গণমাধ্যম নিয়ে এনসিপি নেতাদের কথা বলার অধিকার নেই : মোস্তফা ফিরোজ

 


খবরঃ

সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘গণমাধ্যম নিয়ে এনসিপি নেতাদের কথা বলার আসলে কোনো অধিকার নেই। গণমাধ্যম শক্তিশালীভাবে দাঁড়াবে, নিজেদের মতো কথা বলবে সেই বিধিবিধান কি (তাদের) আছে? নির্দেশনা আছে? তারা যদি গণমাধ্যমকে স্বাধীন করতে চাইতো, তাহলে প্রথমদিন এসেই, প্রথম দফাতেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতো।  (https://www.kalerkantho.com/online/social-media/2025/07/09/1543785)

মন্তব্যঃ

সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার পরদিনই এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছে ‘আমরা মিডিয়ার স্বাধীনতা চাই’। এর আগেও নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে সময় টিভি কর্তৃপক্ষকে অফিসে গিয়ে ১০ সাংবাদিক ছাটাইয়ে হুমকি দিয়েছিল হাসনাত আব্দুল্লাহরা। ৫ আগষ্ট হাসিনার পতনের পর থেকে অরাজকতা চালিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের যে প্রচলন শুরু হয়েছে তা দেশের প্রশাসন ও বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রনের জন্যও ব্যবহার হয়ে আসছে। এই অরাজকতা অন্তর্বর্তী সরকার ও এনসিপির স্বার্থের পক্ষে গেলেই তা হয় “মব জাস্টিস” আর স্বার্থের বিপক্ষে গেলেই হয়ে যায় “মব ভায়োলেন্স”। কেউ কেউ হাসিনার সময়ে গণমাধ্যমের বিতর্কিত ও অন্যায় ভূমিকার কারণে বিভিন্ন মিডিয়া আউটলেটের বিরুদ্ধে এই অরাজকতার পক্ষে সাফাই গাইছে। মূলত: গণমাধ্যম নিয়ে তাদের কোন সুষ্পষ্ট পলিসি না থাকার কারণে, হাসিনার মত করেই মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু কোন ‘সভ্য সমাজ’ এভাবে কোন ব্যক্তি ও বিশেষ গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে চলতে পারে না। রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের মত গণমাধ্যমকেও সুষ্পষ্ট বিধিবিধান ও নির্দেশনার আলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রেগুলেট করতে হবে। এবং এই বিধিবিধান ও নির্দেশনা অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর আক্বীদাহ ও আদর্শ ‘ইসলাম’ থেকে আসতে হবে। 

দেশের গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ আপাতদৃষ্টিতে কিছু বিশেষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে আছে বলে মনে হলেও মূল নিয়ন্ত্রণ প্রকৃতপক্ষে কাফির সাম্রাজ্যবাদিদের হাতে। কারণ কতিপয় গণমাধ্যম সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। পশ্চিমাদের ভূরাজনৈতিক ন্যারেটিভকে প্রতিষ্ঠা করা ও নোংরা কুফর সংস্কৃতিকে মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার বাহনে পরিণত হয়েছে। উম্মাহ্‌কে তার ভাইটাল ইস্যু থেকে বিমুখ করার কাজেও এই গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদিরা। যার ফলে, কোনটা প্রকৃত সংবাদ আর কোনটা সংবাদের মোড়কে ঘৃণ্য কুফর-সাম্রাজ্যবাদি ন্যারেটিভ তার সত্য-মিথ্যার ফারাক বের করার জন্য এখন বিশেষজ্ঞ হতে হয়! আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্রের ইসলামী মিডিয়া পলিসি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে কাফির সাম্রাজ্যবাদিদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা সম্ভব; যেখানে মিডিয়ার অন্যতম প্রধান কাজ হবে সকল কুফর ও বাতিল জীবনাদর্শগুলোর ভ্রান্তি ও বিভৎসতা প্রচার করা এবং ইসলামী জীবনাদর্শের বিশেষত্ব ও ন্যায়পরায়ণতাকে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। সামরিক বাহিনীর গতিবিধি ও যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি প্রভৃতি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর বিষয়সমূহ ব্যাতিত অন্যকোন সংবাদ প্রকাশ ও পরিবেশন করতে কোন রাষ্ট্রীয় অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। গণমাধ্যমের এই অবাধ স্বাধীনতার অপব্যবহার রোধ করার জন্য ‘প্রকাশিত সংবাদের সকল দায়দায়িত্ব সম্পাদককে নিতে হবে’ মর্মে বিধান সংযুক্ত রয়েছে ইসলামী মিডিয়া পলিসিতে।

গণমাধ্যমের উচিত মুসলিমদের প্রকৃত সমস্যা ও তার ইসলামী সমাধানের ব্যাপারে জনগণেরর মধ্যে ব্যাপক জাগরণ তৈরী করা। ফিলিস্তিনের গণহত্যার প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রচারণা নেই; ইসরাইলের উপর এককভাবে দায় চাপিয়ে গণমাধ্যম আমেরিকাকে দায়মুক্ত করেছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে খবর প্রচারও ধীরে ধীরে কমিয়ে বর্তমানে গণহত্যাকে স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত করেছে। অথচ: দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর আক্বীদা ও আদর্শ ‘ইসলাম’-কে ধারণ করে গনমাধ্যমের উচিত ছিল ফিলিস্তিন গণহত্যার চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়টিকে গণমাধ্যমের সকল পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে রেখে একটি মোমেন্টাম তৈরী করা, যেন দেশের জনগণ ও বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহ্‌ ফিলিস্তিনে মুসলিম গণহত্যার চূড়ান্ত সমাধান না করে ঘরে না ফিরে!

    -    রিসাত আহমেদ


Previous Post Next Post