তুলশী গ্যাবার্ডের সামনেই এবার ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতন!

 



খবরঃ

সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলশী গ্যাবার্ড। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্প প্রসাশনের উদ্বেগের কথাও জানান তিনি। ভারতের পক্ষ নিয়ে যেভাবে তাদের মিথ্যা ছড়ানো প্রোপাগাণ্ডা নিয়ে কথা বলেছেন এবার সেই ভারতে বসেই তিনি দেখলেন কিভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা।… ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিম নিধনের জন্য নিজ দেশেই পরিচিত কসাই হিসেবে।… ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিম নিধনের জন্য নিজ দেশেই পরিচিত কসাই হিসেবে।… অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর ছাড়াও মুসলমানদের ওপর নেক্কারজনক হামলার ঘটনাও ঘটায় তারা। বর্তমানে সেখানে কারফিউ চলছে। এখন কি এসব দেখবেন তুলশী গ্যাবার্ড? নাকি তিনি এরপরও গলা ফাটাবেন মুসলিম নিধনকারী উগ্রবাদের জনক নরেন্দ্র মোদির হয়ে?... (https://dailyinqilab.com/international/news/744142)

মন্তব্যঃ

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি যদি মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তথাকথিত মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখত, তাহলে সে ভারতে অব্যাহতভাবে এমনকি তার সফরকালীন সময়ে সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতন নিয়েও কথা বলতো। ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকান্ডের বিষয়েও সে ভারতকে জবাবদিহিতা করত। কিন্তু সে এগুলো কোনটাই না করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রোপাগান্ডায় অংশগ্রহণ করেছে। যেসব রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবিরা জনগণের সামনে ফেরী করে বেড়িয়েছিল যে, আমেরিকা ফিলিস্তিনের গণহত্যায় মদদ দিলেও এখানে ভারতকে মোকাবেলায় আমাদেরকে সহায়তা করবে! তুলসী গ্যাবার্ডের এই বক্তব্যের পর তারা এখন কি বলবেন? মুলতঃ পুঁজিবাদী বিশ্বের মোড়ল আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমারা বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। এই যুদ্ধে ভারত হচ্ছে এই অঞ্চলে মার্কিনীদের আঞ্চলিক চৌকিদার, যেমনটি ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যে। মার্কিন সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের এই নীতির পরিবর্তন হয় না, তাই স্বাভাবিকভাবে আমেরিকা বাংলাদেশবিরোধী ও ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডে ভারত কিংবা ইসরায়েলের পাশে থাকবে, আর ভারত-ইসরায়েলসহ বিশ্বব্যাপী মুসলিম গণহত্যা ও নির্যাতনে নীরব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। 

মূলত, বর্তমান সেক্যুলার বিশ্ব ব্যবস্থায় কোন দেশে ধর্মীয় কিংবা বর্ণগত সংখ্যালঘুদের উপস্থিতিকে একটি রাজনৈতিক বা ভূ-রাজনৈতিক কার্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ কার্ডটি খেলা হয়, কোন দেশে উপনিবেশবাদী কিংবা আধিপত্যবাদীদের হস্তক্ষেপের অজুহাত হিসেবে। যেমনটি বাংলাদেশের অমুসলিম নাগরিকদের উপস্থিতিকে মার্কিন-ভারতীয় আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী এখানে হস্তক্ষেপের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। অথবা, এই সংখ্যালঘু কার্ড খেলা হয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠদের উস্কানি দিয়ে নির্বাচনের তাদের (সংখ্যাগরিষ্ঠদের) ভোট নিজেদের পক্ষে আনার মাধ্যমে। যেমনটি ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার করছে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠদের উস্কানি দিয়ে। এমনকি এটা খোদ আমেরিকাও করছে (https://www.kalbela.com/world/united-states/77928)। 

অথচ, খিলাফত ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে এ ধরনের জুলুমের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। কারণ আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার নির্দেশ হলো, “হে মু’মিনগণ! তোমরা ন্যায়ের সাক্ষ্যদাতা হিসেবে আল্লাহ্‌’র পথে দৃঢ়ভাবে দন্ডায়মান থাক, কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা তোমাদেরকে যেন এতটা উত্তেজিত না করে যে তোমরা ইনসাফ করা ত্যাগ করবে, সুবিচার কর, এটা তাক্বওয়ার নিকটবর্তী” (সুরা মায়েদাঃ ৮)। ইসলামে ‘সংখ্যালঘু’ কার্ড দূরের কথা, ‘সংখ্যালঘু’ দৃষ্টিভঙ্গীর কোন অস্তিত্ব নেই। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে দেখা হয় এবং আল্লাহ্‌’র নির্দেশ অনুযায়ী সকল মানুষের ধর্মীয় অধিকার পূরণ করা হয়। তাই সেক্যুলার সিস্টেমের অপসারণ করে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা নির্দেশিত ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমেই এই ‘সংখ্যালঘু’ নামক জুলুমের খেলার অবসান করে বর্তমান বিশ্ববাসীকে মুক্তি দেয়া সম্ভব।

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post