খবরঃ
পাকিস্তান সরকার দেশটির বর্তমান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে পদোন্নতি দিয়ে ফিল্ড মার্শাল করেছে। ফিল্ড মার্শাল পদটি অত্যন্ত বিরল এবং সর্বশেষ এই পদটি ১৯৫৯ সালে জেনারেল আয়ুব খানকে প্রদান করা হয়েছিল। পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুসে’ তার সাহসী নেতৃত্ব, দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শত্রুদের পরাজিত করতে উচ্চমানের কৌশলের কারণে জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। (https://samakal.com/international/article/296536/ফিল্ড-মার্শাল-হলেন-পাকিস্তানের-সেনাপ্রধান-আসিম-মুনির)
মন্তব্যঃ
ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সামরিক অভিযানে প্রেরণের গণদাবীতে বিক্ষুব্ধ পাকিস্তানের মুসলিমদেরকে “মিথ্যা” বিজয়ের স্বাদ দিতে এবং আমেরিকার ভূরাজনৈতিক স্বার্থে ‘নিয়ন্ত্রিত’ সামরিক অপারেশন করে তথাকথিত ‘হিরো’ হয়েছে আমেরিকার দালাল জেনারেল আসিম মুনির। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মধ্যম সারির অফিসারদের অসম সাহসিকতা ও শহীদ হওয়ার আকাঙ্খার উপর ভর করে পাকিস্তান যখন ভারতের দখল থেকে কাশ্মির মুক্ত করার দ্বারপ্রান্তে ঠিক তখনই এই ঘৃণ্য দালাল এই সামরিক অভিযানকে মাঝপথে সমাপ্তি ঘোষনা করে কাশ্মিরের নির্যাতিত মুসলিম ও পুরো উম্মাহ্’র সাথে নিষ্ঠুর উপহাস ও প্রতারণা করেছে। তাই আল্লাহ্’র কাছে তার ইনসিগনিয়া ও মেডেলের ভারে ন্যুজ সামরিক পোশাক এবং তার ফিল্ড মার্শাল র্যাঙ্কের নূন্যমত কোন মূল্য নাই। বরং সামরিক চেইন অব কমান্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে থাকার কারণে শেষ বিচারের দিন আল্লাহ্ তাকে কঠোর জবাবদিহিতা ও শাস্তির মুখোমুখি করবেন।
শুধু পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ সহ অন্যান্য মুসলিম সামরিক বাহিনীর অফিসারদের চাকুরী ও বিভিন্ন অসামরিক চাকুরী শারী‘আহ’র দৃষ্টিতে এক নয়। মুসলিমদের রক্ত পানি করা ইনকামের টাকায় সেনাবাহিনীর অফিসারদের বেতন ও সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়, এজন্য যে এই অফিসাররা তাদের জীবন দিয়ে হয়েও ইসলাম ও মুসলিমদেরকে কাফির-মুশরিকদের ক্ষতির হাত থেকে নিরাপত্তা প্রদান করবেন। ধনীর জন্য যেমন অর্থসম্পদ হলো তার জন্য আল্লাহ্’র পক্ষ থেকে পরীক্ষা এবং তা কিভাবে ব্যবহার করেছে এর জন্য তাদেরকে জবাবদিহীতা করা হবে। ঠিক তেমনিভাবে, সামরিক কমান্ড হলো সেনাঅফিসারদের জন্য আল্লাহ্’র পক্ষ থেকে পরীক্ষা, এই সামরিক কর্তৃত্ব তারা কোন কাজে ব্যবহার করেছে তার জন্য আল্লাহ্ তাদেরকে কঠোর জবাবদিহীতার মুখোমুখি করবেন। তাই কাফির সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা-বৃটেন-ভারত এবং তাদের এদেশীয় দালালগোষ্ঠীর শয়তানী স্বার্থে, কিংবা র্যাঙ্ক ও অর্থের লোভে নিজেদের সামরিক কমান্ড বা কর্তৃত্বকে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহারের আগে সেনাঅফিসারদের অবশ্যই পরকালে আল্লাহ্’র কঠোর জবাবদিহীতা এবং জাহান্নামের আগুনকে ভয় করা উচিত।
বর্তমানে কর্মরত সেনাঅফিসারদের পূর্বে আরো হাজার হাজার সেনাঅফিসার তাদের কর্মজীবন শেষ করে গত হয়ে গিয়েছেন, যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ্’র স্বার্থে তাদের সামরিক কমান্ড বা কর্তৃত্বকে ব্যবহার করেননি। তারা তাদের র্যাঙ্ক ও ডেকোরেশন সহ ইতিহাসের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছেন, তাদের সম্পদের উত্তরাধিকারীরাও তাদেরকে মনে রাখেনি। বরং, মুসলিম উম্মাহ্’র সাথে বেঈমানী করার কারণে তাদের অনেকের উপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও সকল মুসলিমদের লা’নত বর্ষিত হয়েছে। বর্তমানে কর্মরত অফিসাররা যদি মুসলিম উম্মাহ্’র একমাত্র রক্ষাকবচ ও অভিভাবক খিলাফত শাসনব্যবস্থা পুণ:প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাদের সামরিক কর্তৃত্বকে কাজে না লাগায়, তাহলে তারাও একদিন গত হয়ে যাবেন এবং শেষ বিচারের দিনে ফিলিস্তিন ও আরাকানের মুসলিমদের এক সমুদ্র রক্তের প্রতিটি ফোঁটার হিসাব দিতে দিতে হয়রান ও নিঃশেষ হয়ে যাবেন; কিন্তু কোন পরিত্রাণ মিলবে না। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ আমাদেরকে সতর্ক করে বলেন: “(তারা বলবে) হে প্রভু! আমাকে আবার (দুনিয়ায়) ফেরত পাঠান, যেন আমি আপনার আদেশ পালন করতে পারি, যার ব্যাপারে দুনিয়ার জীবনে আমি ছিলাম অবাধ্য। (আল্লাহ্ বলবেন): কক্ষনোই না, (তাদের) এই প্রার্থনা কেবল একটা নিষ্ফল প্রলাপ মাত্র। [সূরা মু’মিন: ৯৯-১০০]।
- রিসাত আহমেদ