আমার টাকায় গাজায় যেন বোমা না ফেলে, ইসরাইলের পণ্য বয়কটের ডাক

 


খবরঃ

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের লাগাতার আগ্রাসন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ এবং গাজায় ইসরাইলি হত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্থানীয় জনগণ, মুসল্লি, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে অংশ নেন। কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল- ইসরাইলি পণ্য বর্জনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা।… (https://www.ittefaq.com.bd/726567/‘আমার-টাকায়-গাজায়-যেন-বোমা-না-ফেলে-ইসরাইলের-পণ্য)

মন্তব্যঃ

মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব হচ্ছে ফিলিস্তিনে গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের মদদাতা ও নির্দেশদাতা। এ গণহত্যাকারী গ্যাং-গুলোর সবচেয়ে শক্তিশালী পণ্য হচ্ছে ‘সেকুলারিজম’ যা তারা তাদের স্বার্থে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের রপ্তানি করে। এই সেকুলারিজম আমাদের পশ্চিমা ভোগবাদী লাইফস্টাইল, শাসনকার্যের জন্য গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদকে নির্ধারণ করে দেয়। তাই কোমল পানীয়, রেস্টুরেন্ট, জুতা সহ বিভিন্ন পণ্য থেকে ইসরায়েল ও তাকে গণহত্যায় মদদদাতা গ্যাং-গুলো উপকৃত হলেও, তারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় ‘সেকুলারিজম’ নামক পণ্য রপ্তানি করে। সেকুলারিজমকে তারা যার-যার ধর্ম তার-তার কাছে এই ‍সুমিষ্ট মোড়কে উপস্থাপন করে, অথচ প্রকৃতপক্ষে এর মাধ্যমে তারা ইসলামকে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে, এবং বোঝায় যে, ইসলাম শুধু ব্যক্তিগত কিছু আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়, সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনের সাথে আখিরাতের কোন সম্পর্ক নাই, তাই দুনিয়াটা মস্ত বড় খাও-দাও ফূর্তি করো! যেহেতু ইসলাম জনগণকে নিজেদের শাসক নির্বাচনের নির্দেশ দেয় (যিনি জনগণকে আল্লাহ্‌ প্রদত্ত শারী‘আহ্‌ বিধান দ্বারা শাসন করবেন), এই সুমিষ্ট মোড়কেই তারা তাদের বিষাক্ত ‘গণতন্ত্র’কে বিভিন্ন মুসলিম দেশে রপ্তানি করে এটা বুঝিয়ে যে, গণতন্ত্র আর ইসলাম সাংঘর্ষিক নয়; যদিও প্রকৃত সত্য হচ্ছে, গণতন্ত্রে বিধান প্রণেতা আল্লাহ্‌’র পরিবর্তে জনপ্রতিনিধিরা। এই জনপ্রতিনিধিরা পশ্চিমা শক্তিসমূহের প্রতি অনুগত এবং তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যার প্রমাণ আমরা গাজায় গণহত্যায় এসব জনপ্রতিনিধি নামক পশ্চিমা অনুগতদের পাথরসম নীরবতায় আমরা লক্ষ্য করছি  (পড়ুন, রাজনীতিতে ভারত ও অন্যান্য বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব - বাংলাদেশে এটা কেন ও কীভাবে হয়?)। তারা আল্লাহ্‌ নির্ধারিত হালাল-হারামের সীমা লংঘন করে, নিজেদেরকে রবের আসনে বসিয়ে জনগণের জন্য ‘কোনটি বৈধ, কোনটি অবৈধ’ তা ঠিক করে দেয়: “যারা আল্লাহ্‌’র নাযিলকৃত বিধান দিয়ে বিচার করে না, তারা যালেম” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৪৫]। 

তাই আমেরিকা এবং অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের সকল পণ্য বয়কটের সাথে সাথে এই ‘সেকুলারিজম’ নামক বিষাক্ত পণ্যটিও বয়কট করা দরকার। আমরা তাদের বিরুদ্ধে শ্লোগাণ দিয়ে যদি আবার তাদের জীবনাদর্শকেই ধারণ করি, তবে কি সেটা দ্বিচারিতা হবে না? এই বিষাক্ত পশ্চিমা ক্যান্সারটিকে আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে এবং সেটাকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম” [সূরা মায়িদা, আয়াত: ৩]।

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post