খবরঃ
করিডোর দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।… (https://dailyinqilab.com/politics/news/763379)
মন্তব্যঃ
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের বিভিন্ন ন্যায্য দাবী পূরণে আন্তরিক না হলেও, মার্কিন স্বার্থে করিডোর ও বন্দর দেয়ার ব্যাপারে বেশ আন্তরিক। এসব ব্যাপারে প্রশ্ন করলে, তারা বলছে তাদের নাকি ‘এভ্রিথিং করার ম্যান্ডেট’ আছে, তারা ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার’। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের জনগণের কোনো অংশ কি মার্কিন স্বার্থে করিডোর ও বন্দর দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে? কিংবা এই দাবীতে যমুনা ঘেরাও করেছে? বরং এই করিডোর প্রদান করাকে কেন্দ্র করে সমগ্র দেশের মানুষ বেশ উদ্বিগ্ন, কারণ দেশের মানুষ আশঙ্কা করছে, এই করিডোর দিয়ে মার্কিন সমর্থিত আরাকান আর্মিকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানো হবে (https://www.jugantor.com/tp-firstpage/947360)। আর আরাকান আর্মিও বর্তমানে প্রয়োজনীয় রসদের অভাবে কোনঠাসা অবস্থায় আছে ও প্রতিনিয়ত শক্তি হারাচ্ছে। অন্যদিকে এটা সুস্পষ্ট যে, মার্কিনীদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্ন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ সেই রাষ্ট্রের জন্য কখনো কল্যাণ বয়ে আনেনি। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তানের প্রায় ৯০ হাজার মুসলিম বলি হয়েছে এবং ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে (https://www.bd-bulletin.com/news/122836)। উল্লেখ্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে মার্কিন সমর্থিত কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকতা দেয় (বার্মা এ্যাক্ট অনুযায়ী, ‘যারাই মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র মারণাস্ত্র নয় (নন লেথাল)-এমন সহায়তা দেওয়াকে উৎসাহিত করবে’) (https://asia.nikkei.com/Opinion/U.S.-nonlethal-aid-for-Myanmar-s-ethnic-armies-likely-to-backfire)
যাইহোক, বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্ফালনে ইতিমধ্যে দেশের মানুষের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তাই, বিতর্ক হওয়া উচিত মার্কিন স্বার্থে তাদেরকে করিডোর দেওয়া হবে কি হবে না! সেটা না করে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে করিডোর কে দিবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নাকি নির্বাচিত সরকার? প্রকৃতপক্ষে, করিডোর বা বন্দর প্রদান করা যদি উত্তম কাজ হয়, তাহলে তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেওয়া কিংবা নির্বাচিত সরকার দেওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি? আর সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতেও যদি বলা হয় মার্কিনীদের স্বার্থে আমাদের করিডোর দেওয়া উচিত, তাহলেও তা জায়েজ হয়ে যায় না। কারণ, ইসলামী বিধান অনুযায়ী, আমেরিকা-বৃটেন-অবৈধ ইসরাইল-ভারত যারা মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত ও মুসলিম ভূখন্ড দখল করে রেখেছে তাদেরকে ‘শত্রু রাষ্ট্র’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাদের সাথে যুদ্ধ চালানো এবং তাদের কবল থেকে ভূখন্ড মুক্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী, তাদের সাথে এমন চুক্তি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা তাদেরকে মুসলিমদের উপর কর্তৃত্ব স্থাপনের সুযোগ করে দিবে। এমনকি তাদের দূতাবাসও ইসলামী রাষ্ট্রে স্থাপনের অনুমোদন নেই, কারণ এটি ব্যবহার করে তারা কোন রাষ্ট্রে তাদের প্রভাব বিস্তার করে। আর আমাদের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপনের জন্য, তাদেরকে বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়া কিংবা তাদের সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে করিডোর প্রদান করা তো কখনোই সমীচিন নয়। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আর কিছুতেই আল্লাহ্ মুসলিমদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথকে মেনে নিবেন না” [সূরা নিসা: ১৪১]।
- মোঃ জহিরুল ইসলাম