অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ নীতি হচ্ছে প্রো-বাংলাদেশ: প্রেস সচিব



খবরঃ 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ নীতি হচ্ছে প্রো-বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বার্থ যতটুকু অক্ষুণ্ন রাখা যায়, কূটনীতিতে আমরা সেটাই করছি। (www.tbsnews.net/bangla/bangladesh/news-details-331896)

মন্তব্যঃ

এই ‘প্রো-বাংলাদেশ’ মূলতঃ ‘প্রো কলোনিয়ালিস্ট’ শব্দটিরই প্রচ্ছন্ন সমার্থক। আইএমএফের কথায় সাধারণ মানুষের উপর কর বৃদ্ধি করা; নিজের দেশের মাটির নিচে থাকা গ্যাস তোলার সক্ষমতা অর্জনের কোন চেষ্টা না করে আমেরিকার অজ্ঞাত, অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ এক কোম্পানীর (আর্জেন্ট এলএনজি) কাছ থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি ক্রয়ের চুক্তি করা; রাষ্ট্রের অর্থনীতির স্বনির্ভরতার রোডম্যাপ না দিয়ে বরং দেশকে বিদেশী বিনিয়োগের হটস্পট বানানো; চীনকে ঠেকাতে মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে মার্কিনীদের গুটি হিসেবে ব্যবহারের ষড়যন্ত্র, ইত্যাদি কার্যাবলী প্রমাণ করে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বিগত সরকারের মত মুখে ‘প্রো-বাংলাদেশ’ কিন্তু কাজেকর্মে ‘প্রো-কলোনিয়ালিস্ট’। হাসিনা সরকার ছিল বৃটেন-ভারত অনুগত, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমেরিকার অনুগত। ‘প্রো-বাংলাদেশ’ হলো প্রতারণামূলক রেটোরিক (কথার কথা)। 

কোন উপনিবেশিক রাষ্ট্রের আজ্ঞাবহ থেকে কখনোই স্বাধীন অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র নীতির চর্চা করা যায় না, কারণ এই রাষ্ট্রগুলোর কাজই হলো উপনিবেশিক রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষা করা। তাই যতদিন আমাদের শাসনের কর্তৃপক্ষ এমন লোকদের হাতে থাকবে যাদের উপর উপনিবেশিক দেশসমূহের ব্যাপক প্রভাব ততদিন আমরা সম্মানের সাথে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবো না। তাই, প্রকৃতঅর্থে প্রো-বাংলাদেশ হতে প্রথমে উপনিবেশিক রাষ্ট্রসমূহের বলয় হতে বের হতে হবে। আর উপনিবেশিক রাষ্ট্রসমূহের বলয় হতে বের হলে দেশকে উপনিবেশিক পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা ও তাদের দালাল শাসক মুক্ত করতে হবে। আমাদের নিজস্ব শাসনব্যবস্থা তথা ইসলামের ভিত্তিতে দেশকে দাড় করানোর মাধ্যমেই তা অর্জন সম্ভব। ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফত রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, ইসলামের ন্যায়ের শাসনের আলোয় কোন অঞ্চলকে আলোকিত করা এবং এই পথে বাধাসমূহ অপসারণ করা। কোন উপনিবেশিক রাষ্ট্রের নয় বরং আল্লাহ্‌’র প্রতিনিধি হিসেবে খলিফা শুধু নিজের অধিকৃত অঞ্চল না, পুরো বিশ্বের সমস্যার সমাধানে মনোনিবেশ করবেন। এই মানসিকতাই খিলাফতকে নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ইতিহাসের পাতায় গেলে আমরা দেখতে পাই যে ইসলামের ছায়াতলে থাকা এরকম কোন অঞ্চল ছিল না যেই অঞ্চলগুলো অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন – ইত্যাদি কোন দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল। বাগদাদ, ইরাক, কর্ডোভা, কায়রোর মত অঞ্চলগুলো ছিল খুবই অনুন্নত যা পরবর্তীতে খিলাফতের অভ্যন্তরে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্পের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে। “তোমরাই উত্তম জাতি, মানবজাতির জন্যই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজ থেকে বিরত রাখো এবং আল্লাহ্‌’র প্রতি ঈমান রাখো” [আলি-ইমরানঃ ১১০]

    -    জাবির জোহান

Previous Post Next Post