ডিজিএফআই আইএসআইয়ের মতো, এদের বাংলাদেশে কোনো কাজ নাই: তাসনিম খলিল

 


খবরঃ

ডিজিএফআই-কে বিলুপ্ত করে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে পাকিস্তানের আইএসআই মডেলের কোন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি দরকার নাই। আমার প্রবলেম (প্রশ্ন) হল সেনা অফিসারদের ডেপুটেশন নিয়ে। আপনি সেপারেট একটা (বেসামরিক) প্রতিষ্ঠান বানান যারা বহি:শত্রুর থ্রেট থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করবে। কেরিয়ার সার্ভিস হিসেবে সেটা প্রতিষ্ঠা করেন। এরশাদ সাহেবের আমল থেকে ডিজিএফআই-কে রাজনীতির সামরিকায়ন করার একটা টুল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিএফআই এর আর কোন কাজ নাই। (https://www.youtube.com/watch?v=uUOem_5CIDo)

মন্তব্যঃ

বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-কে বিলুপ্ত করার দাবিটি নি:সন্দেহে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতার জন্য বিরাট হুমকি স্বরূপ। নি:সন্দেহে গোয়েন্দা সংস্থাটির অনেক অপরাধ রয়েছে, অনেক অন্যায়ের সাথে তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পরেছে। কিন্তু এর কারণে দেশের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বিলুপ্তির আওয়াজ তোলা কোন সুবুদ্ধির পরিচয় বহন করে না। এর সাথে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর ভূরাজনৈতিক সমীকরণ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র জড়িত। ডিজিএফআই-এর মত পুলিশও তো বিভিন্ন অন্যায় ও অপরাধের সাথে জড়িত, তাই বলে পুলিশকেও কী বিলুপ্ত করে দিতে হবে! অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব তখন কে পালন করবে? নতুন বাহিনী তৈরী করলে সেই বাহিনীও যে পুলিশের মত অন্যায় ও অপরাধে জড়িয়ে পরবে না তার নিশ্চয়তা কী? বিজিবিও অনেক অন্যায় ও অপরাধের সাথে জড়িত, তাই বলে বিজিবিও কী বিলুপ্ত করে দিতে হবে? তখন দেশের সীমানা কে পাহারা দিবে? মূলত: যারা এখন ডিজিএফআই বিলুপ্তির আওয়াজ তুলছে, তারা একসময় বাংলাদেশের নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে বলেছিল, ‘এমন গরীব দেশে এত টাকা খরচ করে আর্মি পালার দরকার কী? আর আমাদের চারপাশে বন্ধু রাষ্ট্র, এই আর্মি দিয়ে আমরা কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব?’। এই ধরনের লোকেরা দেশের স্বার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ, এরা দেশকে কাফির সাম্রাজ্যবাদীদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কোন গ্লোবাল ভিশন না থাকা এবং আল্লাহ্‌দ্রোহী সেকুলার রাজনীতির কারণে দেশের পুলিশ, বিজিবি, ডিজিএফআই সামান্য আর্থিক ও বৈষয়িক সুবিধা পাওয়ার আশায় নানান অন্যায় কাজে জড়িয়ে পরছে। মুসলিম সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে ডিজিএফআই-এর কর্তব্য হল তাদের সকল কাজের ব্যাপারে ইসলামী মানদন্ড অনুসরণ করা। আসন্ন ‘নবুয়্যতের আদলে’ খিলাফত রাষ্ট্র এই গোয়েন্দা সংস্থাকে আরো শক্তিশালী করে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলবে। খিলাফত রাষ্ট্রে নিজ দেশের নাগরিকদের উপর গোয়েন্দাগিরি ও নজরদারি করা রাষ্ট্রীয় যেকোন সংস্থার জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, কিন্তু বিদেশী শত্রুরাষ্ট্রের উপর গোয়েন্দাগিরি করা, শত্রুদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করা, শত্রুদের বিভিন্ন পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেওয়া ও শত্রুর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাদেরকে মরণ কামড় দেওয়ার জন্য উপযুক্ত ও সুপ্রশিক্ষীত গোয়েন্দা সংস্থা থাকা খিলাফত রাষ্ট্রের জন্য ফরয বা বাধ্যতামূলক। খিলাফত রাষ্ট্রের এই গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্যই ‘যুদ্ধ বিভাগ’ ও সামরিক নেতৃত্ব আমিরে জিহাদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে, যা রাষ্ট্রের যুদ্ধ সক্ষমতাকে সমৃদ্ধ করবে ও শত্রুদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করবে। 

খিলাফত রাষ্ট্রে যেহেতু নিজ দেশের নাগরিকদের উপর গোয়েন্দাগিরি করা হারাম, সেটা সশরীরে হোক কিংবা ডিজিটাল মাধ্যমেই হোক, তাই গোয়েন্দা সংস্থাটির ‍‘সিগনালস ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো’ (SIB) শুধুমাত্র বিদেশী নাগরিক ও শত্রুরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের উপর কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কাউন্টার টেরোরিজম হল একটি আমেরিকান ন্যারেটিভ; ফলে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (CTIB) থাকার কোন যৌক্তিকতা নেই। তাছাড়া, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও ‘পলিটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ করা এই গোয়েন্দা সংস্থার কাজ হতে পারে না; কারণ, বিদেশী রাষ্ট্রগুলো হল এর সুবিধাভোগী। তাই ‘ইন্টারনাল এফেয়ার্স ব্যুরো’ (IAB) থাকারও কোন যৌক্তিকতা নেই। ফলে, CTIB ও IAB বিলুপ্ত করে এর সকল রিসোর্সগুলো অন্যান্য ব্যুরোতে স্থানান্তর করে দেওয়া হবে এবং সকল ব্যুরোর এজেন্টদেরকে পৃথিবীতে বিদ্যমান সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। তাদের একমাত্র আনুগত্য হবে খলিফার প্রতি এবং তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হবে, আল্লাহ্‌’র সন্তুষ্টি ও রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর শাফায়াত অর্জন করা। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) আমাদেরকে সুসংবাদ দিয়েছেন পৃথিবীর ‘পূর্ব থেকে পশ্চিম’ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ্‌’র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার। এই গোয়েন্দা সংস্থা হবে সেই বিজয় ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অগ্রসৈনিক, ইনশাআল্লাহ্‌। সেদিন খুব বেশি দুরে নয় যখন এই গোয়েন্দা সংস্থার নাম শুনলে কাফির-মুশরিকদের অন্তর অজানা আতঙ্কে কেঁপে উঠবে।

    -    রাজীব আহমেদ


Previous Post Next Post