মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করবেন সিইসি

 


খবরঃ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্র্যাসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। [https://www.ittefaq.com.bd/749055/সিইসির-সঙ্গে-মার্কিন-রাষ্ট্রদূতের-বৈঠক-দুপুরে]

মন্তব্যঃ

গণঅভ্যুত্থানে মানুষের অন্যতম চাওয়া ছিল, এই অঞ্চলের মানুষের উপর আর যেন কোন বিদেশি অপশক্তির কালো ছায়া না পড়ে। হাসিনা আমলে ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য, সীমান্তে নজিরবিহীন হত্যাযজ্ঞ এবং অসম জ্বালানি ও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় চুক্তিসমূহ বাংলাদেশকে ভারতের সরাসরি দাসে রূপান্তর করেছিল। সেই ভারতের চৌকিদার হাসিনা যখন তার মালিকের ক্রোড়ে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিল, তখন সাধারণ মানুষ ভেবেছিল এবার হয়তো বাংলাদেশ সত্যিকারের সার্বভৌমত্ব আর স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। অত্যন্ত পরিতাপের সাথে এদেশের মানুষ অসহায়ভাবে তাদের রক্ত দিয়ে কেনা অভ্যুত্থানকে চোখের সামনে ছিনতাই হতে দেখল। যখন তারা দেখল কক্সবাজারে মার্কিন সেনা উপস্থিতি, সদ্য সাবেক হওয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মার্কিন জ্বালানি কোম্পানির উপদেষ্টা হয়ে আগমন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রায় সবারই আশ্চর্যজনকভাবে মার্কিন নাগরিক হওয়া বা মার্কিন স্বার্থরক্ষা করার দায়িত্ব পাওয়া ইত্যাদি সকল কিছুই এই অঞ্চলের মানুষকে বুঝিয়ে দিল, তারা আবার ঠকে গেছে। আবার তাদের রক্ত দেয়া বৃথা গেছে। তারা আবার ভারত থেকে আমেরিকার দাস হয়ে গেছে। নাম না জানা মার্কিন জ্বালানি কোম্পানির কাছে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই গ্যাস বিক্রির চুক্তি; গম, প্লেন, তুলা, সয়াবিন এবং নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টের নামে একের পর এক বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রির চুক্তি জনমানসের দাসখতের অনুভূতিকে আরো সার্টিফাই করল। অর্থাৎ, শুধু এক চৌকিদারের পলায়ন ঘটেছে, আরেক নতুন চৌকিদারের আগমনের অপেক্ষায়। তারই আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা করতে ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেম-আইএফইএস। নতুন চৌকিদারের আগমন ঘটানোর প্রক্রিয়ায় কতটুকু প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন সেই খোঁজ নিতেই চার্জ দ্য এফেয়ার্স- মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আগমন।

৭১, ৭৫, ৮১, ৯০, ২০০৭ এবং ২০২৪ – এতগুলো পরিবর্তনের সুযোগ পাওয়ার পরেও কেন বাংলাদেশের মানুষ এখনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং তা ছিনতাই হয়েই যাচ্ছে? কারণ সাম্রাজ্যবাদিদের ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে নিজেদেরকে তাদের উপনিবেশ হিসেবে না চাওয়া অত্যন্ত অসামাঞ্জস্যপূর্ণ একটা আকাঙ্ক্ষা যেখানে জনমানসের রক্তকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হয়। 

একমাত্র ইসলামি শাসনব্যবস্থা খিলাফত পারে জনমানসের গণঅভ্যুত্থানের এই আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখতে। কারণ এই শাসনব্যবস্থা কখনোই রাষ্ট্রকে কোন বাস্তবতার অজুহাতেই বিদেশী বলয়ের অন্তর্ভুক্ত হতে অনুমতি দেয় না। দেশের সম্পদ, ভৌগোলিক কৌশলগত অবস্থান, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি কোন কিছুতেই বাইরের কোন রাষ্ট্রের আধিপত্য মেনে নেয়া হবে না। এখানে “সার্বভৌমত্ব শুধু আল্লাহ্‌’র” [সূরা ইউসুফঃ ৪০]। খলিফা একজন শাসক হিসেবে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র বিধি-বিধান দিয়ে জনমানুষের দেখভাল করবেন যা জনমানুষের বিশ্বাস-আবেগের সাথে সরাসরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে করে সাধারণ মানুষ এবং পুরো রাষ্ট্র ব্রিটেন-আমেরিকা-ভারতের এই বলয়চক্র থেকে মুক্তি পাবে। “এবং কিছুতেই আল্লাহ্‌ মুমিনদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্ব মেনে নেন না” [সূরা নিসাঃ ১৪১]।

    -    জাবির জোহান


Previous Post Next Post