতে কোন অগ্রগতি নেই। উনি কি গত ১৫ বছরের গুম-খুন-নির্যাতনসহ জুলাই হত্যাকান্ডের হোতা হাসিনাকে আশ্রয় দানের জন্য ভারতকে জবাবদিহি করতে পেরেছেন? ভারতের সাথে হাসিনার করা দেশবিরোধী চুক্তিগুলো বাতিল করতে পেরেছেন? উল্টো এখন আমরা দেখি, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের কারণে মার্কিন দুতাবাস এখন সরাসরি নটরডেম কলেজকে ফোন দিয়ে ছাত্র বহিষ্কার করায়। কুখ্যাত এফবিআই সরাসরি এখন সিটিটিসিকে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ট্রেনিংয়ের কথা দুঃসাহস দেখায়, যা হাসিনার কুখ্যাত আয়নাঘরের কথা মানুষকে স্মরণ করায়। যার ধারাবাহিকতায় এখন কুরআন নাযিলের মাসে কুরআনের শাসন খিলাফত র্যালির উপর বর্বর হামলা হয়। গাজায় ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদ করায় ইসলামপ্রিয় ছাত্র-জনতাকে গ্রেফতার করা হয়। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এখন সরাসরি বাংলাদেশে এসে আরাকান আর্মির যুদ্ধ পরিচালনা করে। (রাখাইন রাজ্যে আরাকান সেনার অভিযানের আগে ঢাকায় আসছেন শীর্ষ মার্কিন জেনারেল (দৈনিক মানবজমিন, ২৪ মার্চ, ২০০৫)। প্রধান উপদেষ্টা এখন রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিজ ভূখন্ড ফিরিয়ে না দিয়ে বরং জাতিসংঘের অধীনে বাফার জোনের কথা বলে মার্কিন ভূরাজনৈতিক স্বার্থের আলোকে কথা বলছেন।
আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বর্তমান পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার অধীনে কখনোই আমরা বড় মাঠের খেলোয়ার হতে পারবো না। এই বিশ্বব্যবস্থায় বড় মোড়লের স্বার্থের জন্য অন্য সবার স্বার্থ বিসর্জন দিতে হয়। যেমন ইউক্রেনের জেলেনস্কিকে আন্তর্জাতিক মাঠের বড় খেলোয়াড়ের বলে আমেরিকা নিজস্ব স্বার্থে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে নামিয়ে দেশটিকে শেষ করে দিয়েছে। বড় মাঠের খেলোয়ার হতে হলে আমাদেরকে গোলামীর পশ্চিমা আদর্শ ত্যাগ করে ইসলামকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করতে হবে। কারণ ইসলামের আদর্শ মানুষকে অন্য মানুষের স্বার্থপুরণের বা গোলামীর ফাঁদ থেকে মুক্ত করে সত্যিকারের নেতৃত্বশীলতার দিকে নিয়ে যায়, সত্যিকারের সমস্যার সমাধানকারীতে পরিণত করে। খিলাফতের শাসনের ১৪০০ বছরে আমরা আন্তর্জাতিক মাঠের খেলোয়ার ছিলাম। বর্তমান পরাশক্তি আমেরিকা ভূমধ্য সাগরে চলাচলের জন্য আমাদের ট্যাক্স দিয়ে চলতে হতো। ইউরোপের সীমানাগুলো মুসলিম সামরিক বাহিনীর ভয়ে ভীত থাকতো। ইউরোপীয়ান যখন ইহুদীদের নিধন করছিল তখন আমরা ইহুদীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছি। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে কাফিররা কুরআন কিংবা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কিংবা মুসলিমদের আক্রমণের পূর্বে শতবার চিন্তা করতো। আল্লাহ্’র ইচ্ছায় রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী খুব শীর্ঘই আবার আমরা বড় মাঠের বড় খেলোয়ার হতে পারবো, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার জন্য পৃথিবীকে সংকুচিত করে দিয়েছেন (নিকটবর্তী করে দেওয়ার অর্থে) এবং আমাকে এর পূর্ব ও পশ্চিম সীমানা দেখানো হয়েছে। আর যতটুকু আমার জন্য সংকুচিত করা হয়েছে, ততটুকুতে অচিরেই আমার উম্মতের রাজত্ব বিস্তার লাভ করবে” (আবু দাউদ: ৪২৫২)। অতঃপর যারা বড় স্বপ্ন দেখতে চায়, বড় সফলতা চায় তারা যেন ইসলামের আদর্শ প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে।
- মোহাম্মদ তালহা হোসেন