'গ্রেটার ইসরাইল’ আধ্যাত্মিক মিশনে নেতানিয়াহু

 


খবরঃ 

‘গ্রেটার ইসরাইল’ প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক আধ্যাত্মিক মিশনে নেমেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজার পর এবার অন্য আরব দেশ যেমন সিরিয়া, জর্ডান ও মিসরের সীমান্ত অঞ্চলগুলো ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত করতে চাওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। বৃহত্তর ইসরাইল বলতে, ১৯৬৭ সালের জুনের ৬ দিনের যুদ্ধের পর ইসরাইল ও দেশটির সদ্য দখল করা এলাকাপূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ এবং গোলান মালভূমিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।.... জায়নবাদীদের কেউ কেউ বর্তমান ইসরাইল, গাজা, পশ্চিম তীর এবং বর্তমান জর্ডানকে বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করতেন। (https://www.jugantor.com/international/990020 )

মন্তব্যঃ

মুসলিম বিশ্বজুড়ে পুনঃজাগরণের যে দামামা বাজছে তাতে পশ্চিমা বিশ্ব এবং তাদের অবৈধ সন্তান ইহুদী রাষ্ট্র কতটা ভীতসন্ত্রস্ত তা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ প্রতিষ্ঠার আধ্যাত্মিক মিশনে ফুটে উঠেছে। এমনটাই ২০১৮ সালের নভেম্বরে ফ্রান্সে উসমানী খিলাফতের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ১০০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে অবৈধ রাষ্ট্রে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়। সে বলেছিলেন, “ইসলামি জঙ্গিবাদ (খিলাফত) থেকে ইসরাইল হচ্ছে ইউরোপের ঢাল। সুতরাং ইউরোপের উচিত ইসরাইলের প্রতি নমনীয় হওয়া।” আর এই ঢালকে শক্তিশালী করার অপপ্রয়াস থেকে নেতানিয়াহু এবং তার পশ্চিমা প্রভুরা ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠার মিশন হাতে নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায়ও তাই বলেছিলো, “যদি তুমি মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রের দিকে তাকাও তাহলে দেখবা, বিশাল ভূমির বিপরীতে ইসরাইল একটা ক্ষুদ্র স্পট। আমি আসলে বলতে চাচ্ছি, “এটাকে বাড়ানোর কোন পথ আছে কিনা?”(স্কাই নিউজ ১৯/৮/২০২৪)। বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ্‌ তার যে গৌরবময় ও প্রতাপশালী খিলাফত রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা রত, তা মোকাবেলায় আমেরিকা নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব তাদের এই অবৈধ সন্তান ইসরায়েলকে আরো শক্তিশালী করতে চায়।

মূলত, বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের গণজাগরণ এবং ইসলামের দিকে ফিরে আসার তীব্র লড়াই প্রতিনিয়ত পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোকে চারিদিক থেকে আতংকগ্রস্থ করছে। গত ১৩ এপ্রিল ২০২৫ এও নেতানিয়াহু বলেছিলো “আমরা পৃথিবীর উত্তর কিংবা দক্ষিণ বা অন্য কোথাও কোনো ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা হতে দেব না।” যা প্রমাণ করে বর্তমানে এদের অন্যতম মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য হচ্ছে খিলাফতের উত্থান ঠেকানো। এই লক্ষ্যে তারা “ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”কে আরো বেগবান করতে মুসলিম ভূমিগুলোতে পুনরায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ন্যারিটিভ চালু করা, লুটপাট, গণহত্যা, দখলদারিত্ব, সামরিক ঘাটি প্রতিস্থাপন এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সহ একের পর এক তান্ডব চালাচ্ছে। ‘গ্রেটার ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা’ এবং ‘আব্রাহাম এ্যাকোর্ড’ তথা ইসরায়েলের সাথে মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ পশ্চিমাদের এই মিশনেরই অন্তর্ভূক্ত। আর, তাদের এই মিশনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে বর্তমান মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকগোষ্ঠী। 

মুসলিম ভূমিগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সুয়েজ খাল, হরমুজ প্রণালি, মালাক্কা প্রণালি, বাবেল আল মানদেব প্রণালি, জিব্রাল্টার প্রণালি, ভূমধ্যসাগর, পারস্য-উপসাগর, আদেন উপসাগর, আরব সাগর ও  বঙ্গপোসাগরের মত গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটগুলোও আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। সেখানে, ২ কোটি ৭০ লাখের বেশি সক্রিয় এবং রিজার্ভ সামরিক সেনা, ৩৫০০ এর বেশি আধুনিক যুদ্ধবিমান, ৮০০ এর বেশি নৌযান এবং পারমানবিক শক্তি নিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে পরাক্রমশালী রাষ্ট্র হওয়ার বাস্তবতা মুসলিমদের ছাড়া আর কারোরই নেই। কিন্তু, এই দালাল শাসকগোষ্ঠীর দরুন আমরা বর্তমানে পশ্চিমা কাফেরগোষ্ঠীর গোলামিতে চলতে বাধ্য হচ্ছি। পরাক্রমশালী খিলাফত রাষ্ট্র ফিরে আসার বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করে পশ্চিমারা নিজেদের প্রস্তুতি জোরদার করছে। এমন বাস্তবতায় আমাদের উচিত হচ্ছে আরো দ্বিগুণ উদ্যমে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া। “তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে” 

    -    আসাদুল্লাহ্‌ নাঈম 


Previous Post Next Post