খবর:
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র লিডার্স ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় ২১ জন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতার আরেকটি দলকে স্নাতক সনদ প্রদান করেছে ডিআই।…বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক দল, গণসংহতি আন্দোলন এবং গণ অধিকার পরিষদের নয়টি জেলার প্রতিনিধিত্বকারী সভাপতিমণ্ডলী এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য, সমন্বয়কারী, সভাপতি এবং জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ জন বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা সম্প্রতি ডিআই-এর সিনিয়র লিডার্স ফেলোশিপ প্রোগ্রাম (এসএলএফপি) সম্পন্ন করেছেন।…এসএলএফপি-এর একাদশ শ্রেণির স্নাতক ফেলোরা নেতৃত্ব, রাজনৈতিক অর্থায়ন, নির্বাচনী সংস্কার, গণতন্ত্রের সূচক, রাজনৈতিক যোগাযোগ ও প্রচারণা ব্যবস্থাপনা, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং ভোটদান প্রক্রিয়া এবং রাজনীতিতে নারীর অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এখন পর্যন্ত, সাতটি দলের ২৫৫ জন জ্যেষ্ঠ নেতা এই কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন। (https://www.channelionline.com/21-senior-leaders-graduate-from-democracy-international/ )
মন্তব্য:
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)-এর সাম্প্রতিক সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান কোনো আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন কর্মসূচি নয়। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার একটি দীর্ঘসূত্রী প্রবাহের অংশ। ডিআই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতাদের জন্য নিয়মিতই ফেলোশিপ এবং লিডারশিপ কোর্স চালিয়ে আসছে। এই ধরনের কোর্স আরো অনেকবার সম্পন্ন হয়েছে এবং দেশের শত শত রাজনীতিবিদকে প্রশিক্ষণ ও সনদ দেওয়া হয়েছে। যেমন: পতিত হাসিনা সরকারের আমলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল গত ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে দেশের নয়টি জেলা থেকে আসা গ্র্যাজুয়েট করা ফেলো, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই ধরনের গ্রাজুয়েশন, ট্রেনিং পদক, ডিগ্রি, পুরস্কার ও সম্মাননা আসলে সাম্রাজ্যবাদের দালাল তৈরির প্রক্রিয়া। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল যেমন মার্কিন সরকারের ফান্ডে কার্যক্রম চালায়, তেমনি ব্রিটেন বা ইন্ডিয়ার ফান্ডিংয়েও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলে। বরং এগুলো বহু পুরনো Colonial Legacy. উনিশ শতকে ব্রিটিশ ভারতে লর্ড ম্যাকলে প্রণীত শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ছিল এই অঞ্চলের কালো চামড়ার ভারতীয়রা যেন চিন্তায় ও মননে ব্রিটিশদের অনুগত প্রজা ও দাসে পরিণত হয়।
অন্যদিকে, শাসনব্যবস্থা ও মতবাদ গণতন্ত্র নিজেই এখন সারা পৃথিবীতে ব্যর্থ হচ্ছে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ সম্প্রতি তার শততম জন্মদিনে বলেছেন, "আধুনিক সভ্যতা ভেঙে পড়েছে, গণতন্ত্রও ব্যর্থ।" পশ্চিমাদের বিভিন্ন জরিপ ও সূচকেও গণতন্ত্রকে বহু দেশে ব্যর্থ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এমন একটি ব্যর্থ ও পতন্মুখ ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ থেকে বাংলাদেশ নতুন কিছু পেতে পারে না। বরং এসব ট্রেনিংপ্রাপ্ত দালালেরা সাম্রাজ্যবাদের প্রতি আরো নমনীয় হবে এবং দেশবাসীর উপর আরো নিপীড়নমূলক শাসন চাপিয়ে দিবে।
দেশের সত্যিকারের পরিবর্তন ও কাঙ্ক্ষিত উন্নতির জন্য গণতন্ত্রের গ্রাজুয়েট নয়, বরং প্রয়োজন ইসলামি মতাদর্শের ভিত্তিতে প্রশিক্ষিত কিছু রাজনীতিবিদ। জনগণ যদি এ ধরনের সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদের পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে গণতন্ত্রের পরিবর্তে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অর্থবহ পরিবর্তন হবে।
- রাশেদ হাসান মেহেদী
