"পর্নোগ্রাফি চক্রে জড়িত বাংলাদেশি দম্পতি গ্রেপ্তার"

 

খবর:

আন্তর্জাতিক অশ্লীল কন্টেন্ট তৈরি ও প্রচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।....পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশি যুগল যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্ন তারকা” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ওই দম্পতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পর্নোগ্রাফি ভিডিও তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের কনটেন্ট অনলাইনে বিক্রির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ উপার্জনের তথ্যও সেখানে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। (https://www.newsbangla24.com/news/259340/Bangladeshi-couple-involved-in-pornography-ring-arrested)

মন্তব্য:

দম্পতির পর্ন ভিডিও বানিয়ে অর্থ উপার্জন করার প্রচেষ্টা এদেশের মানুষের ইসলামি অনুভূতির সাথে না মিললেও এটা  কিন্তু প্রকৃত সেক্যুলার আইডিওলজি এর philosophy অনুযায়ী খারাপ কিছু নয়। এদেশ এর মানুষ এর কাছে এটি একটি হীন কাজ হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি সেক্যুলার ideology এর একটি মৌলিক ভিত্তি "personal freedom" এর মানিফেস্টেশন।

ইসলাম এর পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মত সেক্যুলার আইডিলজিও চারটি মৌলিক ভিত্তি ওপর প্রতিষ্ঠিত । এই চারটি স্তম্ভ হলো :

- Freedom of speech

- Personal freedom

- Freedom of belief

- Freedom of ownership

একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র এই স্তম্ভগুলোকে  মানুষের মধ্যে প্রচার করে ও পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করে এবং একে রক্ষা করার চেষ্টা করে। এরই ধারাবাহিকতায় সেক্যুলার রাষ্ট্র ব্যক্তি স্বাধীনতাকে বিভিন্নভাবে প্রচার করার চেষ্টা করে। বিভিন্ন স্লোগান যেমন: "You only live once (YOLO)", "My Body My Rules", "Just Do It", "All for freedom", "Freedom for all" — বিভিন্ন নাটক, মুভি, সিরিজ, বিভিন্ন মিডিয়া দিয়ে ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে সমাজ এ এই আইডিয়া প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। যার বাস্তবায়ন হিসাবে আমরা দেখি relationship upon consent এর নামে প্রেম, পরকীয়া, প্রস্টিটিউশন, এর মত ঘটনাগুলো ঘটে। যেকোনো চিন্তাশীল মানুষ এটা স্বীকার করবে যে এই ঘটনাগুলো সমাজ এর জন্য ক্ষতিকর।

যদিও সেক্যুলার সোসাইটি freedom এর আইডিয়া প্রচার করে কিন্তু এই freedom আসলে সোসাইটির কনসেপ্ট এর সাথে কনফ্লিক্টিং। এখানে একটি প্যারাডক্স চলে আসে। আমরা যদি freedom এর প্রকৃত অর্থ দেখি তাহলে দেখবো যে freedom মানে হলো কোনো বাধা ছাড়াই ব্যক্তির নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করা। এখন মানুষ কে যদি তার স্বাধীন ইচ্ছা অনুযায়ী ছেড়ে দাও হয় তাহলে সোসাইটিতে কোনো law and order বলতে কিছু থাকবে না এবং সোসাইটি একটি জঙ্গলে পরিণত হবে। আবার সোসাইটি থাকতে হলে ব্যক্তিকে একটা social order-এর মধ্যে থাকতে হয় যেটা ব্যক্তিকে বাধ্য করে সোসাইটির নিয়ম কানুন মেনে চলতে। এর ফলে তার স্বাধীনতা খর্ব হয়। কিন্তু freedom এর প্রকৃত অর্থ তো এটাই যে ব্যক্তি কোনো বাধা ছাড়াই নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করবে। কাজেই এটি সহজে বুঝা যায় যে freedom এবং সোসাইটি দুইটা পরস্পর বিরোধী কনসেপ্ট। কারণ যদি freedom থাকে তাইলে সোসাইটি থাকবে না আর যদি সোসাইটি থাকে তাহলে freedom থাকবে না।

সেক্যুলার আইডিওলজির একটি বড় দুর্বলতা এটি যে তারা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে না। মানুষ যেহেতু একটি সামাজিক জীব, সেহেতু মানুষ সমাজ এ থাকবেই এবং এটাই স্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন হলো সমাজ এ থাকতে হলে যেই law and order মেনে চলতে হয় এটা মানুষ কোথা থেকে নিবে? Thomas Hobbs, John Locke, Jean Rousseau এদের মতো so called "enlightenment thinkers" দের কাছ থেকে, যারা প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য মানুষ এর মতই দুর্বল, বায়াসড ও অদূরদর্শী, নাকি মানব জাতির সৃষ্টিকর্তা, সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়, আল্লাহ্ সুবহানাহু তাআলা কর্তৃক মনোনিত জীবনব্যবস্থা ইসলাম থেকে? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “যে ব্যক্তি জানে যে, তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান যে অন্ধ? বুদ্ধিমান লোকেরাই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে” (সুরা আর রাদ: ১৯)

    -    মোহাম্মদ আবির হোসেন


Previous Post Next Post