খবরঃ
২৯ অক্টোবর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছেন, পরবর্তী সরকারের অবশ্যই নির্বাচনী বৈধতা থাকতে হবে। এজন্য, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেবল নীতিবিরুদ্ধই নয়, আত্মবিধ্বংসীও বটে। কারণ, আওয়ামী লীগের লাখো সমর্থক রয়েছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা ভোট দেবেন না। এত মানুষকে বঞ্চিত করে আপনি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবেন না। (https://www.banglatribune.com/foreign/920957/ )
মন্তব্যঃ
বর্তমান শাসনব্যবস্থায় কী পরিমাণ দূর্বলতা বিদ্যমান যে, গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত একটি যালিম সরকার বছর অতিক্রান্ত হতে না হতেই রাজনীতির মাঠে ফেরত আসার হুংকার দিচ্ছে। পতিত হাসিনা বলছে, পরবর্তী সরকারের বৈধতার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতি নিষেধাজ্ঞা উঠানো জরুরী ও আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া জরুরী। মজার বিষয় হচ্ছে এই বক্তব্য শুধুমাত্র হাসিনার নয়, প্রফেসর ইউনুসও বলছেন, এবং তিনি পশ্চিমা মিডিয়াতে দেয়া ইন্টারভিউতে বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে”। কারণ তিনি জানেন যত অপরাধই করুক না কেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আওয়ামী লীগের মত রাজনৈতিক দল যারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে রাজনীতি করে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা যায় না। এর আরেকটি প্রমাণ হলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুরক্ষার জন্য কাজ করে এমন ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন গত ১৯শে অক্টোবর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি প্রেরণ করে। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রেখে দিয়ে হাসিনা-আওয়ামী লীগ কিংবা যুলুম মুক্ত দেশ গঠন করা সম্ভব না।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেহেতু কোন স্থির মানদন্ড নেই, কেবলমাত্র যেকোন পরিমাণ জনগণের সমর্থন থাকাটাই একটি অবৈধ ও অন্যায়কে বৈধ ও ন্যায়ে পরিণত করার জন্য যথেষ্ট; সেহেতু এই ব্যবস্থা হাসিনার মত যুলুমকারী বা আওয়ামী লীগের মতো যুলুমকারী গোষ্ঠীকে আইনগতভাবে ও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করতে পারে না। আবার এই গণতান্ত্রিক আদর্শকে ব্যবহার করে উপনিবেশবাদীরা এসব দেশবিরোধী ও জনবিরোধী শক্তিগুলোকে নিজেদের স্বার্থে রাজনীতির বাইরে নিতে দেয় না।
তাই, জনস্বার্থ, ইসলাম এবং দেশের স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী যেকোন শক্তিকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সক্ষমতা ও নীতি একমাত্র ইসলামের রয়েছে। কারণ এখানে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র আহ্কাম-ই যেকোন কিছু সিদ্ধ ও নিষিদ্ধ হওয়ার একমাত্র ভিত্তি। ইসলামী ব্যবস্থায় যেকেউ রাজনীতি করতে পারবে কিন্তু তা অবশ্যই ইসলামী আদর্শ দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। খিলাফত ব্যবস্থায় জনগণ যেহেতু খলিফা নিয়োগ দেয় এই শর্তে যে, খলিফা সকল বিষয়ে কেবলমাত্র শারী’আহ্ অনুযায়ী ফয়সালা করবেন, সেহেতু শারীআহ্ অনুসরণ করে খলিফার নেয়া সিদ্ধান্তগুলো জনগণের ম্যান্ডেট। খিলাফত সরকার কুফর ধর্মনিরপেক্ষতার উপর প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের মত দলসমূহকে শুধু নিষিদ্ধই করবে না বরং হাসিনার মত অপরাধীদের মাযালিম আদালতে দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করবে। এবং একইসাথে খিলাফত রাষ্ট্র তার আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সামর্থ্য ব্যবহার করে এসব অপরাধীদের দেশে এনে শাস্তি কার্যকরের ব্যবস্থা করবে।
- মোহাম্মদ তালহা হোসেন
