খবরঃ
… ফরিদা আখতার বলেন, “এবারও দূর্গাপূজা উপলক্ষে ভারত বারবার ইলিশ পাঠানোর জন্য অনুরোধ করছে। তারই প্রেক্ষিতে বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুমতি পত্র চেয়েছেন। সে কারণে ১২'শ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। একদিকে দুর্গাপূজা অন্যদিকে তারা আমাদের প্রতিবেশী। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ইলিশ মাছ দিতে বাধ্য হয়েছি।”… আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি- বাংলাদেশের মানুষ আগে ইলিশ খাবে তারপর অন্যরা।” (https://www.dhakapost.com/country/394634)
মন্তব্যঃ
‘বাংলাদেশের মানুষ আগে ইলিশ খাবে তারপর অন্যরা’- স্লোগান দিয়ে একই বক্তব্যে ‘সব কিছু মিলিয়ে আমরা ইলিশ দিতে বাধ্য হয়েছি’ বলে কথাবার্তায় অসংলগ্নতার পরিচয় দিলেও কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে এ উপদেষ্টারা কিন্তু ঠিকই ঠান্ডা মাথার পরিচয় দিয়েছেন! তারা পূর্বের হাসিনা সরকারের মতই ‘দিল্লির দাস’ এর পরিচয় নিয়েছেন। তথাকথিত এই বিপ্লবী সরকার এক্ষেত্রে শহীদ আবরার ফাহাদের স্পিরিটকেও তোয়াক্কা করেনি, যিনি ‘দিল্লীদাসী’ হাসিনার ইলিশ প্রদানের প্রতিবাদ করে হাসিনার গুন্ডাবাহিনী কর্তৃক নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। এমনকি এ সরকার এক্ষেত্রে দেশের মানুষের জুলাই ত্যাগের স্পিরিটকেও রক্ষা করেনি, যারা ‘দিল্লীদাসী’ অত্যাচারী হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অকাতরে নিজেদের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই সরকার বাংলাদেশের আপামর জনগণ যে রাষ্ট্রকে (ভারত) শত্রু রাষ্ট্র মনে করে, সে রাষ্ট্রের সাথে পূর্বের হাসিনা সরকার কর্তৃক কোন চুক্তি বাতিল করা তো দূরে থাক, উল্টো ভারতের আদানির লুটপাট বহাল রাখতে পটুয়াখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে রেখেছে! অর্থাৎ জনগণের প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকলেও আগের রাজনৈতিক ব্যবস্থার কোনই পরিবর্তন ঘটে নি। শুধুমাত্র ক্ষমতায় বসা ব্যক্তিবর্গের চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। আগের মতোই এখানেও ক্ষমতা লাভের জন্য তথাকথিত ‘বন্ধু’ বা ‘প্রতিবেশী’র আড়ালে মার্কিন-ভারতের আনুগত্য করে যেতে হয়। সেটা ইলিশ দিয়ে হোক, বন্দর দিয়ে হোক অথবা দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে হোক!
তাই বিদেশী শক্তি নির্ভর রাজনৈতিক (গণতান্ত্রিক) বন্দোবস্তটাই আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ এখানে জনগণের কাঁধে চড়ে একমাত্র পশ্চিমা অনুগত ব্যক্তিরাই শাসন ক্ষমতার মালিক হন। আর যেহেতু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটাই পশ্চিমাদের নিকট থেকে আগত, তাই এর অর্থনীতি, রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে পশ্চিমা কুফর শক্তিই আমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। আর তাদের প্রদর্শিত পথে তাদের দাসত্ব থেকে বের হওয়া কখনোই সম্ভব না।
তাই এই রাজনৈতিক বন্দোবস্তটির বদলে এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে, যেখানে পশ্চিমা কুফর শক্তি কখনোই আমাদের পথপ্রদর্শক হতে পারবেনা। আমাদের পথপ্রদর্শক হবেন একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা। তিনি ক্ষমতা লাভের জন্য কিংবা অন্য কোন কারণে কোন কুফর শক্তির আনুগত্য করা সম্পূর্ণ নিষেধ করে দিয়েছেন। তিনি (সুবাহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেছেনঃ “আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক, তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন এবং কাফিরদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত, সে তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই আগুনের বাসিন্দা, এরা চিরকাল সেখানে থাকবে”। (বাকারাঃ ২৫৭)
- মোঃ জহিরুল ইসলাম
