খবরঃ
ক্যাথলিক চার্চের প্রধান পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশ সরকার আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এই সময়কালে (বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত) সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। প্রয়াত পোপের জন্য বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হবে। (https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-668426 )
মন্তব্যঃ
শুধু রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণাই নয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস নিজে ইতালিতে উড়ে গেছেন পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য। অথচ মাত্র কিছুদিন আগে গত ১২ই এপ্রিল দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন ফিলিস্তিনে মুসলিমদের গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ র্যালিতে ঢাকার রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তখন তিনি কিংবা তার সরকারের কেউ সেখানে যাননি, এমনকি কোন বিবৃতি দিয়েও একাত্মতা প্রকাশ করেনি। বরং তার সরকার ‘বিনিয়োগ সম্মেলন’ চলাকালীন সময়ে কেন ইসরায়েল-আমেরিকা বিরোধী বিক্ষোভগুলো হয়েছে তা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছে। তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “একটা জিনিস লক্ষ্য করছি, যখনই আমরা একটা ভালো কাজ করতে গেছি, হঠাৎ করে নানারকম সমস্যার উদ্ভব হয়েছে”।
কাল পরিক্রমায় এখন এটা স্পষ্ট যে, দীর্ঘসময় পশ্চিমাগোষ্ঠীর জন্য কাজ করতে করতে ধর্মনিরপেক্ষ শাসক, রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবিদের আবেগ-অনুভুতিগুলোও পশ্চিমাদের মতই হয়ে গেছে। এজন্যই আমরা দেখেছি, হাসিনাকে সেই বৃটেনের রানীর জন্য রাষ্ট্রীয় শোক পালন করতে এবং স্বশরীরে শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করতে, যেই বৃটেন আমাদেরকে ২০০ বছর শোষণ করেছিল এবং মুসলিম উম্মাহ্’র অভিভাবক খিলাফত রাষ্ট্র ধ্বংসে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এখন আমরা দেখছি, প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসকে সেই পোপের জন্য শোক প্রকাশ করতে ও পশ্চিমা কাফির নেতৃবৃন্দের সাথে ভ্যাটিকানে একাত্মতা প্রকাশ করতে যে পোপরা শতশত বছরজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো ধর্মযুদ্ধ তথা ক্রুসেডের নেতৃত্ব দিয়েছে। তৎকালীন পোপ দ্বিতীয় আরবান ছিল প্রথম ক্রুসেড যুদ্ধের মূল উদ্যোক্তা ও মাষ্টারমাইন্ড যার ফলে মুসলিমরা ১০৯৯ সালে প্রথমবারের মত রোমানদের কাছে বায়তুল মাক্বদিসের নিয়ন্ত্রণ হারায়। সে সময় তারা বায়তুল মাক্বদিসে ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। মানুষের রক্তে ঘোড়াগুলোর পা ডুবে গিয়েছিল।
যদিও এখনকার পোপদের সরাসরি কোন হার্ড পাওয়ার নেই কিন্তু এটি এমন একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান যা এখনো রোমান তথা পশ্চিমাদের ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ও ঐক্যের একটি শক্তিশালী সফট পাওয়ার হিসেবে কাজ করে। বৃটিশরা ইসলামের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগ নেয় যাকে পুরো কাফির পশ্চিমা গোষ্ঠী লালন-পালন করছে, সুরক্ষা দিচ্ছে। এই নিরন্তর যুদ্ধের কথা প্রকাশ পায় যখন ফরাসী জেনারেল হেনরি গোওরদ ১৯২০ সালে দামাস্কাস দখল করেই সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবির কবরে লাথি মেরে অহংকারের সাথে বলেছিল, “Arise Saladin, We have returned. And my presence here consecrates the victory of the cross over the crescent”।
হাসিনা কিংবা ইউনুস মুসলিম বিশ্বে পশ্চিমাদের দ্বারা লালিত-পালিত ও গড়ে উঠা এসব শাসকরা এভাবে বারবার প্রমাণ করেছে যে তাদের চিন্তা ও আবেগ কোনটিই মুসলিমদের সাথে যুক্ত নয়। ফলে তারা বুঝতেও পারে না যে তাদের পশ্চিমা কাফেরদের প্রীতির এসব কাজ কিভাবে মুসলিম ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে নুনের ছিটার মত কাজ করে। অতঃপর অবশ্যই আমাদেরকে আল্লাহ্ ও মুসলিমদের শত্রুদের এসব প্রেমিকদের পরিত্যাগ করে নিষ্ঠাবান ও আল্লাহ্ প্রেমিক রাজনীতিবিদদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যারা খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন এবং বায়তুল মাক্বদিস পুণরায় জয়ে নেতৃত্ব দিবেন।
- মোহাম্মদ তালহা হোসেন
