আখতারকে ডিম নিক্ষেপ: নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি চায় এনসিপি



খবরঃ

যুক্তরাষ্ট্রে দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ অন্যদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নিউইয়র্কের বিমানবন্দরে আখতার হোসেনকে হেনস্তা করা ও তার ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।… (https://www.prothomalo.com/politics/f09p5b81am)

মন্তব্যঃ

বর্তমান বাংলাদেশে ‘জনগণকে দেখাশোনা করার রাজনীতি’ এবং ‘পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষার রাজনীতি’ এ দুটি পরস্পর সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। অর্থাৎ এখানে জনগণের স্বার্থ রক্ষার রাজনীতি করতে হলে পশ্চিমাদের বিরাগভাজন হতে হবে। আর পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে হলে জনগণকে বঞ্চিত করতে হবে। যেমন মার্কিন স্বার্থের উপর দেশের জনগনের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হলে, মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির মাধ্যমে ৩০ গুন বেশী দামে এলএনজি আমদানীর পরিবর্তে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উত্তোলন বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিতে হবে; মার্কিন কোম্পানি থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম, বোয়িং বিমান ইত্যাদি না কিনে দেশীয় ভারী শিল্প গড়ে তুলতে হবে, মার্কিনীদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে দেশের সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার হতে না দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে অবস্থান নিতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু আমরা দেখি, এমতাবস্থায় এদেশের সেক্যুলার রাজনীতিবিদরা জনগণকে বঞ্চিত করে, পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষা করাটাকেই আপাতদৃষ্টিতে সহজ মনে করে সেটাকে গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে দেশের প্রশাসন, সেনাবাহিনী, গণমাধ্যম ইত্যাদিতে পশ্চিমা কুফরশক্তির অনুচরদের অবস্থান ও বিশ্বব্যপী তাদের আস্ফালন তাদের আতঙ্কিত করে। আতংকে তারা দেশের জনগণের শক্তি ও সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার ক্ষমতাকে অনুধাবন করতে ব্যার্থ হয় এবং পশ্চিমাদের আশ্রয়ে থাকার মধ্যেই স্বস্তি লাভ করে। আর এখানেই এই সেক্যুলার রাজনীতিবিদরা তাদের সবচেয়ে বড় ভুলটি করে! কারণ যেসকল রাজনীতিবিদরা যারা নিজের দেশের সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে পশ্চিমাদের দাসত্ব করে, পশ্চিমারা তাদেরকে নিন্মস্তরের স্বার্থপর ব্যক্তি মনে করে। তারা এদেরকে নিজেদের পোষা কুকুরের ন্যায় নুন্যতম মর্যাদা কিংবা নিরাপত্তাটুকুও দেয় না। আবার অন্যদিকে সেক্যুলার আইডিয়া যেহেতু পশ্চিমা কুফর শক্তি থেকে আগত, সেহেতু এদেশের সেক্যুলার মতাদর্শের রাজনীতির চর্চার প্রকৃত উদ্দেশ্য থাকে নিজের আখের গোছানোর জন্য জনগণের উপর প্রভুত্ব করা (বিধান প্রনয়ন ও শাসন) ও পশ্চিমা কুফর শক্তির দাসত্ব করা, তখন স্বাভাবিকভাবেই এসকল রাজনীতিবিদদের পক্ষে পশ্চিমাদের নির্দেশ অমান্য করা কিংবা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে রাজনীতি করা অথবা পশ্চিমা কুফর শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হয় না। এমনকি এই ধরনের মানসিকতাও তাদের তৈরি হয় না। তারা তখন শুধু কুফর শক্তির মান-মর্যাদাহীন নগন্য দাস হয়ে তাদের হুকুম তামিল করার মধ্যেই নিজেদের স্বার্থকতা খুঁজে পায়।


অন্যদিকে ইসলামী আকীদা সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে আগত, তাই এর থেকে আগত চিন্তাসমূহ এবং মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধানসমূহ পারস্পরিক বৈপরীত্যমুক্ত ও ত্রুটিমুক্ত, যার সত্যতা মানুষকে সহজেই আকর্ষন করে। এটি মানুষকে নিজস্ব স্বার্থের উর্ধ্বে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন করাকে জীবনের মূল উদ্দেশ্য বানায়। তাই ইসলামী আইডিয়া সমাজে বাস্তবায়ন করলে এটি মুসলিম-অমুসলিম, আরব-অনারব, সাদা-কালো, ধনী-দরিদ্র সবাইকে একত্রিত করতে পারে। তারপর ঐক্যবদ্ধভাবে সকল কুফর শক্তিসমূহকে প্রতিহত করতে পারে। তাই ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার রাজনীতিই একমাত্র কুফর শক্তিগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের পদানত করতে পারে। সেই সাথে রাজনীতিবিদরাও আত্মমর্যাদাশীল ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হতে পারেন। তাই সকল নবীন ও প্রবীন রাজনীতিবিদদের এই পথই অনুসরন করা উচিৎ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন, “তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দীনের উপর বিজয়ী করেন…” (সূরা তওবাঃ ৩৩) 


    -    মোঃ জহিরুল ইসলাম


Previous Post Next Post