খবরঃ
বাংলাদেশ যেন চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতে না পারে, সেটিই বিএনপির লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। … ‘এই দেশ কোনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্যে যেন কোনো দিন পরিণত হতে না পারে, সেটিও কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা। সেটি আমাদের লক্ষ্য।… (https://www.prothomalo.com/politics/uvbeou2g5a)
মন্তব্যঃ
সেকুলার আক্বীদা থেকে উদ্ভূত লিবারেল ডেমোক্রেসির মতো পশ্চিমা মতাদর্শ ভিত্তিক জুলুমের শাসনের বিপরীতে ইসলামের ন্যায়ভিত্তিক খিলাফত শাসনের আকাঙ্ক্ষা যখন সমগ্র বিশ্বে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন পশ্চিমারা মার্কিনীদের নেতৃত্বে খিলাফত শাসনের পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ক্রুসেড (ওয়ার এন্ড টেরর) চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে কোথাও কোথাও তারা ক্রুসেড প্রতিরোধী দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে (আফগানিস্তানের তালেবান) নেতিবাচকভাবে প্রচার করছে, কোথাও আইএস-র সংগঠনের জন্ম দিয়েছে, আবার কোথাও বাংলাদেশের মতো তথাকথিত সন্ত্রাস দমনের নামে জঙ্গি নাটকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। আর হাসিনার মতো নির্বোধ শাসকেরা মার্কিনীদের এসব ফাঁদে পা দিয়ে দেশের ইসলামপ্রিয় জনগোষ্ঠীর উপর চরম নৃশংসতা চালিয়েছে। যা তাদেরকে জনগণ কর্তৃক ঘৃণিত শাসক হিসেবে কুখ্যাতি দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখলাম, মার্কিনীদেরকে সহায়তাকারী সেক্যুলার আকিদার দলগুলোর প্রতি এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগোষ্ঠী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, যা সম্প্রতি ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা বিআইজিডি’র জরিপে উঠে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, এদেশের ৪৮ শতাংশেরও বেশি মানুষ সামনের ‘পাতানো’ নির্বাচনে ভোট দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি, আর ১৪.৪ শতাংশ মানুষ কাকে ভোট দিতে চায় তা বলতে রাজি হয়নি। তারপরও বাংলাদেশের সামনের দিনগুলোতে ক্ষমতায় বসতে ইচ্ছুক সেক্যুলার দলগুলোর নির্বোধ নেতৃবৃন্দ মার্কিন সমর্থন লাভের আশায় একের পর এক খিলাফতের ন্যায়ের শাসনকে মার্কিনীদের ভাষায় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করে ঘৃণিত হাসিনার চেয়েও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে। কারণ হাসিনাতো রাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহ ব্যবহার করে বিভিন্ন জঙ্গি নাটক সাজিয়ে গ্রাউন্ড তৈরি করে তারপর পশ্চিমাদের শেখানো বয়ান প্রচার করত। আর এই নির্বোধেরা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই কোন গ্রাউন্ড তৈরি না করেই পশ্চিমাদের বয়ান প্রচার করে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিয়েছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এটাও ভুলে গিয়েছে যে, হাসিনার সেক্যুলার, নাস্তিকতোষী, ইসলাম বিরোধী অবস্থানের বিপক্ষে দশকের পর দশক ধরে ‘ইসলামের পক্ষে সমর্থনদানকারী’ হিসেবে পরিচিতিটাই ছিল এদেশের জনগণের সমর্থন প্রাপ্তিতে তাদের শক্তির জায়গা, যা তাদেরকে উপহার দিয়েছিল হাসিনার জুলুমের শাসনের মুখে টিকে থাকার মত একটা বিশাল কর্মীবাহিনী। এই মার্কিনীদের শেখানো পথে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে তারাতো জনগণের সমর্থন হারাচ্ছেই, সেই সাথে তাদের কর্মী সমর্থকদেরও হারাবে। আর তারা এটাও ভুলে গিয়েছে যে, পশ্চিমাদের যেসব গোলাম, যারা জনবিচ্ছিন্নতা অর্জন করে, তাদেরকে পশ্চিমারাও সমর্থন দেয় না এবং প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে হাসিনার মতোই উৎখাতে সমর্থন দেয়।
তাই একদিকে ‘ক্ষমতায় গিয়ে শরীয়ত বিরোধী আইন করবে না’, অন্যদিকে ইসলামী শাসনব্যবস্থা কে উগ্রবাদী, মৌলবাদী আখ্যা দিয়ে মুনাফেকি ও পরস্পর বিরোধী আচরণ করা থেকে বিএনপি নেতৃবৃন্দের বের হয়ে আসা উচিত, যদি তারা ইসলাম প্রিয় জনগোষ্ঠীর এই বাংলাদেশে রাজনীতি করতে চায়। তাদের একক উম্মাহর ধারনার বিপরীত তথাকথিত ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী চেতনা’র ধারনাকে ছুড়ে ফেলে নতুন দিনের খিলাফতের রাজনীতি করা উচিৎ। কারণ এদেশের মানুষ নিশ্চিতভাবেই ইসলামী শাসন বা খিলাফতের শাসনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চরমভাবে আকাঙ্খিত, যার প্রমাণ আমরা দেখতে পেয়েছি এ বছরের ৭ মার্চএ ‘মার্চ ফর খিলাফত’এর কর্মসূচিতে সরকারের ব্যপক বাধা এবং হুমকি সত্ত্বেও ব্যাপক মানুষের সমর্থন ও অংশগ্রহন।
- মোঃ জহিরুল ইসলাম
