সংসদীয় গণতন্ত্রই চায় ইসলামপন্থী ছয় দল

 

খবরঃ 

ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো সংসদীয় গণতন্ত্রই চায়। সংস্কার কার্যক্রমে অংশ নেওয়া এমন ছয়টি দলের কেউই শরিয়াহভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা, খেলাফত রাষ্ট্র চায়নি। ঐচ্ছিক শরিয়াহ আদালত স্থাপনের প্রস্তাব করেছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন। বাকি দলগুলো বিদ্যমান ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের প্রস্তাব করেছে। ...৫ আগস্টের পর পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকরা বারবার জানতে চেয়েছেন, ইসলামী দলগুলোর শরিয়াহভিত্তিক শাসন, খেলাফতভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা। (https://samakal.com/politics/article/297771/সংসদীয়-গণতন্ত্রই-চায়-ইসলামপন্থি-ছয়-দল)

মন্তব্যঃ 

শুধুমাত্র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য শারীআহ্‌ভিত্তিক শাসন তথা খিলাফত ব্যবস্থাকে পরিত্যাগ করে কুফর উপনিবেশবাদী গোষ্ঠীর সন্তুষ্টি আদায়ের মানসিকতা যেসব রাজনৈতিক দল বহন করছে তাদের এই বাস্তবতা বুঝা জরুরী- ইসলাম, জনগণের স্বার্থ এবং দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করলে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং যালিম শেখ হাসিনার মত ছুঁড়ে ফেলে দিবে। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম এই অঞ্চলের জনগণের মৌলিক বিশ্বাস এবং আকাংখার জায়গা। ১৯২৪ সালে খিলাফত ধ্বংসের পর থেকে মুসলিম বিশ্বব্যাপী উদগ্রীব হয়ে আছে আবারো খিলাফতের অধীনে শাসিত হতে। কেননা, এটি এমন এক জীবন ব্যবস্থা যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতিকে ন্যায়পরায়ণ শাসনের অধীনে ঐক্যবদ্ধ করে। হাজার বছর ধরে বিশ্বে নেতৃত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত হওয়ার যার আছে দীর্ঘ আলোকিত ইতিহাস। এর জন্যই পশ্চিমারা ভীত সন্ত্রস্ত যে এই অঞ্চলে আবারো ইসলামি পরাশক্তি খিলাফত ফিরে আসে কিনা। যা ইতিমধ্যেই মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাভার্ডের খিলাফত ফিরে আসার আশংকা এবং অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠীর প্রধান নেতানিয়াহু’র “... পৃথিবীর পূর্ব কিংবা পশ্চিমে খিলাফত রাষ্ট্র বরদাস্ত না করার” বক্তব্যে সুস্পষ্ট। তাই পশ্চিমা কাফেরগোষ্ঠী এই অঞ্চলের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ক্ষমতায় যাওয়ার বিনিময়ে আশ্বস্ত হতে চায় তারা যেন খিলাফতকে ফিরিয়ে না আনে এবং খিলাফতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সুতরাং, ইসলামপন্থি এই ছয়টি দলের এই সত্য অনুধাবন করা জরুরী শুধুমাত্র পশ্চিমাদের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাদের এই অবস্থান দেশ, জনগণ এবং ইসলাম বিরোধী। দিন শেষে যা তাদের জন্য আল্লাহ্‌’র ক্রোধ, দুনিয়া এবং আখিরাতে লাঞ্ছনা ও  পশ্চিমা কাফেরদের কর্তৃক অপমান ছাড়া আর কিছুই দিবেনা। 

প্রকৃতপক্ষে, এই অঞ্চলের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর এই সত্য অনুধাবন করা প্রয়োজন, খিলাফতের উত্থান ঠেকানো পশ্চিমা কাফের সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ডা। তারা মুসলিম ভূমিগুলোতে কুফর সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে চায়। সুতরাং, তাদের এই নিকৃষ্ট প্ল্যানের গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া মোটেও যুক্তি সংগত নয়। এবং আল্লাহ্‌’র শত্রুদের দুনিয়ার জন্য নিজেদের আখিরাত বিসর্জন দেওয়া কোন অর্থেই কাম্য নয়। ইমাম মালিকের (রহ.) মতে “তাদের চেয়ে নির্বোধকে কে হতে পারে যে অন্যের দুনিয়ার জন্য নিজের আখিরাতকে বিক্রি করে”। ফলে, তাদের উচিত এম্বাসিগুলোতে না ঘুরে, এই অঞ্চলের হকপন্থী আলেমদের পূর্বসরী শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মোহাম্মদ আলি জোহার, মাওলানা শওকত আলী এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদের মত অসংখ্য আল্লাহ্‌ভীরু আলেমদের পথ অনুসরণ করে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঝাঁপিয়ে পড়া। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ তার মাসলা-ই-খিলাফত গ্রন্থে ১৯২০ সালে বলেছিলেন, “খিলাফত ছাড়া ইসলামের অস্তিত্ব সম্ভব না। সুতরাং, আল-হিন্দের সমস্ত মুসলিমদেরকে এর জন্য তাদের সমস্ত শক্তি এবং শ্রম ব্যয় করে কাজ করা জরুরী।”  

    -    আসাদুল্লাহ্‌ নাঈম 


Previous Post Next Post