হতাশা রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র বিদ্রোহে ঠেলে দিতে পারে: ক্রাইসিস গ্রুপ

 


খবরঃ

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে হটিয়ে রাখাইন রাজ্যের উত্তরের বড় একটি অংশ দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। সেখানে আরাকান আর্মির উত্থানে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিতে শুরু করেছে। আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই করতে তারা বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে সদস্য সংগ্রহের গতি বাড়িয়েছে।… রোহিঙ্গাদের এই বিদ্রোহ মিয়ানমারে আন্তসাম্প্রদায়িক সম্পর্কের ভয়াবহ ক্ষতি করবে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ করে তুলবে।… আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের তৈরি করা ‘বাংলাদেশ/ মিয়ানমার: রোহিঙ্গা বিদ্রোহের ঝুঁকি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।… (https://www.prothomalo.com/world/asia/sbkwauaqww)

মন্তব্যঃ

ঘৃণ্য ও ধ্বংসাত্মক ‘LGBTQ সমর্থক’ জর্জ সরোস প্রতিষ্ঠিত মার্কিন উপনিবেশবাদী ‘থিংক ট্যাংক’ প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, মুসলিমদের একমাত্র নিয়তি হলো, তারা শুধুমাত্র উপনিবেশবাদী স্বার্থে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তাদের কোন ধরনের নেতৃত্বের ভিশণতো দূরে থাক, সামান্য আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারটুকু পর্যন্ত নেই। তারা শুধু গণহত্যার শিকার হবে, বাস্তুচ্যুত হবে, কিন্তু তাদের কোন প্রতিরোধের অধিকার নেই। আমরা দেখেছি, রোহিঙ্গা মুসলিমগণ যখন জাতিগত নিধনের শিকার হন বা এখনো হচ্ছেন, তাদের পক্ষে কেউ অবস্থান নেয়নি। না কোন বিশ্ব মোড়ল কিংবা কোন মুসলিম শাসক-কেউ তাদের পক্ষে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। যেখানে আমরা দেখি, বিশ্ব মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ধমকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যায় কিংবা ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ন্ত্রনে চলে আসে, সেখানে তাদের স্বদিচ্ছা থাকলে রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনও বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু সেটা না করে তারা প্রত্যাবর্সন প্রক্রিয়া কিংবা শান্তি প্রক্রিয়ার নামে সমস্যাটিকে জিইয়ে রেখে ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছে। তারা আইন করে (বার্মা এক্ট) রোহিঙ্গা গণহত্যায় সহযোগী বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মিকে সহায়তা দিচ্ছে। 

অন্যদিকে মুসলিম শাসকেরা, রোহিঙ্গা মুসলিমদের পরিত্যাগ করেছে। যার ফলে তারা গণহত্যার শিকার হয়ে কোন মতে জান নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে বাস্তুচ্যুত হয়ে, শরনার্থী হয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের জীবন যাপন করছে। তার উপর বিভিন্ন অজুহাতে সেই পথও কঠিন করে তোলা হচ্ছে। এমতাবস্থায় যখন তারা নিরুপায় হয়ে নিজেদের উপর জুলুম ঠেকাতে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছেন, সেটা উপনিবেশবাদীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। তাদের থিংক ট্যাংকগুলো তাদের সরকারকে সতর্ক করার জন্য এলার্ম বাজাতে শুরু করেছে। আর রোহিঙ্গাদেরকে সতর্ক করছে, এতে নাকি আন্তসাম্প্রদায়িক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যেন এত গণহত্যার পরও আন্তসাম্প্রদায়িক সম্পর্ক সুন্দর আছে! তারা আরো বলছে, প্রত্যাবাসন নাকি কঠিন হয়ে যাবে, যেন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ঠিকঠাক চলছে! যেন রোহিঙ্গা মুসলিমগণ চাইলেই তাদের ভূখন্ডে যেতে পারছেন, এখানে যেন তারা বেড়াতে এসেছেন!

প্রকৃতপক্ষে আমাদের এ যুগের মুসলিম উম্মাহ্‌’র দুর্ভাগ্য যে, তাদের মু’তাসিম বিল্লাহ্‌ মতো একজন অভিভাবক নাই, যিনি নিজে কুফর শক্তির জুলুমের কবল থেকে উদ্ধারে নেতৃত্বে দিবেন কিংবা এমন কোন হাজ্জাজ বিন ইউসুফ নাই, যিনি জুলুমের শিকার হওয়া মুসলিমদের উদ্ধারে তার সবচেয়ে চৌকস সেনাপতির (মুহাম্মদ বিন কাসিম) অধীনে সেনাবাহিনী পাঠাবেন। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন মুসলিম উম্মতের অভিভাবকরূপী খিলাফত নবুয়তের আদলে আবারও প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি সকল বিশ্ব মোড়লকে চ্যালেঞ্জ করবে। ৫৭ টি ভাগে বিভক্ত হওয়া মুসলিমদের দূর্বল জাতিরাষ্ট্রের সীমানাসমূহ ভেঙ্গে এগুলোর দালাল শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করবে। ফিলিস্তিন, আরাকান কিংবা ভারতবর্ষের দখলকৃত (কুফরশক্তি কর্তৃক) ভুমিগুলোকে পুনরায় ইসলামী শাসনের অধীনে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। তারপর ইতিপূর্বেও যেগুলো ইসলামী শাসনের অধীনে ছিল না, সেগুলো কেউ বিজয় করবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ আমার জন্য যমীনকে একত্রিত করে (সঙ্কোচন করে) এনে দেখিয়েছেন। তাতে আমি যমীনের পূর্ব ও পশ্চিম দেখতে পেয়েছি। আর নিশ্চয়ই আমার উম্মত ততটুকু করায়ত্ব করবে যতটুকু আমাকে একত্রিত করে দেখানো হয়েছে” [আবু দাউদ]

    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post