খবর:
খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা ভেঙে পাহাড়িদের হামলায় মেজরসহ সেনাবাহিনীর ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পাহাড়িসহ কয়েকজন বাঙালি। রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলার খাদ্য গুদাম এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পাহাড়িদের সরে যেতে নির্দেশ দেন। এতে পাহাড়িরা সেনাসদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় রামেশু বাজার এলাকায় ভাড়াবাসায় পরিচালিত ভবনে শিক্ষা অফিস, সমাজসেবা, যুব উন্নয়নসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীর।
(https://www.dailyamardesh.com/bangladesh/amdxr1kihnjsc)
মন্তব্য:
‘খাগড়াছড়ির ঘটনায় প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের ইন্ধন রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, কিন্তু ভারতের নাম মুখে নিতে উনার ভয় হয়। প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকার অনুগত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পপুলার ভারতবিরোধী বক্তব্য নিয়ে আমেরিকার ষড়যন্ত্র ও সংশ্লিষ্টতাকে আড়াল করার অপচেষ্টা করছে। ক্রুসেডার আমেরিকার ঘাতক সৈন্যদের ঘনঘন চট্টগ্রামে আগমনের মধ্যেই দেশের পার্বত্য অঞ্চলে একটি অস্পষ্ট ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে সামনে এনে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে যুক্তিসঙ্গত ভাবেই আমেরিকার ইন্ধন ও সংশ্লিষ্টতা থাকাটা সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকবে। বার্মা এক্ট-২০২২ নিয়ে আমেরিকার দৌড়ঝাপ এবং তথাকথিত মানবিক করিডোর, স্টারলিংক ইন্টারনেট ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আমেরিকার মরিয়া ভাব (desperation) এই সন্দেহকে নিশ্চতভাবেই আরো বাড়িয়ে দেয়। গত ১৫০ বছরের অধিক সময় ধরে আমেরিকান ও ইউরোপীয় খ্রীস্টান মিশনারীদের ব্যাপক অপতৎপরতা রয়েছে এই পুরো অঞ্চল জুড়ে।
আরো স্পষ্ট করে বললে, দেশের জনগন ও সামরিক বাহিনীকে এটা বুঝতে হবে যে ইউপিডিএফ, জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কিংবা কেএনএফ মূল সমস্যা নয়, এগুলো হল ডালপালা মাত্র। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যার মূল বা শেকড় হল সাম্রাজ্যবাদি আমেরিকা ও বৃটেন। বিচ্ছিন্নতাবাদি সন্ত্রাসীগোষ্ঠীগুলোর সাথে আমেরিকা-বৃটেনের সংযোগ বা সাপ্লাই লাইন (supply line) চূড়ান্তভাবে কেঁটে না দিলে এই সমস্যার সমাধান কখনোই হবে না।
পার্বত্য অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা এবং পাহাড়ি-বাঙালি সহিংসতা বাঁধানোর বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদি ষড়যন্ত্রের সবচেয়ে বড় ভূক্তভুগী হল বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী। সামরিক বাহিনীর অনেক অফিসার তাদের চাকরি জীবনের কোন না কোন এক সময়ে তাদের পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত ৪-৫ দশক ধরে দেশের সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে চালানো সশস্ত্র ও চোরাগুপ্তা হামলায় অসংখ্য সামরিক অফিসার ও সামরিক সদস্য নিহত হলেও দেশের সেকুলার শাসকদের দালালী ও সুষ্পষ্ট নীতির অভাবের কারণে পার্বত্য অঞ্চল আজো অশান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ, এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে দেশের পার্বত্য অঞ্চলের সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে চিরতরে নির্মূল করার পূর্ণ সক্ষমতা বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর রয়েছে। তাদের শুধুমাত্র প্রয়োজন সঠিক দিকনিদের্শনা। আসন্ন নবুয়তের আদলের খিলাফত রাষ্ট্রে বসবাসরত সকল জাতিসত্তা, ধর্ম ও বর্ণের মানুষদেরকে নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করবে এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল বৈষম্যকে নির্মূল করবে। খিলাফত সকলের ‘ন্যায়সঙ্গত’ ভূমি ও অন্যান্য সম্পদের মালিকানার অধিকার ও নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করবে। এরপরও যদি কোন গোষ্ঠী সাম্রাজ্যবাদিদের মদদে পার্বত্য অঞ্চলে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত হয়, তারা অচিরেই জানতে পারবে যে খিলাফত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও অখন্ডতা নিশ্চিত করার কাজে মুসলিম সেনাবাহিনী কতটা পেশাদার ও দক্ষ।
- রিসাত আহমেদ
