খবর:
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় থাকা ফ্রান্সে শুরু হয়েছে ‘ব্লক এভরিথিং’ আন্দোলন। আন্দোলন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে প্রায় ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে অন্তত ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দেশটির বাজেট ঘাটতি ইইউ'র অন্যতম বৃহত্তম, যার পরিমান হল ৫.৮%। ফরাসি বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনায় অর্থনৈতিক ও বাজেট আলোচনা একটি প্রধান ‘স্ফুলিং’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। (https://www.youtube.com/watch?v=FBXAlxnWxqQ)
মন্তব্য:
পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার বিদায়ের ঘন্টা বাজছে। সংসদের অর্থবিলকে কেন্দ্র করে পুরো দেশজুড়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ ও নিজ দেশের জনগণকে দমনে পূর্ণ সামরিক সাজে সারাদেশে পুলিশ মোতায়েন করেছে ফ্রান্সে। ইন্দোনেশিয়ার ‘অর্থমন্ত্রীর’ বাসায় আক্রমন করে সকল আসবাবপত্র খুলে নিয়েছে সেদেশের বিক্ষোভকারীরা। নেপালের ‘অর্থমন্ত্রীকে’ তার বাড়ি থেকে উলঙ্গ করে রাস্তায় ফেলে বেধরক পিটুনি দেওয়ার ঘটনা ইঙ্গিত করে দেশের আর্থিক নীতির ব্যাপারে কি পরিমাণ ক্ষোভ ছিল সেখানকার নাগরিকদের। ট্রাম্পের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ৫ দিনের economic blackout আন্দোলন শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালের এমন কোন সপ্তাহ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর যেই সময়ে আমেরিকাতে কোন না কোন আন্দোলন হয়নি। এর আগে বিশ্ববাসী দেখেছে আর্থনৈতিকভাবে ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাদী বৃটেন কিভাবে ব্রেক্সিটের ফাঁদে পড়েছে। ভুক্তভোগী জনগণের হাতে ‘কবরস্থ’ হওয়া থেকে পুঁজিবাদকে বাঁচাতে পুঁজিবাদের মায়ায় পরা ব্যক্তিদের অন্তরে হয়ত খুব শিঘ্রই হাহাকার উঠবে, ‘এখন সময় ভাল না, পুঁজিবাদ তুই পালিয়ে যা’!
নেপালের জনগণ বর্তমান, সাবেক মিলে ভিন্ন দলের ৩ জন প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ও সংসদভবন জ্বালিয়ে দিয়েছে; যা প্রমাণ করে যে তাদের আন্দোলন কোন ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। আমেরিকা ও ফ্রান্সের আন্দোলনের অন্তর্নিহিত মেসেজও সেটাই। কিন্তু, তাদের হাতে অন্য কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশেও তরুণ সমাজের কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা থেকে হাসিনার বিরুদ্ধে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সেই অনিশ্চয়তা এখন আরো বেড়েছে। ‘তিন শুণ্যের’ ফেরিওয়ালা গত একবছরে নিজেই শুণ্য (00) মেরে সচেতন জনগনের চোখ খুলে দিয়েছেন। ইসলামী খিলাফত শাসনব্যবস্থার ন্যায্যতা ভিত্তিক সম্পদ বন্টন-ব্যবস্থা ও পরীক্ষিত ইসলামী অর্থনৈতিক মডেল ছাড়া অন্যকোন সমাধান দিয়ে বাংলাদেশের তরুন সমাজের ক্যারিয়ার ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব। শক্তিশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের আর্থিক অব্যবস্থাপনা যেভাবে বিদ্যুৎগতিকে সমাজতন্ত্রের পতন নিশ্চিত করেছিল, ঠিক একইরকমভাবে পুঁজিবাদের দৃষ্টিনন্দন পতন দেখার জন্য বিশ্ব এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, যার সূচনাভূমি হবে বাংলাদেশ, ইনশা’আল্লাহ।
- রিসাত আহমেদ
