খবরঃ
১৫ আগস্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘শোকগাথা’ লিখে সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের বেশ কয়েকজন তারকা। তাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিকভাবে ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। (www.amadershomoy.com/entertainment/article/155891/১৫-আগস্ট-নিয়ে-শোকপোস্ট-বি#gsc.tab=0)
মন্তব্যঃ
অন্তর্বর্তী সরকারের দেশ শাসনে ব্যর্থতা, নতুন রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টদের লাগামহীন ঘুষবানিজ্য ও কতিপয় নতুন গজিয়ে উঠা ‘জাতির বিবেকের’ অযাচিত সব কর্মকান্ডের প্রতি জনগণের চরম বিতৃষ্ণতার সুযোগে পতনের মাত্র একবছরের মাথায় এসে এরা পতিত আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভকে প্রকাশ্যে ধারণ করার দু:সাহস দেখাচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের পলিটিকাল ও কালচারাল শক্তির মধ্যে যে জোটবদ্ধ কার্যক্রম ও অভিন্ন ন্যারেটিভ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন কিংবা ৭১ প্রশ্নের আলোকে দেখলে কখনোই তার কোন পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে না। তাদের ঐক্যের মূল কারণ হল বাংলাদেশে ‘ইসলামী রাজনৈতিক চিন্তার’ উত্থান, যাকে তারা তাচ্ছিল্যের সাথে ‘দক্ষিণপন্থা’ নাম দিয়েছে। এবং এই ইসলামী রাজনৈতিক চিন্তার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও আবেদন তৈরীর প্রেক্ষাপটে দেশে বিদ্যমান সেকুলার রাজনীতি ও জীবনধারার ভিত ও নিয়ন্ত্রণ নড়বড়ে হয়ে পরেছে। যার কারণে সকল সেকুলার দল ও কালচারাল শক্তির মধ্যে এই অভূতপূর্ব একতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোন ভোটের সমীকরণের জন্য নয় বরং ইসলামী রাজনৈতিক চিন্তার এই উত্থান ও জনগণের মধ্যে ইসলামী শাসনব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান দাবির প্রেক্ষিতেই বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভকে গ্রহণ করেছে এবং ভারতীয় দূতাবাসের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে বিনোদন তারকারা সেই পালে হাওয়া দিচ্ছে।
শেখ মুজিব হল বাংলাদেশে কুফর সেকুলারিজমের স্বঘোষিত বরপূত্র। বৃটেন-ভারতের এই দালালের রাজনৈতিক জীবনের সিগনেচার স্টাইল ছিল চরম ইসলামবিদ্বেষ। তার ও তার অনুসারীদের আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে সে কিভাবে বিভিন্ন ইসলামবিদ্বেষী ইউরোপীয় রাষ্ট্রের এম্বাসীতে রাতের অন্ধকারে গোপনে চিঠি পাঠিয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেছিল এবং আগরতলায় গিয়ে তার ভগবতি “শ্রীমতি ইন্দীরার” কৃপা ভিক্ষা চেয়েছিল। মূলত: “ফ্যাসিস্ট” বলে তার আসল অপরাধ ‘ইসলাম বিদ্বেষকে’ ঢেকে রাখা হয়। সে ছিল খিলাফত ধ্বংসকারী সাম্রাজ্যবাদি বৃটেনের দালাল যাকে বৃটেন ‘এসাইনমেন্ট’ দিয়েছিল সেকুলারিজমকে বাংলাদেশে শক্তিশালী করে ইসলামী রাজনীতিকে কোনঠাসা করার জন্য। বৃটেনের ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত চরম “ইসলাম বিদ্বেষ” থেকে তাদের দালাল শেখ মুজিবকে আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ, শেখ মুজিব হল ইসলামের বিরুদ্ধে কুফরের চিরন্তন লড়াইয়ের ‘বাংলাদেশ চ্যাপ্টার’, যা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিদারূণ বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণার নানান লজ্জাজনক প্রমাণে ভরপুর। এখানে “স্বাধীনতা” শব্দটি হল ‘কুফর শাসনব্যবস্থা’ নামক প্রাণঘাতি বিষের (poison) মিস্টি আবরণ (sweet-coating)।
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আর যারা আল্লাহ্ যা নাজিল করেছেন তা দিয়ে শাসন করে না তারাই যালিম” (সূরা আল মায়ীদাহ: ৪৫)। সুতরাং শেখ মুজিব একজন যালিম এবং এ নিয়ে বিন্দুমাত্র কোন সন্দেহ নেই। আর একাধিক জালিমের ক্ষমতার লড়াইয়ে কোন পক্ষ পরাজিত হল আর কোন পক্ষ বিজয়ী হল তা নিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠী মোটেও চিন্তিত নয়। কিন্তু জালিমের জন্য শোক প্রকাশকারীদের কেউ কেউ নিজেকে ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে পরিচয় প্রদান করে। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর হাদিস অনুযায়ী তাদের জানা উচিত যে, তারা যার প্রতি গভীর ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাদের সাথেই তার আখিরাত হবে!? (রেফারেন্স: সহীহ বুখারী: ৩৬৮৮)। মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলেন: “তোমরা যালিমের গুণকীর্তণ করা থেকে বিরত থাক; না হলে (যালিমদের জন্য প্রস্তুতকৃত) জাহান্নামের আগুন তোমাদেরকেও স্পর্শ করবে” (সূরা হুদ: ১১৩)।
- রাজীব আহমেদ
